সেসব ছায়াপথ by নোমান মোত্তাকী
কখনো কল্পনা করা যায়, কতটা বিশাল এ মহাবিশ্ব! হাজার বছরের সময়ের ব্যাপ্তিকে অনুধাবন করতে গিয়ে যেভাবে খেই হারিয়ে ফেলি, এ মহাবিশেষ খবর অপরিমেয় বিশালতার কল্পনায় ঠিক তেমনি মন্থরিত হয় আমাদের কল্পনার গতি। তারপরও কল্পলোকের লাগামহীন বাঁধ না মানা ঘোড়াটি কি থেমে থাকতে চায়? শত প্রতিবন্দকতা আর গোঁড়ামির নাগপাশ ছিন্ন করে সে পাড়ি দিতে চায় অনন্ত সময়ের পথে। যে পথে মহাকালের বিশাল নাট্যমঞ্চে মঞ্চায়িত প্রতিটি নাটকের পর্দা উন্মোচিত হয়, মহাবিশ্ব ধরা দেয় তার প্রকৃত স্বরূপ নিয়ে।
এসব নাটকের প্রতিটি দৃশ্যের সঙ্গে আমরা নিজেদের অবস্থানকে ভাবতে ভালোবাসি। কেননা এখন আমরা জানি, এ মহাবিশেষ খব আমাদের অস্তিত্বের সুনিপুণ কোনো ব্যাখ্যা কিংবা আমাদের এ অবস্থানের উদ্দেশ্য মহাকালের ব্যাপ্তিতে মঞ্চায়িত প্রতিটি নাটকের সমষ্টিগত প্রতিফলন মাত্র। পৃথিবীতে যখন মানব প্রজাতির উৎপত্তি ঘটেছিল নিঃসন্দেহে সেটি ছিল প্রাণী বির্বতনের ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। এ মহাবিশেষ খবর অন্য কোথায়ও এ ধরনের কোনো প্রাণ কাঠামোর আবির্ভাব ঘটছে কি-না কিংবা ঘটার সম্ভাবনার বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করলে প্রাণী বির্বতনের এ পর্যায়টিকে মহাকালের মঞ্চায়িত নাটকের একটি অন্যতম দৃশ্য বললেও ভুল হবে না। যদিও এ দৃশ্যটি অন্য যে কোনো পটভূমিতে বা অন্য যে কোনো রূপে দৃশি্যত হতে পারত। কেননা মহাবিশেষ খব ঘটে যাওয়া বা ঘটে চলা কোনো ঘটনারই ভবিষ্য্টাণী করা সম্ভব নয় (শুধু কিছু সীমাবদ্ধ ক্ষেত্র ছাড়া)। বিশেষত জীব বির্বতনের ক্ষেত্রে এ কথাটি আরো বেশি সত্য। অর্থাৎ মহাকালের নাটকের প্রতিটি দৃশ্য কিছু আকস্টি্মক পরির্বতনের ফলাফল মাত্র।
আমাদের সদুহৃরপ্রসারী চিন্তা-ভাবনার ক্ষেত্রটিকে যদি আমাদের ছায়াপথের গণ্ডির বাইরে নিয়ে যাই তাহলেই তো কিছু মোক্ষম উদাহরণ আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে। অন্ততপক্ষে যা এ বিষয়টির নিশ্চয়তা দিতে পারে যে, একই সাধারণ প্রক্রিয়ার তৈরি ছায়াপথগুলোর প্রত্যেকের গঠনশৈলী ও আনুষ্পগিক পার্থক্য বদলে দিতে পারে প্রাণের উন্মেষ প্রক্রিয়াকে। যদিও ছায়াপথগুলোর একই রকমের রাসায়নিক উপাদানের সমল্প্বয়ে গঠিত হয়, তারপরও তাদের পরসঙ্রের মধ্যে থাকতে পারে অনেকগুলো মৌলিক পার্থক্য! শুধু তাই নয়, আমাদের মিল্কি্কওয়েকে ঘিরে আবর্তিত হওয়া ডজনখানেক বামন আকৃতির ছায়াপথের প্রতিটিরই আছে ভিন্ন ভিন্ন ইতিহাস, যদিও মহাবিসেম্ফারণের পর একই পথ ধরে অভিন্ন প্রক্রিয়ায় তৈরি হয়েছে সব ছায়াপথ।
