তবু ওদের হারানো খুবই সম্ভব বলে মনে করেন নাফীস

ক্রীড়া প্রতিবেদক : দুটো প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে দুটোতেই মোটামুটি অনায়াস জয়। সিরিজ শুরুর আগেই তাই ওয়েস্ট ন্ডিজকে রীতিমতো তৈরি বলা যায়। কিন্তু তাদের এমন পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে আবার ক্যারিবীয়দের গায়ে ফেভারিটের তকমা ঝুলিয়ে দিতেও অনীহা শাহরিয়ার নাফীসের। দুটো প্রস্তুতি ম্যাচেই বিসিবি একাদশকে নেতৃত্ব দেওয়া এ বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান আছেন তিন ম্যাচ সিরিজের ওয়ানডে স্কোয়াডেও। সিরিজ শুরুর আগেই ড্যারেন সামিদের সবচেয়ে কাছ থেকে দেখার অভিজ্ঞতায় তাঁর বিশ্লেষণ, সম্ভাবনার দাড়িপাল্লায় বাংলাদেশ আর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সমান-সমান।

দুটো প্রস্তুতি ম্যাচে ক্যারিবীয়দের সহজ শিকারে পরিণত হওয়ার ব্যাপারটা মাথায় রেখেও তা বলতে পারার অন্যতম কারণ ফতুল্লা স্টেডিয়ামের উইকেট এবং মিরপুরের উইকেটের সঙ্গে এর চরিত্রগত পার্থক্য। সিরিজের একমাত্র টি-টোয়েন্টি এবং ওয়ানডে সিরিজের প্রথম দুটো ম্যাচ হবে 'হোম অব ক্রিকেট' মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে। দুটো ভেন্যুর উইকেটের পার্থক্য নিরূপণ করে নাফীস কাল টি-টোয়েন্টি প্রস্তুতি ম্যাচের পর বললেন, 'ফতুল্লার উইকেটের সঙ্গে ওদের বোলিংটা বেশ মানিয়ে গিয়েছিল। কারণ আমরা জানি, ফতুল্লার উইকেটে শুরুর দিকে বোলারদের জন্য সহায়তা থাকে। আর এখানে দুটো প্রস্তুতি ম্যাচ হলো মৌসুমের একেবারে শুরুতে। উইকেটও তাই খুব সজীব ছিল। ওরা অনেক সাহায্য পেয়েছে। তবে মিরপুরে উইকেট অন্য রকম। আশা করি, সেখানে জাতীয় দল আরো সাবলীল ব্যাটিং করবে।'
আর স্বাভাবিক ব্যাটিংয়ের শর্তে সিরিজভাগ্যে নিজেদের সম্ভাবনাও দেখে ফেলছেন, 'আমার কাছে মনে হয় এ সিরিজটা হবে ভালো ব্যাটিংয়ের। আমাদের একটু সতর্ক থাকতে হবে ঠিক তবে আশার ব্যাপার হলো, আমরা ব্যাটিংটা ভালো করলে ম্যাচ জেতা অত কঠিন হবে না। ভালো স্কোর করা গেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রতিটি ম্যাচই জেতা সম্ভব।' ব্যাটসম্যানরা পর্যাপ্ত পুঁজি দিলে বোলাররা বাকি কাজটা করে দিতে পারবেন বলেও বিশ্বাস নাফীসের। দুটো প্রস্তুতি ম্যাচ থেকে জাতীয় দল সে বার্তা পেয়েও গেছে বলে মনে করেন তিনি, 'এ দুটো ম্যাচ জাতীয় দলের টিম ম্যানেজমেন্টকে সঠিক বার্তাই দিচ্ছে যে আমাদের মূল বোলিং অ্যাটাকের সঙ্গে ওরা সমস্যায় পড়বে। বোলিং অ্যাটাকের দিকে তাকালে দেখবেন, এই দল (বিসিবি একাদশ) আর জাতীয় দলের মধ্যে আকাশ-পাতাল তফাত। এখানে আমাদের অলরাউন্ডারদের বল খেলতে গিয়েও ওরা ঝামেলায় পড়েছে। তাহলে আমাদের মূল অ্যাটাক কিন্তু ওদের আরো চেপে ধরবে।'
কিন্তু ক্যারিবীয়দের বোলিং অ্যাটাকও নিশ্চয়ই ছেড়ে কথা বলবে না। দেবেন্দ্র বিশু নামের এক লেগস্পিনার বাংলাদেশের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কিন্তু এর আগে তো ক্যারিবীয়দের পেস তোপ সামলাতে হবে। সেটাও কম বড় চ্যালেঞ্জের নয়, যখন নাফীস নিজেও বলছেন, 'দুটো ম্যাচ খেলে আমার কাছে মনে হয়েছে ব্যাটিং আর ফিল্ডিংয়ের তুলনায় ওদের বোলিংয়ের ধার বেশি। এ জন্যই যে ওরা খুব ডিসিপ্লিনড।' সেই সঙ্গে নিজ চোখে দেখা আরেকটা ব্যাপারও উল্লেখ করতে ভুলছেন না, 'ডিসিপ্লিনই ওদের বোলিংয়ের প্লাসপয়েন্ট। গত দুটো ম্যাচে ওরা ৫ পারসেন্ট বলও সামনের পায়ে করেনি। যথেষ্ট প্র্যাকটিস ও হোমওয়ার্কের প্রতিফলনই এ রকম ধারাবাহিক বোলিং।' এমন বোলিং অ্যাটাক তাই বাড়তি সতর্কতার দাবি রাখেই। ব্যাটসম্যানরা সেই দাবি মেনে খেললে মিরপুরের উইকেটও তাঁদের ফিরিয়ে দেবে না বলে বিশ্বাস বিসিবি একাদশ অধিনায়কের, 'প্রথমত আমাদের শক্তির ওপর আস্থা রাখতে হবে। দ্বিতীয়ত, আমাদের হোম কন্ডিশনে খেলা। মিরপুরের ক্লে পুরোপুরি ভিন্ন। অনেক বেশি ব্যাটিং সহায়ক হয়। আমরা যে রকম প্রস্তুতি নিয়েছি এবং আমাদের যা শক্তি, তাতে ভালো স্কোর করলে আশা করি প্রতিটি ম্যাচ কম্পিটিশন করে জিততে পারব।'
নাফীসের হিসাবে সিরিজপূর্ব অঙ্কে তাই বাংলাদেশকে খুব পিছিয়ে রাখা যাচ্ছে না!


No comments

Powered by Blogger.