গ্যাস বিদ্যুত্ পানি সঙ্কটে অতিষ্ঠ চট্টগ্রামবাসী by জাহিদুল করিম কচি ও সোহাগ কুমার বিশ্বাস
গ্যাস, বিদ্যুত্ ও পানি সঙ্কটে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে চট্টগ্রামের জনজীবন। দিনে অন্তত ২০/২৫ বার লোডশেডিংয়ের শিকার হচ্ছেন নগরবাসী। ট্রান্সফরমার বিকল হয়ে কোনো কোনো এলাকা ৫ থেকে ৭ দিন পর্যন্ত বিদ্যুত্ বিচ্ছিন্ন থাকছে। সম্প্রতি রাউজান তাপবিদ্যুত্ কেন্দ্রের জন্য বরাদ্দকৃত গ্যাস কমিয়ে বহুজাতিক কোম্পানি কর্ণফুলী সার কারখানায় সরবরাহ করার সরকারি সিদ্ধান্তে চলমান বিদ্যুত্ সঙ্কট আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। গ্যাসের অভাবে নগরীর বিভিন্ন আবাসিক এলকার চুলা জ্বলছে না। সিএনজি স্টেশনগুলোতে পর্যাপ্ত গ্যাস না পাওয়ায় গণপরিবহনে বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। গ্যাস ও বিদ্যুত্ সঙ্কটে বন্দর নগরীর শিল্প খাতে নেমে এসেছে ভয়াবহ বিপর্যয়।
গ্যাসের অভাবে বন্ধ হতে বসেছে অনেক শিল্প-কারখানা। কয়েকশ’ নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠান সংযোগ না পেয়ে উত্পাদনে যেতে পারছে না। গার্মেন্ট শিল্পেরও করুণ দশা।
অন্যদিকে ওয়াসার পানির চরম সঙ্কট দিন দিন ঘনীভূত হচ্ছে। আগ্রাবাদ, হালিশহর, নাসিরাবাদ, পাথরঘাটা, বাকলিয়া, পাঁচলাইশসহ নগরীর অন্তত ৩০টি ওয়ার্ডে পানির জন্য হাহাকার চলছে। সব মিলিয়ে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে নগরীর ৪০ লাখ মানুষের জীবনযাত্রা।
গত দুই সপ্তাহ ধরে চট্টগ্রামের বাতাসে ২ থেকে ৩ ডিগ্রি আর্দ্রতা বেড়েছে। এই দুই সপ্তাহের মধ্যে গড় তাপমাত্রা ছিল ৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়ার প্রতিকূলতা বা ভ্যাপসা গরমের সঙ্গে বাড়ছে বিদ্যুতের চাহিদা।
অন্যদিকে চট্টগ্রামের বিদ্যুত্ কেন্দ্রগুলোর উত্পাদন ক্ষমতা কমছে। এতে করে অহসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে লোডশেডিং। নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডে সমানভাবে লোডশেডিং দেয়া হচ্ছে। নগরী ও আশপাশের এলাকায় দিন-রাতে ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টাই বিদ্যুত্ থাকে না। বিদ্যুত্ সঙ্কট ও মান্ধাতা আমলের ট্রান্সফরমার বিকলসহ যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে নগরীর বিভিন্ন এলাকা দিনের পর দিন থাকছে বিদ্যুিবহীন। নগরীর পাথরঘাটা, পাঁচলাইশ, প্রবর্তক, খুলশী, আগ্রাবাদ, লালখান বাজার, মোগলটুলী, সিডিএ, হালিশহর, ঝাউতলা, পাহাড়তলীসহ বিভিন্ন এলাকায় ভয়াবহ বিদ্যুত্ সঙ্কট চলছে। বিদ্যুত্ না থাকায় এসব এলাকায় অবস্থিত ওয়াসার পাম্প হাউসগুলো এক রকম অকেজো হয়ে পড়েছে। এতে করে নগরীর বৃহত্ একটি অংশে পানি সঙ্কট মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। নগরীতে ৫০ কোটি লিটার পানির চাহিদার বিপরীতে চট্টগ্রাম ওয়াসা মাত্র ২০ কোটি লিটার পানি উত্পাদনে সক্ষম। বিদ্যুত্ সঙ্কটের কারণে উত্পাদন আরও হ্রাস পেয়েছে। গত দুই সপ্তাহ ধরে ওয়াসার পানি উত্পাদন ক্ষমতা ১৫ কোটি লিটারেরও নিচে নেমে এসেছে। এতে