স্রেফ পাঁচ বছরের সততা দেশের এ অবস্থা পাল্টে দিতে পারে by সাজু আহমেদ
আমরা যারা '৭১-এর সংস্পর্শ পেয়েছি তাদের সবাই সম্ভবত রাজনীতি সম্পর্কে একটা ভালো ধারণা পেয়েছি মুক্তিযুদ্ধের সময়। আমি তখন ক্লাস ফাইভ থেকে সিক্সে উঠেছিলাম। এখনো আমার চোখে ভাসে সেই দৃশ্য। বড়ভাই যুদ্ধে যাওয়ার আগে মাকে সালাম করছেন, মা কাঁদছেন। সে বয়সে শুধু এতটুকু বুঝতাম যে, পাকিস্তানিরা খারাপ, ওদের তাড়ানো দরকার। আর আফসোস করতাম কেন বড় হলাম না, বড়ভাইয়ের সঙ্গে যুদ্ধে যাওয়া হলো না_ এসব নিয়ে। কিন্তু বড় হয়ে উঠতে উঠতে এ অনুভূতি থাকল না। বারবারই মনে এ প্রশ্ন আসল যে, মুক্তিযুদ্ধ কি শেষ হয়েছে? নাকি আবারো মুক্তিযুদ্ধ দরকার? এখন এত বছর পর এ প্রশ্নগুলো একটুও ফিকে হয়নি বরং আরো জোরাল হয়েছে।
কারণ এখন চারপাশে কেবলই শহৃন্যতা দেখছি। এর মধ্যে রাজনৈতিক দর্শনের শহৃন্যতা সবচেয়ে বেশি প্রকট মনে হচ্ছে। '৭১-এ একটি সুবিধা ছিল। তখন আমরা ছিলাম একদিকে আর পাকিস্তানিরা ছিল আরেক দিকে। পক্ষ-বিপক্ষ চেনা তখন ছিল সহজ। কিন্তু এখন যারা আমাদের শত্রু তারা আমাদের পাশের বাড়িতেই থাকে। তারা বাঙালিও বটে। কিন্তু তারা আমাদের শ্রেণীশত্রু। চিহিক্রত করে তাদের বিরুদ্ধে লড়াই না করাটাই এ সময়ের রাজনীতির সবচেয়ে বড় দুর্বলতা।
মুক্তিযুদ্ধের সময় আমরা সবাই এক কাতারে নেমে লড়াই করেছিলাম। কৃষক, শ্রমিক, মধ্যবিত্ত_ কোনো ভেদাভেদ ছিল না। আর মুক্তিযুদ্ধের পর হলো উল্টোটা। মানে সবাই সবার শ্রেণীতে ফেরত গেল। নতুন দেশে নব্য ধনিকশ্রেণী গড়ে উঠল। লুটেরা ছাড়া যাদের আর কোনো পরিচয় নেই। আর রাজনীতিসহ সবখানে এখন তাদেরই দাপট। ইদানীং তাই একটি কথা খুব শোনা যাচ্ছে যে, রাজনীতিতে শেষ বলে কিছু নেই। তবে স্টৈ্বরতনে্পর বিরুদ্ধে এত প্রাণহানি কি ভুল ছিল? আর শেষ যদি নাই থাকে তবে এরা জাতিকে কোথায় নিয়ে যাবে কে জানে!
