দুর্নীতি দমন-একজন আন্না হাজারের খোঁজে by শাহানা হুদা
একশ্রেণীর মানুষ আছে, যারা এ দেশের নাগরিক হিসেবে গর্বিত, যারা ক্ষমতাবলয় থেকে অনেক দূরে, অথচ যারা মনে করে, দেশের মঙ্গলের জন্য এটা করলে ভালো হতো, ওটা করলে ভালো হতো। এরা ভোটের সময় মহা উৎসাহে ভোটকেন্দ্রে যায়, বিভিন্ন দলের কথা শোনে, নিজের পছন্দের দলটির জন্য প্রার্থনা করে।
এসব মানুষ একদিকে যেমন বাংলাদেশ দল খেলায় জয়ী হলে শিশুর মতো খুশি হয়ে ওঠে, অন্যদিকে চোখের সামনে কোনো অন্যায়-অবিচার দেখলে শোকে-দুঃখে স্তব্ধ হয়ে যায়।
এতক্ষণ যে মানুষগুলোর কথা বললাম, এদের সংখ্যা নেহাত কম নয়। কিন্তু এদের বড় দুর্বলতা হচ্ছে প্রতিবাদ জানানোর, ক্ষোভ জানানোর, দুঃখ প্রকাশের, এমনকি মন খুলে কথা বলার জন্য কোনো মঞ্চ নেই তাদের। এরা প্রতিদিন খবর দেখে, পত্রিকা পড়ে, চোখের সামনে নানা অন্যায় হতে দেখে, কিন্তু এসব নিয়ে কথা বলার কোনো জায়গা পায় না।
এই অসহায় মানুষগুলোর কথা যে হঠাৎ করে মনে হলো, তা নয়। সব সময়ই মনে হয়। কিন্তু ভারতে দাবি আদায়ের জন্য আন্না হাজারের অনশন ও বিজয় অর্জন আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, এ রকম একজন নেতার কত অভাব এই দেশে। যিনি রুখে দাঁড়াবেন অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে, কথা বলবেন মানুষের স্বাধীনতার জন্য। ভারতের সামাজিক আন্দোলনের প্রবীণ নেতা আন্না হাজারে গত ৫ এপ্রিল অনশন শুরু করেছিলেন দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। গান্ধীবাদী এই নেতার দাবি ছিল, দুর্নীতি ঠেকাতে ভারত সরকারকে নয়া ‘লোকপাল বিল’ পাস করতে হবে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংসহ বহু নেতার অনুরোধ উপেক্ষা করে তিনি যে অনশন শুরু করেছিলেন, মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৩০০ মানুষ তাঁর সেই আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন। আন্না তাঁর এই অনশনকে ‘স্বাধীনতার দ্বিতীয় যুদ্ধ’ হিসেবে ঘোষণা করে ভারতের তরুণ সমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছিলেন। ক্রমেই ভারতজুড়ে আন্নার এই আন্দোলনের ডাকে সাড়া পড়ে যায়। ফলে সরকার বাধ্য হয় তাঁর দাবি মেনে নিতে।
ভারতের ক্ষমতাসীন উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি তদন্তের জন্য এই লোকপাল বিল। এই বিল অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী, প্রধান বিচারপতিসহ অন্যান্য বিচারপতির বিরুদ্ধে আনীত দুর্নীতি তদন্তে উচ্চপর্যায় থেকে আর কোনো অনুমতি লাগবে না। হাজারের দাবি ছিল, সুপ্রিম কোর্ট ও নির্বাচন কমিশনের মতো একটি স্বতন্ত্র ও স্বাধীন সংস্থা হিসেবে কেন্দ্রে গঠিত হবে ‘জন লোকপাল’ এবং প্রতিটি রাজ্যে দুর্নীতির অভিযোগ গ্রহণ করার জন্য থাকবে একটি ‘জন লোকায়ত’। এ ছাড়া তাঁর আরেকটি দাবি ছিল সরকার ও সুশীল সমাজের সমন্বয়ে একটি যৌথ কমিটি গঠনের, যে কমিটি একটি শক্তিশালী লোকপাল বিলের খসড়া তৈরি করবে।
