উজ্জ্বল হচ্ছেন আর্জেন্টিনার মেসি
স্বপ্নের মৃত্যু নেই! কথাটি যে মনীষীই বলে থাকুন না কেন, যথার্থ। এই যে দিন-মাস-বছর করে যুগ পেরিয়ে যাচ্ছে, এই যে বারবার স্বপ্নভঙ্গের বেদনায় পুড়তে হচ্ছে তবু কি হাল ছাড়ছে আর্জেন্টিনা! প্রতিবার আবার নতুন করে দেখছে স্বপ্ন। আরেকটি বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের পথচলার শুরুতে আবারও তাদের স্বপ্নে আঁকিবুঁকি কাটছে আলোঝলমলে দূরের বাতিঘর। ২০১৪ বিশ্বকাপ!তাদের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন লিওনেল মেসি নামের এক জাদুকর; যাঁর ফুটবল প্রতিভা দৈবিক, ছোট্ট চর্মগোলকের সঙ্গে যাঁর সম্পর্ক ঐশ্বরিক।
বার্সেলোনার জার্সি গায়ে ম্যাচের পর ম্যাচ সেই প্রমাণ দিয়ে চলেছেন মেসি। কিন্তু আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে উঠলেই যে কী হয়! নিজেকে যেন হারিয়ে খোঁজেন তিনি। হ্যাঁ, এখানে জাভি-ইনিয়েস্তা-ভিয়ারা নেই। ঐতিহাসিকভাবেও আলবিসেলেস্তেদের খেলার ধরন কাতালানদের মতো নয়। কিন্তু তা মানবেন কেন পাঁড় আর্জেন্টাইন সমর্থকরা! বার্সেলোনার মেসিকেই তাঁদের চাই।
পরশু চিলির বিপক্ষে ম্যাচে আকাশি-সাদা জার্সিতে অবশেষে যেন মেরুন-নীলের প্রতিফলন। না, আর্জেন্টিনার হয়ে সেরা ম্যাচটি খেলেননি মেসি। তবে প্রতিশ্রুতির ঝলক ছিল সেরাতে ফেরার। দল জিতেছে ৪-১ গোলে। তাতে নিজে করেছেন এক গোল, করিয়েছেন আরো একটি। ২৬তম মিনিটে করা ওই গোলটির মাহাত্ম্য কিন্তু অনেক। প্রতিযোগিতামূলক আন্তর্জাতিক ম্যাচে আড়াই বছরেরও বেশি সময় পর যে লক্ষ্যভেদ করলেন মেসি। ২০০৯ সালের ২৮ মার্চ ভেনিজুয়েলার বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে সর্বশেষ গোল পেয়েছিলেন। এরপর সেবারের বাছাইপর্বে ৬ ম্যাচ, ২০১০ বিশ্বকাপের ৫ ম্যাচ আর মাসকয়েক আগের কোপা আমেরিকার আরো ৪ ম্যাচ_এই ১৫ খেলা ধরে গোলবন্ধ্যাত্ম ছিল তাঁর। জেঁকে বসা চাপটি তাই চিলির বিপক্ষে গোলে আপাতত দূরে সরিয়ে দিয়েছেন মেসি।
আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে এমনিতেই মেসির ম্যাচ ও গোলের অনুপাত চোখে পড়ার মতো নয়। ৬৩ ম্যাচে মাত্র ১৮ গোল। অথচ বার্সেলোনার জার্সি গায়ে সর্বশেষ ৬৩ ম্যাচে মেসি করেছেন বিস্ময়কর ৬২ গোল! চিলির বিপক্ষে অধিনায়ক গোল দেওয়ার পর তাই দারুণ উচ্ছ্বসিত কোচ আলেসান্দ্রো সাবেলা, 'অনেকের মনে এই বিশ্বাস জন্মে গিয়েছিল যে আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে মেসি ভালো খেলতে পারে না। এই ম্যাচের পর তাঁরা নিশ্চয়ই আর তেমনটা ভাববেন না। এ কারণেই বলছি, লিওনেলের জন্য এই গোলটি গুরুত্বপূর্ণ।' কোচ হওয়ার পর মেসিকে অধিনায়ক বানিয়েছেন সাবেলা। এতেই বোঝা যায়, এই জাদুকরের প্রতি তাঁর আস্থা। এ কারণেই প্রিয় শিষ্যের গোল পাওয়া নিয়ে যে তিনি খুব একটা চিন্তিত কখনোই ছিলেন না, সেটি জানাতেও ভোলেননি তিনি, 'সত্যি বলতে কি, গোল পাওয়া না পাওয়াতে খুব বেশি কিছু যায়-আসে না। আমরা এ নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলাম না। কারণ গোল না করলেও মেসি সব সময়ই আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে দুর্দান্ত খেলেছে। এমন সব মুভ শুরু করেছে, যার শেষ হয়েছে সতীর্থ কারো গোলে।'
আর্জেন্টিনা তাই স্বপ্ন বুনে চলেছে। ২০১৪ সালে ১৯৮৬ ফেরানোর। ডিয়েগো ম্যারাডোনার জাতিস্মর হয়ে লিওনেল মেসির আবির্ভাবের। আর ব্রাজিল! স্বপ্নের জগতে আনাগোনা রয়েছে তাদেরও। পরের বিশ্বকাপ হবে নিজেদের মাটিতে, সেখানে ১৯৫০ সালের দুঃস্বপ্নের কবর দিতে হবে না!
কিন্তু সেটি হবে কিভাবে! দলের খেলায় যে নেই সেই ধারাবাহিকতা। এক ম্যাচে দুর্দান্ত খেলেন তো পরের ম্যাচেই ঘুমন্ত। কোস্টারিকার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচের ১-০ গোলে জয়ের পর ব্রাজিলের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও গ্লোবো সংবাদপত্র তাই যথার্থ শিরোনাম করেছে, 'তন্দ্রাচ্ছন্ন ব্রাজিল হারাল কোস্টারিকাকে'। আর মেসির মতো অতীন্দ্রিয় ক্ষমতাসম্পন্ন ফুটবলারের আকালও চলছে ক্যানারিনহোদের। এক আছেন রোনালদিনহো, যিনি আছেন অতীতের ছায়া হয়ে। আর বলতে নেইমার, যাঁর মধ্যে আছে বিশ্বজয়ের প্রতিশ্রুতি। তবে পুরো জাতির স্বপ্নভার বইবার মতো চওড়া এখনো হয়নি ১৯ বছরের এই ছেলের কাঁধ।
তবে কোস্টারিকার বিপক্ষে কিন্তু নেইমারের গোলেই জিতেছে ব্রাজিল। ও গ্লোবো ব্রাজিলের সমালোচনার মধ্যেও প্রশংসা করেছে ক্যানারিনহোদের হয়ে ১৪ ম্যাচে আট গোল করা এই সেনসেশনের, 'খুব ভালো না খেলেও নেইমারের গোলের সৌজন্যে জয় পেয়েছে ব্রাজিল। বৃষ্টির মধ্যে গড়পড়তা ফুটবলই খেলেছে তারা।' ক্রীড়া দৈনিক ল্যান্সেও ছিল মানো মেনেজেসের দলের ওপর ক্ষুব্ধতার প্রকাশ, 'ব্রাজিলের ফুটবল-প্রদর্শনীতে ছিল না কোনো সৃজনশীলতা। ছিল না কৌতূহলোদ্দীপক কিছু।'
কোচ মেনেজেসের ব্যর্থতা স্বীকারে আপত্তি নেই। তবে পাশাপাশি তাদের ওপর আস্থা রাখার দাবিও জানিয়েছেন সমর্থকদের প্রতি, 'স্বীকার করছি যে, আমরা নিজেদের সেরাটা খেলতে পারিনি। তবে আমাদের চেষ্টার কিন্তু কমতি ছিল না। এক গোল হয়তো অনেক কিছু না কিন্তু জয়ের জন্য সেটিই ছিল যথেষ্ট। ২০১৪ বিশ্বকাপ সামনে রেখে আমরা ধীরে ধীরে নিজেদের সেরাতে ফিরছি।'
