তিন দেশ ঘুরে এসে সংসদীয় কমিটির সুপারিশঃ দুর্নীতি তদন্তে সরকারের অনুমতির প্রয়োজন নেই
সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে ‘পূর্বানুমতির প্রয়োজন নেই’ বলেই মনে করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আইন পর্যালোচনায় গঠিত সংসদীয় কমিটি। কমিটি প্রতিবেদন দিয়ে বলেছে, স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন করতে হলে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতি তদন্তে যদি সরকারের পূর্বানুমোদনের প্রয়োজন হয়, তাহলে দুর্নীতি দমন সম্ভব হবে না।
ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া ও অস্ট্রেলিয়ার দুর্নীতি দমন কমিশনের কার্যক্রম দেখে এসে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক সংসদীয় কমিটির প্রতিনিধিদল গতকাল শনিবার এ সুপারিশ করেছে। এই তিন দেশে সরকারি কর্মচারীদের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে আগে থেকে সরকারের অনুমোদনের প্রয়োজন হয় না।
কমিটির সভাপতি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এ বিষয়ে প্রথম আলোকে বলেন, সরকারের কাছ থেকে পূর্বানুমোদন নিতে হলে কমিশনের দরকার কী? এ জন্য তো পুলিশ আছে। তিনি বলেন, দুদককে তো ঠুঁটো জগন্নাথ বানিয়ে লাভ নেই, এটিকে কার্যকর করতে হবে।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান সংসদীয় কমিটির এ সুপারিশকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘আমরা দেড় বছরের বেশি সময় ধরে এসব বিষয় নিয়ে আন্দোলন করছি, যার বেশির ভাগ বিষয়েই কমিটি পর্যবেক্ষণে বলেছে। বিষয়টি ইতিবাচক।’
দুদক আইন, ২০০৪ সংশোধনের জন্য গত ২৮ ফেব্রুয়ারি সংসদে বিল উত্থাপিত হয়। দুর্নীতি দমন (সংশোধন) বিল, ২০১১ নামের ওই বিলটি এখন আইন মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির কাছে রয়েছে। ওই বিলের ৩২(ক) ধারা সংশোধনের প্রস্তাব করে বলা হয়েছে, ‘এ আইনের অধীনে জজ, ম্যাজিস্ট্রেট বা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে হলে সরকারের পূর্বানুমোদন নিতে হবে।’
জানা গেছে, বিলটি পর্যালোচনার অংশ হিসেবে সংসদীয় কমিটির প্রতিনিধিদল ১০ থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়া সফর করে। এই তিন দেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের কাজ পর্যবেক্ষণ করে কমিটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে। সংসদ ভবনে আইন মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভায় গতকাল এ প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।
২৪ পৃষ্ঠার ওই প্রতিবেদনে তিন দফা সুপারিশ করা হয়। এর বাইরে আরও তিনটি পর্যবেক্ষণ তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনের অনুলিপি অর্থমন্ত্রী, কৃষিমন্ত্রী, সরকারি হিসাব কমিটির সভাপতি, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব এবং জনপ্রশাসনের সচিবকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুর্নীতিমুক্ত জাতি গঠনের বৃহত্তর স্বার্থে দুর্নীতি দমন কমিশনকে স্বাধীনভাবে কমিশনের সচিব নিয়োগসহ সব কাজ নিজেদের মতো করার স্বাধীনতা দিতে হবে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো দুদককে অর্থনৈতিক ও কাঠামোগত স্বাধীনতাও দিতে হবে, যাতে করে নিজের দক্ষ জনবল গড়ে তুলে তারা কাজ করতে পারে।