অবশেষে ভারত সরকার বাধ্য হয়েছে আন্না হাজারের সব দাবি মেনে নিতে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংও শেষ পর্যন্ত স্বীকার করেছেন, ভারতের সবচেয়ে বড় সমস্যা দুর্নীতি। দাবি মোতাবেক মন্ত্রী ও সুশীল সমাজের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে ১০ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি। এখানেই শেষ নয়, আন্না হাজারে পার্লামেন্টে বিল পাস হওয়ার সময়ও বেঁধে দিয়েছেন, ১৫ আগস্ট ২০১১। এরপর তিনি ৯ এপ্রিল তাঁর ৯৮ ঘণ্টার অনশন ভঙ্গ করেন। আন্নার এই আন্দোলনের সঙ্গে ভারতের বিচার বিভাগের দৃঢ়তা মিলে ভারতের জনগণকে একটি দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনের স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেছে।
ভারতের রাজনীতিতে তোলপাড় তোলা ৭১ বছর বয়সী চিরকুমার এই নেতা দারুণ আর্থিক অনটনের মধ্যে বেড়ে উঠেছেন। তাই পড়াশোনাও আটকে গিয়েছিল সপ্তম শ্রেণীতেই। ১৯৬৩ সালে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে ড্রাইভার হিসেবে চাকরি শুরু। ১৯৭৫ সালে চাকরি থেকে স্বেচ্ছা অবসর নিয়ে তিনি তাঁর গ্রাম রালেগান সিদ্ধিতে ফিরে আসেন। সমাজসংস্কারক হিসেবে তাঁর কাজ শুরু এখান থেকেই। গ্রাম থেকে মাদকাসক্তি দূর করা, সেচের জন্য ওয়াটারশেড বাঁধ নির্মাণ, দুগ্ধ সমিতি গঠন, শিক্ষার প্রসার, বর্ণবাদ প্রথা নিরসন, দরিদ্র মানুষের জন্য যৌতুকবিহীন গণবিয়ে চালু, গ্রামসভা প্রতিষ্ঠা, মহারাষ্ট্রে দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলন, তথ্য অধিকার আইন, ২০০৫-কে দুর্বল করার লক্ষ্যে সরকার কর্তৃক আনীত সংশোধনী প্রস্তাবের বিরোধিতা এবং সর্বশেষ লোকপাল বিল আন্দোলন—সবকিছুর সঙ্গে জড়িত এই মহান নেতা আন্না হাজারে। হাজারের মতো একজন নেতা আমরা কোথায় পাই? যাঁর থাকবে না কোনো রাজনৈতিক অভিলাষ, যিনি চান না ক্ষমতাসীন হতে, যিনি লড়াই করেন শুধু নিজের দেশকে রক্ষা করার জন্য। ব্যক্তিগত লাভক্ষতি, রাষ্ট্রযন্ত্রের প্রভাব—কোনো কিছুই তাঁকে দমাতে পারে না।
আমরাও স্বপ্ন দেখি এ রকম একজন নেতা বা নেত্রীর—যিনি দুর্যোগ-দুর্বিপাকে, দেশের ক্রান্তিলগ্নে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের পাশে দাঁড়াবেন। তিনি ডাক দেবেন অনশনের, বিগ্রহের। আমরাও দলমত-নির্বিশেষে তাঁর বা তাঁদের পেছনে গিয়ে দাঁড়াব। কোনো রাজনীতি নয়, কোনো ক্ষমতা ভাগাভাগি নয়, ভোট চাওয়ার সংস্কৃতি নয়—তিনি বা তাঁরা শুধু আমাদের পথ দেখাবেন। যাঁরা রাষ্ট্র চালাবেন, তাঁরা চাইলেই যেন যা খুশি তা-ই করতে না পারেন, রাষ্ট্রনায়ক যেন পরিণত হতে না পারেন একনায়কে, একটি দুর্বল আইন প্রণয়ন করার সময় সরকার যেন একবার চিন্তা করে—তাদের এই অন্যায় কাজের বিরোধিতা করার মতো একটি শক্তি আছে।
আমাদের দেশেও বিভিন্ন সময়ে কমিশন গঠিত হয়, বিল পাস হয়, কিন্তু একবারও ভেবে দেখা হয় না কমিশনটা প্রকৃতপক্ষে শক্তিশালী হলো কি না। বিলটি কার্যকর হচ্ছে কি না। বরং আমরা দেখেছি, বিভিন্ন সরকার বিভিন্ন কমিশন গঠন করেছে এবং চেষ্টা করেছে কমিশনকে অকার্যকর করার মাধ্যমে ক্ষমতা হাতের মুঠোয় রাখতে। নতুন আইন করে কমিশনের ক্ষমতা হ্রাস করার উদ্যোগও আমরা সাধারণ মানুষ দেখেছি, জেনেছি, শুনেছি। বিচ্ছিন্নভাবে কিছু প্রতিবাদও করেছি কিন্তু জোটবদ্ধ হয়ে জানাতে পারিনি কোনো প্রতিবাদ, ঠেকাতে পারিনি দুর্বল কমিশন গঠন বা আইনের প্রয়োগ। কারণ, আমাদের কোনো নেতা নেই।
