দুর্লভ গাঙটিটি by আ ন ম আমিনুর রহমান
কদিন আগে গিয়েছিলাম পঞ্চগড়ে। চা-বাগান ঘুরে দেখছিলাম। ঘুরতে ঘুরতে এলাম পুরোনো তেঁতুলিয়ায়। মহিষের এক পরিত্যক্ত বাথান দেখে গাড়ি থেকে নামলাম। সামনেই মহানন্দা নদী। হ্যাঁ, যাদের খুঁজছি, এদিকেই তাদের পাওয়া যেতে পারে। অতএব, দেরি না করে নদীর তীর ধরে হাঁটা দিলাম।
এদিক ওদিক তাকিয়ে হঠাৎ এক জোড়া অন্য রকম পাখির দেখা পেলাম। হ্যাঁ, পেয়ে গেছি। ফোকাস করে যে-ই না ক্লিক করব, পাখি দুটি উড়ে গিয়ে মহানন্দার অন্য তীরে গিয়ে বসল। একেবারে সীমান্তের ওপারে। কী করি? অগ্যতা জুতা খুলে প্যান্ট গুটিয়ে নদীর মাঝামাঝি পর্যন্ত গিয়ে দাঁড়ালাম। হাঁটুপানি। কিছুটা দূর থেকে কটা ছবি তুললাম। এর মধ্যে একটি পাখিকে দেখলাম বালুতটে মুখ ডুবিয়ে চমৎকার ভঙ্গিতে কী যেন খাচ্ছে।
এতক্ষণ যার কথা বললাম, সে হলো ‘নদী টিটি’ (River Lapwing বা Spur-winged Lapwing)। এক ধরনের হট্টিটি পাখি। আমাদের গ্রামের বাড়ি মেঘনার শাখানদীর পারে। এই শাখানদীকে আমরা বলি গাঙ। ছেলেবেলায় সেখানে প্রচুর এই পাখি দেখেছি। আমাদের গ্রামে এরা ‘গাঙটিটি’ নামে পরিচিত। এদের বৈজ্ঞানিক নাম Vanellus duvaucelii. এ দেশের হট্টিটি প্রজাতিগুলোর মধ্যে এরা অত্যন্ত দুর্লভ। বর্তমানে এরা বিপন্নও (Endangered) বটে। মূলত চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোতে এদের বেশি দেখা যায়। তবে ঢাকা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগেও কদাচ দেখা মেলে।
গাঙটিটি পায়রা আকারের পাখি। লম্বায় ২৯-৩২ সেন্টিমিটার। ওজন ১৬৫ গ্রাম। পিঠের রং বেলে-বাদামি। মাথার খোঁপা, মাথা, ঘাড়, মুখমণ্ডল, ঠোঁট ও বুকের ওপরের অংশ কালো। বুক ধূসর-বাদামি। পেট সাদা ও পেটের মাঝখানটা কালো। লেজের শেষ প্রান্ত, পা, আঙুল ও নখ কালো। স্ত্রী-পুরুষ দেখতে একই রকম। তবে আকারে পুরুষগুলো খানিকটা বড় হয়। বাচ্চাদের মাথায় সাদা ফোঁটা এবং পিঠে হলুদ ও গাঢ় দাগ থাকে।
এরা নদী ও খাঁড়ির বালুতট এবং নুড়িসমৃদ্ধ এলাকায় বাস করে। সচরাচর একাকী, জোড়ায় বা চার-ছয়টির ছোট দলে বিচরণ করে। নদীর পাড়ে হেঁটে হেঁটে ঠোঁটের সাহায্যে চমৎকার ভঙ্গিতে খাবার সংগ্রহ করে। এরা পা না ভেঙে এমনভাবে বালুর মধ্যে মুখ ডুবিয়ে খাবার খোঁজে যে ভঙ্গিটি দেখতে বেশ হাস্যকর। কীটপতঙ্গ, ছোট ব্যাঙ ও ব্যাঙাচি, কাঁকড়াজাতীয় প্রাণী খায়। ভোরবেলা ও সন্ধ্যার আগে এবং চাঁদনি রাতে বেশ সক্রিয় থাকে। এরা তীক্ষভাবে ‘টিপ-টিপ বা ডিড-ডিড-ডিড’ স্বরে ডাকে।
মার্চ থেকে জুন এদের প্রজনন মৌসুম। নদীর তীরে নুড়ি দিয়ে বাসা বানায়। বাসা মোটেও গভীর নয়। স্ত্রী গাঙটিটি তিন-চারটি জলপাই রঙের ডিম পাড়ে। ডিম আর নুড়ি পাথর মিলেমিশে বেশ একটা ছদ্মবেশ তৈরি করে। আর এভাবেই শত্রুর হাত থেকে ডিম রক্ষা পায়। বাচ্চা ফোটে ২২-২৪ দিনে। পা ও ঠোঁট ছাড়া সদ্য ফোটা বাচ্চাগুলো দেখতে একদম ডিমের রঙের মতো। ফোটার ২৪-৩৬ ঘণ্টার মধ্যেই বাচ্চারা মা-বাবার সঙ্গে বাসা ছেড়ে হাঁটা দেয় ও খাবারের অন্বেষণে ঘোরাঘুরি শুরু করে। এদের গায়ের রং এমন যে তা সহজেই পরিবেশের সঙ্গে মিশেমিশে ছদ্মবেশ ধারণ করতে পারে। বাচ্চাগুলো বিপদের গন্ধ পেলে বা মা-বাবার সংকেত পেলে মুহূর্তের মধ্যে মাটির সঙ্গে মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। বিপন্ন এই গাঙটিটিগুলোকে রক্ষার জন্য আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
