লিবিয়া এখন কোন পথে

লিবীয় নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফির মৃত্যুর পর দেশটির জনগণকে এখন নতুন কিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সব পক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি সরকার গঠন করাই এখন লিবিয়ার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এছাড়া নয়া সংবিধান প্রণয়ন, অস্ত্র সংগ্রহ, ন্যাটোকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করা এবং বিদেশ থেকে জাতীয় অর্থ-সম্পদ ফিরিয়ে আনার মতো চ্যালেঞ্জগুলোকেও কোনোভাবেই ছোট করে দেখা যাবে না বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। বিবিসি, এএফপি, রয়টার্স


গাদ্দাফির মৃত্যুর পর জনগণের প্রত্যাশা, ভবিষ্যত্ সরকার সবার মতকে গুরুত্ব দেবে। লিবিয়ার জাস্টিস অ্যান্ড ডেমোক্রেসি পার্টির প্রধান আল হাদি সুলুফ বলেছেন, নয়া সংবিধান প্রণয়ন করাই হলো এখন দেশের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তিনি সংবিধান প্রণয়ন প্রসঙ্গে আরও বলেছেন, আমরা এমন এক সংবিধান প্রণয়ন করতে চাই যা হবে আধুনিক যুগের সঙ্গে মানানসই এবং ভবিষ্যতে সবকিছুই হবে আইনের ভিত্তিতে। লিবিয়ায় এত দিন কোনো সংবিধান ছিল না বলে তিনি জানান।
লিবিয়ার রাজনৈতিক নেতা ইদ্রিস আবদিস বলেছেন, জনগণের কাছে যেসব অস্ত্র রয়েছে সেগুলো সংগ্রহ করাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। দেশে সেনাবাহিনী গঠিত হওয়ার পরপরই সব অস্ত্র জমা নেয়া হবে বলে তিনি জানান। লিবিয়ার বেনগাজি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিজ্ঞানের অধ্যাপক মোহাম্মদ মাহমুদ শারকাসির মতে, নয়া সরকার গঠনকে
সবচেয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। তিনি বলেন, গত ৪০ বছর ধরে লিবিয়ার জনগণকে দেশ পরিচালনায় অংশগ্রহণের কোনো সুযোগ দেয়া হয়নি। এতদিন তাদের ওপর সবকিছুই চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। সরকার গঠনের জন্য অনেক বিষয় মাথায় রাখতে হবে। মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী এগোতে হবে।
লিবিয়ার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক বিশেষজ্ঞ আলা বিন দারদাফের মতে, নয়া সরকারকে বিভিন্ন দেশে জব্দ হওয়া সম্পত্তি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করতে হবে এবং এ ক্ষেত্রে পাশ্চাত্যের দেশগুলো গড়িমসি করতে পারে। এই বিষয়টিকে কাজে লাগিয়ে তারা লিবিয়ার আভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের চেষ্টা করতে পারে। লিবিয়ার জাতীয় অর্থ আটকে রাখার আর কোনো যুক্তি পাশ্চাত্যের কাছে নেই বলে তিনি জানান।
অনলাইন নিউজপেপার প্যান আফ্রিকানের সম্পাদক আবাইউমি আজিকিউয়ি বার্তাসংস্থা প্রেসটিভিকে দেয়া সাক্ষাত্কারে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো সহজে লিবিয়া ত্যাগ করবে বলে মনে হয় না। কারণ লিবিয়ায় বিপুল পরিমাণ তেল মজুদ রয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও ফ্রান্স লিবিয়ার তেল সম্পদ কুক্ষিগত করতে চায়। ওই সব দেশ এ পর্যন্ত ১২ হাজার কোটি ডলার আটকে দিয়েছে এসব দেশ।
ওই সব দেশ এখন লিবিয়ায় গ্যাস অনুসন্ধানের কাজ শুরু করেছে। সব মিলিয়ে লিবিয়ার জনগণ পুরোপুরি স্বাধীনভাবে পথ চলতে পারবে বলে মনে হয় না।

No comments

Powered by Blogger.