চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়-সন্ত্রাসমুক্ত গণতান্ত্রিক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বপ্ন by রাজীব নন্দী
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ঝুপড়ি এখন মুখরিত থাকার কথা তরুণ বুদ্ধিজীবীদের আড্ডায়। অথচ অলস ক্যাম্পাসে কিছু ভবন কেবল দাঁড়িয়ে আছে! চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি সংঘাতময় পরিস্থিতিতে ক্যাম্পাস বন্ধ হয়েছে। আবাসিক শিক্ষার্থীরা হল ছেড়েছেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রাক্তন শিক্ষার্থী এবং আড়াই বছর বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত থাকার ফলে এই হত্যাযজ্ঞ এবং পরবর্তী সময়ে ক্যাম্পাস অচল করার ঘটনা অন্য ১০ জন মানবিক বোধসম্পন্ন মানুষের মতো আমাকেও বিচলিত করেছে। চট্টগ্রাম বিশ্বদ্যািলয় খুললেও ঠিকমত হচ্ছে না। শিক্ষার্থীরা আছেন ভয়ভীতির মধ্যে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি হত্যাযজ্ঞের অনুপুঙ্খ তদন্ত অবশ্যই জরুরি। বিশ্ববিদ্যালয়ের লিয়াজোঁ কমিটি সকল ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে বৈঠক সম্পন্ন করেছে। বর্তমান লিয়াজোঁ কমিটি সকল ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে এক টেবিলে বসে আলোচনা চালিয়ে নিয়ে গেছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে একটি ইতিবাচক দিক। এর জন্য উপাচার্যের আন্তরিকতা ও প্রশাসনের উদ্যোগ নিঃসন্দেহে ধন্যবাদের যোগ্য। এ ক্ষেত্রে ছাত্র উপদেষ্টা খান তৌহিদ ওসমান ও শিক্ষক সমিতি সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর চৌধুরীর নাম বিশেষভাবে উল্লেখ্য। একজন গণমাধ্যম কর্মী হিসেবে এর আগে দেখেছি, তদন্তের ফল প্রকাশের আগে পারস্পরিক হিংসার কার্যকারণসূত্র সম্পর্কে এবং ঘটনা ঘটার অব্যবহিত পরেই মন্তব্যের প্লাবন বয়ে গেছে। আগ বাড়িয়ে মন্তব্য করার প্রাচীন অভ্যাসটি অবাঞ্ছিত রক্তপাত ও রাজনৈতিক কর্মীদের মধ্যকার সংঘাতকে আরও উসকে দিয়েছিল। কিন্তু বর্তমান প্রশাসন ডান-বাম সকল ছাত্রসংগঠনকে ডেকেছে। করণীয় নির্ধারণে সবার মতামত জানতে চেয়েছে। ক্যাম্পাস অচলাবস্থার মধ্যে প্রশাসনের এই উদ্যোগ প্রকৃত অভিভাবকসুলভ।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর প্রতিনিধি হিসেবে সিন্ডিকেটের সদস্য সাবেক ভিসি অধ্যাপক আবদুল মান্নান সমপ্রতি প্রথম আলোর সম্পাদকীয় পাতায় লিখেছেন, ‘গত তিন বছরে ছাত্রসংগঠনগুলোর মধ্যে কোনো সংঘাত হয়নি। কোনো কোনো সময় ছাত্রলীগ নিজেদের মধ্যে মারামারি করেছে এবং তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থাও নিয়েছে।’ এটি শুধু অধ্যাপক মান্নানের ভাবনাই নয়, আমরা যারা ক্যাম্পাসের খবরাখবর নিয়মিত রাখি, তারাও জানি। বর্তমান উপাচার্য দায়িত্ব গ্রহণের পর দৃশ্যত ক্যাম্পাসের সন্ত্রাসভিত্তিক রাজনৈতিক দলসমূহের উৎপাত হ্রাস পেয়েছিল। গত নয় মাস আগে কোন বিভাগে সবচেয়ে বেশি সেশনজট—এ রকম সংবাদ সংগ্রহের আশায় আমরা যখন অনুসন্ধান করছি, তখন দেখেছি কম্পিউটার সায়েন্সেস অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগসহ একাধিক বিভাগ সেশনজটমুক্ত বলে ঘোষণা দিয়েছে। একসময়কার ধর্মান্ধ ক্যাম্পাসে যখন ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের বীরদের নামও উচ্চারণ করা যেত না, সেই ক্যাম্পাসে এখন প্রশাসনের উদ্যোগে মাস্টারদা সূর্যসেনের ৭৮তম ফাঁসি দিবস মহাসমারোহে পালিত হয়েছে। হালদা নদের গবেষণায় দক্ষিণ এশিয়ার গৌরব পুরস্কার, বিরল প্রজাতির অর্কিড ও বন্য প্রাণী (নতুন প্রজাতির ব্যাঙ) গবেষণা এবং কম্পিউটার সায়েন্সেসে আন্তজার্তিক স্বীকৃতির ঘটনা সামপ্রতিককালে যুক্ত হয়েছে। হামলা-সংঘর্ষ-দুর্নীতির বিপরীতে এসব ‘সুখবর’ একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ। তবে এতসব সুখবরকে ম্লান করে দেওয়ার জন্য দুই ছাত্রসংগঠনের লড়াই তো যথেষ্ট!
