বিপজ্জনক বাঁকে যা করণীয় by মোঃ আমজাদ হোসেন
বলা হয়, দুর্ঘটনার ওপর কারও হাত নেই। সবই যদি নিয়তির লিখন হবে, তাহলে বাংলাদেশের মানুষের দুর্ভাগ্য কেন এত বেশি? আর উন্নত দেশগুলোতে তা কেন কম? বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা কেনইবা এত অথর্ব হয়ে পড়ছে? আমাদের দেশে জরুরি ভিত্তিতে এ কাজ, ওই কাজ এখনই করা প্রয়োজন এমন তালিকা কত বড় হতে পারে তা দেশের যে কোনো নাগরিকই অনুমান করতে পারবেন। আর্থিক অসঙ্গতির কারণে এ ধরনের অনেক কাজ করা সম্ভব হয় না।
গত কয়েকদিন আগে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় খ্যাতিমান চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদ ও বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এটিএন নিউজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মিশুক মুনীরসহ পাঁচজনের। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, বেপরোয়া গতিতে গাড়ি বাঁক নেওয়ার কারণেই বাসটির সঙ্গে মাইক্রোবাসটির সংঘর্ষ হয়। শুধু এই দুর্ঘটনাটিই নয়, পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, গড় দেড় বছরে শুধু ঢাকা-আরিচা মহাসড়কেই দুর্ঘটনায় মারা গেছে অন্তত ১৮০ জন এবং আহত হয়েছে সহস্রাধিক। এ ছাড়াও বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় শুধু সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাচ্ছে শত শত মানুষ। লক্ষণীয় বিষয়, এই সড়ক দুর্ঘটনা সমাধানের উপায় কী? আর উপায় খুঁজতে হলে সড়ক দুর্ঘটনার কারণগুলো চিহ্নিত করা দরকার। পুলিশ এবং সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদফতরের সংশিল্গষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, অধিকাংশ দুর্ঘটনার জন্য দায়ী বিপজ্জনক বাঁক, ত্রুটিপূর্ণ নকশা আর চালকদের বেপরোয়া গতি।
বিপজ্জনক বাঁকে সম্ভাব্য সড়ক দুর্ঘটনা রোধে নিম্নলিখিত পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। প্রথমত, বাঁকের দু'দিকে তিন-তিন ছয়টি গতিরোধক (বিট) দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু রাস্তায় একই জায়গায় এতগুলো গতিরোধক (বিট) দেওয়া বাস্তবসম্মত নয় এবং এরও অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। নদীমাতৃক এলাকাগুলোতে রাস্তার নতুন করে বাঁক পরিবর্তন করাও অনেক ব্যয়বহুল এবং সুবিধাজনক নয় এবং এরও অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। দ্বিতীয়ত, বড় বড় হাইওয়েতে বেশি গতির গাড়ি ও কম গতির গাড়ি এক সঙ্গে চললে বড় গতির গাড়িগুলোর ওভারটেকিং টেনডেনসি থাকে। এটি থামাতে হবে। তৃতীয়ত, মিরর মেথড (আয়না পদ্ধতি) ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন বিস্তারিতভাবে বলা যায়, যেসব মোড়ে বাঁকটি বেশ বাঁকা (৪০০-৫০০ কাছাকাছি) সেসব সড়কে যানবাহনের চালকরা একপাশ থেকে অন্য পাশ দেখতে পারে না এবং বিপরীত দিক থেকে আগত যানবাহনের প্রকৃতি, আকার-আকৃতির ধরন কিছু বুঝতে পারে না। মাঝে মধ্যে হেলপার চালকের উদ্দেশে বলে থাকে, ডাবল আসছে, সিঙ্গেল আসছে, কিন্তু এ থেকে চালকরা পুরোপুরি আগত গাড়ির ধরন সম্পর্কে বোধগম্য হতে পারে না। এ ধরনের বড় বড় বাঁকে আয়না বা আয়না-জাতীয় বোর্ড রাস্তার ওপর এমনভাবে স্থাপন করা যেতে পারে, অন্যপাশের আগত গাড়িগুলোর ধরন সম্পর্কে জানা যায়।