এতক্ষণ যার কথা বললাম, সে হলো ‘নদী টিটি’ (River Lapwing বা Spur-winged Lapwing)। এক ধরনের হট্টিটি পাখি। আমাদের গ্রামের বাড়ি মেঘনার শাখানদীর পারে। এই শাখানদীকে আমরা বলি গাঙ। ছেলেবেলায় সেখানে প্রচুর এই পাখি দেখেছি। আমাদের গ্রামে এরা ‘গাঙটিটি’ নামে পরিচিত। এদের বৈজ্ঞানিক নাম Vanellus duvaucelii. এ দেশের হট্টিটি প্রজাতিগুলোর মধ্যে এরা অত্যন্ত দুর্লভ। বর্তমানে এরা বিপন্নও (Endangered) বটে। মূলত চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোতে এদের বেশি দেখা যায়। তবে ঢাকা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগেও কদাচ দেখা মেলে।
গাঙটিটি পায়রা আকারের পাখি। লম্বায় ২৯-৩২ সেন্টিমিটার। ওজন ১৬৫ গ্রাম। পিঠের রং বেলে-বাদামি। মাথার খোঁপা, মাথা, ঘাড়, মুখমণ্ডল, ঠোঁট ও বুকের ওপরের অংশ কালো। বুক ধূসর-বাদামি। পেট সাদা ও পেটের মাঝখানটা কালো। লেজের শেষ প্রান্ত, পা, আঙুল ও নখ কালো। স্ত্রী-পুরুষ দেখতে একই রকম। তবে আকারে পুরুষগুলো খানিকটা বড় হয়। বাচ্চাদের মাথায় সাদা ফোঁটা এবং পিঠে হলুদ ও গাঢ় দাগ থাকে।
এরা নদী ও খাঁড়ির বালুতট এবং নুড়িসমৃদ্ধ এলাকায় বাস করে। সচরাচর একাকী, জোড়ায় বা চার-ছয়টির ছোট দলে বিচরণ করে। নদীর পাড়ে হেঁটে হেঁটে ঠোঁটের সাহায্যে চমৎকার ভঙ্গিতে খাবার সংগ্রহ করে। এরা পা না ভেঙে এমনভাবে বালুর মধ্যে মুখ ডুবিয়ে খাবার খোঁজে যে ভঙ্গিটি দেখতে বেশ হাস্যকর। কীটপতঙ্গ, ছোট ব্যাঙ ও ব্যাঙাচি, কাঁকড়াজাতীয় প্রাণী খায়। ভোরবেলা ও সন্ধ্যার আগে এবং চাঁদনি রাতে বেশ সক্রিয় থাকে। এরা তীক্ষভাবে ‘টিপ-টিপ বা ডিড-ডিড-ডিড’ স্বরে ডাকে।
মার্চ থেকে জুন এদের প্রজনন মৌসুম। নদীর তীরে নুড়ি দিয়ে বাসা বানায়। বাসা মোটেও গভীর নয়। স্ত্রী গাঙটিটি তিন-চারটি জলপাই রঙের ডিম পাড়ে। ডিম আর নুড়ি পাথর মিলেমিশে বেশ একটা ছদ্মবেশ তৈরি করে। আর এভাবেই শত্রুর হাত থেকে ডিম রক্ষা পায়। বাচ্চা ফোটে ২২-২৪ দিনে। পা ও ঠোঁট ছাড়া সদ্য ফোটা বাচ্চাগুলো দেখতে একদম ডিমের রঙের মতো। ফোটার ২৪-৩৬ ঘণ্টার মধ্যেই বাচ্চারা মা-বাবার সঙ্গে বাসা ছেড়ে হাঁটা দেয় ও খাবারের অন্বেষণে ঘোরাঘুরি শুরু করে। এদের গায়ের রং এমন যে তা সহজেই পরিবেশের সঙ্গে মিশেমিশে ছদ্মবেশ ধারণ করতে পারে। বাচ্চাগুলো বিপদের গন্ধ পেলে বা মা-বাবার সংকেত পেলে মুহূর্তের মধ্যে মাটির সঙ্গে মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। বিপন্ন এই গাঙটিটিগুলোকে রক্ষার জন্য আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
No comments