নাফীসের রক্তে ভেজা ২১

সে-ই একুশ রানে রিটায়ার্ড হার্ট। সে একই মাঠ, একই রকম ব্যাপার। তিন বছর আগে চট্টলার এ জহুর আহমেদ চৌধুরীর পিচেই রক্ত ঝরেছিল আফতাব আহমেদের। গতকাল একই পিচে রক্তের দাগ লেগে থাকল শাহরিয়ার নাফীসের। সেবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্টে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসেই পেসার জ্যাক ক্যালিসের শর্ট বলে চোট পেয়েছিলেন আফতাব। হেলমেটের একদিক দেবে গিয়ে ডান চোখের ওপর লেগেছিল তার। সেদিনও ২১ রানে রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন আফতাব। এদিন ক্যারিবীয় পেসার ফিদেল অ্যাডওয়ার্ডের বলেও হেলমেটের সামনের গ্রিল দেবে গিয়ে কপালে আঘাত হানে নাফীসের।


কেটে না গেলেও চোখের ওপরের দিকে আঘাতের কারণেই নাক দিয়ে গলগল করে রক্ত পড়তে থাকে নাফীসের। ২১ রানে থাকা নাফীস সেই যে তোয়ালে মুড়িয়ে মাঠ ছাড়েন তারপর আর মাঠে নামেননি। সেদিন মাঠ থেকেই সরাসরি হাসপাতালে যেতে হয়েছিল আফতাবকে, এদিন নাফীসকে ড্রেসিংরুমেই প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। ততক্ষণে নাফীসের কপালের দিকটা ফুলে গেছে, সেটা কমলেই তিনি আবার ব্যাট হাতে মাঠে নামবেন। আপতত তাই নাফীসকে নিয়ে খুব বেশি চিন্তার কিছু নেই। 'হাসপাতালে নেওয়া হয়নি। দলের ফিজিও এবং বিসিবির চিকিৎসক মিলে তার প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছেন। ডাক্তার আশা করছেন, কপালের ফুলে যাওয়া জায়গাটি স্বাভাবিক হলেই আবার ব্যাট করতে নামতে পারবেন নাফীস।' ড্রেসিংরুম থেকে ঘুরে এসেই বিসিবির মিডিয়া ম্যানেজার এ মেডিকেল বুলেটিন জানিয়ে দেন।
আগের দিন পরিচিত সাংবাদিকদের কাছেই এ টেস্ট নিয়ে নিজের ভাবনার কথা জানিয়েছিলেন নাফীস। 'ওয়ানডেতে আমাদের বোলাররা দেখিয়ে দিয়েছেন তারা কী করতে পারেন। দরকার এখন কেবল আমাদের ব্যাটসম্যানদের বড় একটা স্কোর করে দেওয়া। আমাকেও একটা বড় স্কোর করতে হবে। অনেক দিন নিজের মনের মতো একটা ইনিংস খেলতে পারছি না।' গতকাল ইমরুল আউট হওয়ার পর সেই মনের মতো একটা ইনিংসই শুরু করেছিলেন নাফীস। ক্রিজে আসার চার বল পরই স্যামিকে পরপর দুটি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে আত্মবিশ্বাসটা বাড়িয়ে নেন। কব্জির জোরে অফসাইডের বাইরের বলগুলো পয়েন্ট দিয়ে পাঠাতে থাকেন নাফীস। এরপর ফিদেল অ্যাডওয়ার্ডকেও দু'বার বাউন্ডারির বাইরে আছড়ে ফেলেছিলেন। সে ক্ষোভেই হয়তো নিজের পরের ওভারে বাউন্সার দেন অ্যাডওয়ার্ড। মুখ ঘুরিয়ে সে বাউন্সারটিকে হুক করতে গিয়েই টাইমিং মিস করেন নাফীস। ঘণ্টায় ১৩৫ কিলোমিটারের বলটি হেলমেটের সামনের গ্রিলে আঘাত হেনে নাফীসকে ঘায়েল করে। অবশ্য সবার আগে অ্যাডওয়ার্ডই এগিয়ে আসেন নাফীসের কাছে। মাঠ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার আগে নাফীসও হাত মিলিয়ে অ্যাডওয়ার্ডকে বুঝিয়ে দেন অনুশোচনার কিছু নেই।

No comments

Powered by Blogger.