ঐতিহ্য সংসদের গোলটেবিল : আবুল হোসেন ফান্ড কালেক্টর, তাকে সরানোর ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর নেই : গয়েশ্বর

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেনকে শাস্তি দেয়ার ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেই। কারণ তিনি একজন ফান্ড কালেক্টর। তার কালেকশন করা ফান্ডের ভাগ অনেকেই পান। তাকে শাস্তি দিলে অনেক কথাই বের হয়ে যাবে। তিনি বলেন, প্রতিহিংসার রাজনীতির শুরু দুর্নীতি থেকে। সরকার দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত সম্পদ ভোগ করার জন্য ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে চায়। গণতন্ত্রের পথ তারা রুদ্ধ করছে। তিনি ১৫ আগস্টের ঘটনার জন্য সমবেদনা প্রকাশ করে বলেন, গণতন্ত্রের পথ রুদ্ধ করে বাকশাল কায়েম না করলে হয়তো শেখ মুজিবুর রহমানকে এমন মর্মান্তিক পরিণতি বরণ করতে হতো না।


তিনি আরও বলেন, বর্তমানে যারা প্রতিপক্ষ রাজনীতিবিদদের ডান্ডাবেড়ি পরাচ্ছেন, তাদের কপালে ডান্ডাবেড়িও হয়তো জুটবে না। তিনি বলেন, যারা সংসদে গিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে সংযুক্ত করার প্রস্তাব করতে চাইছে, তারা ‘না জয়যুক্ত হয়েছে’ ‘না জয়যুক্ত হয়েছে’ আওয়ামী লীগের কৌশলের ফাঁদে পা দিয়ে এ ব্যবস্থাকে কবর দিতে চাচ্ছেন। এ প্রস্তাব সরকারি দলকেই আনতে হবে এবং পাস করতে হবে। বিরোধীদলের এ ক্ষেত্রে কিছুই করার নেই।
গতকাল সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ঐতিহ্য সংসদের উদ্যোগে আয়োজিত ‘প্রতিহিংসার রাজনীতি : আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিচারপতি মোহাম্মদ
আবদুর রউফের সভাপতিত্বে ও ঐতিহ্য সংসদের আহ্বায়ক শেখ আবুল কাসেম মিঠুনের সঞ্চালনায় গোলটেবিল বৈঠকে বক্তব্য রাখেন, প্রফেসর ড. হাসান মাহমুদ, প্রফেসর ড. তারেক শামসুর রহমান, সাংবাদিক সাদেক খান, কবি আসাদ বিন হাফিজ, কথাসাহিত্যিক মাহবুবুল হক, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন নেতা শরীফ আবদুল গোফরান, কবি সোলায়মান আহসান, কবি কামার ফরিদ, সাংবাদিক হারুন ইবনে শাহাদাত প্রমুখ।
প্রফেসর ড. হাসান মাহমুদ বলেন, বর্তমান সরকার অঘোষিত বাকশাল কায়েম করেছে। যুদ্ধাপরাধের নামে যাদের আটক করেছে তারা যদি রাজনীতি না করতেন কিংবা তাদের দল যদি শক্তিশালী না হতো, তাদের আটক করা হতো না। প্রফেসর ড. তারেক শামসুর রহমান বলেন, একজন রাজনৈতিক নেতাকে যখন মাথায় হেলমেট ও ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে আদালতে হাজির করা হয়, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের একজন ছাত্র হিসেবে তখন আমি কষ্ট পাই। গণতন্ত্রের কথা মুখে বলা হয় অথচ বিরোধীদলকে আস্থায় নেয়া হয় না, তখন আর গণতন্ত্র থাকে না।
সাদেক খান বলেন, জনগণের সঙ্গে রাষ্ট্রের যে চুক্তি বা দলিল তা নষ্ট হয়ে গেছে। জনগণ তার প্রতিবাদ করতে জেগে উঠেছে। আসাদ বিন হাফিজ বলেন, হিংসা-প্রতিহিংসার ফলাফল কোনোদিন ভালো হয় না। সবার উচিত সাদাকে সাদা এবং কালোকে কালো দেখা। মাহবুবুল হক বলেন, আমাদের শেখ মুজিবুর রহমানের দিকে ফিরে যেতে হবে। তিনি যুদ্ধাপরাধী ও দালাল আইনে আটকদের ক্ষমা করে দিয়েছেন। কিন্তু শেখ হাসিনা তার আদর্শ থেকে দূরে সরে গেছেন।
সভাপতির বক্তব্যে বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুর রউফ বলেন, বর্তমান সরকার নিজের বুদ্ধিতে চলে বলে মনে হয় না। তাই যদি চলত তবে প্রধানমন্ত্রী রোডমার্চের গাড়ির নম্বর নোট করতেন না। এটা প্রধানমন্ত্রীর কাজ নয়, ট্রাফিক পুলিশের কাজ। তিনি বলেন, বিরোধী দলকে আস্থায় নিয়ে সরকারকে দেশের সঙ্কট উত্তরণে কাজ করতে হবে। তাদের সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে। যারা এদেশকে রণক্ষেত্রে পরিণত করতে চায় সেই পরাশক্তির কথায় চললে দেশে কোনোদিন গণতন্ত্র ও শান্তি প্রতিষ্ঠা হবে না।

No comments

Powered by Blogger.