তদবিরে আর অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ হওয়া যাবে না-পদায়নের ক্ষেত্রে জ্যেষ্ঠতা মানতে হবে by অভিজিৎ ভট্টাচার্য্য
তদবিরের মাধ্যমে আর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ পদে পদায়ন দেওয়া হবে না। এখন থেকে 'ফিটলিস্ট' তৈরি করে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে এসব পদে পদায়ন করা হবে। গতকাল বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এক সভার মাধ্যমে ফিটলিস্ট তৈরির নীতিমালার খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। এটি এখন প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করা হবে। এর ফলে অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ পদে পদায়নের জন্য দেশে প্রথমবারের মতো একটি নীতিমালা জারি হতে যাচ্ছে।সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, দেশে বর্তমানে ২৯৩টি সরকারি কলেজ রয়েছে। এসব কলেজে নিয়মনীতি অনুসরণ না করে অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষ নিয়োগ ও বদলি করা হয়ে থাকে।
নীতিমালাটি জারি হলে এ দুটি পদে পদায়নের ক্ষেত্রে বিতর্ক ও অনিয়ম বন্ধ হবে। তাঁরা বলেন, এ নীতিমালার ফলে একই বিষয়ে (সাবজেক্ট) অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োজিত কনিষ্ঠ কর্মকর্তার অধীনে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যাবে না। বর্তমানে অনেক জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক এ রকম অধ্যক্ষের অধীনে কর্মরত আছেন।
সভায় উপস্থিত ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ও বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) সমিতির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফাহিমা খাতুন কালের কণ্ঠকে জানান, এখন থেকে এ নীতিমালার মাধ্যমে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। তিনি বলেন, 'শিক্ষা প্রশাসনে বর্তমানে অনেক অযোগ্য কর্মকর্তা রয়েছেন। কেবল তদবিরের ফলেই তাঁরা এসব পদে কর্মরত আছেন।' তিনি বলেন, এ ধারার সমাপ্তির জন্য আমরা অনেক দিন ধরেই বলে আসছি। আমরা চাই, নীতিমালার মাধ্যমে যোগ্য ও দক্ষ লোক আসুক।'
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কলেজ শাখার ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালের কণ্ঠকে বলেন, বর্তমানে অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ পদে পদায়নের কোনো নীতিমালা নেই। এই সুযোগে তদবির বা 'ডিও' লেটারের মাধ্যমে অনেক জুনিয়র ও অযোগ্য অধ্যাপককে অধ্যক্ষ এবং সহযোগী অধ্যাপককে উপাধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন করা হয়ে থাকে। এতে জ্যেষ্ঠ, দক্ষ ও সৎ অধ্যাপকরা অধ্যক্ষ বা উপাধ্যক্ষ হতে পারছেন না। তিনি জানান, নীতিমালার মাধ্যমে বছরের নির্দিষ্ট একটি সময়ে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে একটি ফিটলিস্ট তৈরি করা হবে। এই ফিটলিস্ট থেকে অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ নিয়োগ দেওয়া হবে। তাতে কলেজগুলো উপকৃত হবে বলে ওই কর্মকর্তা মনে করেন।
খসড়া নীতিমালায় যা ছিল : গত জুন মাসে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (অর্থ ও প্রশাসন) এস এম গোলাম ফারুককে আহ্বায়ক করে ফিটলিস্ট তৈরি এবং এ-সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়নের জন্য তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। তাঁরা একটি খসড়া নীতিমালা তৈরি করেন। এরই ভিত্তিতে চূড়ান্ত নীতিমালা করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক মো. নোমান উর রশীদ এবং যুগ্ম সচিব (কলেজ) মো. মফিজুল ইসলাম।
