গাদ্দাফিকে গুলি করেই হত্যা

ন্যাটোর বিমান হামলায় গুরুতর আহত অবস্থায় গ্রেফতার করার পর মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে লৌহমানব কর্নেল মুয়াম্মার গাদ্দাফিকে। লিবিয়ার বর্তমান শাসক ন্যাশনাল ট্রানজিশনাল কাউন্সিল (এনটিসি) যোদ্ধাদের হাতে জীবিত আটক হওয়ার পর কয়েক মিনিটের মধ্যেই ঘটে এই বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড। মৃত্যুযন্ত্রণায় কাতরানো অবস্থায় চারদিক ঘিরে ক্রুদ্ধ যোদ্ধাদের বিশৃঙ্খলা, চিৎকার-চেঁচামেচির মধ্যেই একজন তাকে গুলি করে। গাদ্দাফির সংক্ষিপ্ত সময়ের আটকাবস্থার ভিডিওচিত্রের অডিওতে গুলির শব্দ শোনা গেলেও ঠিক কে গুলি করেছে তা স্পষ্ট দেখা যায়নি। তবে গুলি করা হয়েছে গাদ্দাফির মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে।


কোনো কোনো সূত্রে বলা হয়, আল বিবি নামে এক যোদ্ধার গুলিতে গাদ্দাফি নিহত হয়েছেন। তার মৃতদেহ প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা করেছেন এমন একজন চিকিৎসকের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে খালিজ টাইম পত্রিকা। এছাড়া তার নাড়িভুঁড়িতেও একটি বুলেট রয়েছে বলে
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। তবে তার দেহের কোন স্থানে, কত রাউন্ড গুলি করা হয়েছে এবং কে গুলি করেছে সেটা এখনও অনিশ্চিত। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, গাদ্দাফিকে গুলি করেই হত্যা করা হয়েছে এবং তার দেহে গুলির ২৪টি চিহ্ন রয়েছে। যদিও লিবিয়ার বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মাহমুদ জিবরিল দাবি করেছেন, গাদ্দাফি ক্রসফায়ারে নিহত হয়েছেন। এদিকে নিহত গাদ্দাফির লাশ নিয়ে বিপাকে পড়েছে লিবিয়ার নতুন শাসকগোষ্ঠী_ এনটিসি। নিহত হওয়ার একদিন পার হলেও গতকাল রাত পর্যন্ত লাশ দাফনের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। বর্তমানে মৃতদেহ মিসরাতায় রাখা হয়েছে গোপন স্থানে। এনটিসির তরফে বলা হয়েছে, নিরাপত্তাজনিত কারণে অতি গোপনে গাদ্দাফিকে দাফন করা হবে।
গাদ্দাফির মৃতদেহ প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা করেছেন তার জন্ম ও মৃত্যুস্থান সিরতে শহরের চিকিৎসক ইব্রাহিম তিকা। আল-অ্যারাবিয়া টেলিভিশনকে তিনি বলেন, গাদ্দাফিকে জীবিত অবস্থায়ই ধরা হয়েছিল। পরে তাকে হত্যা করা হয়। তার অন্ত্রে একটি বুলেট পাওয়া গেছে। এই বুলেটই তার মৃত্যুর কারণ বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। বুলেটটি ঢুকেছে তার নাড়িভুঁড়িতে। এছাড়া তার মাথার একদিক দিয়ে একটি বুলেট ঢুকে অন্যদিক দিয়ে বের হয়ে গেছে। এর আগে ত্রিপোলিতে এক সংবাদ সম্মেলনে গাদ্দাফির পোস্টমর্টেম