আরো পাঁচ বাংলাদেশি শিরশ্ছেদের তালিকায় by মেহেদী হাসান
সৌদি আরবে আরো অন্তত পাঁচ বাংলাদেশির ঘাড়ের ওপর ঝুলছে শিরশ্ছেদের খৰ। আর জর্দানে ফাঁসির দণ্ডাদেশ নিয়ে কারাগারে প্রহর গুনছেন আরেক বাংলাদেশি। তাঁরা সবাই বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে ক্ষমার আবেদন করলেও এখনো ইতিবাচক সাড়া মেলেনি। সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে গত শুক্রবার আট বাংলাদেশিকে শিরশ্ছেদ করার পর বিদেশের কারাগারে মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকরের অপেক্ষায় থাকা বাংলাদেশিদের ব্যাপারে খোঁজ নিতে গিয়ে কূটনৈতিক সূত্রে এ খবর জানা গেছে।
সৌদি আরবে বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম কাউন্সিলর হারুন অর রশীদ গতকাল রবিবার দুপুরে টেলিফোনে কালের কণ্ঠকে বলেন, সৌদি আরবের কারাগারগুলোয় মৃত্যুদণ্ডাদেশ নিয়ে বন্দি বাংলাদেশির সংখ্যা এ মুহূর্তে তাঁর পক্ষে বলা সম্ভব হচ্ছে না। তবে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া অন্তত পাঁচ বাংলাদেশি রিয়াদ অঞ্চলের কারাগারগুলোয় আছেন।
শ্রম কাউন্সিলর বলেন, 'মানিকগঞ্জের একজনের ওপর মৃত্যুদণ্ডাদেশ রয়েছে। তিনি সৌদি আরবে তাঁরই এলাকার (মানিকগঞ্জ) একজনকে হত্যা করেছেন।' এ মামলার ক্ষেত্রে 'রক্ত মূল্য' পরিশোধের বিনিময়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া থেকে তাঁকে বাঁচানোর সুযোগ আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, চেষ্টা চলছে।
হারুন অর রশীদ বলেন, মৃত্যুদণ্ড নিয়ে রিয়াদের কারাগারগুলোতে এখন যে বাংলাদেশিরা আছেন, তাঁরা সবাই নিজ দেশের নাগরিকদের হত্যার দায়ে অভিযুক্ত হয়েছেন। এ ছাড়া সৌদি আরবে একজন বাংলাদেশিকে এ দেশেরই একজন খুন করে পালিয়ে দেশে চলে এসেছেন বলে তিনি জানান।
শ্রম কাউন্সিলর বলেন, সৌদি আইন অনুযায়ী খুনের শাস্তি মওকুফের সুযোগ সৌদি বাদশারও নেই। একমাত্র নিহতের নিকটতম আত্মীয়ই ক্ষমা করতে পারেন। এখন যে বাংলাদেশিরা নিজ দেশের নাগরিকদের হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ নিয়ে কারাগারে আছেন, তাঁদের বিষয়টি স্থানীয়ভাবে আপসের চেষ্টা চলছে।
কাউন্সিলর আরো বলেন, তিন মাস আগেও সৌদি আরবে বাংলাদেশি হালিমা হত্যা মামলায় অন্য তিন বাংলাদেশির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে হালিমাকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ প্রমাণ হয়েছিল। ধর্ষণের মতো অপরাধে মৃত্যুদণ্ডাদেশ মওকুফের ক্ষমতা সৌদি আরবে কারও নেই।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কূটনীতিক কালের কণ্ঠকে বলেছেন, গত বছর জর্দানের ফৌজদারি আদালত ফিলিপিন্সের দুই নাগরিককে হত্যার দায়ে দেলোয়ার হোসেন নামের এক বাংলাদেশির মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন। দেলোয়ার হোসেনের মা আদর জান বিবি গত মে মাসে জর্দানের বাংলাদেশ মিশনের মাধ্যমে দেশটির বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহর কাছে ছেলের প্রাণভিক্ষার আবেদন করেছেন। ওই আবেদনের অগ্রগতির ব্যাপারে কিছু জানা যায়নি।
শিরশ্ছেদের কথা গতকাল পর্যন্ত জানায়নি সৌদি সরকার
শ্রম কাউন্সিলর হারুন অর রশীদ জানান, গতকাল রবিবার দুপুর পর্যন্ত বাংলাদেশ দূতাবাসকে আনুষ্ঠানিকভাবে আট বাংলাদেশির শিরশ্ছেদের কথা জানায়নি সৌদি সরকার। দূতাবাস অনানুষ্ঠানিকভাবে এ ব্যাপারে জানার চেষ্টা করছে। আট বাংলাদেশিকে কোথায় কবর দেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'সৌদি সরকার আমাদের জানায়নি। আমরা জানার চেষ্টা করছি। শিরশ্ছেদ করার পর কোনো বিদেশির দেহ সৌদি সরকার ফেরত দেয় না।'