রাস্তার বাঁকের ওপর নির্ভর করে আলোর প্রতিফলনের নিয়ম অনুযায়ী কনভেক্স ট্রাফিক মিরর-রিফেল্কেটেড সিট একটা নির্দিষ্ট অ্যাঙ্গেলে স্থাপন করে সাইট ডিসটেন্স বাড়ানো যেতে পারে। এ ছাড়া বড় বাঁকগুলোতে, বিশেষ করে নদীমাতৃক ও পাহাড়ি এলাকায় ভূমি-মাটির ক্ষয় রোধ করার জন্য রাস্তার দুই পাশে অনেক গাছ লাগানো হয় (যদিও ভূমির ওপর ইট-সিমেন্টের বল্গক ব্যবহার করা উচিত)। যদি বাঁকের পাশে অবস্থিত গাছের ডালপালা প্রতি ৩-৪ মাস অন্তর কর্তন করা হয়, তাহলে চালকরা উল্টোদিক থেকে আগত গাড়িগুলোর ধরন দেখতে পাবে। চালকরা রাস্তায় চলা যানবাহনগুলোকে আগেই চিহ্নিত করে দুর্ঘটনা এড়াতে সক্ষম হবে।
হ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক
(তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগ) ও গবেষক
mahossain.eee@gmail.com
বিপজ্জনক বাঁকে সম্ভাব্য সড়ক দুর্ঘটনা রোধে নিম্নলিখিত পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। প্রথমত, বাঁকের দু'দিকে তিন-তিন ছয়টি গতিরোধক (বিট) দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু রাস্তায় একই জায়গায় এতগুলো গতিরোধক (বিট) দেওয়া বাস্তবসম্মত নয় এবং এরও অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। নদীমাতৃক এলাকাগুলোতে রাস্তার নতুন করে বাঁক পরিবর্তন করাও অনেক ব্যয়বহুল এবং সুবিধাজনক নয় এবং এরও অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। দ্বিতীয়ত, বড় বড় হাইওয়েতে বেশি গতির গাড়ি ও কম গতির গাড়ি এক সঙ্গে চললে বড় গতির গাড়িগুলোর ওভারটেকিং টেনডেনসি থাকে। এটি থামাতে হবে। তৃতীয়ত, মিরর মেথড (আয়না পদ্ধতি) ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন বিস্তারিতভাবে বলা যায়, যেসব মোড়ে বাঁকটি বেশ বাঁকা (৪০০-৫০০ কাছাকাছি) সেসব সড়কে যানবাহনের চালকরা একপাশ থেকে অন্য পাশ দেখতে পারে না এবং বিপরীত দিক থেকে আগত যানবাহনের প্রকৃতি, আকার-আকৃতির ধরন কিছু বুঝতে পারে না। মাঝে মধ্যে হেলপার চালকের উদ্দেশে বলে থাকে, ডাবল আসছে, সিঙ্গেল আসছে, কিন্তু এ থেকে চালকরা পুরোপুরি আগত গাড়ির ধরন সম্পর্কে বোধগম্য হতে পারে না। এ ধরনের বড় বড় বাঁকে আয়না বা আয়না-জাতীয় বোর্ড রাস্তার ওপর এমনভাবে স্থাপন করা যেতে পারে, অন্যপাশের আগত গাড়িগুলোর ধরন সম্পর্কে জানা যায়।
রাস্তার বাঁকের ওপর নির্ভর করে আলোর প্রতিফলনের নিয়ম অনুযায়ী কনভেক্স ট্রাফিক মিরর-রিফেল্কেটেড সিট একটা নির্দিষ্ট অ্যাঙ্গেলে স্থাপন করে সাইট ডিসটেন্স বাড়ানো যেতে পারে। এ ছাড়া বড় বাঁকগুলোতে, বিশেষ করে নদীমাতৃক ও পাহাড়ি এলাকায় ভূমি-মাটির ক্ষয় রোধ করার জন্য রাস্তার দুই পাশে অনেক গাছ লাগানো হয় (যদিও ভূমির ওপর ইট-সিমেন্টের বল্গক ব্যবহার করা উচিত)। যদি বাঁকের পাশে অবস্থিত গাছের ডালপালা প্রতি ৩-৪ মাস অন্তর কর্তন করা হয়, তাহলে চালকরা উল্টোদিক থেকে আগত গাড়িগুলোর ধরন দেখতে পাবে। চালকরা রাস্তায় চলা যানবাহনগুলোকে আগেই চিহ্নিত করে দুর্ঘটনা এড়াতে সক্ষম হবে।
হ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক
(তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগ) ও গবেষক
mahossain.eee@gmail.com
No comments