রিপোর্ট পড়ে শোনান এনটিসির প্রধানমন্ত্রী মাহমুদ জিবরিল। তিনি বলেন, গাদ্দাফিকে আহত অবস্থায় একটি স্যুয়ারেজ পাইপের ভেতর থেকে টেনে বের করে আনা হয়। এ সময় তিনি কোনো প্রতিরোধ গড়ে তোলেননি। এ সময় তার কাঁধ ছিল গুলিবিদ্ধ। এরপর একটি ট্রাকে তুলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় ক্রসফায়ারে তার মৃত্যু হয়। তবে গাদ্দাফির আটকাবস্থার ভিডিও ফুটেজগুলো বলছে, ট্রাকে ওঠানোর আগেই খুব কাছ থেকে গুলি করে গাদ্দাফিকে হত্যা করা হয়েছে। ওই পরিস্থিতিতে গাদ্দাফির কোনো সমর্থকের পক্ষে ঘটনাস্থলের ধারেকাছে ঘেঁষাও সম্ভব ছিল না। এ অবস্থায় গাদ্দাফির মৃত্যু ঘটনাকে রহস্যজনক অভিহিত করে বিষয়টি তদন্ত করার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন। কমিশন প্রধান নাভি পিল্লের মুখপাত্র রুপার্ট কলভিলে বলেন, গাদ্দাফির মৃত্যু কীভাবে হয়েছে সে ব্যাপারে চার-পাঁচটি বর্ণনা পাওয়া গেছে। বিষয়টি অবশ্যই তদন্ত করে দেখতে হবে। এর আগে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলিয়াম হেগ বলেন, ব্রিটেন কোনো বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডই সমর্থন করে না। যদিও গাদ্দাফির মৃত্যুর জন্য ব্রিটেনের কোনো দরদ নেই। এদিকে গাদ্দাফির মৃত্যুর পরিপ্রেক্ষিতে ন্যাটো তাদের লিবিয়া অভিযানের পরিসমাপ্তি ঘোষণা করেছে।
গাদ্দাফির শেষ মুহূর্তগুলো
বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এনটিসি যোদ্ধাদের প্রচণ্ড হামলার মুখে দেহরক্ষীদের নিয়ে ছোট্ট একটি গাড়িবহরে সিরতে শহর ছাড়ছিলেন লিবিয়ার ক্ষমতাচ্যুত শাসক গাদ্দাফি। শহরের বাইরে যেতেই গাড়িবহরে চলে ন্যাটোর বিমান হামলা। গুরুতর আহত হন গাদ্দাফি। ন্যাটো হামলায় ধ্বংস হয় বহরের সব গাড়ি। গাদ্দাফি আশ্রয় নেন স্যুয়ারেজ লাইনের বিশাল এক পাইপের ভেতর। সেখান থেকে তাকে খুঁজে বের করে আনে এনটিসি যোদ্ধারা। আলজাজিরা ও আল অ্যারাবিয়া টেলিভিশনে বৃহস্পতিবার রাতে প্রচার করা হয় গাদ্দাফিকে আটকের পর থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সংক্ষিপ্ত সময়ের ভিডিওচিত্র। শুরুতেই দেখা যায়, বিধ্বস্ত গাদ্দাফির গোটা দেহ রক্তাক্ত। মুখমণ্ডলসহ দেহের বিভিন্ন স্থান থেকে রক্ত ঝরছিল। ওই অবস্থায়ই তাকে টেনেহিঁচড়ে সামনের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, গাদ্দাফির মৃত্যু নিয়ে এরই মধ্যে বিভিন্ন ধরনের কাহিনী ছড়ানো হলেও শেষ মুহূর্তগুলোর এসব ভিডিও ফুটেজ থেকে বেরিয়ে এসেছে আসল ক্লু। ঘটনাস্থলে থাকা এক ব্যক্তির তোলা এ ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ধরা পড়ার পর গাদ্দাফি বেশ আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। এ সময় তার মুখমণ্ডলের একপাশ ছিল পুরোপুরি রক্তাক্ত। একপর্যায়ে আতঙ্কিত গাদ্দাফিকে মুখমণ্ডলের সেই পাশে হাত দিয়ে রক্ত মুছতে দেখা যায়। এরপর ওই হাতটি চোখের সামনে নিয়ে রক্ত দেখে বিচলিত হন গাদ্দাফি। একপর্যায়ে টেনেহিঁচড়ে ট্রাকের দিকে নেওয়ার সময় এনটিসির এক যোদ্ধা তার মাথায় পিস্তল ঠেকায়। