শিশুর নৈতিক কল্যাণে ইসলামের শিক্ষা by খন্দকার মনসুর আহমদ
শিশুরা আমাদের হূদয়ের ফুল এবং মানব উদ্যানের হূদয়কাড়া সৌন্দর্য, ইসলামের দৃষ্টিতে প্রতিটি শিশুর জীবনই অত্যন্ত মূল্যবান। তাই অন্তরের সতি্যকার মমতা দিয়ে শিশুদের লালন-পালন করা এবং তাদের আদর্শ জীবন গড়ে তোলা আমাদের দায়িত্ব। আর এক্ষেত্রে ইসলামের শিক্ষা ও নীতিমালা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ ইসলামের শিক্ষা ছাড়া শিশুদের প্রকৃত আদর্শ জীবন গড়ে তোলা সম্ভব নয়। এ নিবল্পেব্দ আমরা শিশুর নৈতিক কল্যাণে ইসলামের শিক্ষা ও নীতিমালার মৌলিক দিকগুলো সংক্ষেপে তুলে ধরার প্রয়াস পাব।
সন্তান যাতে সৎ হয় সে জন্য শিশুর জন্মের আগে থেকেই মহান প্রতিপালকের দরবারে প্রার্থনা ও প্রস্থুতি আমাদের কর্তব্য। এহেন প্রার্থনা ও প্রস্থুতি আমাদের পূর্বসূরি মহান পয়গম্বরগণের এক পবিত্র বরকতময় আমল। মুসলিম জাতির মহান পিতা হজরত ইবরাহিম (আঃ) মহান আল্লাহর দরবারে যে দশটি বিশেষ আবেদন করেছিলেন তার মধ্যে একটি ছিল সৎ সন্তান লাভের প্রার্থনা। তিনি তার প্রার্থনায় বলেছিলেন, হে আমার প্রতিপালক, আমাকে এক সৎকর্মপরায়ণ সন্তান দান করো। তারপর আমি তাকে এক স্থিরবদুিব্দ পুত্রের সুসংবাদ দিলাম।
লক্ষণীয় ব্যাপার হলো, হজরত ইবরাহিম (আঃ) হজরত জাকারিয়া (আঃ)-এর পূর্ব প্রার্থনার প্রেক্ষিতে মহান আল্লাহ তাদের উভয়কে এমন সন্তান দান করেছিলেন যারা নবুওয়তের বিরল মর্যাদায় অভিষিক্ত হয়েছিলেন এবং সমগ্র মানবতার জন্য সততা ও সৎ কর্মপরায়ণতার আদর্শ হয়েছিলেন। হজরত ইবরাহিম (আঃ)-এর শিশুপুত্র হজরত ইসমাইল (আঃ) তো ত্যাগ ও আনুগত্যের সেই আদর্শ দেখিয়েছিলেন, মানবতার ইতিহাসে যার নজির খুঁজে পাওয়া যায় না।
আমরা আমাদের আদরের সন্তানদের কল্যাণ প্রত্যাশা করি। কিন্তু যথার্থ কল্যাণ কোন পথে হবে সে বিষয়ে বেশিরভাগ লোকই সচেতন থাকি না। একজন যথার্থ কল্যাণকামী পিতা তার সন্তানের জন্য সর্বাগ্রে কী প্রত্যাশা করেন, হজরত ইবরাহিম (আঃ)-এর প্রার্থনায় আমরা তা সঙ্ষ্ঠ দেখতে পাই। তিনি তার প্রার্থনায় বলেন, 'হে আমার প্রতিপালক, তুমি আমাকে এবং আমার বংশধরদেরকে সালাত কায়েমকারী বানাও। হে আমাদের প্রতিপালক, তুমি প্রার্থনা কবুল করে নাও।'
পিতামাতার অন্তরে স্বভাবগতভাবেই শিশুর প্রতি গভীর মমত্ববোধ থাকা সত্ত্বেও মহান আল্লাহ নানাভাবে তাদের কল্যাণ সাধনের প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন। এতে বোঝা যায় যে, শিশুরা শুধু তোমাদেরই হূদয়ের ধন নয়, বরং আমারও অত্যন্ত প্রিয় সৃষ্টি। এ জন্যই শিশুদেরকে একটি অনন্ত কল্যাণের পথে গড়ে তুলতে হবে।