শুধু বাংলাদেশ নয়, এ অবস্থা মনে হচ্ছে গোটা দুনিয়ায়। সাড়া জাগানো কোনো নেতা আমি এখন পৃথিবীতে দেখি না। আর পরিস্থিতিও খুব ঝাপসা। যারা মুক্তবাজারের কথা বলে তাদের নিজেদের বাজারই মুক্ত নয়। শুধু কা-জ্ঞান থেকে আমি এতটুকু বুঝি যে, পুঁজিবাদ কখনো মুক্তি দেয়নি। এখনো দেবে না।
যে সাম্প্রদায়িক রাষ্ঠ্রকে উচ্ছেদ করে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল সেখানেই এখন দেখা যাচ্ছে মৌলবাদের প্রাধান্য। আমি তখন দিল্লিতে পড়াশোনা করছিলাম। ইসলামকে রাষ্ঠ্রধর্ম করার ঘোষণাটি যখন আমি শুনলাম, তখন মনে হলো আমি একাই মুসলমান। যুগ যুগ ধরে তো এ দেশের মানুষ ধর্মভীরুই ছিল, এখনো আছে। রাষ্ঠ্রধর্ম না থাকার জন্য তো তাদের কোনো অসুবিধা হয়নি। তবে কাদের স্বার্থে এ কৃত্রিম উন্মাদনা? এখন অবস্থা এমন দিকে গেছে যে, এ দেশের সাহসী তরুণদের একটি অংশ জিহাদের নামে আত্নাহুতি দিচ্ছে। অথচ এই তারুণ্য কত কাজেই না লাগানো যেত! আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, এ দেশের আমলা ও রাজনীতিবিদরা যদি স্রেফ পাঁচ বছরের জন্য সৎ থাকেন তাহলে যে মেধা ও সম্পদ আমাদের আছে তা দিয়ে এ দেশে অবস্থা পাল্কেল্ট দেওয়া কঠিন কিছু নয়। কিন্তু এই আশা এ মুহহৃতরাউ দুরাশা ছাড়া কিছুই নয়। কারণ রাজনীতিবিদদের স্বেচ্ছায় সংশোধনের কোনো সম্ভাবনা নেই।
মুক্তিযুদ্ধের সময় আমরা সবাই এক কাতারে নেমে লড়াই করেছিলাম। কৃষক, শ্রমিক, মধ্যবিত্ত_ কোনো ভেদাভেদ ছিল না। আর মুক্তিযুদ্ধের পর হলো উল্টোটা। মানে সবাই সবার শ্রেণীতে ফেরত গেল। নতুন দেশে নব্য ধনিকশ্রেণী গড়ে উঠল। লুটেরা ছাড়া যাদের আর কোনো পরিচয় নেই। আর রাজনীতিসহ সবখানে এখন তাদেরই দাপট। ইদানীং তাই একটি কথা খুব শোনা যাচ্ছে যে, রাজনীতিতে শেষ বলে কিছু নেই। তবে স্টৈ্বরতনে্পর বিরুদ্ধে এত প্রাণহানি কি ভুল ছিল? আর শেষ যদি নাই থাকে তবে এরা জাতিকে কোথায় নিয়ে যাবে কে জানে!
শুধু বাংলাদেশ নয়, এ অবস্থা মনে হচ্ছে গোটা দুনিয়ায়। সাড়া জাগানো কোনো নেতা আমি এখন পৃথিবীতে দেখি না। আর পরিস্থিতিও খুব ঝাপসা। যারা মুক্তবাজারের কথা বলে তাদের নিজেদের বাজারই মুক্ত নয়। শুধু কা-জ্ঞান থেকে আমি এতটুকু বুঝি যে, পুঁজিবাদ কখনো মুক্তি দেয়নি। এখনো দেবে না।
যে সাম্প্রদায়িক রাষ্ঠ্রকে উচ্ছেদ করে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল সেখানেই এখন দেখা যাচ্ছে মৌলবাদের প্রাধান্য। আমি তখন দিল্লিতে পড়াশোনা করছিলাম। ইসলামকে রাষ্ঠ্রধর্ম করার ঘোষণাটি যখন আমি শুনলাম, তখন মনে হলো আমি একাই মুসলমান। যুগ যুগ ধরে তো এ দেশের মানুষ ধর্মভীরুই ছিল, এখনো আছে। রাষ্ঠ্রধর্ম না থাকার জন্য তো তাদের কোনো অসুবিধা হয়নি। তবে কাদের স্বার্থে এ কৃত্রিম উন্মাদনা? এখন অবস্থা এমন দিকে গেছে যে, এ দেশের সাহসী তরুণদের একটি অংশ জিহাদের নামে আত্নাহুতি দিচ্ছে। অথচ এই তারুণ্য কত কাজেই না লাগানো যেত! আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, এ দেশের আমলা ও রাজনীতিবিদরা যদি স্রেফ পাঁচ বছরের জন্য সৎ থাকেন তাহলে যে মেধা ও সম্পদ আমাদের আছে তা দিয়ে এ দেশে অবস্থা পাল্কেল্ট দেওয়া কঠিন কিছু নয়। কিন্তু এই আশা এ মুহহৃতরাউ দুরাশা ছাড়া কিছুই নয়। কারণ রাজনীতিবিদদের স্বেচ্ছায় সংশোধনের কোনো সম্ভাবনা নেই।
No comments