করে পানির সঙ্কট আরও ঘনীভূত হয়েছে। নগরীর অধিকাংশ এলাকায় সাধারণ মানুষকে পানির জন্য দীর্ঘ লাইন ধরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় ব্যয় করতে হচ্ছে। সারাদিন অপেক্ষার পরও অনেক সময় পানির দেখা মিলছে না। নগরীর ৪০ লাখ মানুষের মধ্যে অন্তত ১৫ লাখ মানুষই ওয়াসার পানির মুখ দেখছে না। বন্দর নগরীর হালিশহর, আগ্রাবাদ, সিডিএ, মোগলটুলী, নাসিরাবাদ, লালখান বাজার, ডবলমুরিং, খুলশী, শুলকবহর ও জামালখান এলাকায় চলছে পানির জন্য হাহাকার।
বিদ্যুত্ বিতরণ দক্ষিণাঞ্চল সূত্র জানিয়েছে, চট্টগ্রামে পিক আওয়ারে বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে প্রায় সাড়ে ৭শ’ মেগাওয়াট। সেখানে সরবরাহ রয়েছে ৫শ’ থেকে সাড়ে ৫শ’ মেগাওয়াট। এর মধ্যে ৩৫০ থেকে ৩৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ চট্টগ্রামের বিদ্যুত্ কেন্দ্রগুলো থেকে উত্পাদন হচ্ছে এবং ১৮০ থেকে ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ জাতীয় গ্রিড থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে। বাকি ২২০ থেকে ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ লোডশেডিং দিয়ে সমন্বয় করছে পিডিবি। গত দুই সপ্তাহ ধরে প্রায় একই নিয়মে চলছে চট্টগ্রামের বিদ্যুত্ সরবরাহ।
পিডিবি সূত্র জানায়, প্রধানত গ্যাস সঙ্কট ও যান্ত্রিক ত্রুটির কারণেই স্থানীয় বিদ্যুত্ কেন্দ্রগুলো পুরোদমে উত্পাদনে যেতে পারছে না। গ্যাসের অভাবে ২১০ মেগাওয়াট উত্পাদন ক্ষমতাসম্পন্ন রাউজান তাপবিদ্যুত্ কেন্দ্রের ১ নম্বর ইউনিট বন্ধ হয়ে গেছে। কাপ্তাই পানিবিদ্যুত্ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিটের মধ্যে ৩ নম্বর ইউনিটটি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। বাকি ৪ ইউনিটে ১৬০/১৭০ মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুত্ উত্পাদন হচ্ছে না। সীতাকুণ্ডের রিজেন্ট পাওয়ার প্লান্টে ১৮ থেকে ২০ মেগাওয়াট এবং কর্ণফুলী মালঞ্চ পাওয়ার প্লান্টে ১০ থেকে ১২ মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুত্ উত্পাদন হচ্ছে না বলে জানিয়েছে পিডিবি।
এদিকে বিদ্যুত্ কেন্দ্রের জন্য সরবরাহকৃত গ্যাস কমিয়ে বহুজাতিক কোম্পানি কর্ণফুলী সার কারখানায় সরবরাহ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এতে করে চলমান বিদ্যুত্ সঙ্কট আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা করছেন খোদ পিডিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। তারা জানান, সরকারের হঠকারী সিদ্ধান্তে কখনও সার কারখানা বন্ধ রেখে বিদ্যুত্ কেন্দ্র আবার কখনও বিদ্যুত্ কেন্দ্র বন্ধ রেখে সার কারখানা চালু করা হয়। এতদিন সিউএফএল বন্ধ রেখে চাহিদার দুই-তৃতীয়াংশ গ্যাস সরবরাহ করে চালু রাখা হয়েছিল রাউজান তাপবিদ্যুত্ কেন্দ্রটি। গত মঙ্গলবার থেকে সরকারি সিদ্ধান্তে এই বিদ্যুত্ কেন্দ্র থেকে দুই মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে দেয়া হয়।
