সব ধরনের সন্ত্রাসের অবসান হোক-বিন লাদেনের মৃত্যু
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের আগের ও পরের দুনিয়া যেমন আলাদা, তেমনি ওসামা বিন লাদেনের মৃত্যুর আগের আর পরের দুনিয়াও হয়তো একই রইবে না। টুইন টাওয়ার ধ্বংসের পর পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে মার্কিন বিশেষ বাহিনীর হামলায় বিন লাদেনের মৃত্যুর মধ্যে সময়ের ব্যবধান প্রায় ১০ বছর।
এই ১০ বছরে সন্ত্রাস ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে দেশে দেশে শান্তি লোপ পেয়েছে, নাগরিকের নিরাপত্তা হয়ে পড়েছে আরও ভঙ্গুর। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বেড়েছে সন্দেহ-অবিশ্বাস। একদিকে আল-কায়েদার নামে সন্ত্রাস, অন্যদিকে আল-কায়েদার বিরুদ্ধে আগ্রাসী যুদ্ধে কেবল লাখ লাখ নিরীহ মানুষেরই মৃত্যু ঘটেনি, মৃত্যু ঘটেছিল যুক্তি, মানবতা ও ন্যায়বিচারের। বিন লাদেনের হত্যার ঘটনাকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে তাঁদের বিজয় বলে দাবি করেছেন। কিন্তু সন্ত্রাসের কারণগুলো দূর করতে না পারলে শান্তি যে সুদূরপরাহত, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
ওসামা বিন লাদেনের উত্থান সেই সময়ে, যখন বিশ্বব্যাপী ইসলামপন্থীদের একটি অংশ আমেরিকার সঙ্গে জোট বেঁধে কমিউনিজমবিরোধী লড়াই চালাচ্ছিল। আন্তর্জাতিক রাজনীতির সেই কূটকৌশলেরই সৃষ্টি বিন লাদেন ও তাঁর আল-কায়েদা। মার্কিন পৃষ্ঠপোষকতায় তালেবান ও আল-কায়েদার মাধ্যমেই আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে ধর্মীয় জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সোভিয়েতবিরোধী সন্ত্রাসবাদ আমেরিকাবিরোধী অবস্থান নেয়। যা কিছু আমেরিকান, তা ধ্বংস করলেই যে মুসলমানদের দুরবস্থা দূর হবে বা মুসলিম দেশগুলোতে তাদের দখলদারির অবসান হবে—এমন বিশ্বাসই ছিল আল-কায়েদার রাজনৈতিক পুঁজি। ১১ সেপ্টেম্বরের পর মার্কিন নেতৃত্বে পশ্চিমাদের যুদ্ধবাজ নীতির কারণে অনেক মুসলিম তরুণ আল-কায়েদার সঙ্গে যোগ দেয়। পশ্চিমা গণমাধ্যমের ছড়ানো ভীতি এবং মুসলিম জনমতের একাংশের সহানুভূতি-সমর্থনে আল-কায়েদা হয়ে ওঠে ভয়ংকর বিধ্বংসী এক শক্তি। লাদেনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে এই শক্তির অবসান হবে কি না, তা নির্ভর করবে পশ্চিমা তথা মার্কিন নীতি-কৌশলের ওপর।
টুইন টাওয়ার ধ্বংসের পর আফগানিস্তানে মার্কিন নেতৃত্বাধীন বাহিনী সামরিক অভিযান চালালেও এক দশক পরেও দেশটিতে শান্তি আসেনি, বন্ধ হয়নি গৃহযুদ্ধ। এতে প্রমাণিত হয়, সামরিক শক্তি দিয়ে বিজয় অর্জন সম্ভব নয়। অতএব আফগানিস্তানের সমস্যার রাজনৈতিক সমাধানই খুঁজতে হবে। সেখানে কেবল আল-কায়েদা কিংবা তালেবান যোদ্ধারাই নিহত হয়নি, রক্ত ঝরেছে নিরীহ ও নিরপরাধ মানুষেরও। তাই বিন লাদেনের