স্কালপটর, ফরনেক্স, সেক্সটেনস কিংবা ক্যারিনা যার নামই করা হোক না কেন সব বামন ছায়াপথই তাদের মৌলিকত্বের দিক দিয়ে ভিন্ন। সৃষ্টির পর সম্পূর্ণ নিজেদের মতো করে বিবর্তিত হয়েছে তারা। হাইড্রোজেন আর হিলিয়াম নামক দুটি মৌলিক উপাদান ছড়া অন্যান্য প্রায় প্রতিটি রাসায়নিক বৈশিষে্ট্য পরসঙ্রের মধ্যে ছায়াপথগুলোর ভিন্নতা রয়েছে। এ ধরনের একটি সিদ্ধানেস্ন আমরা তখনই উপনীত হয়েছি যখন এ চারটি বামন আকৃতির ছায়াপথের মধ্যকার ২০০০ নক্ষত্রের গঠন সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে। একেবারে নক্ষত্র সৃষ্টির প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে তাদের মধ্যকার রাসায়নিক উপাদানের মধ্যকার বিস্ময়কর রকমের পার্থক্য এ বিষয়টিকেই ইঙ্গিত করে যে, আমাদের এখনো অনেক কিছু জানার রয়ে গেছে।
অবলোহিত আলোকরশি্ম নিঃসরণকারী টেলিস্কোপ ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা মহাবিশেষ খবর সেই প্রাচীনতম সময়ের প্রেক্ষাপটকে দেখতে পাই যখন সবেমাত্র ছায়াপথ তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। বিগ ব্যান্তএ ৯০০ কোটি বছর পর প্রায় শ'খানেক ছায়াপথের আনাগোনা দেখা গেলেও এর আরো আগে অর্থাৎ বিগ ব্যান্তএর ৭০ কোটি বছর পরের সময়ে প্রেক্ষাপটে মাত্র হাতেগোনা দু'একটি ছায়াপথের অস্তিত্বই খুঁজে পাওয়া যায়। আজকের মহাবিশেষ খবর কিছু সুন্দরতম অন্দকার পরিম-লে মহাকালের এ সদুীর্ঘ অতীতকে খুঁজে পাওয়া যায়। আর বিশ্লেষকদের ধারণা, এসব প্রাচীন ছায়াপথের মধ্যে কোনোটার আকৃতিই আমাদের মিল্কি্কওয়ে বা তার সমকক্ষ ছিল না। ওগুলোর প্রত্যেকটি ছিল বামন ছায়াপথ। আর তাই মিল্কি্কওয়ের চারপাশে ঘহৃর্ণায়মান বামন ছায়াপথগুলোর অধিকাংশের মধ্যেই পাওয়া যায় কৃষষ্ণগহ্বর, যা সময়ের ইতিহাসে তাদের প্রবীণত্বের স্বাক্ষর বহন করে।
মিল্কি্কওয়ে কিংবা এ ধরনের ছায়াপথের সৃষ্টি হয়েছিল অনেক পরে। ধারণা করা হয়, ছোট ছায়াপথগুলো নিজেদের মধ্যে সল্পিম্নবেশ তৈরি করেছিল অপেক্ষাকৃত বড় আকৃতির ছায়াপথ। তাই হয়তো বয়সে নবীন হওয়া সত্ত্বেও আমাদের ছায়াপথেরও আছে একটি কৃষষ্ণগহ্বর। এখন যদি আরো গভীরভাবে পর্যবেক্ষণলব্ধ ফলাফলকে বিশ্লেষণ করা যায় তাহলে দেখা যাবে, এসব প্রাচীনতম বামন আকৃতির ছায়াপথেই হয়তো প্রাণের প্রথম উন্মেষ ঘটেছিল। আর মিল্কি্কওয়েতের পড়েছিল সেসব ছায়াপথে অঙ্কুরিত প্রাণ বীজের ছিটেফোঁটা। এ ধরনের সিদ্ধানেস্ন আসতে বিজ্ঞানীদের বেশি একটা সময় খরচ করতে হয়নি। অবশ্য তাদের এ সিদ্ধান্ত সবাইকে অবাক করে দিয়েছে এজন্য যে, ওইসব ছায়াপথের নক্ষত্র ব্যবস্থায় আবরণ কোরের ও অন্যান্য মৌলিক উপাদানের সঙ্গে মিল্কি্কওয়ের এত বৈসাদৃশ্য থাকার পরও কীভাবে প্রাণের বিকাশ ঘটা সম্ভব?