কিন্তু এই ভয়াবহ ঘটনা কি অপ্রত্যাশিত? অহেতুক? আকস্মিক? কয়েক দশক ধরে ক্যাম্পাসের সর্বত্র, বিশেষত পাহাড়ঘেরা আবাসিক হলসমূহে নাশকতার যে পরিকল্পিত প্রস্তুতির ঘটনা ঘটেছে, যেভাবে প্রতিটি ফ্যাকাল্টিতে চিহ্নিত দুষ্কৃতকারীরা বসত গেড়েছে, তা কি এ ধরনের ঘটনার মূল নয়? গত আট বছর প্রত্যক্ষদর্শীর আসনে ক্যাম্পাসবাসী ও গণমাধ্যম এ জিনিস প্রত্যক্ষ করেছে। ১৯৯৯ থেকে ২০১১। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে এই এক যুগে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনায় দা-কিরিচ, লাঠিসোটা ছাড়া আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার হয়নি বললেই চলে। কিন্তু ২০১২ সালে এসে শুরু হলো আবার সংঘাত। ৮ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে দুই ছাত্রসংগঠনের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আবার গর্জে উঠল আগ্নেয়াস্ত্র। আবার রক্ত ঝরল। সর্বশেষ ১৯৯৯ সালে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ-শিবিরের সংঘর্ষে আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার হয়। দীর্ঘ বিরতির পর সামপ্রতিক সময়ে প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের ঘটনা সাধারণ শিক্ষার্থীসহ বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সবাইকে ভাবিয়ে তুলেছে। প্রায় ভুলতে বসা সশস্ত্র সংঘাত আবার ফিরে এসেছে।
জার্মানির হিটলার যখন তার শক্তির সর্বোচ্চ দিয়ে বিরোধী মত/দলকে ধরে ধরে কতল করছিল, তখন নাকি জার্মানির বুদ্ধিজীবীদের বড় একটি অংশ ছিল একেবারেই নীরব ও মূক। সেই নীরবতা সেদিন ফ্যাসিবাদ কায়েমের পথ বিকশিত করেছিল। জার্মানিতে ফ্যাসিস্ট নাৎসি শক্তি উত্থানের সময়কার এক কবির উচ্চারণকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নতুনভাবে লেখার চেষ্টা করা যেতে পারে—
‘ওরা যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন বিভাগীয় সভাপতিকে
ঝর্ণার পাড়ে দিনে দুপুরে কোপালো
আমি কোন কথা বলিনি—
কারণ আমি তো শিক্ষক নই...বিভাগীয় সভাপতি নই।
একদিন ওরা যখন ছাত্রী হলের সামনে বখাটেপনা করছিল
আমি কোন কথা বলিনি—
কারণ আমি তো আবাসিক হলের ছাত্রী নই।
ওরা যখন এক সাংবাদিককে শাটল ট্রেনে হুমকি দিল
আমি চেয়ে চেয়ে দেখলাম—
কারণ আমি তো সাংবাদিক না।
শেষে ওরা যখন আমাকে ধরতে এল
তখন আমার হয়ে কথা বলার জন্য কাউকে পাইনি,
হায়, চবি ক্যাম্পাসে আমাকে বাঁচানোর জন্য কেউ ছিল না।’
এই পরিণতি যেন আর কারও না হয়। ক্যাম্পাসের ছাত্র-শিক্ষক-জনতার সম্মিলিত প্রতিরোধে ক্যাম্পাস হয়ে উঠুক ভীতিমুক্ত ও শঙ্কাহীন। উচ্চশিক্ষার প্রকৃত কেন্দ্রে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কে দেখতে চাইলে সবার আগে চাই সন্ত্রাসবিরোধী গণতান্ত্রিক ক্যাম্পাস।
রাজীব নন্দী: প্রাক্তন শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
rajib1nandy@yahoo.com