ফিরলেই ভালো। আর সেজন্য ব্রাজিলের হাতে সময়ও আছে ঢের। এখনো প্রায় হাজার দিন। কিন্তু সেখানে মূল পর্বে গিয়ে ব্যর্থ হলে ইতিহাস ক্ষমা করবে না কাউকে। যেমনটা ক্ষমা পায়নি ১৯৫০ বিশ্বকাপে ব্যর্থ ব্রাজিল দল! ওয়েবসাইট
পরশু চিলির বিপক্ষে ম্যাচে আকাশি-সাদা জার্সিতে অবশেষে যেন মেরুন-নীলের প্রতিফলন। না, আর্জেন্টিনার হয়ে সেরা ম্যাচটি খেলেননি মেসি। তবে প্রতিশ্রুতির ঝলক ছিল সেরাতে ফেরার। দল জিতেছে ৪-১ গোলে। তাতে নিজে করেছেন এক গোল, করিয়েছেন আরো একটি। ২৬তম মিনিটে করা ওই গোলটির মাহাত্ম্য কিন্তু অনেক। প্রতিযোগিতামূলক আন্তর্জাতিক ম্যাচে আড়াই বছরেরও বেশি সময় পর যে লক্ষ্যভেদ করলেন মেসি। ২০০৯ সালের ২৮ মার্চ ভেনিজুয়েলার বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে সর্বশেষ গোল পেয়েছিলেন। এরপর সেবারের বাছাইপর্বে ৬ ম্যাচ, ২০১০ বিশ্বকাপের ৫ ম্যাচ আর মাসকয়েক আগের কোপা আমেরিকার আরো ৪ ম্যাচ_এই ১৫ খেলা ধরে গোলবন্ধ্যাত্ম ছিল তাঁর। জেঁকে বসা চাপটি তাই চিলির বিপক্ষে গোলে আপাতত দূরে সরিয়ে দিয়েছেন মেসি।
আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে এমনিতেই মেসির ম্যাচ ও গোলের অনুপাত চোখে পড়ার মতো নয়। ৬৩ ম্যাচে মাত্র ১৮ গোল। অথচ বার্সেলোনার জার্সি গায়ে সর্বশেষ ৬৩ ম্যাচে মেসি করেছেন বিস্ময়কর ৬২ গোল! চিলির বিপক্ষে অধিনায়ক গোল দেওয়ার পর তাই দারুণ উচ্ছ্বসিত কোচ আলেসান্দ্রো সাবেলা, 'অনেকের মনে এই বিশ্বাস জন্মে গিয়েছিল যে আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে মেসি ভালো খেলতে পারে না। এই ম্যাচের পর তাঁরা নিশ্চয়ই আর তেমনটা ভাববেন না। এ কারণেই বলছি, লিওনেলের জন্য এই গোলটি গুরুত্বপূর্ণ।' কোচ হওয়ার পর মেসিকে অধিনায়ক বানিয়েছেন সাবেলা। এতেই বোঝা যায়, এই জাদুকরের প্রতি তাঁর আস্থা। এ কারণেই প্রিয় শিষ্যের গোল পাওয়া নিয়ে যে তিনি খুব একটা চিন্তিত কখনোই ছিলেন না, সেটি জানাতেও ভোলেননি তিনি, 'সত্যি বলতে কি, গোল পাওয়া না পাওয়াতে খুব বেশি কিছু যায়-আসে না। আমরা এ নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলাম না। কারণ গোল না করলেও মেসি সব সময়ই আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে দুর্দান্ত খেলেছে। এমন সব মুভ শুরু করেছে, যার শেষ হয়েছে সতীর্থ কারো গোলে।'
আর্জেন্টিনা তাই স্বপ্ন বুনে চলেছে। ২০১৪ সালে ১৯৮৬ ফেরানোর। ডিয়েগো ম্যারাডোনার জাতিস্মর হয়ে লিওনেল মেসির আবির্ভাবের। আর ব্রাজিল! স্বপ্নের জগতে আনাগোনা রয়েছে তাদেরও। পরের বিশ্বকাপ হবে নিজেদের মাটিতে, সেখানে ১৯৫০ সালের দুঃস্বপ্নের কবর দিতে হবে না!