সান্তা বারবারার ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে এক মহাশহৃন্য পর্যবেক্ষণকারী দলের উদ্যোগে 'চন্দ্র এক্সরে টেলিস্কোপ' দিয়ে ঘএঈ ১৫৬৯ নামক একটি বামন ছায়াপথ পর্যবেক্ষণের মধ্য দিয়ে কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য বিজ্ঞানীদের হাতে ধরা দেয়। পরর্বতী সময়ে অন্যান্য বামন ছায়াপথের পর্যবেক্ষণেও এ ধরনের তথ্য পাওয়া যায়। পর্যবেক্ষণকারীরা দেখতে পান, লক্ষাধিক ডিগ্রি তাপমাত্রার বহুসংখ্যক ভারি গ্যাস ওইসব ছায়াপথ থেকে মহাশহৃন্যে নির্গত হচ্ছে! শুধু তাই নয়, এসব গ্যাসের মধ্যে হাইড্রোজেন আর হিলিয়ামের সঙ্গে ছিল অক্সিজেনও! আর এ থেকে এটাই বলা যায় যে, ওই বামন ছায়াপথগুলো মহাশহৃন্যে প্রথম অক্সিজেন তৈরি করেছিল আর তার নির্যাস পপৌঁছে দিয়েছিল অন্যান্য ছায়াপথে। কেননা এসব ভারি রাসায়নিক উপাদান মিলেই তৈরি হয়েছিল বহু নতুন ছায়াপথ।
সৃষ্টিলগ্গেম্ন মহাবিশ্ব এতটা জটিল ছিল না, সময় পরিক্রমার মহাকর্ষ বল বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আদি বস্থুপি- পুঞ্জীভূত হয়ে তৈরি করেছিল নক্ষত্র, তারপর ছায়াপথ। যেসব ছায়াপথের অধিকাংশই দৃশ্যমান নয়। ডার্ক ম্যাটারের অন্দকার আবরণে ওগুলো ঢাকা পড়ে আছে এখনো। শুধু অপেক্ষাকৃত উজ্জ্বল ছায়াপথগুলোকেই আমাদের আধুনিক পর্যবেক্ষণে ধরা পড়ে। বামন ছায়াপথগুলোর অস্তিত্ব মানব সভ্যতার জন্য কতটা মর্মসঙ্শর্ী তা অনুমান করতে পেরেই বিজ্ঞানীরা এসব অন্দকারময় ছায়াপথ অনুসন্ধানে নিজেদের নিয়োজিত করছেন।
যারা মহাকাশ বিজ্ঞান নিয়ে সামান্যতম জ্ঞান রাখেন তাদের সবার কাছে অ্যারিসিবো বেতার টেলিস্কোপটি সমান পরিচিত। এটি আমাদের মানব সভ্যতার একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন যা বহির্বিশেষ খব প্রাণ অনুসন্ধানে সর্বক্ষণ নিয়োজিত। আমাদের প্রাযুক্তিক অক্ষমতার কারণে পূর্বর্বতী পর্যবেক্ষণগুলো থেকে অন্দকারময় ছায়াপথগুলো রয়ে গেছে আমাদের ধরাছোঁয়ার বাইরে। তাই বিজ্ঞানীরা এখন অ্যারিসিবোর ্টারস্থ হয়েছেন। কনরাউল বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধানে ৩০৫ মিটার প্রশস্ত অতি সংবেদনশীল এ টেলিস্কোপে নতুনভাবে সাত পিক্সেল ক্ষমতাসম্পন্ন একটি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে, যা আগের তুলনায় এর টেলিস্কোপটির ক্ষমতা বাড়িয়ে দেবে প্রায় ৭ গুণ। আর এর মধ্যে দিয়েই ডার্ক ম্যাটারে আবদ্ধ ছায়াপথগুলোকে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হবে, উন্মোচিত হবে মহাবিশেষ খব সম্পূর্ণ নতুন কোনো ইতিহাস। সূত্র : বিবিসি, ডেইলি সায়েন্স, নাসা
আমাদের সদুহৃরপ্রসারী চিন্তা-ভাবনার ক্ষেত্রটিকে যদি আমাদের ছায়াপথের গণ্ডির বাইরে নিয়ে যাই তাহলেই তো কিছু মোক্ষম উদাহরণ আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে। অন্ততপক্ষে যা এ বিষয়টির নিশ্চয়তা দিতে পারে যে, একই সাধারণ প্রক্রিয়ার তৈরি ছায়াপথগুলোর প্রত্যেকের গঠনশৈলী ও আনুষ্পগিক পার্থক্য বদলে দিতে পারে প্রাণের উন্মেষ প্রক্রিয়াকে। যদিও ছায়াপথগুলোর একই রকমের রাসায়নিক উপাদানের সমল্প্বয়ে গঠিত হয়, তারপরও তাদের পরসঙ্রের মধ্যে থাকতে পারে অনেকগুলো মৌলিক পার্থক্য! শুধু তাই নয়, আমাদের মিল্কি্কওয়েকে ঘিরে আবর্তিত হওয়া ডজনখানেক বামন আকৃতির ছায়াপথের প্রতিটিরই আছে ভিন্ন ভিন্ন ইতিহাস, যদিও মহাবিসেম্ফারণের পর একই পথ ধরে অভিন্ন প্রক্রিয়ায় তৈরি হয়েছে সব ছায়াপথ।