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, গাদ্দাফি ওই যোদ্ধাকে বলেন, 'আমাকে গুলি করো না। আমি কি কখনও তোমার কোনো ক্ষতি করেছি।' এ সময় মৃত্যুযন্ত্রণায় কাতর গাদ্দাফি এনটিসি যোদ্ধাদের সঙ্গে আরও কিছু কথাবার্তা বলেন। এ পর্যায়ে এনটিসি যোদ্ধাদের কেউ একজন চিৎকার করে বলেন, 'তাকে বাঁচিয়ে রাখো, তাকে বাঁচিয়ে রাখো।' চরম বিশৃঙ্খলার মধ্যে এরপরই ভিডিও ফুটেজের দৃশ্যপট থেকে হারিয়ে যান গাদ্দাফি। আর তারপরই শোনা যায়, কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দ। এনটিসির উচ্চপর্যায়ের একটি সূত্র রয়টার্সকে জানায়, 'তারা (যোদ্ধারা) তাকে জীবিতই ধরেছে। ধরে নিয়ে যাওয়ার সময় তারা তাকে মারধর করে এবং তারপর হত্যা করে। সম্ভবত তিনি (গাদ্দাফি) প্রতিরোধ গড়ে তুলতে চাচ্ছিলেন।' তবে এনটিসির প্রধানমন্ত্রী মাহমুদ জিবরিল গাদ্দাফির পোস্টমর্টেম রিপোর্টে বলেছেন, গাদ্দাফি ধরা পড়ার পর তার সমর্থকদের সঙ্গে এনটিসি যোদ্ধাদের গুলি বিনিময় শুরু হয়। এ সময় মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে গাদ্দাফি মারা যান। এনটিসির তরফে বলা হচ্ছে, গাদ্দাফিকে হত্যা করার কোনো নির্দেশ যোদ্ধাদের দেওয়া হয়নি।
ব্রিটেনের ডেইলি মেইল জানায়, চেঁচামেচিরত ত্রুক্রদ্ধ ও বেপরোয়া জনতার সামনেই গাদ্দাফিকে হত্যা করা হয়। এরপর গাড়িতে করে মৃতদেহ সিরতের রাস্তায় রাস্তায় চক্কর দেওয়া হয়, যাতে সিরতের বাসিন্দারা তার মৃতদেহ দেখতে পায়। গাদ্দাফির মৃত্যু নিয়ে আরও কিছু তত্ত্বও লিখেছে ডেইলি মেইল। বলা হচ্ছে, গাড়ির মধ্য থেকেই গাদ্দাফি শেষ প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করেন। এ সময় যোদ্ধাদের গুলিতে নিহত হন তিনি। এ ছাড়া নিজের গ্রেফতার এড়াতে সম্ভবত তার কোনো দেহরক্ষী তাকে হত্যা করেছে।
ডেইলি মেইল বলছে, জীবনের শেষ প্রতিরোধের চেষ্টা হিসেবে সম্ভবত গাদ্দাফি তার সোনালি রিভলবারটি কোমর থেকে বের করেছিলেন। রিভলবারটি সব সময় তার সঙ্গে থাকত। তবে বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজে গাদ্দাফিকে যতটা আহত, রক্তাক্ত ও বিধ্বস্ত দেখাচ্ছিল সে অবস্থায় এনটিসির এত সশস্ত্র যোদ্ধার সামনে তার প্রতিরোধ গড়ার তত্ত্ব ধোপে টেকে না। গাদ্দাফিকে ঠিক কখন, কোন অবস্থায় গুলি করা হয়েছে_ কোনো ভিডিও চিত্রে তা দেখা যায়নি। তবে গাড়ি বা অ্যাম্বুলেন্সে থাকা অবস্থায় গুলি হওয়ার প্রশ্ন অবান্তর। এ অবস্থায় মার্কিন টেলিভিশন সিবিএস প্রতিনিধি ডেভিড মার্টিন দিয়েছেন আরেক আজগুবি তথ্য। তার মতে, গ্রেফতার এড়াতে নিজের কোনো দেহরক্ষীই গাদ্দাফিকে গুলি করে হত্যা করেছে।
