নতুন লিবিয়া গঠনে বিশ্ব নেতাদের আহবান

তুন লিবিয়া গঠনে আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্বনেতারা। মুয়াম্মার গাদ্দাফির নিহত হওয়ার মধ্য দিয়ে দেশটিতে নতুন দিনের সূচনা হয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন তাঁরা। এ সফলতায় লিবিয়ার শাসনভারের দায়িত্বে থাকা ট্রানজিশনাল কাউন্সিলকে অভিনন্দন জানিয়ে দেশটির ভেঙে পড়া অর্থনীতিতে পুনর্গঠনে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্বনেতারা। লিবিয়াজুড়ে চলমান বিশৃঙ্খল বিজয়োৎসবে শৃঙ্খলা ফেরানোর ওপরও জোর দিয়েছেন তাঁরা।
এদিকে গাদ্দাফির মৃত্যুর মধ্য দিয়ে তাঁর শাসনামলের চূড়ান্ত পতন ঘটায় বিশ্বব্যাপী ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। তবে এর মধ্যে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে নতুন করে রাজনৈতিক সহিংসতারও আশঙ্কা করছেন অনেকে।


এ পরিপ্রেক্ষিতে 'লিবিয়া যাতে আরেকটি ইরান না হয়' সে ব্যাপারে ট্রানজিশনাল কাউন্সিলের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাজ করা দরকার বলে মনে করেন অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী কেভিন রাড। ফিলিপাইন সফররত রাড গতকাল শুক্রবার বলেন, 'জাতি গঠনসহ লিবিয়ার গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে গড়ে তোলার কাজটি হবে কঠিন ও জটিল। এ প্রক্রিয়ায় অনেক বাধাও আসবে।'
গাদ্দাফিবিরোধী বিক্ষোভের শুরুতে চীন বিদ্রোহীদের বিপক্ষে অবস্থান নিলেও লিবিয়ার নতুন সরকারের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেছে তারা। চীনা রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে 'স্ট্রংম্যান' (লৌহ মানব) পরিবর্তে গাদ্দাফির নামের পাশে যোগ হয়েছে 'ম্যাডম্যান' (উন্মাদ) বিশেষণ। গাদ্দাফির মৃত্যুর প্রতিক্রিয়ায় চীনা দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জিয়াং উই বলেন, 'লিবিয়ার ইতিহাসের খাতায় নতুন পাতা খোলা হলো।' ইউরোপীয় নেতারাও গাদ্দাফির পতনে সন্তোষ প্রকাশ করে লিবিয়ার ইতিবাচক ভবিষ্যতের ব্যাপারে আশাবাদ জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার গাদ্দাফির মৃত্যুর খবর শোনার পর পরই জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল নিজেকে 'ভারমুক্ত ও খুব সুখী' মনে হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, 'শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য রাজনৈতিক পুনর্জন্মের পথ উন্মুক্ত হলো লিবিয়ায়।'
গাদ্দাফি অনুগত বাহিনীর বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী ব্রিটেন ও ফ্রান্সও মনে করে, লিবীয় নেতার মৃত্যুর মধ্য দিয়ে দেশটিতে অধিকতর গণতন্ত্রের দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে। এ অবস্থায় প্রাথমিকভাবে গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য বিশেষভাবে আহ্বান জানিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। গাদ্দাফির মৃত্যুর খবরে তাৎক্ষণিকভাবে লিবিয়ার সদস্যপদের ওপর থেকে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করেছে আফ্রিকান ইউনিয়ন।
ভ্যাটিকান সিটির পক্ষ থেকে গাদ্দাফির জামানার অবসানকে 'দীর্ঘ ও বিয়োগান্ত' লড়াইয়ের সমাপ্তি বলে বর্ণনা করা হয়েছে। জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন বলেছেন, 'এই শেষের মধ্য দিয়ে শুরুর সূচনা হলো।' সূত্র : এপি।

No comments

Powered by Blogger.