হারুন অর রশীদ বলেন, শিরশ্ছেদের শিকার হওয়া ব্যক্তিদেরও ইসলাম ধর্মের রীতি অনুসরণ করে জানাজা শেষে দাফন করা হয়। সাধারণত রিয়াদের কেন্দ্রীয় কবরস্থানেই দাফন করা হয়। কিন্তু এ দেশে কবরের পাশে নামফলক বা কোনো চিহ্ন রাখা হয় না।
'বাংলাদেশের এর চেয়ে বেশি কিছু করার ছিল না'
প্রবাসীকল্যাণসচিব ড. জাফর আহমেদ খান কালের কণ্ঠকে বলেছেন, শিরশ্ছেদ হওয়া আট বাংলাদেশিকে রক্ষায় বাংলাদেশ সব ধরনের চেষ্টা করেছে। এমনকি স্বয়ং রাষ্ট্রপতিও তাঁদের পক্ষ হয়ে অনুরোধ করেছেন। শিরশ্ছেদের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের স্বজনরা বাংলাদেশ ও দূতাবাসের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা না পাওয়ার যে অভিযোগ করেছে, সে ব্যাপারে জানতে চাইলে সৌদি আরবের বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম কাউন্সিলর হারুন অর রশীদ জোর দিয়ে বলেন, 'যা করা হয়েছে তার চেয়ে বেশি কিছু করার ক্ষমতা বাংলাদেশের ছিল না। রাষ্ট্রপতি নিজে তাঁদের জন্য অনুরোধ করেছেন। এর চেয়ে বড় আর তো কিছু করার ছিল না।'
হারুন অর রশীদ বলেন, 'বাংলাদেশেও খুনের অপরাধে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে। ওই আটজন খুন করার কথা কেবল আদালতে নয়, আমাদের কাছেও স্বীকার করেন। এমন নয় যে তাঁদের জোর করে এটা করানো হয়েছে।'
হারুন অর রশীদ বলেন, 'আমার জন্য তাঁদের শিরশ্ছেদের খবরটি ছিল অত্যন্ত আবেগঘন। ২০০৭ সাল থেকে আমরা দূতাবাসের পক্ষ থেকে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আইনি ও অন্যান্য সহযোগিতা দিয়ে আসছিলাম। আমি কল্পনা করতে পারছি না, যে ব্যক্তিদের সঙ্গে বৃহস্পতিবার আমরা ফোনে কথা বললাম, পরদিন শুক্রবার তাঁদের মাথা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হলো।'
শ্রম কাউন্সিলর বলেন, 'এমন নয় যে আমরা কয়েকজন আইনজীবী নিয়োগ করে মৃত্যুদণ্ড ঠেকিয়ে রাখতে পারতাম। এখানে নিহতের নিকটতম আত্মীয়ই কেবল খুনিকে ক্ষমা করতে পারেন। আট বাংলাদেশির ক্ষেত্রে রক্তমূল্য দিয়ে আপসরফার জন্য সৌদি আরবে মিসরের দূতাবাসও অনেক চেষ্টা করেছে। কিন্তু নিহতের পরিবার কোনোভাবেই রাজি না হওয়ায় তাঁদের রক্ষা করা যায়নি।'
শ্রম কাউন্সিলর বলেন, 'মানিকগঞ্জের একজনের ওপর মৃত্যুদণ্ডাদেশ রয়েছে। তিনি সৌদি আরবে তাঁরই এলাকার (মানিকগঞ্জ) একজনকে হত্যা করেছেন।' এ মামলার ক্ষেত্রে 'রক্ত মূল্য' পরিশোধের বিনিময়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া থেকে তাঁকে বাঁচানোর সুযোগ আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, চেষ্টা চলছে।
হারুন অর রশীদ বলেন, মৃত্যুদণ্ড নিয়ে রিয়াদের কারাগারগুলোতে এখন যে বাংলাদেশিরা আছেন, তাঁরা সবাই নিজ দেশের নাগরিকদের হত্যার দায়ে অভিযুক্ত হয়েছেন। এ ছাড়া সৌদি আরবে একজন বাংলাদেশিকে এ দেশেরই একজন খুন করে পালিয়ে দেশে চলে এসেছেন বলে তিনি জানান।
শ্রম কাউন্সিলর বলেন, সৌদি আইন অনুযায়ী খুনের শাস্তি মওকুফের সুযোগ সৌদি বাদশারও নেই। একমাত্র নিহতের নিকটতম আত্মীয়ই ক্ষমা করতে পারেন। এখন যে বাংলাদেশিরা নিজ দেশের নাগরিকদের হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ নিয়ে কারাগারে আছেন, তাঁদের বিষয়টি স্থানীয়ভাবে আপসের চেষ্টা চলছে।