শিশুরা যেহেতু মহান আল্লাহর প্রদত্ত এক হূদয় ভোলানো উপহার তাই তাদের ভুল আবদার ও অসঙ্গত মর্জির প্রেক্ষিতে আদর ও স্টেম্নহের আবেগে আমরা তাদেরকে ভুল পথে চলার সুযোগ দিতে পারি, আদশরাউর পথে গড়ে তুলতে ত্রুটি করতে পারি, সে জন্য মহান আল্লাহ পূর্বাহেক্রই আমাদেরকে সাবধান করেছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি ইরশাদ করেন, ধন-সম্পদ ও সন্তানসন্ততি পার্থিব জীবনের শোভা এবং স্থায়ী সৎকর্ম তোমার প্রতিপালকের কাছে পুরস্কার প্রাপ্তির জন্য শ্রেষ্ঠ এবং বাঞ্ছিত হিসেবেও উৎকৃষ্ঠ (ফাহদ : ৪৬)।
উল্লেখ্য, কিছু কিছু সৎকর্মের সওয়াব মৃত্যুর পরেও বন্দ হয় না। যেমন সৎকর্মপরায়ণ সন্তান রেখে যাওয়া, মসজিদ প্রতিষ্ঠা করা এবং জনকল্যাণমূলক স্থায়ী কোনো কাজ করে যাওয়া। একজন সন্তানকে যথার্থ সুশিক্ষা দানের মাধ্যমে যখন তাকে আল্লাহর অনুগত আদর্শ সন্তান রূপে গড়ে তোলা যায় তখন কোরআনের ভাষায় সে হয় স্থায়ী সৎকর্ম। স্থায়ী সৎকর্ম মানবের জন্য পরকালের অনন্ত কল্যাণ বয়ে আনে।
শিশুর জন্মে মানুষ স্বভাবগত কারণে যে আনন্দ প্রকাশ করতে চায়, তা প্রকাশার্থে ইসলাম আকিকার বিধান দিয়েছে। আকিকা শব্দের অর্থ হচ্ছে নবজাতকের মাথার চুল। শরিয়তের পরিভাষায় নবজাতকের সে চুল ফেলার দিনে বিশেষ শর্তাবলির প্রতি লক্ষ্য রেখে যে পশু জবাই করা হয় তাকেই 'আকিকা' বলে। আকিকার গুরুত্বের বিষয়ে অনেক হাদিস রয়েছে। হজরত ছামুরা ইবনে জুন্দুর (রাঃ) এ বিষয়ে র্বণনা করেন, রাসূল (সাঃ) ইরশাদ করেছেন, প্রতিটি শিশু তার আকিকার দায়ে আবদ্ধ। জন্মের সপ্তম দিন তার পক্ষ থেকে পশু জবাই করা হবে, তার নাম রাখা হবে এবং তার মাথা মুণ্ডিত করা হবে (তিরমিযি, আহমদ ও নাসায়ী)।
উপর্যুক্ত হাদিসে আবদ্ধ শব্দটির মাধ্যমে আকিকার গুরুত্ব বোঝানো হয়েছে। এটি একটি উপমা। বন্দকী দ্রব্য যেমন ঋণ পরিশোধের জন্য পাওনাদারদের কাছে আবদ্ধ থাকে, তেমনিভাবে শিশুর উত্তম আদর্শময় নিরাপদ জীবন আকিকার দায়ে আবদ্ধ থাকে। এ আকিকা ইসলামের একটি তাৎপর্যমণ্ডিত সুন্নত। সাধ্যসাপেক্ষে পালন করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।
পবিত্র কোরআনের একটি আয়াতে মহান আল্লাহ ধন-সম্পদ ও সন্তানদের পরীক্ষা অভিহিত করে ইরশাদ করেন, জেনে রাখো, তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তানসন্ততি তো এক পরীক্ষা এবং আল্লাহর কাছে মহাপুরস্কার রয়েছে। (আনফাল : ২৮)