এদিকে ৩১৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের চাহিদার বিপরীতে পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ২০০ মিলিয়ন ঘনফুট। এতে করে নগরীতে প্রতিদিনই গ্যাস সঙ্কট দেখা দিচ্ছে। সাংগু গ্যাসফিল্ড থেকে আগে যেখানে প্রতিদিন দুইশ’ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্পাদন হতো, এখন সেখানে মাত্র ৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্পাদন করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বাখরাবাদ গ্যাস সিস্টেমস লিমিটেডের (বিজিসিএল) অন্যান্য গ্যাসফিল্ডেও উত্পাদন কমে গেছে।
এদিকে বিদ্যুত্ ও গ্যাস সঙ্কটে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বন্দর নগরীর ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন চট্টগ্রাম চেম্বার ও বিজিএমই নেতারা। তারা জানান, গ্যাস ও বিদ্যুত্ সঙ্কটের কারণে চট্টগ্রামের শিল্প খাতে বিপর্যয় নেমে এসেছে। কাঙ্ক্ষিত ভূমিকা রাখতে না পারায় কেজিডিসিএলের প্রতি ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেন চেম্বার নেতারা। বৃহস্পতিবার চেম্বারে অনুষ্ঠিত এক সভায় শিল্প খাতের চরম দুরবস্থায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মোরশেদ মুরাদ ইব্রাহিম।
চট্টগ্রামের গ্যাস সঙ্কটের ব্যাপারে পেট্রোবাংলার পরিচালক (অপারেশন) ড. মোল্লা মোবিরুল হোসেন জানান, চাহিদানুযায়ী সম্পূর্ণরূপে গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব নয়। তবে ২০১২ সালের মধ্যে সেমুতাং, সালদা ও সন্তোষ থেকে ৮০ থেকে ১০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস চট্টগ্রামে সরবরাহ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
বিজিএমইএ’র প্রথম সহ-সভাপতি নাসির উদ্দিন জানান, বিদ্যুত্ বিপর্যয়ের ফলে রফতানিমুখী গার্মেন্ট শিল্প ও উত্পাদনমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো মারাত্মক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হচ্ছে। উত্পাদন ক্ষমতা হ্রাস পাওয়ায় রফতানি পণ্যগুলো জাহাজিকরণ করা যাচ্ছে না। এতে করে রফতানি আদেশ বাতিলসহ স্টক লসের সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
অন্যদিকে ওয়াসার পানির চরম সঙ্কট দিন দিন ঘনীভূত হচ্ছে। আগ্রাবাদ, হালিশহর, নাসিরাবাদ, পাথরঘাটা, বাকলিয়া, পাঁচলাইশসহ নগরীর অন্তত ৩০টি ওয়ার্ডে পানির জন্য হাহাকার চলছে। সব মিলিয়ে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে নগরীর ৪০ লাখ মানুষের জীবনযাত্রা।
গত দুই সপ্তাহ ধরে চট্টগ্রামের বাতাসে ২ থেকে ৩ ডিগ্রি আর্দ্রতা বেড়েছে। এই দুই সপ্তাহের মধ্যে গড় তাপমাত্রা ছিল ৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়ার প্রতিকূলতা বা ভ্যাপসা গরমের সঙ্গে বাড়ছে বিদ্যুতের চাহিদা।