খসড়া নীতিমালায় বলা হয়, তিন সদস্যের এই আহ্বায়ক কমিটি অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ পদে আবেদনকারীদের কাছ থেকে আবেদন নিয়ে মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে ফিটলিস্ট তৈরি করবে। বিষয়ের আনুপাতিক হারে কমিটি প্রয়োজনীয় সংখ্যক অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের নামের ফিটলিস্ট প্রস্তুত করবে। চাকরিতে নূ্যনতম ২০ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কর্মকর্তা অধ্যক্ষ এবং ১৫ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কর্মকর্তা উপাধ্যক্ষ পদে নিয়োগ লাভের জন্য আবেদন করতে পারবেন। তাঁদের যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত ফরমে শিক্ষাসচিব বা মন্ত্রণালয় বরাবর আবেদন করতে হবে। আবেদনকারীর বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন (এসিআর) সন্তোষজনক হতে হবে। কর্মকর্তাদের যোগ্যতার পাশাপাশি সততা, দেশপ্রেম, সাহস, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা বিবেচনা করে ফিটলিস্ট তৈরি করা হবে।
অধ্যক্ষ হওয়ার যোগ্যতা : ফিটলিস্ট অনুযায়ী প্রথমত 'সি', 'ডি' ও 'ই' ক্যাটাগরির কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে এক বছর চাকরির অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কর্মকর্তাকে 'বি' ক্যাটাগরির কলেজে পদায়ন করা যাবে। 'বি' ক্যাটাগরির কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে এক বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কর্মকর্তাকে 'এ' ক্যাটাগরির কলেজে পদায়ন করা যাবে। এ ছাড়া অধ্যক্ষ হিসেবে তিন বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কর্মকর্তাকেও 'এ' ক্যাটাগরির কলেজে পদায়ন করা যাবে। তবে যাঁরা উপাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন, তাঁদের বিষয়ে সময়সীমা শিথিল করা যেতে পারে। আর অবসর উত্তর ছুটিতে যাওয়ার এক বছর আগে কর্তৃপক্ষ চাইলে কোনো কর্মকর্তাকে যেকোনো কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন করতে পারবে। এ ছাড়া ফিটলিস্টে অন্তর্ভুক্ত পিএইচডি ডিগ্রিধারী অধ্যাপককে সরাসরি যেকোনো ক্যাটাগরির কলেজের অধ্যক্ষ করা যাবে। একই বিষয়ে (সাবজেক্ট) অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োজিত কনিষ্ঠ কর্মকর্তার অধীনে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যাবে না।
উপাধ্যক্ষ হওয়ার যোগ্যতা : উপাধ্যক্ষের পদায়নের ক্ষেত্রে ফিটলিস্টে অন্তর্ভুক্ত পিএইচডি ডিগ্রিধারী অধ্যাপককে সরাসরি যেকোনো ক্যাটাগরির কলেজে উপাধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন করা যাবে। সহযোগী অধ্যাপক পদমর্যাদার কর্মকর্তাকে প্রথমত 'সি', 'ডি' ও 'ই' ক্যাটাগরির কলেজে উপাধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন করতে হবে। 'সি', 'ডি' ও 'ই' ক্যাটাগরির কলেজে উপাধ্যক্ষ হিসেবে দুই বছরের চাকরির অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কর্মকর্তাকে 'এ' ও 'বি' ক্যাটাগরির কলেজে উপাধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন করা যাবে। তবে একই বিষয়ে অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োজিত কনিষ্ঠ কর্মকর্তার অধীনে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে উপাধ্যক্ষ, সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যাবে না।
সভায় উপস্থিত ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ও বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) সমিতির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফাহিমা খাতুন কালের কণ্ঠকে জানান, এখন থেকে এ নীতিমালার মাধ্যমে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। তিনি বলেন, 'শিক্ষা প্রশাসনে বর্তমানে অনেক অযোগ্য কর্মকর্তা রয়েছেন। কেবল তদবিরের ফলেই তাঁরা এসব পদে কর্মরত আছেন।' তিনি বলেন, এ ধারার সমাপ্তির জন্য আমরা অনেক দিন ধরেই বলে আসছি। আমরা চাই, নীতিমালার মাধ্যমে যোগ্য ও দক্ষ লোক আসুক।'
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কলেজ শাখার ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালের কণ্ঠকে বলেন, বর্তমানে অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ পদে পদায়নের কোনো নীতিমালা নেই। এই সুযোগে তদবির বা 'ডিও' লেটারের মাধ্যমে অনেক জুনিয়র ও অযোগ্য অধ্যাপককে অধ্যক্ষ এবং সহযোগী অধ্যাপককে উপাধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন করা হয়ে থাকে। এতে জ্যেষ্ঠ, দক্ষ ও সৎ অধ্যাপকরা অধ্যক্ষ বা উপাধ্যক্ষ হতে পারছেন না। তিনি জানান, নীতিমালার মাধ্যমে বছরের নির্দিষ্ট একটি সময়ে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে একটি ফিটলিস্ট তৈরি করা হবে। এই ফিটলিস্ট থেকে অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ নিয়োগ দেওয়া হবে। তাতে কলেজগুলো উপকৃত হবে বলে ওই কর্মকর্তা মনে করেন।