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি হত্যাযজ্ঞের অনুপুঙ্খ তদন্ত অবশ্যই জরুরি। বিশ্ববিদ্যালয়ের লিয়াজোঁ কমিটি সকল ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে বৈঠক সম্পন্ন করেছে। বর্তমান লিয়াজোঁ কমিটি সকল ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে এক টেবিলে বসে আলোচনা চালিয়ে নিয়ে গেছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে একটি ইতিবাচক দিক। এর জন্য উপাচার্যের আন্তরিকতা ও প্রশাসনের উদ্যোগ নিঃসন্দেহে ধন্যবাদের যোগ্য। এ ক্ষেত্রে ছাত্র উপদেষ্টা খান তৌহিদ ওসমান ও শিক্ষক সমিতি সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর চৌধুরীর নাম বিশেষভাবে উল্লেখ্য। একজন গণমাধ্যম কর্মী হিসেবে এর আগে দেখেছি, তদন্তের ফল প্রকাশের আগে পারস্পরিক হিংসার কার্যকারণসূত্র সম্পর্কে এবং ঘটনা ঘটার অব্যবহিত পরেই মন্তব্যের প্লাবন বয়ে গেছে। আগ বাড়িয়ে মন্তব্য করার প্রাচীন অভ্যাসটি অবাঞ্ছিত রক্তপাত ও রাজনৈতিক কর্মীদের মধ্যকার সংঘাতকে আরও উসকে দিয়েছিল। কিন্তু বর্তমান প্রশাসন ডান-বাম সকল ছাত্রসংগঠনকে ডেকেছে। করণীয় নির্ধারণে সবার মতামত জানতে চেয়েছে। ক্যাম্পাস অচলাবস্থার মধ্যে প্রশাসনের এই উদ্যোগ প্রকৃত অভিভাবকসুলভ।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর প্রতিনিধি হিসেবে সিন্ডিকেটের সদস্য সাবেক ভিসি অধ্যাপক আবদুল মান্নান সমপ্রতি প্রথম আলোর সম্পাদকীয় পাতায় লিখেছেন, ‘গত তিন বছরে ছাত্রসংগঠনগুলোর মধ্যে কোনো সংঘাত হয়নি। কোনো কোনো সময় ছাত্রলীগ নিজেদের মধ্যে মারামারি করেছে এবং তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থাও নিয়েছে।’ এটি শুধু অধ্যাপক মান্নানের ভাবনাই নয়, আমরা যারা ক্যাম্পাসের খবরাখবর নিয়মিত রাখি, তারাও জানি। বর্তমান উপাচার্য দায়িত্ব গ্রহণের পর দৃশ্যত ক্যাম্পাসের সন্ত্রাসভিত্তিক রাজনৈতিক দলসমূহের উৎপাত হ্রাস পেয়েছিল। গত নয় মাস আগে কোন বিভাগে সবচেয়ে বেশি সেশনজট—এ রকম সংবাদ সংগ্রহের আশায় আমরা যখন অনুসন্ধান করছি, তখন দেখেছি কম্পিউটার সায়েন্সেস অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগসহ একাধিক বিভাগ সেশনজটমুক্ত বলে ঘোষণা দিয়েছে। একসময়কার ধর্মান্ধ ক্যাম্পাসে যখন ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের বীরদের নামও উচ্চারণ করা যেত না, সেই ক্যাম্পাসে এখন প্রশাসনের উদ্যোগে মাস্টারদা সূর্যসেনের ৭৮তম ফাঁসি দিবস মহাসমারোহে পালিত হয়েছে। হালদা নদের গবেষণায় দক্ষিণ এশিয়ার গৌরব পুরস্কার, বিরল প্রজাতির অর্কিড ও বন্য প্রাণী (নতুন প্রজাতির ব্যাঙ) গবেষণা এবং কম্পিউটার সায়েন্সেসে আন্তজার্তিক স্বীকৃতির ঘটনা সামপ্রতিককালে যুক্ত হয়েছে। হামলা-সংঘর্ষ-দুর্নীতির বিপরীতে এসব ‘সুখবর’ একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ। তবে এতসব সুখবরকে ম্লান করে দেওয়ার জন্য দুই ছাত্রসংগঠনের লড়াই তো যথেষ্ট!