দুদকের চাহিদা অনুসারে সরকারকে প্রয়োজনীয় অর্থ দেওয়ার সুপারিশ করে কমিটি আরও বলেছে, সংসদ ন্যায়পালের অনুপস্থিতিতে দুুদকের বার্ষিক কার্যক্রম পর্যালোচনা করার দায়িত্ব আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়কে দেওয়া যেতে পারে।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত প্রথম আলোকে বলেন, দুদককে স্বাধীন করা দরকার। এটাই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। তিনটি দেশ সফর সম্পর্কে তিনি বলেন, ওই তিন দেশে অর্থনৈতিক, প্রশাসনিক ও কর্মকাণ্ডে—স্বাধীন সংস্থা দুদক। সেখানে কোনো কর্মকর্তার দুর্নীতির বিরুদ্ধে অনুসন্ধান, তদন্ত ও বিচারকাজ শুরু করার জন্য কোনো পূর্বানুমতির বিধান নেই। কমিটিও মনে করে, দুদক কর্তৃক সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে সরকারের পূর্বানুমোদন নেওয়ার প্রস্তাবিত বিধান যৌক্তিক নয়।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান এসব বিষয়ে আরও বলেন, ‘কমিটির সুপারিশের পাশাপাশি আমরা মনে করি দুদককে সাংবিধানিক মর্যাদা দেওয়ারও এখনই সময়। এটি সংসদই দিতে পারে। তাহলে তাদের আরও স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ তৈরি হবে।’
সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের সভাপতিত্বে গতকালের সভায় কমিটির সদস্য আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মো. কামরুল ইসলাম, মো. ফজলে রাব্বী মিয়া, মো. জিয়াউল হক মৃধা, মো. নূরুল ইসলাম ও শেখ ফজলে নূর তাপস উপস্থিত ছিলেন।
আদালত অবমাননা বিল: গতকালের সভায় আদালত অবমাননা বিল, ২০১১-এর ওপরও আলোচনা হয়। বিলটির ওপর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা মতামত তুলে ধরেন। বিলটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য কমিটির সদস্য ফজলে রাব্বী মিয়াকে আহ্বায়ক এবং মো. নুরুল ইসলাম ও শেখ ফজলে নূরকে সদস্য করে তিন সদস্যবিশিষ্ট উপকমিটি গঠন করা হয়।
সভায় বলা হয়, সংসদে উত্থাপিত এই বিলটির খসড়া কিছু সংযোজন-বিয়োজন করতে হবে। বিলে আদালত অবমাননার সংজ্ঞা ও এর শাস্তির বিধানে দুর্বলতা আছে বলেও মনে করে কমিটি। এসব দুর্বলতাসহ বিলটি সংসদে পাস হলে এর উদ্দেশ্য পরিপূর্ণ হবে না।
গত ১৪ জুন সংসদে এই বিল উত্থাপন প্রসঙ্গে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, আদালত অবমাননা নিয়ে বিভিন্ন সময় অনেক বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বিলটির আরও পর্যালোচনার জন্যই উপকমিটি গঠন করা হয়েছে।
কমিটির সভাপতি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এ বিষয়ে প্রথম আলোকে বলেন, সরকারের কাছ থেকে পূর্বানুমোদন নিতে হলে কমিশনের দরকার কী? এ জন্য তো পুলিশ আছে। তিনি বলেন, দুদককে তো ঠুঁটো জগন্নাথ বানিয়ে লাভ নেই, এটিকে কার্যকর করতে হবে।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান সংসদীয় কমিটির এ সুপারিশকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘আমরা দেড় বছরের বেশি সময় ধরে এসব বিষয় নিয়ে আন্দোলন করছি, যার বেশির ভাগ বিষয়েই কমিটি পর্যবেক্ষণে বলেছে। বিষয়টি ইতিবাচক।’
দুদক আইন, ২০০৪ সংশোধনের জন্য গত ২৮ ফেব্রুয়ারি সংসদে বিল উত্থাপিত হয়। দুর্নীতি দমন (সংশোধন) বিল, ২০১১ নামের ওই বিলটি এখন আইন মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির কাছে রয়েছে। ওই বিলের ৩২(ক) ধারা সংশোধনের প্রস্তাব করে বলা হয়েছে, ‘এ আইনের অধীনে জজ, ম্যাজিস্ট্রেট বা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে হলে সরকারের পূর্বানুমোদন নিতে হবে।’