এ আয়াতে 'পরীক্ষা' শব্দটি ব্যবহূত হয়েছে। পরীক্ষায় যেমন মানুষ সম্মানিত অথবা অসম্মানিত হয়, তেমনিভাবে ধন-সম্পদ ও সন্তানসন্ততির ্টারাও সম্মানিত অথবা লাঞ্ছিত হয়। ধন-সম্পদের সঠিক ব্যবহার হলে এবং সন্তানদের প্রতি কর্তব্য যথাযথভাবে পালন করলে মহান আল্লাহ পুরস্কার দিয়ে সম্মানিত করবেন। আর এর ব্যতিক্রম হলে তাকে নানাবিধ বঞ্চনার মধ্য দিয়ে লাঞ্ছিত করবেন।
ইসলাম শিশুদের ব্যাপারে আমাদেরকে অত্যন্ত সঙ্ষ্ঠ ভাষায় কল্যাণ ও সাফল্যের পথ বলে দিয়েছে। যা মান্য করে আমরা আমাদের জীবনকে পুষেঙ্্যদ্যোানে পরিণত করতে পারি এবং গড়ে তুলতে পারি সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যময় পরিবার ও সমাজ। লাভ করতে পারি অনন্ত সুখ ও সমৃদ্ধি।
লক্ষণীয় ব্যাপার হলো, হজরত ইবরাহিম (আঃ) হজরত জাকারিয়া (আঃ)-এর পূর্ব প্রার্থনার প্রেক্ষিতে মহান আল্লাহ তাদের উভয়কে এমন সন্তান দান করেছিলেন যারা নবুওয়তের বিরল মর্যাদায় অভিষিক্ত হয়েছিলেন এবং সমগ্র মানবতার জন্য সততা ও সৎ কর্মপরায়ণতার আদর্শ হয়েছিলেন। হজরত ইবরাহিম (আঃ)-এর শিশুপুত্র হজরত ইসমাইল (আঃ) তো ত্যাগ ও আনুগত্যের সেই আদর্শ দেখিয়েছিলেন, মানবতার ইতিহাসে যার নজির খুঁজে পাওয়া যায় না।
আমরা আমাদের আদরের সন্তানদের কল্যাণ প্রত্যাশা করি। কিন্তু যথার্থ কল্যাণ কোন পথে হবে সে বিষয়ে বেশিরভাগ লোকই সচেতন থাকি না। একজন যথার্থ কল্যাণকামী পিতা তার সন্তানের জন্য সর্বাগ্রে কী প্রত্যাশা করেন, হজরত ইবরাহিম (আঃ)-এর প্রার্থনায় আমরা তা সঙ্ষ্ঠ দেখতে পাই। তিনি তার প্রার্থনায় বলেন, 'হে আমার প্রতিপালক, তুমি আমাকে এবং আমার বংশধরদেরকে সালাত কায়েমকারী বানাও। হে আমাদের প্রতিপালক, তুমি প্রার্থনা কবুল করে নাও।'
পিতামাতার অন্তরে স্বভাবগতভাবেই শিশুর প্রতি গভীর মমত্ববোধ থাকা সত্ত্বেও মহান আল্লাহ নানাভাবে তাদের কল্যাণ সাধনের প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন। এতে বোঝা যায় যে, শিশুরা শুধু তোমাদেরই হূদয়ের ধন নয়, বরং আমারও অত্যন্ত প্রিয় সৃষ্টি। এ জন্যই শিশুদেরকে একটি অনন্ত কল্যাণের পথে গড়ে তুলতে হবে।
শিশুরা যেহেতু মহান আল্লাহর প্রদত্ত এক হূদয় ভোলানো উপহার তাই তাদের ভুল আবদার ও অসঙ্গত মর্জির প্রেক্ষিতে আদর ও স্টেম্নহের আবেগে আমরা তাদেরকে ভুল পথে চলার সুযোগ দিতে পারি, আদশরাউর পথে গড়ে তুলতে ত্রুটি করতে পারি, সে জন্য মহান আল্লাহ পূর্বাহেক্রই আমাদেরকে সাবধান করেছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি ইরশাদ করেন, ধন-সম্পদ ও সন্তানসন্ততি পার্থিব জীবনের শোভা এবং স্থায়ী সৎকর্ম তোমার প্রতিপালকের কাছে পুরস্কার প্রাপ্তির জন্য শ্রেষ্ঠ এবং বাঞ্ছিত হিসেবেও উৎকৃষ্ঠ (ফাহদ : ৪৬)।