কিন্তু এই ভয়াবহ ঘটনা কি অপ্রত্যাশিত? অহেতুক? আকস্মিক? কয়েক দশক ধরে ক্যাম্পাসের সর্বত্র, বিশেষত পাহাড়ঘেরা আবাসিক হলসমূহে নাশকতার যে পরিকল্পিত প্রস্তুতির ঘটনা ঘটেছে, যেভাবে প্রতিটি ফ্যাকাল্টিতে চিহ্নিত দুষ্কৃতকারীরা বসত গেড়েছে, তা কি এ ধরনের ঘটনার মূল নয়? গত আট বছর প্রত্যক্ষদর্শীর আসনে ক্যাম্পাসবাসী ও গণমাধ্যম এ জিনিস প্রত্যক্ষ করেছে। ১৯৯৯ থেকে ২০১১। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে এই এক যুগে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনায় দা-কিরিচ, লাঠিসোটা ছাড়া আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার হয়নি বললেই চলে। কিন্তু ২০১২ সালে এসে শুরু হলো আবার সংঘাত। ৮ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে দুই ছাত্রসংগঠনের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আবার গর্জে উঠল আগ্নেয়াস্ত্র। আবার রক্ত ঝরল। সর্বশেষ ১৯৯৯ সালে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ-শিবিরের সংঘর্ষে আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার হয়। দীর্ঘ বিরতির পর সামপ্রতিক সময়ে প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের ঘটনা সাধারণ শিক্ষার্থীসহ বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সবাইকে ভাবিয়ে তুলেছে। প্রায় ভুলতে বসা সশস্ত্র সংঘাত আবার ফিরে এসেছে।
জার্মানির হিটলার যখন তার শক্তির সর্বোচ্চ দিয়ে বিরোধী মত/দলকে ধরে ধরে কতল করছিল, তখন নাকি জার্মানির বুদ্ধিজীবীদের বড় একটি অংশ ছিল একেবারেই নীরব ও মূক। সেই নীরবতা সেদিন ফ্যাসিবাদ কায়েমের পথ বিকশিত করেছিল। জার্মানিতে ফ্যাসিস্ট নাৎসি শক্তি উত্থানের সময়কার এক কবির উচ্চারণকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নতুনভাবে লেখার চেষ্টা করা যেতে পারে—
‘ওরা যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন বিভাগীয় সভাপতিকে
ঝর্ণার পাড়ে দিনে দুপুরে কোপালো
আমি কোন কথা বলিনি—
কারণ আমি তো শিক্ষক নই...বিভাগীয় সভাপতি নই।
একদিন ওরা যখন ছাত্রী হলের সামনে বখাটেপনা করছিল
আমি কোন কথা বলিনি—
কারণ আমি তো আবাসিক হলের ছাত্রী নই।
ওরা যখন এক সাংবাদিককে শাটল ট্রেনে হুমকি দিল
আমি চেয়ে চেয়ে দেখলাম—
কারণ আমি তো সাংবাদিক না।
শেষে ওরা যখন আমাকে ধরতে এল
তখন আমার হয়ে কথা বলার জন্য কাউকে পাইনি,
হায়, চবি ক্যাম্পাসে আমাকে বাঁচানোর জন্য কেউ ছিল না।’
এই পরিণতি যেন আর কারও না হয়। ক্যাম্পাসের ছাত্র-শিক্ষক-জনতার সম্মিলিত প্রতিরোধে ক্যাম্পাস হয়ে উঠুক ভীতিমুক্ত ও শঙ্কাহীন। উচ্চশিক্ষার প্রকৃত কেন্দ্রে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কে দেখতে চাইলে সবার আগে চাই সন্ত্রাসবিরোধী গণতান্ত্রিক ক্যাম্পাস।
রাজীব নন্দী: প্রাক্তন শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
rajib1nandy@yahoo.com
No comments