পরের দুনিয়ায় আর ‘সন্ত্রাসবাদবিরোধী যুদ্ধ’ চালানোর প্রয়োজন নেই। বিশ্বের শান্তিকামী মানুষ শত্রুতার রাজনীতির অবসান দেখতে চায়; দেখতে চায়, ‘পরম শত্রু’র মৃত্যুর পর আমেরিকা বৈশ্বিক সামরিক অভিযানগুলো বন্ধ করবে। ইরাক-আফগানিস্তান মুক্ত হবে, লিবিয়াসহ কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র হস্তক্ষেপ করা থেকে বিরত থাকবে। একই সঙ্গে বিন লাদেনের পরিণতি থেকে তাঁর অনুসারীদের শিক্ষা নিতে হবে—অন্যায়ের প্রতিকারে সন্ত্রাসবাদ কোনো সমাধান নয়। সঠিক পথটি কী, আরব গণজাগরণ তা দেখিয়ে দিচ্ছে।
ওসামা বিন লাদেনের উত্থান সেই সময়ে, যখন বিশ্বব্যাপী ইসলামপন্থীদের একটি অংশ আমেরিকার সঙ্গে জোট বেঁধে কমিউনিজমবিরোধী লড়াই চালাচ্ছিল। আন্তর্জাতিক রাজনীতির সেই কূটকৌশলেরই সৃষ্টি বিন লাদেন ও তাঁর আল-কায়েদা। মার্কিন পৃষ্ঠপোষকতায় তালেবান ও আল-কায়েদার মাধ্যমেই আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে ধর্মীয় জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সোভিয়েতবিরোধী সন্ত্রাসবাদ আমেরিকাবিরোধী অবস্থান নেয়। যা কিছু আমেরিকান, তা ধ্বংস করলেই যে মুসলমানদের দুরবস্থা দূর হবে বা মুসলিম দেশগুলোতে তাদের দখলদারির অবসান হবে—এমন বিশ্বাসই ছিল আল-কায়েদার রাজনৈতিক পুঁজি। ১১ সেপ্টেম্বরের পর মার্কিন নেতৃত্বে পশ্চিমাদের যুদ্ধবাজ নীতির কারণে অনেক মুসলিম তরুণ আল-কায়েদার সঙ্গে যোগ দেয়। পশ্চিমা গণমাধ্যমের ছড়ানো ভীতি এবং মুসলিম জনমতের একাংশের সহানুভূতি-সমর্থনে আল-কায়েদা হয়ে ওঠে ভয়ংকর বিধ্বংসী এক শক্তি। লাদেনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে এই শক্তির অবসান হবে কি না, তা নির্ভর করবে পশ্চিমা তথা মার্কিন নীতি-কৌশলের ওপর।
টুইন টাওয়ার ধ্বংসের পর আফগানিস্তানে মার্কিন নেতৃত্বাধীন বাহিনী সামরিক অভিযান চালালেও এক দশক পরেও দেশটিতে শান্তি আসেনি, বন্ধ হয়নি গৃহযুদ্ধ। এতে প্রমাণিত হয়, সামরিক শক্তি দিয়ে বিজয় অর্জন সম্ভব নয়। অতএব আফগানিস্তানের সমস্যার রাজনৈতিক সমাধানই খুঁজতে হবে। সেখানে কেবল আল-কায়েদা কিংবা তালেবান যোদ্ধারাই নিহত হয়নি, রক্ত ঝরেছে নিরীহ ও নিরপরাধ মানুষেরও। তাই বিন লাদেনের পরের দুনিয়ায় আর ‘সন্ত্রাসবাদবিরোধী যুদ্ধ’ চালানোর প্রয়োজন নেই। বিশ্বের শান্তিকামী মানুষ শত্রুতার রাজনীতির অবসান দেখতে চায়; দেখতে চায়, ‘পরম শত্রু’র মৃত্যুর পর আমেরিকা বৈশ্বিক সামরিক অভিযানগুলো বন্ধ করবে। ইরাক-আফগানিস্তান মুক্ত হবে, লিবিয়াসহ কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র হস্তক্ষেপ করা থেকে বিরত থাকবে। একই সঙ্গে বিন লাদেনের পরিণতি থেকে তাঁর অনুসারীদের শিক্ষা নিতে হবে—অন্যায়ের প্রতিকারে সন্ত্রাসবাদ কোনো সমাধান নয়। সঠিক পথটি কী, আরব গণজাগরণ তা দেখিয়ে দিচ্ছে।
No comments