শিবচরে ভাইয়ের হাতে ভাই নাচোলে বাবা ও মেয়ে আগৈলঝাড়ায় গৃহবধূ খুন

মাদারীপুরের শিবচরে ভাইয়ের হাতে ভাই, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে বাবা ও মেয়ে এবং বরিশালের আগৈলঝাড়ায় গৃহবধূ খুন হয়েছেন। বিস্তারিত প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে :শিবচর (মাদারীপুর) : মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার বাঁশকান্দি ইউনিয়নে মৃজারচর মোলাকান্দি এলাকায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে সত্ ভাইয়ের হাতে খুন হয়েছে দেড় বছরের অবুঝ ভাই। এছাড়া ধারালো অস্ত্রের আঘাতে সত্ মা ও নিজের বোন এখন হাসপাতালে চিকিত্সাধীন। ঘটনার পর থেকে ঘাতক রাজিব মোল্লা পলাতক।


পুলিশ, পারিবারিক ও স্থানীয় সূত্র জানায়, পারিবারিক কলহের জেরে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজিব মোল্লা সত্ ভাই ইব্রাহিম মোল্লাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাতে থাকে। শিশুটির চিত্কারে তার মা নাজমা বেগম (৩৫) এগিয়ে এলে রাজীব সত্ মাকেও এলোপাতাড়ি কোপায়। এ সময় নিজ বোন বাতাসী সত্ মাকে বাঁচাতে এলে রাজিব বোনকেও কোপায়। পরে রাজীব পালিয়ে যায়। আহতদের চিত্কারে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে শিশু ইব্রাহিমকে উদ্ধার করে হাতপাতালে আনে। নাজমা বেগম ও বাতাসীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায়
প্রথমে শিবচর ও পরে ফরিদপুর মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। ফরিদপুর নেয়ার পথে শিশু ইব্রাহিম মারা যায়। শিবচর থানার ওসি আ. রাজ্জাক পিপিএম বলেন, ঘটনার পর থেকে রাজিব পলাতক রয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ : চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার পীরপুর গ্রামে গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হয়েছেন বাবা লজের আলী ও মেয়ে হাসেন বানু। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ সাত্তার নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে পীরপুর গ্রামের মজের আলীর ছেলে লজের আলীর বাড়িতে গিয়ে ডাক দেয় দুর্বৃত্তরা। লজের আলী বাড়ির দরজা খুলে বাইরে এলে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ সময় বাবাকে বাঁচাতে তার মেয়ে হাসেন বানু এগিয়ে এলে তাকেও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে পালিয়ে যায় ঘাতকরা। গতকাল সকালে নাচোল থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে। নিহত লজের আলীর ছেলে মুক্তারুল অভিযোগ করেছে, পূর্বশত্রুতার জেরে তার বোন হাসেন বানুর স্বামী ময়েজ উদ্দিন লোকজন দিয়ে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে। নাচোল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সাঈদ ইকবাল জানান, প্রাথমিকভাবে এই ডাবল মার্ডারের কোনো মোটিভ উদ্ধার করা যায়নি।
বরিশাল : গৌরনদী ও আগৈলঝাড়ায় ছাত্রলীগ ও যুবলীগ ক্যাডারদের হাতে নিহত দুুই স্কুলশিক্ষকের রক্তের দাগ না শুকাতেই আবারও আগৈলঝাড়ায় খুুন হলেন গৃৃহবধূ নুুরজাহান বেগম। গতকাল সকালে উপজেলার চয়গ্রামে গাছ কাটাকে কেন্দ্র ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তিনি খুুন হন। এ সময় গুরুতর জখম হন নিহতের স্বামী আলী আলম তোতা মিয়া। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ খুনি জাকির হাওলাদারকে গ্রেফতার করেছে।
নিহত নুুরজাহানের নাতি মশিউর রহমান স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, গতকাল সকালে আক্কাস আলী হাওলাদার তার দুই ছেলে জাকির ও হাফিজুল হাওলাদারকে নিয়ে বিরোধপূর্ণ জমির একটি গাব গাছ কাটতে আসে। এ সময় বৃৃদ্ধ তোতা মিয়া তাদের বাধা দিলে জাকির ধারালো দা দিয়ে তাকে কুপিয়ে জখম করে। স্বামীকে রক্ষা করতে এলে জাকির একই দা দিয়ে নূরজাহানকে এলাপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। আশপাশের লোকজন তাদের উদ্ধার করে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসে। চিকিত্সক নূরজাহানকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত তোতা মিয়ার অবস্থাও আশঙ্কাজনক। আগৈলঝাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অশোক কুমার নন্দী জানান, গাছ কাটার জেরে এ হত্যার ঘটনা ঘটেছে। হত্যাকারী জাকির হাওলাদারকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১২ অক্টোবর একই উপজেলায় প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় যুবলীগ ক্যাডারের হাতে নির্মমভাবে খুন হন স্কুলশিক্ষক শারমিন। এর কয়েক দিন আগে ছাত্রলীগ ক্যাডারদের হাতে খুন হন গৌরনদীর স্কুলশিক্ষক ফরিদ জমদ্দার।

No comments

Powered by Blogger.