খসড়া নীতিমালায় যা ছিল : গত জুন মাসে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (অর্থ ও প্রশাসন) এস এম গোলাম ফারুককে আহ্বায়ক করে ফিটলিস্ট তৈরি এবং এ-সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়নের জন্য তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। তাঁরা একটি খসড়া নীতিমালা তৈরি করেন। এরই ভিত্তিতে চূড়ান্ত নীতিমালা করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক মো. নোমান উর রশীদ এবং যুগ্ম সচিব (কলেজ) মো. মফিজুল ইসলাম।
খসড়া নীতিমালায় বলা হয়, তিন সদস্যের এই আহ্বায়ক কমিটি অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ পদে আবেদনকারীদের কাছ থেকে আবেদন নিয়ে মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে ফিটলিস্ট তৈরি করবে। বিষয়ের আনুপাতিক হারে কমিটি প্রয়োজনীয় সংখ্যক অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের নামের ফিটলিস্ট প্রস্তুত করবে। চাকরিতে নূ্যনতম ২০ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কর্মকর্তা অধ্যক্ষ এবং ১৫ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কর্মকর্তা উপাধ্যক্ষ পদে নিয়োগ লাভের জন্য আবেদন করতে পারবেন। তাঁদের যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত ফরমে শিক্ষাসচিব বা মন্ত্রণালয় বরাবর আবেদন করতে হবে। আবেদনকারীর বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন (এসিআর) সন্তোষজনক হতে হবে। কর্মকর্তাদের যোগ্যতার পাশাপাশি সততা, দেশপ্রেম, সাহস, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা বিবেচনা করে ফিটলিস্ট তৈরি করা হবে।
অধ্যক্ষ হওয়ার যোগ্যতা : ফিটলিস্ট অনুযায়ী প্রথমত 'সি', 'ডি' ও 'ই' ক্যাটাগরির কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে এক বছর চাকরির অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কর্মকর্তাকে 'বি' ক্যাটাগরির কলেজে পদায়ন করা যাবে। 'বি' ক্যাটাগরির কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে এক বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কর্মকর্তাকে 'এ' ক্যাটাগরির কলেজে পদায়ন করা যাবে। এ ছাড়া অধ্যক্ষ হিসেবে তিন বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কর্মকর্তাকেও 'এ' ক্যাটাগরির কলেজে পদায়ন করা যাবে। তবে যাঁরা উপাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন, তাঁদের বিষয়ে সময়সীমা শিথিল করা যেতে পারে। আর অবসর উত্তর ছুটিতে যাওয়ার এক বছর আগে কর্তৃপক্ষ চাইলে কোনো কর্মকর্তাকে যেকোনো কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন করতে পারবে। এ ছাড়া ফিটলিস্টে অন্তর্ভুক্ত পিএইচডি ডিগ্রিধারী অধ্যাপককে সরাসরি যেকোনো ক্যাটাগরির কলেজের অধ্যক্ষ করা যাবে। একই বিষয়ে (সাবজেক্ট) অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োজিত কনিষ্ঠ কর্মকর্তার অধীনে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যাবে না।
উপাধ্যক্ষ হওয়ার যোগ্যতা : উপাধ্যক্ষের পদায়নের ক্ষেত্রে ফিটলিস্টে অন্তর্ভুক্ত পিএইচডি ডিগ্রিধারী অধ্যাপককে সরাসরি যেকোনো ক্যাটাগরির কলেজে উপাধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন করা যাবে। সহযোগী অধ্যাপক পদমর্যাদার কর্মকর্তাকে প্রথমত 'সি', 'ডি' ও 'ই' ক্যাটাগরির কলেজে উপাধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন করতে হবে। 'সি', 'ডি' ও 'ই' ক্যাটাগরির কলেজে উপাধ্যক্ষ হিসেবে দুই বছরের চাকরির অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কর্মকর্তাকে 'এ' ও 'বি' ক্যাটাগরির কলেজে উপাধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন করা যাবে। তবে একই বিষয়ে অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োজিত কনিষ্ঠ কর্মকর্তার অধীনে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে উপাধ্যক্ষ, সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যাবে না।
No comments