শেষ যাত্রা
বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় ফজরের নামাজের কিছু আগের ঘটনা। নীরব, নিস্তব্ধ সিরতে শহর। গাদ্দাফির ঘুম ভাঙালেন তার কয়েক দেহরক্ষী। তাদের সঙ্গে ছিলেন গাদ্দাফির প্রতিরক্ষামন্ত্রী আবু বকর ইউনুস জাবার। গাদ্দাফিসহ সবাই একে একে উঠলেন গাড়িবহরে। রওনা হলেন পশ্চিম দিকে। কিন্তু বেশি দূর যেতে পারেননি তারা। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ফ্রান্সের জঙ্গি বিমান হামলা চালাল গাড়িবহরে। এ ব্যাপারে পরে ফ্রান্স বলেছে, গাদ্দাফি ওই গাড়িবহরে ছিলেন_ এটা তাদের জানা ছিল না। প্রসঙ্গত ন্যাটোর তরফে বরাবরই বলা হচ্ছিল, গাদ্দাফি তাদের টার্গেট নয়। প্রায় একই সময় মার্কিন চালকবিহীন জঙ্গি বিমানও হামলা চালায় ওই গাড়িবহরে। সিরতের দুই মাইল পশ্চিমে ন্যাটোর এই হামলায় সম্পূর্ণ ভস্মীভূত ও বিধ্বস্ত হয় বহরের সব (১৫টি) গাড়ি। হতাহত হন গাড়ির আরোহীরা। গুরুতর আহত গাদ্দাফি কয়েক দেহরক্ষীসহ আশ্রয় নেন নিকটবর্তী সুয়ারেজ লাইনের একটি বিশাল পাইপের ভেতর। এরপরই গাড়ির যাত্রীদের খুঁজতে শুরু করে এনটিসি যোদ্ধারা। ন্যাটোর হামলায় নিহত হয়েছে গাড়িবহরের কমপক্ষে ৫০ জন। মনসুর দাউ নামে গাদ্দাফির দেহরক্ষী টিমের একজন বেঁচে যান। আল অ্যারাবিয়া টেলিভিশনকে তিনি বলেন, 'বিমান হামলার পর জীবিতরা কয়েক গ্রুপে ভাগ হয়ে এদিক-ওদিক পালিয়ে যান। আমি ছিলাম গাদ্দাফি ও আবু বকর ইউনুসের সঙ্গে। আমাদের সঙ্গে ছিল আরও ৪ সেনা।' মনসুর বলেন, গাদ্দাফির মৃত্যুর দৃশ্য তিনি দেখেননি। কারণ আহত হওয়ার পর তিনি অচেতন হয়ে পড়েন।
যেভাবে ধরা পড়লেন
এনটিসি যোদ্ধারা জানান, 'গাদ্দাফি ও তার কয়েক সহচর কয়েকটি গাছের নিচ দিয়ে দৌড়ে গিয়ে দুটি ড্রেনেজ পাইপের ভেতরে আশ্রয় নেন। প্রথমে আমরা তাদের দিকে বিমান বিধ্বংসী গোলা নিক্ষেপের চেষ্টা করি। কিন্তু গোলা বের হয়নি।' সালেম বাকির নামে এক যোদ্ধা বলেন, 'এরপর আমরা হেঁটে ড্রেনেজ পাইপের দিকে এগিয়ে যাই। এ সময় তার এক অনুচর পাইপ থেকে বের হয়ে তার রাইফেল উঁচিয়ে আত্মসমর্পণের কথা বলে। কিন্তু আমাকে দেখামাত্র সে আমার দিকে গুলি ছোড়ে। তারপর আমার মনে হলো গাদ্দাফি তাদের গুলি ছুড়তে বারণ করেছেন। তারপর গাদ্দাফির ওই সহচর বলেন, আমার নেতা এখানে, আমার নেতা এখানে। তিনি আহত হয়েছেন। এরপর আমরা সামনে এগিয়ে গিয়ে গাদ্দাফিকে পাইপের ভেতর থেকে বের করে আনি। এ সময় গাদ্দাফি বলেন, কী হয়েছে? কী হয়েছে? এসব হচ্ছেটা কী? তারপর আমরা তাকে ধরে এনে গাড়িতে তুলি। এ সময় তার পা ও পিঠ ছিল গুলিবিদ্ধ।'