স্কালপটর, ফরনেক্স, সেক্সটেনস কিংবা ক্যারিনা যার নামই করা হোক না কেন সব বামন ছায়াপথই তাদের মৌলিকত্বের দিক দিয়ে ভিন্ন। সৃষ্টির পর সম্পূর্ণ নিজেদের মতো করে বিবর্তিত হয়েছে তারা। হাইড্রোজেন আর হিলিয়াম নামক দুটি মৌলিক উপাদান ছড়া অন্যান্য প্রায় প্রতিটি রাসায়নিক বৈশিষে্ট্য পরসঙ্রের মধ্যে ছায়াপথগুলোর ভিন্নতা রয়েছে। এ ধরনের একটি সিদ্ধানেস্ন আমরা তখনই উপনীত হয়েছি যখন এ চারটি বামন আকৃতির ছায়াপথের মধ্যকার ২০০০ নক্ষত্রের গঠন সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে। একেবারে নক্ষত্র সৃষ্টির প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে তাদের মধ্যকার রাসায়নিক উপাদানের মধ্যকার বিস্ময়কর রকমের পার্থক্য এ বিষয়টিকেই ইঙ্গিত করে যে, আমাদের এখনো অনেক কিছু জানার রয়ে গেছে।
অবলোহিত আলোকরশি্ম নিঃসরণকারী টেলিস্কোপ ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা মহাবিশেষ খবর সেই প্রাচীনতম সময়ের প্রেক্ষাপটকে দেখতে পাই যখন সবেমাত্র ছায়াপথ তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। বিগ ব্যান্তএ ৯০০ কোটি বছর পর প্রায় শ'খানেক ছায়াপথের আনাগোনা দেখা গেলেও এর আরো আগে অর্থাৎ বিগ ব্যান্তএর ৭০ কোটি বছর পরের সময়ে প্রেক্ষাপটে মাত্র হাতেগোনা দু'একটি ছায়াপথের অস্তিত্বই খুঁজে পাওয়া যায়। আজকের মহাবিশেষ খবর কিছু সুন্দরতম অন্দকার পরিম-লে মহাকালের এ সদুীর্ঘ অতীতকে খুঁজে পাওয়া যায়। আর বিশ্লেষকদের ধারণা, এসব প্রাচীন ছায়াপথের মধ্যে কোনোটার আকৃতিই আমাদের মিল্কি্কওয়ে বা তার সমকক্ষ ছিল না। ওগুলোর প্রত্যেকটি ছিল বামন ছায়াপথ। আর তাই মিল্কি্কওয়ের চারপাশে ঘহৃর্ণায়মান বামন ছায়াপথগুলোর অধিকাংশের মধ্যেই পাওয়া যায় কৃষষ্ণগহ্বর, যা সময়ের ইতিহাসে তাদের প্রবীণত্বের স্বাক্ষর বহন করে।
মিল্কি্কওয়ে কিংবা এ ধরনের ছায়াপথের সৃষ্টি হয়েছিল অনেক পরে। ধারণা করা হয়, ছোট ছায়াপথগুলো নিজেদের মধ্যে সল্পিম্নবেশ তৈরি করেছিল অপেক্ষাকৃত বড় আকৃতির ছায়াপথ। তাই হয়তো বয়সে নবীন হওয়া সত্ত্বেও আমাদের ছায়াপথেরও আছে একটি কৃষষ্ণগহ্বর। এখন যদি আরো গভীরভাবে পর্যবেক্ষণলব্ধ ফলাফলকে বিশ্লেষণ করা যায় তাহলে দেখা যাবে, এসব প্রাচীনতম বামন আকৃতির ছায়াপথেই হয়তো প্রাণের প্রথম উন্মেষ ঘটেছিল। আর মিল্কি্কওয়েতের পড়েছিল সেসব ছায়াপথে অঙ্কুরিত প্রাণ বীজের ছিটেফোঁটা। এ ধরনের সিদ্ধানেস্ন আসতে বিজ্ঞানীদের বেশি একটা সময় খরচ করতে হয়নি। অবশ্য তাদের এ সিদ্ধান্ত সবাইকে অবাক করে দিয়েছে এজন্য যে, ওইসব ছায়াপথের নক্ষত্র ব্যবস্থায় আবরণ কোরের ও অন্যান্য মৌলিক উপাদানের সঙ্গে মিল্কি্কওয়ের এত বৈসাদৃশ্য থাকার পরও কীভাবে প্রাণের বিকাশ ঘটা সম্ভব?