জানা গেছে, বিলটি পর্যালোচনার অংশ হিসেবে সংসদীয় কমিটির প্রতিনিধিদল ১০ থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়া সফর করে। এই তিন দেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের কাজ পর্যবেক্ষণ করে কমিটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে। সংসদ ভবনে আইন মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভায় গতকাল এ প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।
২৪ পৃষ্ঠার ওই প্রতিবেদনে তিন দফা সুপারিশ করা হয়। এর বাইরে আরও তিনটি পর্যবেক্ষণ তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনের অনুলিপি অর্থমন্ত্রী, কৃষিমন্ত্রী, সরকারি হিসাব কমিটির সভাপতি, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব এবং জনপ্রশাসনের সচিবকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুর্নীতিমুক্ত জাতি গঠনের বৃহত্তর স্বার্থে দুর্নীতি দমন কমিশনকে স্বাধীনভাবে কমিশনের সচিব নিয়োগসহ সব কাজ নিজেদের মতো করার স্বাধীনতা দিতে হবে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো দুদককে অর্থনৈতিক ও কাঠামোগত স্বাধীনতাও দিতে হবে, যাতে করে নিজের দক্ষ জনবল গড়ে তুলে তারা কাজ করতে পারে।
দুদকের চাহিদা অনুসারে সরকারকে প্রয়োজনীয় অর্থ দেওয়ার সুপারিশ করে কমিটি আরও বলেছে, সংসদ ন্যায়পালের অনুপস্থিতিতে দুুদকের বার্ষিক কার্যক্রম পর্যালোচনা করার দায়িত্ব আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়কে দেওয়া যেতে পারে।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত প্রথম আলোকে বলেন, দুদককে স্বাধীন করা দরকার। এটাই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। তিনটি দেশ সফর সম্পর্কে তিনি বলেন, ওই তিন দেশে অর্থনৈতিক, প্রশাসনিক ও কর্মকাণ্ডে—স্বাধীন সংস্থা দুদক। সেখানে কোনো কর্মকর্তার দুর্নীতির বিরুদ্ধে অনুসন্ধান, তদন্ত ও বিচারকাজ শুরু করার জন্য কোনো পূর্বানুমতির বিধান নেই। কমিটিও মনে করে, দুদক কর্তৃক সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে সরকারের পূর্বানুমোদন নেওয়ার প্রস্তাবিত বিধান যৌক্তিক নয়।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান এসব বিষয়ে আরও বলেন, ‘কমিটির সুপারিশের পাশাপাশি আমরা মনে করি দুদককে সাংবিধানিক মর্যাদা দেওয়ারও এখনই সময়। এটি সংসদই দিতে পারে। তাহলে তাদের আরও স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ তৈরি হবে।’
সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের সভাপতিত্বে গতকালের সভায় কমিটির সদস্য আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মো. কামরুল ইসলাম, মো. ফজলে রাব্বী মিয়া, মো. জিয়াউল হক মৃধা, মো. নূরুল ইসলাম ও শেখ ফজলে নূর তাপস উপস্থিত ছিলেন।
আদালত অবমাননা বিল: গতকালের সভায় আদালত অবমাননা বিল, ২০১১-এর ওপরও আলোচনা হয়। বিলটির ওপর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা মতামত তুলে ধরেন। বিলটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য কমিটির সদস্য ফজলে রাব্বী মিয়াকে আহ্বায়ক এবং মো. নুরুল ইসলাম ও শেখ ফজলে নূরকে সদস্য করে তিন সদস্যবিশিষ্ট উপকমিটি গঠন করা হয়।
সভায় বলা হয়, সংসদে উত্থাপিত এই বিলটির খসড়া কিছু সংযোজন-বিয়োজন করতে হবে। বিলে আদালত অবমাননার সংজ্ঞা ও এর শাস্তির বিধানে দুর্বলতা আছে বলেও মনে করে কমিটি। এসব দুর্বলতাসহ বিলটি সংসদে পাস হলে এর উদ্দেশ্য পরিপূর্ণ হবে না।
গত ১৪ জুন সংসদে এই বিল উত্থাপন প্রসঙ্গে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, আদালত অবমাননা নিয়ে বিভিন্ন সময় অনেক বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বিলটির আরও পর্যালোচনার জন্যই উপকমিটি গঠন করা হয়েছে।
No comments