তদন্ত দাবি জাতিসংঘের
গাদ্দাফি নিহত হওয়ার ঘটনায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের পক্ষ থেকে তদন্ত দাবি করা হয়েছে। কমিশনের প্রধান নাভি পিল্লাইর মুখপাত্র রুপার্ট কোলভিল গতকাল জেনেভায় বলেন, গাদ্দাফি কীভাবে নিহত হয়েছেন তা নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক মানের তদন্ত দরকার। কোলভিল আরও বলেন, গাদ্দাফির নিহত হওয়ার ব্যাপারে পাঁচ ধরনের বক্তব্য পাওয়া গেছে। তিনি যুদ্ধ করতে করতে বিদ্রোহীদের গুলিতে নিহত হয়েছেন নাকি তাকে আটক করার পর হত্যা করা হয়েছে, তা এখনও পরিষ্কার নয়। তিনি বলেন, গাদ্দাফির এ মৃত্যুর মধ্য দিয়ে লিবিয়ায় নতুন যুগের সূচনা হয়েছে। এতে দেশটিতে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে জনগণের জানার অধিকার রয়েছে গাদ্দাফি আসলে কীভাবে নিহত হলেন। কোলভিল বলেন, লিবিয়ায় ভবিষ্যতে মানবাধিকার প্রশ্নটিকে দেশ শাসনের নীতিমালায় গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতে হবে।
স্বচ্ছ বিবরণ চায় যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, গাদ্দাফি কীভাবে মারা গেলেন লিবিয়ার অন্তর্বর্তী নেতাদের অবশ্যই সে ব্যাপারে 'একটা স্বচ্ছ বিবরণ' দিতে হবে। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র মার্ক টোনের বলেন, 'এনটিসি এরই মধ্যে গাদ্দাফির মৃত্যুর কারণ খুঁজতে শুরু করেছে। আমরা তাদের স্পষ্ট আহ্বান জানাই, এ কাজটি খোলাখুলি ও স্বচ্ছভাবে করতে। এছাড়া আমরা তাদের আবারও আহ্বান জানাচ্ছি বন্দিদের সঙ্গে মানবিক আচরণ করতে।'
রাশিয়ার বক্তব্য
রাশিয়া বলেছে, গাদ্দাফি যে গাড়িবহরে সিরতে ছেড়ে যাচ্ছিলেন সে বহরটি কোনো হুমকির কারণ ছিল না। তা সত্ত্বেও সেই গাড়িবহরে ন্যাটোর বিমান হামলা এবং গাদ্দাফির মৃত্যুর ঘটনা অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। এক রেডিও সাক্ষাৎকারে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লেভরভ বলেন, ন্যাটোর এ হামলাকে অবশ্যই আন্তর্জাতিক আইনের নিরিখে বিচার করতে হবে। কারণ এ গাড়িবহরে হামলার ঘটনাসহ যে কোনো স্থল টার্গেটে হামলার সঙ্গে নো-ফ্লাই জোন কার্যকর করার কোনো সম্পর্ক নেই।
দক্ষিণ আফ্রিকার বক্তব্য
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমা বলেছেন, গ্রেফতার করার পর গাদ্দাফিকে আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধী আদালতের কাছে হস্তান্তর করা উচিত ছিল। তিনি বলেন, যারা তাকে গ্রেফতার করেছে তাদের অবশ্যই জানা ছিল যে, তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে।
 

No comments

Powered by Blogger.