ভারত থেকে বিদ্যুৎ ক্রয় নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটেনি by নাজমুল ইমাম
ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি নিয়ে সৃষ্ট অনিশ্চয়তা কাটছে না। এ কারণে বাংলাদেশের নেওয়া হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নিয়েও দেখা দিয়েছে সংশয়। অথচ প্রকল্পের পেছনে ইতিমধ্যেই বাংলাদেশ ২১০ কোটি টাকা ব্যয় করেছে। শেষ পর্যন্ত জটিলতা না কাটলে প্রকল্পের পুরো টাকাই পানিতে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। উভয় দেশে এখন ৪০০ কেভি ক্ষমতার সঞ্চালন লাইনের টাওয়ার বসাতে পাইলিংয়ের কাজ চলছে। কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন হাইভোল্টেজ ডিসি (এইচভিডিসি) গ্রিড স্টেশন নির্মাণের জন্য মাটি ভরাট চলছে।
তবে ভারতের বহরমপুরে সুইচিং স্টেশন বসাতে জমি পাচ্ছে না সে দেশের পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব ইন্ডিয়া লিমিটেড (পিজিসিআইএল)। কোম্পানিটি সাড়ে ২৯ একর আয়তনের একটি জমি নির্বাচন করলেও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তা অনুমোদন দিচ্ছেন না। ফলে ভারতীয় কোম্পানিটি ঠিকাদার নিয়োগ দিলেও তারা সুইচিং স্টেশন নির্মাণে কাজ করতে পারছে না।
জটিলতার এখানেই শেষ নয়। বিদ্যুতের মূল্য নির্ধারণ না করেই বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির (পিপিএ) যে খসড়া করা হয়েছে, তাতে বাংলাদেশ সরকারের বিশেষ করে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুুল মুহিতের আপত্তি আছে। তাই এখনও পিপিএ অনুমোদন হয়নি। পিপিএ অনুমোদন না হওয়ায় এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কাছ থেকে প্রকল্প বাবদ ঋণের একটি বড় অংশ না পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় থাকায় ঋণের অর্থ ছাড়ের জন্য পিপিএ অনুমোদনের শর্ত
বেঁধে দিয়েছে এডিবি। শেষ পর্যন্ত ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করা সম্ভব না হলে ৪০০ কেভি গ্রিড লাইনের সঙ্গে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন গ্রিড স্টেশনটিও অব্যবহৃত থেকে যাবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সঠিক পরিকল্পনা নেওয়া হলে বাংলাদেশ এ অবস্থায় পড়ত না। ভারতে জমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন এবং বিদ্যুতের মূল্য ঠিক করে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নেওয়া হলে বাংলাদেশকে এ নিয়ে ঝুঁকির মুখে পড়তে হতো না। ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানির লক্ষ্যে এ পর্যন্ত উভয় দেশের সরকারের নেওয়া পদক্ষেপে আশার আলো দেখছেন না বিশেষজ্ঞরা।
তবে এ বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করছেন বিদ্যুৎ সচিব আবুল কালাম আজাদ। তিনি সমকালকে বলেন, পিপিএতে বাংলাদেশের পক্ষে আরও কতটা স্বার্থ রক্ষা করা যায় তা যাচাই করে দেখতেই সময় নেওয়া হচ্ছে।
বিদ্যুতের দর ঠিক না করা এবং ভারতের বিভিন্ন শর্তের কারণে গত মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংয়ের বাংলাদেশ সফরকালে চুক্তিটি সই হয়নি। এ জন্য ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বসে রিমোট কন্ট্রোলের সাহায্যে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার গ্রিড স্টেশনের ভিত্তিপ্রস্তরের ফলক উন্মোচনের জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়েও শেষ মুহূর্তে তা বাতিল করা হয়।