কিন্তু সেটি হবে কিভাবে! দলের খেলায় যে নেই সেই ধারাবাহিকতা। এক ম্যাচে দুর্দান্ত খেলেন তো পরের ম্যাচেই ঘুমন্ত। কোস্টারিকার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচের ১-০ গোলে জয়ের পর ব্রাজিলের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও গ্লোবো সংবাদপত্র তাই যথার্থ শিরোনাম করেছে, 'তন্দ্রাচ্ছন্ন ব্রাজিল হারাল কোস্টারিকাকে'। আর মেসির মতো অতীন্দ্রিয় ক্ষমতাসম্পন্ন ফুটবলারের আকালও চলছে ক্যানারিনহোদের। এক আছেন রোনালদিনহো, যিনি আছেন অতীতের ছায়া হয়ে। আর বলতে নেইমার, যাঁর মধ্যে আছে বিশ্বজয়ের প্রতিশ্রুতি। তবে পুরো জাতির স্বপ্নভার বইবার মতো চওড়া এখনো হয়নি ১৯ বছরের এই ছেলের কাঁধ।
তবে কোস্টারিকার বিপক্ষে কিন্তু নেইমারের গোলেই জিতেছে ব্রাজিল। ও গ্লোবো ব্রাজিলের সমালোচনার মধ্যেও প্রশংসা করেছে ক্যানারিনহোদের হয়ে ১৪ ম্যাচে আট গোল করা এই সেনসেশনের, 'খুব ভালো না খেলেও নেইমারের গোলের সৌজন্যে জয় পেয়েছে ব্রাজিল। বৃষ্টির মধ্যে গড়পড়তা ফুটবলই খেলেছে তারা।' ক্রীড়া দৈনিক ল্যান্সেও ছিল মানো মেনেজেসের দলের ওপর ক্ষুব্ধতার প্রকাশ, 'ব্রাজিলের ফুটবল-প্রদর্শনীতে ছিল না কোনো সৃজনশীলতা। ছিল না কৌতূহলোদ্দীপক কিছু।'
কোচ মেনেজেসের ব্যর্থতা স্বীকারে আপত্তি নেই। তবে পাশাপাশি তাদের ওপর আস্থা রাখার দাবিও জানিয়েছেন সমর্থকদের প্রতি, 'স্বীকার করছি যে, আমরা নিজেদের সেরাটা খেলতে পারিনি। তবে আমাদের চেষ্টার কিন্তু কমতি ছিল না। এক গোল হয়তো অনেক কিছু না কিন্তু জয়ের জন্য সেটিই ছিল যথেষ্ট। ২০১৪ বিশ্বকাপ সামনে রেখে আমরা ধীরে ধীরে নিজেদের সেরাতে ফিরছি।'
ফিরলেই ভালো। আর সেজন্য ব্রাজিলের হাতে সময়ও আছে ঢের। এখনো প্রায় হাজার দিন। কিন্তু সেখানে মূল পর্বে গিয়ে ব্যর্থ হলে ইতিহাস ক্ষমা করবে না কাউকে। যেমনটা ক্ষমা পায়নি ১৯৫০ বিশ্বকাপে ব্যর্থ ব্রাজিল দল! ওয়েবসাইট
No comments