আমরা এমন একটি মঞ্চ চাই, যে মঞ্চে দাঁড়িয়ে সাধারণ মানুষ অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাবে, বর্বরোচিত ঘটনার নিন্দা জানাবে, আনন্দের ঘটনায় উল্লসিত হবে, ভালো উদ্যোগকে স্বাগত জানাবে। তবে এসব কিছু করার জন্য চাই আন্না হাজারের মতো নেতা, একজন স্বপ্ননির্মাতা—যিনি আমাদের ভালো কাজের স্বপ্ন দেখাবেন।
শাহানা হুদা: উন্নয়নকর্মী।
এতক্ষণ যে মানুষগুলোর কথা বললাম, এদের সংখ্যা নেহাত কম নয়। কিন্তু এদের বড় দুর্বলতা হচ্ছে প্রতিবাদ জানানোর, ক্ষোভ জানানোর, দুঃখ প্রকাশের, এমনকি মন খুলে কথা বলার জন্য কোনো মঞ্চ নেই তাদের। এরা প্রতিদিন খবর দেখে, পত্রিকা পড়ে, চোখের সামনে নানা অন্যায় হতে দেখে, কিন্তু এসব নিয়ে কথা বলার কোনো জায়গা পায় না।
এই অসহায় মানুষগুলোর কথা যে হঠাৎ করে মনে হলো, তা নয়। সব সময়ই মনে হয়। কিন্তু ভারতে দাবি আদায়ের জন্য আন্না হাজারের অনশন ও বিজয় অর্জন আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, এ রকম একজন নেতার কত অভাব এই দেশে। যিনি রুখে দাঁড়াবেন অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে, কথা বলবেন মানুষের স্বাধীনতার জন্য। ভারতের সামাজিক আন্দোলনের প্রবীণ নেতা আন্না হাজারে গত ৫ এপ্রিল অনশন শুরু করেছিলেন দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। গান্ধীবাদী এই নেতার দাবি ছিল, দুর্নীতি ঠেকাতে ভারত সরকারকে নয়া ‘লোকপাল বিল’ পাস করতে হবে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংসহ বহু নেতার অনুরোধ উপেক্ষা করে তিনি যে অনশন শুরু করেছিলেন, মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৩০০ মানুষ তাঁর সেই আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন। আন্না তাঁর এই অনশনকে ‘স্বাধীনতার দ্বিতীয় যুদ্ধ’ হিসেবে ঘোষণা করে ভারতের তরুণ সমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছিলেন। ক্রমেই ভারতজুড়ে আন্নার এই আন্দোলনের ডাকে সাড়া পড়ে যায়। ফলে সরকার বাধ্য হয় তাঁর দাবি মেনে নিতে।
ভারতের ক্ষমতাসীন উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি তদন্তের জন্য এই লোকপাল বিল। এই বিল অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী, প্রধান বিচারপতিসহ অন্যান্য বিচারপতির বিরুদ্ধে আনীত দুর্নীতি তদন্তে উচ্চপর্যায় থেকে আর কোনো অনুমতি লাগবে না। হাজারের দাবি ছিল, সুপ্রিম কোর্ট ও নির্বাচন কমিশনের মতো একটি স্বতন্ত্র ও স্বাধীন সংস্থা হিসেবে কেন্দ্রে গঠিত হবে ‘জন লোকপাল’ এবং প্রতিটি রাজ্যে দুর্নীতির অভিযোগ গ্রহণ করার জন্য থাকবে একটি ‘জন লোকায়ত’। এ ছাড়া তাঁর আরেকটি দাবি ছিল সরকার ও সুশীল সমাজের সমন্বয়ে একটি যৌথ কমিটি গঠনের, যে কমিটি একটি শক্তিশালী লোকপাল বিলের খসড়া তৈরি করবে।
অবশেষে ভারত সরকার বাধ্য হয়েছে আন্না হাজারের সব দাবি মেনে নিতে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংও শেষ পর্যন্ত স্বীকার করেছেন, ভারতের সবচেয়ে বড় সমস্যা দুর্নীতি। দাবি মোতাবেক মন্ত্রী ও সুশীল সমাজের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে ১০ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি। এখানেই শেষ নয়, আন্না হাজারে পার্লামেন্টে বিল পাস হওয়ার সময়ও বেঁধে দিয়েছেন, ১৫ আগস্ট ২০১১। এরপর তিনি ৯ এপ্রিল তাঁর ৯৮ ঘণ্টার অনশন ভঙ্গ করেন। আন্নার এই আন্দোলনের সঙ্গে ভারতের বিচার বিভাগের দৃঢ়তা মিলে ভারতের জনগণকে একটি দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনের স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেছে।