অন্যদিকে চট্টগ্রামের বিদ্যুত্ কেন্দ্রগুলোর উত্পাদন ক্ষমতা কমছে। এতে করে অহসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে লোডশেডিং। নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডে সমানভাবে লোডশেডিং দেয়া হচ্ছে। নগরী ও আশপাশের এলাকায় দিন-রাতে ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টাই বিদ্যুত্ থাকে না। বিদ্যুত্ সঙ্কট ও মান্ধাতা আমলের ট্রান্সফরমার বিকলসহ যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে নগরীর বিভিন্ন এলাকা দিনের পর দিন থাকছে বিদ্যুিবহীন। নগরীর পাথরঘাটা, পাঁচলাইশ, প্রবর্তক, খুলশী, আগ্রাবাদ, লালখান বাজার, মোগলটুলী, সিডিএ, হালিশহর, ঝাউতলা, পাহাড়তলীসহ বিভিন্ন এলাকায় ভয়াবহ বিদ্যুত্ সঙ্কট চলছে। বিদ্যুত্ না থাকায় এসব এলাকায় অবস্থিত ওয়াসার পাম্প হাউসগুলো এক রকম অকেজো হয়ে পড়েছে। এতে করে নগরীর বৃহত্ একটি অংশে পানি সঙ্কট মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। নগরীতে ৫০ কোটি লিটার পানির চাহিদার বিপরীতে চট্টগ্রাম ওয়াসা মাত্র ২০ কোটি লিটার পানি উত্পাদনে সক্ষম। বিদ্যুত্ সঙ্কটের কারণে উত্পাদন আরও হ্রাস পেয়েছে। গত দুই সপ্তাহ ধরে ওয়াসার পানি উত্পাদন ক্ষমতা ১৫ কোটি লিটারেরও নিচে নেমে এসেছে। এতে করে পানির সঙ্কট আরও ঘনীভূত হয়েছে। নগরীর অধিকাংশ এলাকায় সাধারণ মানুষকে পানির জন্য দীর্ঘ লাইন ধরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় ব্যয় করতে হচ্ছে। সারাদিন অপেক্ষার পরও অনেক সময় পানির দেখা মিলছে না। নগরীর ৪০ লাখ মানুষের মধ্যে অন্তত ১৫ লাখ মানুষই ওয়াসার পানির মুখ দেখছে না। বন্দর নগরীর হালিশহর, আগ্রাবাদ, সিডিএ, মোগলটুলী, নাসিরাবাদ, লালখান বাজার, ডবলমুরিং, খুলশী, শুলকবহর ও জামালখান এলাকায় চলছে পানির জন্য হাহাকার।
বিদ্যুত্ বিতরণ দক্ষিণাঞ্চল সূত্র জানিয়েছে, চট্টগ্রামে পিক আওয়ারে বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে প্রায় সাড়ে ৭শ’ মেগাওয়াট। সেখানে সরবরাহ রয়েছে ৫শ’ থেকে সাড়ে ৫শ’ মেগাওয়াট। এর মধ্যে ৩৫০ থেকে ৩৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ চট্টগ্রামের বিদ্যুত্ কেন্দ্রগুলো থেকে উত্পাদন হচ্ছে এবং ১৮০ থেকে ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ জাতীয় গ্রিড থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে। বাকি ২২০ থেকে ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ লোডশেডিং দিয়ে সমন্বয় করছে পিডিবি। গত দুই সপ্তাহ ধরে প্রায় একই নিয়মে চলছে চট্টগ্রামের বিদ্যুত্ সরবরাহ।
পিডিবি সূত্র জানায়, প্রধানত গ্যাস সঙ্কট ও যান্ত্রিক ত্রুটির কারণেই স্থানীয় বিদ্যুত্ কেন্দ্রগুলো পুরোদমে উত্পাদনে যেতে পারছে না। গ্যাসের অভাবে ২১০ মেগাওয়াট উত্পাদন ক্ষমতাসম্পন্ন রাউজান তাপবিদ্যুত্ কেন্দ্রের ১ নম্বর ইউনিট বন্ধ হয়ে গেছে। কাপ্তাই পানিবিদ্যুত্ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিটের মধ্যে ৩ নম্বর ইউনিটটি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। বাকি ৪ ইউনিটে ১৬০/১৭০ মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুত্ উত্পাদন হচ্ছে না। সীতাকুণ্ডের রিজেন্ট পাওয়ার প্লান্টে ১৮ থেকে ২০ মেগাওয়াট এবং কর্ণফুলী মালঞ্চ পাওয়ার প্লান্টে ১০ থেকে ১২ মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুত্ উত্পাদন হচ্ছে না বলে জানিয়েছে পিডিবি।