প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, কিছুদিন আগে তিনি ভারতে গিয়ে প্রকল্পের অগ্রগতি দেখে এসেছেন। সেখানে ৮০ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইনের জন্য ২৩৪টি টাওয়ার বসাতে হবে। এর মধ্যে প্রায় অর্ধশত টাওয়ারের পাইলিং কাজ সম্পন্ন হয়েছে। টাওয়ারের জমি নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। তবে সুইচিং স্টেশনের জন্য প্রাদেশিক সরকার জমি দিচ্ছে না। অথচ এনটিপিসি পশ্চিমবঙ্গের বহরমপুরে স্থান নির্বাচন করেছে। ওই জমির জন্য সমুদয় অর্থ প্রাদেশিক সরকারকে পরিশোধ করেছে পিজিসিআইএল। চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর সম্মতি এখনও পাওয়া যায়নি। এ সংক্রান্ত একটি ফাইল তার দফতরে আটকে আছে। এই জমি না পেলে পুরো প্রকল্পই ভেস্তে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়েও হয়তো মমতার আপত্তি থাকতে পারে। এ জন্যই তিনি সম্ভবত জমি বরাদ্দ বিষয়ে সম্মতি দিচ্ছেন না। বিদ্যুৎ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মমতা বাংলাদেশ সফরে এলে তাকে এ বিষয়ে বোঝানো যেত। এ ব্যাপারে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রস্তুতিও ছিল। তবে পিজিসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক জামাল উল্লাহ সমকালকে জানান, সুইচিং স্টেশনের জন্য জমি পাওয়া না গেলেও উভয় প্রান্তে সঞ্চালন লাইনের কাজ চলছে। ভেড়ামারায় ১১৩ একর জমির ওপর গ্রিড স্টেশন নির্মাণের জন্য প্রাথমিক কাজ চলছে। বাংলাদেশ অংশে ২৭ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন নির্মাণের জন্য ৮১টি টাওয়ার বসাতে হবে। টাওয়ার বসানোর জন্য বর্তমানে চলছে পাইলিংয়ের কাজ।
সূত্র জানায়, চুক্তিতে বলা আছে, কন্ট্রাকটেড ক্যাপাসিটির আওতায় ভারতের শর্ত অনুযায়ী বাংলাদেশ ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কিনবে। চুক্তিবদ্ধ থাকায় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ না কিনলেও অর্থ পরিশোধ করে যেতে হবে। আবার বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘি্নত হলেও টাকা দিতে বাধ্য থাকবে বাংলাদেশ। দামের ব্যাপারে বলা হয়েছে, ভারত কোনো আলোচনা ছাড়াই বিদ্যুতের দাম ঠিক করবে। পিক কিংবা অফ-পিক আওয়ার নিয়ন্ত্রণের বিষয়টিও ভারতের হাতেই থাকবে। চুক্তিটি হবে ২৫ বছর মেয়াদি। অর্থাৎ এর আগে এটি পর্যালোচনা করার সুযোগ থাকবে না। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন ইতিমধ্যে খসড়া পিপিএর প্রায় প্রতিটি ধারার বিষয়ে তাদের আপত্তি জানিয়েছে। বিদ্যুতের মূল্যসহ এসব বিষয়ে উভয় পক্ষ একমত না হলে শেষ পর্যন্ত এ প্রকল্পের ভবিষ্যৎ অন্ধকার বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।
জটিলতার এখানেই শেষ নয়। বিদ্যুতের মূল্য নির্ধারণ না করেই বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির (পিপিএ) যে খসড়া করা হয়েছে, তাতে বাংলাদেশ সরকারের বিশেষ করে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুুল মুহিতের আপত্তি আছে। তাই এখনও পিপিএ অনুমোদন হয়নি। পিপিএ অনুমোদন না হওয়ায় এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কাছ থেকে প্রকল্প বাবদ ঋণের একটি বড় অংশ না পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় থাকায় ঋণের অর্থ ছাড়ের জন্য পিপিএ অনুমোদনের শর্ত
বেঁধে দিয়েছে এডিবি। শেষ পর্যন্ত ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করা সম্ভব না হলে ৪০০ কেভি গ্রিড লাইনের সঙ্গে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন গ্রিড স্টেশনটিও অব্যবহৃত থেকে যাবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সঠিক পরিকল্পনা নেওয়া হলে বাংলাদেশ এ অবস্থায় পড়ত না। ভারতে জমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন এবং বিদ্যুতের মূল্য ঠিক করে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নেওয়া হলে বাংলাদেশকে এ নিয়ে ঝুঁকির মুখে পড়তে হতো না। ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানির লক্ষ্যে এ পর্যন্ত উভয় দেশের সরকারের নেওয়া পদক্ষেপে আশার আলো দেখছেন না বিশেষজ্ঞরা।