সান্তা বারবারার ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে এক মহাশহৃন্য পর্যবেক্ষণকারী দলের উদ্যোগে 'চন্দ্র এক্সরে টেলিস্কোপ' দিয়ে ঘএঈ ১৫৬৯ নামক একটি বামন ছায়াপথ পর্যবেক্ষণের মধ্য দিয়ে কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য বিজ্ঞানীদের হাতে ধরা দেয়। পরর্বতী সময়ে অন্যান্য বামন ছায়াপথের পর্যবেক্ষণেও এ ধরনের তথ্য পাওয়া যায়। পর্যবেক্ষণকারীরা দেখতে পান, লক্ষাধিক ডিগ্রি তাপমাত্রার বহুসংখ্যক ভারি গ্যাস ওইসব ছায়াপথ থেকে মহাশহৃন্যে নির্গত হচ্ছে! শুধু তাই নয়, এসব গ্যাসের মধ্যে হাইড্রোজেন আর হিলিয়ামের সঙ্গে ছিল অক্সিজেনও! আর এ থেকে এটাই বলা যায় যে, ওই বামন ছায়াপথগুলো মহাশহৃন্যে প্রথম অক্সিজেন তৈরি করেছিল আর তার নির্যাস পপৌঁছে দিয়েছিল অন্যান্য ছায়াপথে। কেননা এসব ভারি রাসায়নিক উপাদান মিলেই তৈরি হয়েছিল বহু নতুন ছায়াপথ।
সৃষ্টিলগ্গেম্ন মহাবিশ্ব এতটা জটিল ছিল না, সময় পরিক্রমার মহাকর্ষ বল বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আদি বস্থুপি- পুঞ্জীভূত হয়ে তৈরি করেছিল নক্ষত্র, তারপর ছায়াপথ। যেসব ছায়াপথের অধিকাংশই দৃশ্যমান নয়। ডার্ক ম্যাটারের অন্দকার আবরণে ওগুলো ঢাকা পড়ে আছে এখনো। শুধু অপেক্ষাকৃত উজ্জ্বল ছায়াপথগুলোকেই আমাদের আধুনিক পর্যবেক্ষণে ধরা পড়ে। বামন ছায়াপথগুলোর অস্তিত্ব মানব সভ্যতার জন্য কতটা মর্মসঙ্শর্ী তা অনুমান করতে পেরেই বিজ্ঞানীরা এসব অন্দকারময় ছায়াপথ অনুসন্ধানে নিজেদের নিয়োজিত করছেন।
যারা মহাকাশ বিজ্ঞান নিয়ে সামান্যতম জ্ঞান রাখেন তাদের সবার কাছে অ্যারিসিবো বেতার টেলিস্কোপটি সমান পরিচিত। এটি আমাদের মানব সভ্যতার একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন যা বহির্বিশেষ খব প্রাণ অনুসন্ধানে সর্বক্ষণ নিয়োজিত। আমাদের প্রাযুক্তিক অক্ষমতার কারণে পূর্বর্বতী পর্যবেক্ষণগুলো থেকে অন্দকারময় ছায়াপথগুলো রয়ে গেছে আমাদের ধরাছোঁয়ার বাইরে। তাই বিজ্ঞানীরা এখন অ্যারিসিবোর ্টারস্থ হয়েছেন। কনরাউল বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধানে ৩০৫ মিটার প্রশস্ত অতি সংবেদনশীল এ টেলিস্কোপে নতুনভাবে সাত পিক্সেল ক্ষমতাসম্পন্ন একটি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে, যা আগের তুলনায় এর টেলিস্কোপটির ক্ষমতা বাড়িয়ে দেবে প্রায় ৭ গুণ। আর এর মধ্যে দিয়েই ডার্ক ম্যাটারে আবদ্ধ ছায়াপথগুলোকে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হবে, উন্মোচিত হবে মহাবিশেষ খব সম্পূর্ণ নতুন কোনো ইতিহাস। সূত্র : বিবিসি, ডেইলি সায়েন্স, নাসা
No comments