এদিকে বিদ্যুত্ কেন্দ্রের জন্য সরবরাহকৃত গ্যাস কমিয়ে বহুজাতিক কোম্পানি কর্ণফুলী সার কারখানায় সরবরাহ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এতে করে চলমান বিদ্যুত্ সঙ্কট আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা করছেন খোদ পিডিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। তারা জানান, সরকারের হঠকারী সিদ্ধান্তে কখনও সার কারখানা বন্ধ রেখে বিদ্যুত্ কেন্দ্র আবার কখনও বিদ্যুত্ কেন্দ্র বন্ধ রেখে সার কারখানা চালু করা হয়। এতদিন সিউএফএল বন্ধ রেখে চাহিদার দুই-তৃতীয়াংশ গ্যাস সরবরাহ করে চালু রাখা হয়েছিল রাউজান তাপবিদ্যুত্ কেন্দ্রটি। গত মঙ্গলবার থেকে সরকারি সিদ্ধান্তে এই বিদ্যুত্ কেন্দ্র থেকে দুই মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে দেয়া হয়।
এদিকে ৩১৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের চাহিদার বিপরীতে পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ২০০ মিলিয়ন ঘনফুট। এতে করে নগরীতে প্রতিদিনই গ্যাস সঙ্কট দেখা দিচ্ছে। সাংগু গ্যাসফিল্ড থেকে আগে যেখানে প্রতিদিন দুইশ’ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্পাদন হতো, এখন সেখানে মাত্র ৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্পাদন করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বাখরাবাদ গ্যাস সিস্টেমস লিমিটেডের (বিজিসিএল) অন্যান্য গ্যাসফিল্ডেও উত্পাদন কমে গেছে।
এদিকে বিদ্যুত্ ও গ্যাস সঙ্কটে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বন্দর নগরীর ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন চট্টগ্রাম চেম্বার ও বিজিএমই নেতারা। তারা জানান, গ্যাস ও বিদ্যুত্ সঙ্কটের কারণে চট্টগ্রামের শিল্প খাতে বিপর্যয় নেমে এসেছে। কাঙ্ক্ষিত ভূমিকা রাখতে না পারায় কেজিডিসিএলের প্রতি ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেন চেম্বার নেতারা। বৃহস্পতিবার চেম্বারে অনুষ্ঠিত এক সভায় শিল্প খাতের চরম দুরবস্থায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মোরশেদ মুরাদ ইব্রাহিম।
চট্টগ্রামের গ্যাস সঙ্কটের ব্যাপারে পেট্রোবাংলার পরিচালক (অপারেশন) ড. মোল্লা মোবিরুল হোসেন জানান, চাহিদানুযায়ী সম্পূর্ণরূপে গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব নয়। তবে ২০১২ সালের মধ্যে সেমুতাং, সালদা ও সন্তোষ থেকে ৮০ থেকে ১০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস চট্টগ্রামে সরবরাহ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
বিজিএমইএ’র প্রথম সহ-সভাপতি নাসির উদ্দিন জানান, বিদ্যুত্ বিপর্যয়ের ফলে রফতানিমুখী গার্মেন্ট শিল্প ও উত্পাদনমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো মারাত্মক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হচ্ছে। উত্পাদন ক্ষমতা হ্রাস পাওয়ায় রফতানি পণ্যগুলো জাহাজিকরণ করা যাচ্ছে না। এতে করে রফতানি আদেশ বাতিলসহ স্টক লসের সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
No comments