উল্লেখ্য, কিছু কিছু সৎকর্মের সওয়াব মৃত্যুর পরেও বন্দ হয় না। যেমন সৎকর্মপরায়ণ সন্তান রেখে যাওয়া, মসজিদ প্রতিষ্ঠা করা এবং জনকল্যাণমূলক স্থায়ী কোনো কাজ করে যাওয়া। একজন সন্তানকে যথার্থ সুশিক্ষা দানের মাধ্যমে যখন তাকে আল্লাহর অনুগত আদর্শ সন্তান রূপে গড়ে তোলা যায় তখন কোরআনের ভাষায় সে হয় স্থায়ী সৎকর্ম। স্থায়ী সৎকর্ম মানবের জন্য পরকালের অনন্ত কল্যাণ বয়ে আনে।
শিশুর জন্মে মানুষ স্বভাবগত কারণে যে আনন্দ প্রকাশ করতে চায়, তা প্রকাশার্থে ইসলাম আকিকার বিধান দিয়েছে। আকিকা শব্দের অর্থ হচ্ছে নবজাতকের মাথার চুল। শরিয়তের পরিভাষায় নবজাতকের সে চুল ফেলার দিনে বিশেষ শর্তাবলির প্রতি লক্ষ্য রেখে যে পশু জবাই করা হয় তাকেই 'আকিকা' বলে। আকিকার গুরুত্বের বিষয়ে অনেক হাদিস রয়েছে। হজরত ছামুরা ইবনে জুন্দুর (রাঃ) এ বিষয়ে র্বণনা করেন, রাসূল (সাঃ) ইরশাদ করেছেন, প্রতিটি শিশু তার আকিকার দায়ে আবদ্ধ। জন্মের সপ্তম দিন তার পক্ষ থেকে পশু জবাই করা হবে, তার নাম রাখা হবে এবং তার মাথা মুণ্ডিত করা হবে (তিরমিযি, আহমদ ও নাসায়ী)।
উপর্যুক্ত হাদিসে আবদ্ধ শব্দটির মাধ্যমে আকিকার গুরুত্ব বোঝানো হয়েছে। এটি একটি উপমা। বন্দকী দ্রব্য যেমন ঋণ পরিশোধের জন্য পাওনাদারদের কাছে আবদ্ধ থাকে, তেমনিভাবে শিশুর উত্তম আদর্শময় নিরাপদ জীবন আকিকার দায়ে আবদ্ধ থাকে। এ আকিকা ইসলামের একটি তাৎপর্যমণ্ডিত সুন্নত। সাধ্যসাপেক্ষে পালন করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।
পবিত্র কোরআনের একটি আয়াতে মহান আল্লাহ ধন-সম্পদ ও সন্তানদের পরীক্ষা অভিহিত করে ইরশাদ করেন, জেনে রাখো, তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তানসন্ততি তো এক পরীক্ষা এবং আল্লাহর কাছে মহাপুরস্কার রয়েছে। (আনফাল : ২৮)
এ আয়াতে 'পরীক্ষা' শব্দটি ব্যবহূত হয়েছে। পরীক্ষায় যেমন মানুষ সম্মানিত অথবা অসম্মানিত হয়, তেমনিভাবে ধন-সম্পদ ও সন্তানসন্ততির ্টারাও সম্মানিত অথবা লাঞ্ছিত হয়। ধন-সম্পদের সঠিক ব্যবহার হলে এবং সন্তানদের প্রতি কর্তব্য যথাযথভাবে পালন করলে মহান আল্লাহ পুরস্কার দিয়ে সম্মানিত করবেন। আর এর ব্যতিক্রম হলে তাকে নানাবিধ বঞ্চনার মধ্য দিয়ে লাঞ্ছিত করবেন।
ইসলাম শিশুদের ব্যাপারে আমাদেরকে অত্যন্ত সঙ্ষ্ঠ ভাষায় কল্যাণ ও সাফল্যের পথ বলে দিয়েছে। যা মান্য করে আমরা আমাদের জীবনকে পুষেঙ্্যদ্যোানে পরিণত করতে পারি এবং গড়ে তুলতে পারি সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যময় পরিবার ও সমাজ। লাভ করতে পারি অনন্ত সুখ ও সমৃদ্ধি।
No comments