তিন পুলিশসহ ৩৫ জন আহত-ঠাকুরগাঁওয়ে আ'লীগ অফিসে আগুন দিয়েছে যুব-ছাত্রলীগ

শুক্রবার রাতে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের বেশ কিছু উচ্ছৃঙ্খল কর্মী জেলা আওয়ামী লীগ অফিসে আগুন লাগিয়ে দেয়। পুলিশ বাধা দিলে তাদের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৩২ জন আহত হয়েছে। গুলিতে আহত হয়ে ৩ পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। সন্ত্রাসীরা ২৫-৩০ রাউন্ড শটগানের গুলি বর্ষণ করে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৩০-৪০ রাউন্ড টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। তাণ্ডব চলাকালে এলাকার সব দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। রাত সাড়ে ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শহরে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। জানা যায়, গত ১৩ অক্টোবর একদল যুবক ও ছাত্রলীগ সন্ত্রাসী কাজী ফার্মসে গিয়ে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে।


তারা চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে কর্মকর্তাদের মারধর ও ভাংচুর করে। পরের দিন কাজী ফার্মস কর্তৃপক্ষ ১০-১২ জনকে আসামি করে সদর
থানায় চাঁদাবাজির মামলা করে। শুক্রবার পুলিশ যুবলীগ কর্মী মামুনকে গ্রেফতারের জন্য তার বাসায় তল্লাশি চালায়। খবর শুনে ক্ষিপ্ত হয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মামুন দলবলসহ শহরের চৌরাস্তায় অবস্থিত আওয়ামী লীগ জেলা অফিসে হামলা চালায়। তারা অফিসের সমস্ত আসবাবপত্র, সাইনবোর্ড ভাংচুর করে রাস্তায় আগুন ধরিয়ে দেয়। পুলিশ তাতে বাধা দিলে সন্ত্রাসীরা তাদের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। পরে সন্ত্রাসীরা পুলিশের ওপর শটগানের ২৫-৩০ রাউন্ড গুলি চালায়। গুলিতে ৩ পুলিশ আহত হয়। তাদের সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তারা হচ্ছেন_ কনস্টেবল আবদুল মোত্তালেব, নায়েক আবদুল মালেক ও গুলজার আলী। পুলিশের সঙ্গে দেড় ঘণ্টা ধরে তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও গোলাগুলি চলে। পুলিশ ৩০-৪০ রাউন্ড টিয়ার শেল ও লাঠিচার্জ করে রাত ৯টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তাণ্ডব চলাকালে সব দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। ফায়ার সার্ভিস দ্রুত আগুন নিভিয়ে ফেলে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শহরে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ থাকে।
জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান খোকন জানান, 'এটা আমাদের দুর্ভাগ্য। বিনা কারণে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার দোষীদের আমরা বিচার চাই।' পুলিশ সুপার শাহ আলম বলেন, 'আমরা যে কোনো দুর্ঘটনা রোধে কাজ করব। পুলিশ আওয়ামী লীগ অফিসকে রক্ষা করতে গিয়ে আওয়ামী লীগ কর্মীদের দ্বারা আক্রান্ত হলো এটা দুঃখজনক। তবে অপরাধীরা পার পাবে না।' পৌর যুবলীগের সহসাধারণ সম্পাদক রুবেল ও ছাত্রলীগ নেতা পবিত্র কুমার জানান, 'দল ক্ষমতায় আসার পর কয়েকজন সুবিধাবাদী দলের নামে পুলিশের সঙ্গে আঁতাত করে দু'হাতে লুটপাট করছে। আর আমাদের ওপর বিভিন্ন মামলা দিয়ে হয়রানি করছে।'

No comments

Powered by Blogger.