কাউন্সিলর আরো বলেন, তিন মাস আগেও সৌদি আরবে বাংলাদেশি হালিমা হত্যা মামলায় অন্য তিন বাংলাদেশির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে হালিমাকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ প্রমাণ হয়েছিল। ধর্ষণের মতো অপরাধে মৃত্যুদণ্ডাদেশ মওকুফের ক্ষমতা সৌদি আরবে কারও নেই।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কূটনীতিক কালের কণ্ঠকে বলেছেন, গত বছর জর্দানের ফৌজদারি আদালত ফিলিপিন্সের দুই নাগরিককে হত্যার দায়ে দেলোয়ার হোসেন নামের এক বাংলাদেশির মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন। দেলোয়ার হোসেনের মা আদর জান বিবি গত মে মাসে জর্দানের বাংলাদেশ মিশনের মাধ্যমে দেশটির বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহর কাছে ছেলের প্রাণভিক্ষার আবেদন করেছেন। ওই আবেদনের অগ্রগতির ব্যাপারে কিছু জানা যায়নি।
শিরশ্ছেদের কথা গতকাল পর্যন্ত জানায়নি সৌদি সরকার
শ্রম কাউন্সিলর হারুন অর রশীদ জানান, গতকাল রবিবার দুপুর পর্যন্ত বাংলাদেশ দূতাবাসকে আনুষ্ঠানিকভাবে আট বাংলাদেশির শিরশ্ছেদের কথা জানায়নি সৌদি সরকার। দূতাবাস অনানুষ্ঠানিকভাবে এ ব্যাপারে জানার চেষ্টা করছে। আট বাংলাদেশিকে কোথায় কবর দেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'সৌদি সরকার আমাদের জানায়নি। আমরা জানার চেষ্টা করছি। শিরশ্ছেদ করার পর কোনো বিদেশির দেহ সৌদি সরকার ফেরত দেয় না।'
হারুন অর রশীদ বলেন, শিরশ্ছেদের শিকার হওয়া ব্যক্তিদেরও ইসলাম ধর্মের রীতি অনুসরণ করে জানাজা শেষে দাফন করা হয়। সাধারণত রিয়াদের কেন্দ্রীয় কবরস্থানেই দাফন করা হয়। কিন্তু এ দেশে কবরের পাশে নামফলক বা কোনো চিহ্ন রাখা হয় না।
'বাংলাদেশের এর চেয়ে বেশি কিছু করার ছিল না'
প্রবাসীকল্যাণসচিব ড. জাফর আহমেদ খান কালের কণ্ঠকে বলেছেন, শিরশ্ছেদ হওয়া আট বাংলাদেশিকে রক্ষায় বাংলাদেশ সব ধরনের চেষ্টা করেছে। এমনকি স্বয়ং রাষ্ট্রপতিও তাঁদের পক্ষ হয়ে অনুরোধ করেছেন। শিরশ্ছেদের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের স্বজনরা বাংলাদেশ ও দূতাবাসের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা না পাওয়ার যে অভিযোগ করেছে, সে ব্যাপারে জানতে চাইলে সৌদি আরবের বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম কাউন্সিলর হারুন অর রশীদ জোর দিয়ে বলেন, 'যা করা হয়েছে তার চেয়ে বেশি কিছু করার ক্ষমতা বাংলাদেশের ছিল না। রাষ্ট্রপতি নিজে তাঁদের জন্য অনুরোধ করেছেন। এর চেয়ে বড় আর তো কিছু করার ছিল না।'
হারুন অর রশীদ বলেন, 'বাংলাদেশেও খুনের অপরাধে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে। ওই আটজন খুন করার কথা কেবল আদালতে নয়, আমাদের কাছেও স্বীকার করেন। এমন নয় যে তাঁদের জোর করে এটা করানো হয়েছে।'
হারুন অর রশীদ বলেন, 'আমার জন্য তাঁদের শিরশ্ছেদের খবরটি ছিল অত্যন্ত আবেগঘন। ২০০৭ সাল থেকে আমরা দূতাবাসের পক্ষ থেকে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আইনি ও অন্যান্য সহযোগিতা দিয়ে আসছিলাম। আমি কল্পনা করতে পারছি না, যে ব্যক্তিদের সঙ্গে বৃহস্পতিবার আমরা ফোনে কথা বললাম, পরদিন শুক্রবার তাঁদের মাথা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হলো।'
শ্রম কাউন্সিলর বলেন, 'এমন নয় যে আমরা কয়েকজন আইনজীবী নিয়োগ করে মৃত্যুদণ্ড ঠেকিয়ে রাখতে পারতাম। এখানে নিহতের নিকটতম আত্মীয়ই কেবল খুনিকে ক্ষমা করতে পারেন। আট বাংলাদেশির ক্ষেত্রে রক্তমূল্য দিয়ে আপসরফার জন্য সৌদি আরবে মিসরের দূতাবাসও অনেক চেষ্টা করেছে। কিন্তু নিহতের পরিবার কোনোভাবেই রাজি না হওয়ায় তাঁদের রক্ষা করা যায়নি।'
No comments