ভারতের রাজনীতিতে তোলপাড় তোলা ৭১ বছর বয়সী চিরকুমার এই নেতা দারুণ আর্থিক অনটনের মধ্যে বেড়ে উঠেছেন। তাই পড়াশোনাও আটকে গিয়েছিল সপ্তম শ্রেণীতেই। ১৯৬৩ সালে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে ড্রাইভার হিসেবে চাকরি শুরু। ১৯৭৫ সালে চাকরি থেকে স্বেচ্ছা অবসর নিয়ে তিনি তাঁর গ্রাম রালেগান সিদ্ধিতে ফিরে আসেন। সমাজসংস্কারক হিসেবে তাঁর কাজ শুরু এখান থেকেই। গ্রাম থেকে মাদকাসক্তি দূর করা, সেচের জন্য ওয়াটারশেড বাঁধ নির্মাণ, দুগ্ধ সমিতি গঠন, শিক্ষার প্রসার, বর্ণবাদ প্রথা নিরসন, দরিদ্র মানুষের জন্য যৌতুকবিহীন গণবিয়ে চালু, গ্রামসভা প্রতিষ্ঠা, মহারাষ্ট্রে দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলন, তথ্য অধিকার আইন, ২০০৫-কে দুর্বল করার লক্ষ্যে সরকার কর্তৃক আনীত সংশোধনী প্রস্তাবের বিরোধিতা এবং সর্বশেষ লোকপাল বিল আন্দোলন—সবকিছুর সঙ্গে জড়িত এই মহান নেতা আন্না হাজারে। হাজারের মতো একজন নেতা আমরা কোথায় পাই? যাঁর থাকবে না কোনো রাজনৈতিক অভিলাষ, যিনি চান না ক্ষমতাসীন হতে, যিনি লড়াই করেন শুধু নিজের দেশকে রক্ষা করার জন্য। ব্যক্তিগত লাভক্ষতি, রাষ্ট্রযন্ত্রের প্রভাব—কোনো কিছুই তাঁকে দমাতে পারে না।
আমরাও স্বপ্ন দেখি এ রকম একজন নেতা বা নেত্রীর—যিনি দুর্যোগ-দুর্বিপাকে, দেশের ক্রান্তিলগ্নে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের পাশে দাঁড়াবেন। তিনি ডাক দেবেন অনশনের, বিগ্রহের। আমরাও দলমত-নির্বিশেষে তাঁর বা তাঁদের পেছনে গিয়ে দাঁড়াব। কোনো রাজনীতি নয়, কোনো ক্ষমতা ভাগাভাগি নয়, ভোট চাওয়ার সংস্কৃতি নয়—তিনি বা তাঁরা শুধু আমাদের পথ দেখাবেন। যাঁরা রাষ্ট্র চালাবেন, তাঁরা চাইলেই যেন যা খুশি তা-ই করতে না পারেন, রাষ্ট্রনায়ক যেন পরিণত হতে না পারেন একনায়কে, একটি দুর্বল আইন প্রণয়ন করার সময় সরকার যেন একবার চিন্তা করে—তাদের এই অন্যায় কাজের বিরোধিতা করার মতো একটি শক্তি আছে।
আমাদের দেশেও বিভিন্ন সময়ে কমিশন গঠিত হয়, বিল পাস হয়, কিন্তু একবারও ভেবে দেখা হয় না কমিশনটা প্রকৃতপক্ষে শক্তিশালী হলো কি না। বিলটি কার্যকর হচ্ছে কি না। বরং আমরা দেখেছি, বিভিন্ন সরকার বিভিন্ন কমিশন গঠন করেছে এবং চেষ্টা করেছে কমিশনকে অকার্যকর করার মাধ্যমে ক্ষমতা হাতের মুঠোয় রাখতে। নতুন আইন করে কমিশনের ক্ষমতা হ্রাস করার উদ্যোগও আমরা সাধারণ মানুষ দেখেছি, জেনেছি, শুনেছি। বিচ্ছিন্নভাবে কিছু প্রতিবাদও করেছি কিন্তু জোটবদ্ধ হয়ে জানাতে পারিনি কোনো প্রতিবাদ, ঠেকাতে পারিনি দুর্বল কমিশন গঠন বা আইনের প্রয়োগ। কারণ, আমাদের কোনো নেতা নেই।
আমরা এমন একটি মঞ্চ চাই, যে মঞ্চে দাঁড়িয়ে সাধারণ মানুষ অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাবে, বর্বরোচিত ঘটনার নিন্দা জানাবে, আনন্দের ঘটনায় উল্লসিত হবে, ভালো উদ্যোগকে স্বাগত জানাবে। তবে এসব কিছু করার জন্য চাই আন্না হাজারের মতো নেতা, একজন স্বপ্ননির্মাতা—যিনি আমাদের ভালো কাজের স্বপ্ন দেখাবেন।
শাহানা হুদা: উন্নয়নকর্মী।
No comments