ভারতের উচিত বাংলাদেশকে ১৫ হাজার কোটি টাকা দেওয়াঃ মুক্তিযুদ্ধ প্রতিমন্ত্রী
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশ থেকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিদ্রোহীদের উচ্ছেদ করেছে। এসব বিদ্রোহীকে মোকাবিলায় ভারত সরকারের বছরে ৫০ হাজার কোটি রুপি খরচ হতো। তাই ভারতের যে আর্থিক সাশ্রয় হয়েছে, তা থেকে বাংলাদেশের উন্নয়নে ১০ থেকে ১৫ হাজার কোটি টাকা দেওয়া উচিত। গতকাল শনিবার বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কবিষয়ক দুই দিনের সম্মেলনে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী এ বি তাজুল ইসলাম এসব কথা বলেছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় ও আসাম বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক’ শীর্ষক ওই সম্মেলন আয়োজন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী সিনেট ভবনে। সম্মেলনে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সাবেক স্পিকার হাশিম আবদুল হালিমের নেতৃত্বে ২৪ সদস্যের ভারতীয় দল অংশ নিচ্ছে। তাজুল ইসলাম বলেন, একসময় পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার সহযোগিতায় পার্বত্য চট্টগ্রামে নাগাল্যান্ড, মিজোরাম ও আসামের বিদ্রোহীদের প্রশিক্ষণ ও সহায়তা দেওয়া হতো। কিন্তু বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর এসব বিদ্রোহীকে বাংলাদেশের মাটি থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। তাই বেঁচে যাওয়া এই অর্থ থেকে বাংলাদেশকে ১০ থেকে ১৫ হাজার কোটি টাকা দেওয়া উচিত। এতে ভারতের ক্ষতি হবে না, বরং লাভই হবে।
বাংলাদেশে আবারও জঙ্গি তৈরি হলে তা ভারতের জন্য ভালো হবে না মন্তব্য করে তাজুল ইসলাম বলেন, জঙ্গি মোকাবিলায় দুই দেশকে একত্রে কাজ করতে হবে।
ওই অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, দেশের স্বার্থ বজায় রেখে ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। সমস্যা আছে, সমস্যা থাকবে। কিন্তু সমাধানও অব্যাহতভাবে করে যেতে হবে।
পররাষ্ট্রসচিব মোহাম্মদ মিজারুল কায়েস বলেন, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের মধ্যে আগে মাকড়সার জাল দেখা হতো। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসে এই জাল সরিয়ে ইস্যুগুলোকে সামনে এনেছে। তিনি বলেন, ‘মনমোহন সিংয়ের সফরে অনেক অর্জন আছে। যা হয়েছে তা নিয়ে আমরা কথা বলছি না, যা হয়নি তা নিয়েই কথা বলছি। তিস্তা চুক্তি হয়নি, তার মানে এই নয় যে এটা ভবিষ্যতে হবে না।’ একটি সফরের মধ্য দিয়েই সম্পর্কটিকে বিবেচনা করলে চলবে না। এটা অব্যাহত প্রক্রিয়া বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার রজিত মিত্তার বলেন, লাভজনক বাণিজ্য বিনিময়ের মাধ্যমে দুই দেশের সম্পর্ক আরও জোরদার হতে পারে। মনমোহন সিংয়ের সফরের মধ্য দিয়ে দুই দেশের সীমানা নির্ধারণ, বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতা, পরিবেশগত সুরক্ষা, তিনবিঘা সমস্যার সমাধানসহ নানা বিষয়ে অগ্রগতি হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সাবেক স্পিকার হাশিম আবদুল হালিম বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের তরুণসমাজ আর পেছনের দিকে তাকাতে চায় না। তারা সামনের দিকে কী আছে, তা দেখতে চায়। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে উঠলে তা পুরো দক্ষিণ এশিয়ার অগ্রগতিতে ভূমিকা রাখবে।
ভারতের আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তপোধীর ভট্টাচার্য ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্কটি সমমর্যাদার হওয়া উচিত উল্লেখ করে বলেন, ভারত বড় আর বাংলাদেশ ছোট—এই ভাবে না দেখে দুই দেশ কীভাবে পরস্পরের কাছ থেকে শিখতে পারে, সেই শিক্ষা নিতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক নিয়ে পুরোনো মানসিকতায় পরিবর্তন আনতে হবে। দুই দেশ মিলে যাতে বিশ্বশান্তিতে ভূমিকা রাখতে পারে, সেই চেষ্টা করতে হবে।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য ষোড়শী মোহন দাঁ, সম্মেলন আয়োজক কমিটির সমন্বয়কারী মেসবাহ কামাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার সৈয়দ রেজাউর রহমান উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে মুক্তিযুদ্ধে ভারত ও বাংলাদেশের শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা মঙ্গলপ্রদীপ জ্বেলে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সংগীত ও নৃত্য পরিবেশন করেন। দুই দিনের এই সম্মেলনে আটটি কারিগরি অধিবেশনে ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্কের পরিপ্রেক্ষিতে দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতি, ধর্মনিরপেক্ষতা, সাহিত্য ও সমাজ নিয়ে আলোচনা হবে।