তবে এ বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করছেন বিদ্যুৎ সচিব আবুল কালাম আজাদ। তিনি সমকালকে বলেন, পিপিএতে বাংলাদেশের পক্ষে আরও কতটা স্বার্থ রক্ষা করা যায় তা যাচাই করে দেখতেই সময় নেওয়া হচ্ছে।
বিদ্যুতের দর ঠিক না করা এবং ভারতের বিভিন্ন শর্তের কারণে গত মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংয়ের বাংলাদেশ সফরকালে চুক্তিটি সই হয়নি। এ জন্য ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বসে রিমোট কন্ট্রোলের সাহায্যে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার গ্রিড স্টেশনের ভিত্তিপ্রস্তরের ফলক উন্মোচনের জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়েও শেষ মুহূর্তে তা বাতিল করা হয়।
প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, কিছুদিন আগে তিনি ভারতে গিয়ে প্রকল্পের অগ্রগতি দেখে এসেছেন। সেখানে ৮০ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইনের জন্য ২৩৪টি টাওয়ার বসাতে হবে। এর মধ্যে প্রায় অর্ধশত টাওয়ারের পাইলিং কাজ সম্পন্ন হয়েছে। টাওয়ারের জমি নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। তবে সুইচিং স্টেশনের জন্য প্রাদেশিক সরকার জমি দিচ্ছে না। অথচ এনটিপিসি পশ্চিমবঙ্গের বহরমপুরে স্থান নির্বাচন করেছে। ওই জমির জন্য সমুদয় অর্থ প্রাদেশিক সরকারকে পরিশোধ করেছে পিজিসিআইএল। চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর সম্মতি এখনও পাওয়া যায়নি। এ সংক্রান্ত একটি ফাইল তার দফতরে আটকে আছে। এই জমি না পেলে পুরো প্রকল্পই ভেস্তে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়েও হয়তো মমতার আপত্তি থাকতে পারে। এ জন্যই তিনি সম্ভবত জমি বরাদ্দ বিষয়ে সম্মতি দিচ্ছেন না। বিদ্যুৎ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মমতা বাংলাদেশ সফরে এলে তাকে এ বিষয়ে বোঝানো যেত। এ ব্যাপারে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রস্তুতিও ছিল। তবে পিজিসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক জামাল উল্লাহ সমকালকে জানান, সুইচিং স্টেশনের জন্য জমি পাওয়া না গেলেও উভয় প্রান্তে সঞ্চালন লাইনের কাজ চলছে। ভেড়ামারায় ১১৩ একর জমির ওপর গ্রিড স্টেশন নির্মাণের জন্য প্রাথমিক কাজ চলছে। বাংলাদেশ অংশে ২৭ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন নির্মাণের জন্য ৮১টি টাওয়ার বসাতে হবে। টাওয়ার বসানোর জন্য বর্তমানে চলছে পাইলিংয়ের কাজ।
সূত্র জানায়, চুক্তিতে বলা আছে, কন্ট্রাকটেড ক্যাপাসিটির আওতায় ভারতের শর্ত অনুযায়ী বাংলাদেশ ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কিনবে। চুক্তিবদ্ধ থাকায় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ না কিনলেও অর্থ পরিশোধ করে যেতে হবে। আবার বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘি্নত হলেও টাকা দিতে বাধ্য থাকবে বাংলাদেশ। দামের ব্যাপারে বলা হয়েছে, ভারত কোনো আলোচনা ছাড়াই বিদ্যুতের দাম ঠিক করবে। পিক কিংবা অফ-পিক আওয়ার নিয়ন্ত্রণের বিষয়টিও ভারতের হাতেই থাকবে। চুক্তিটি হবে ২৫ বছর মেয়াদি। অর্থাৎ এর আগে এটি পর্যালোচনা করার সুযোগ থাকবে না। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন ইতিমধ্যে খসড়া পিপিএর প্রায় প্রতিটি ধারার বিষয়ে তাদের আপত্তি জানিয়েছে। বিদ্যুতের মূল্যসহ এসব বিষয়ে উভয় পক্ষ একমত না হলে শেষ পর্যন্ত এ প্রকল্পের ভবিষ্যৎ অন্ধকার বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।
No comments