সম্মেলনের প্রথম দিনে দুটি কারিগরি অধিবেশনে ‘মুখের কথায় মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস: মুক্তিযোদ্ধাদের সাক্ষ্য’ শীর্ষক আলোচনা হয়। প্রথমটিতে পশ্চিমবঙ্গের সংসদবিষয়ক বিশেষজ্ঞ দিলীপ ব্যানার্জি সভাপতিত্ব করেন। দ্বিতীয়টিতে সভাপতিত্ব করেন আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেলের পরিচালক নিরঞ্জন রায়। তৃতীয় কারিগরি অধিবেশনে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদান শীর্ষক আলোচনা হয়। এতে ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম সভাপতিত্ব করেন। চতুর্থ কারিগরি অধিবেশনে আলোচনা হয় বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের সাহিত্যে মুক্তিযুদ্ধের প্রতিফলন বিষয়ে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক সুদেষ্ণা চক্রবর্তী সভাপতিত্ব করেন।
প্রয়াত চলচ্চিত্রনির্মাতা তারেক মাসুদের ছবি মুক্তির গান প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে দিনের অধিবেশন শেষ হয়।
বাংলাদেশে আবারও জঙ্গি তৈরি হলে তা ভারতের জন্য ভালো হবে না মন্তব্য করে তাজুল ইসলাম বলেন, জঙ্গি মোকাবিলায় দুই দেশকে একত্রে কাজ করতে হবে।
ওই অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, দেশের স্বার্থ বজায় রেখে ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। সমস্যা আছে, সমস্যা থাকবে। কিন্তু সমাধানও অব্যাহতভাবে করে যেতে হবে।
পররাষ্ট্রসচিব মোহাম্মদ মিজারুল কায়েস বলেন, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের মধ্যে আগে মাকড়সার জাল দেখা হতো। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসে এই জাল সরিয়ে ইস্যুগুলোকে সামনে এনেছে। তিনি বলেন, ‘মনমোহন সিংয়ের সফরে অনেক অর্জন আছে। যা হয়েছে তা নিয়ে আমরা কথা বলছি না, যা হয়নি তা নিয়েই কথা বলছি। তিস্তা চুক্তি হয়নি, তার মানে এই নয় যে এটা ভবিষ্যতে হবে না।’ একটি সফরের মধ্য দিয়েই সম্পর্কটিকে বিবেচনা করলে চলবে না। এটা অব্যাহত প্রক্রিয়া বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার রজিত মিত্তার বলেন, লাভজনক বাণিজ্য বিনিময়ের মাধ্যমে দুই দেশের সম্পর্ক আরও জোরদার হতে পারে। মনমোহন সিংয়ের সফরের মধ্য দিয়ে দুই দেশের সীমানা নির্ধারণ, বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতা, পরিবেশগত সুরক্ষা, তিনবিঘা সমস্যার সমাধানসহ নানা বিষয়ে অগ্রগতি হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সাবেক স্পিকার হাশিম আবদুল হালিম বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের তরুণসমাজ আর পেছনের দিকে তাকাতে চায় না। তারা সামনের দিকে কী আছে, তা দেখতে চায়। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে উঠলে তা পুরো দক্ষিণ এশিয়ার অগ্রগতিতে ভূমিকা রাখবে।
ভারতের আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তপোধীর ভট্টাচার্য ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্কটি সমমর্যাদার হওয়া উচিত উল্লেখ করে বলেন, ভারত বড় আর বাংলাদেশ ছোট—এই ভাবে না দেখে দুই দেশ কীভাবে পরস্পরের কাছ থেকে শিখতে পারে, সেই শিক্ষা নিতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক নিয়ে পুরোনো মানসিকতায় পরিবর্তন আনতে হবে। দুই দেশ মিলে যাতে বিশ্বশান্তিতে ভূমিকা রাখতে পারে, সেই চেষ্টা করতে হবে।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য ষোড়শী মোহন দাঁ, সম্মেলন আয়োজক কমিটির সমন্বয়কারী মেসবাহ কামাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার সৈয়দ রেজাউর রহমান উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে মুক্তিযুদ্ধে ভারত ও বাংলাদেশের শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা মঙ্গলপ্রদীপ জ্বেলে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সংগীত ও নৃত্য পরিবেশন করেন। দুই দিনের এই সম্মেলনে আটটি কারিগরি অধিবেশনে ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্কের পরিপ্রেক্ষিতে দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতি, ধর্মনিরপেক্ষতা, সাহিত্য ও সমাজ নিয়ে আলোচনা হবে।
সম্মেলনের প্রথম দিনে দুটি কারিগরি অধিবেশনে ‘মুখের কথায় মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস: মুক্তিযোদ্ধাদের সাক্ষ্য’ শীর্ষক আলোচনা হয়। প্রথমটিতে পশ্চিমবঙ্গের সংসদবিষয়ক বিশেষজ্ঞ দিলীপ ব্যানার্জি সভাপতিত্ব করেন। দ্বিতীয়টিতে সভাপতিত্ব করেন আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেলের পরিচালক নিরঞ্জন রায়। তৃতীয় কারিগরি অধিবেশনে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদান শীর্ষক আলোচনা হয়। এতে ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম সভাপতিত্ব করেন। চতুর্থ কারিগরি অধিবেশনে আলোচনা হয় বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের সাহিত্যে মুক্তিযুদ্ধের প্রতিফলন বিষয়ে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক সুদেষ্ণা চক্রবর্তী সভাপতিত্ব করেন।
প্রয়াত চলচ্চিত্রনির্মাতা তারেক মাসুদের ছবি মুক্তির গান প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে দিনের অধিবেশন শেষ হয়।
No comments