সাক্ষাৎকার-'টোস্টি চরিত্রটি আমাকে অভিনেত্রী করে তুলেছে

নি এন্টারটেইনমেন্ট টিভি চ্যানেলে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বিপুল জনপ্রিয়তা নিয়ে চলছে ফ্যামিলি ড্রামা 'সাস বিনা সাসুরাল'। সিরিয়ালের মূল কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে টোস্টি চরিত্রটি। চরিত্রটিকে জনপ্রিয় করে তোলার কৃতিত্ব অভিনেত্রী ঐশ্বরিয়া সাখুজার। এখন সবাই তাঁকে টোস্টি নামেই চেনে। ভারতীয় একটি ওয়েবসাইটে সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে অভিনীত সিরিয়াল, চরিত্র, ক্যারিয়ার ও ব্যক্তিজীবন নিয়ে অনেক কথা বলেছেন ছোট পর্দার এই জনপ্রিয়


মুখ। সেই সাক্ষাৎকারের চুম্বকাংশ তুলে ধরেছেন অনন্য রেজা করিমএক বছরেরও বেশি সময় ধরে টোস্টি সেজে অভিনয় করছেন। একটি চরিত্রে একটানা এত দিন ধরে অভিনয় করতে গিয়ে বোরিং ফিল করেছেন, নাকি আলাদা মজা পাচ্ছেন?
ঐশ্বরিয়া সাখুজা : সত্যি বলতে কী, শুরুতে 'সাস বিনা সাসুরাল'-এর টোস্টি চরিত্রটি রূপায়ণে এক ধরনের অনীহা ছিল আমার মধ্যে। অনেক ধরনের দ্বিধা কাজ করছিল। কিন্তু সিরিয়ালটির নির্মাতা বিপুল শাহ আমাকে নিয়ে বসেন। নানাভাবে বুঝিয়ে টোস্টি চরিত্রের সম্ভাবনা ও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আমাকে কনভিনসড করে ফেলেন। অগত্যা রাজি হয়ে যাই অভিনয়ে। এখন অভিনীত চরিত্রটি নিয়ে আমি ভীষণ খুশি। টোস্টি চরিত্রটির সুবাদে এর মধ্যেই অনেক কিছু শিখেছি। প্রতিদিনই নিত্যনতুন বিষয়ে অভিজ্ঞতা হচ্ছে। সবচেয়ে বড় কথা, 'টোস্টি' চরিত্রটি আমাকে একজন অভিনেত্রী করে তুলেছে। এর আগে আমি অভিনয়ের তেমন কিছুই জানতাম না।
অভিনয়ে আসার আগে আপনি টিভি অ্যাংকর মানে উপস্থাপিকা ছিলেন। হঠাৎ ট্র্যাক বদলে ফেললেন কিভাবে?
ঐশ্বরিয়া সাখুজা : সনি টিভি থেকে যখন অডিশনের ডাক পেয়েছিলাম তখন ভেবেছিলাম, তারা হয়তো টিভি শো 'কমেডি সার্কাস' উপস্থাপনার জন্য আমাকে চাইছেন। কিন্তু পরে দেখলাম, তারা একটি ডেইলি সোপের জন্য আমার অডিশন নিচ্ছেন। অডিশনে খুব ভালো করেছিলাম। তারা আমার কাজ বেশ পছন্দ করেছিলেন। এভাবেই অভিনয়জগতে আমার পথচলা শুরু।
টোস্টি চরিত্রটি আপনাকে বিখ্যাত করেছে, ঘরে ঘরে তুমুল জনপ্রিয় করে তুলেছে। এ বিষয়ে আপনার মতামত...
ঐশ্বরিয়া সাখুজা : সব শ্রেণীর দর্শক আমার অভিনীত চরিত্রটি আগ্রহভরে গ্রহণ করেছে। সবাই আমার অভিনয় দেখে
ভীষণভাবে মুগ্ধ হচ্ছে। তারা আমাকে এতটা পছন্দ করছে_এটা আজকাল খুব টের পাচ্ছি। পথেঘাটে বেরোলেই সবাই চিনে ফেলছে। আমাকে ঘিরে ফেলছে কৌতূহলীদের ভিড়, তারা অনেক কিছুই জানতে চাইছে আমার কাছে। সবার ভালোবাসা, প্রশংসা আর প্রচণ্ড কৌতূহল আমাকে দারুণভাবে অনুপ্রাণিত করছে। আরো ভালো কিছু করার ব্যাপারে ভেতর থেকে তাড়না অনুভব করছি। এ জন্য আরো অনেক বেশি পরিশ্রম করতেও কুণ্ঠাবোধ করছি না।
সিরিয়ালে আপনার নায়ক রবি দুবের সঙ্গে কেমন সম্পর্ক গড়ে উঠেছে?
ঐশ্বরিয়া সাখুজা : শুরুতে তার সঙ্গে পরিচয় না থাকায় আমি বেশ অস্বস্তি বোধ করতাম অভিনয়ের সময়। এমনিতেই আমি ইন্ট্রোভার্ট টাইপের মেয়ে, কারো সঙ্গে সহজ হতে একটু সময় লাগে। কিন্তু মাসের মধ্যে কুড়ি দিন একসঙ্গে আমরা দুজন শুটিং করি। এভাবেই আমরা দুজন পরস্পরের কাছে সহজ হয়ে উঠেছি। রবি আর আমি এখন খুব ভালো বন্ধু বলতে পারেন।
সিরিয়ালের অন্য অভিনেতা-অভিনেত্রীদের সঙ্গে আপনার সম্পর্ক কেমন?
ঐশ্বরিয়া সাখুজা : আমি দিলি্লর মেয়ে। বাবা ও ভাই সেখানে থাকেন। তাঁদের ছেড়ে এখন মুম্বাই শহরে পড়ে আছি। এটা আমি সেকেন্ড হোম বানিয়ে নিয়েছি। এখন সব সময় সিরিয়ালে আমার ভাশুর চরিত্রে অভিনেতা রাজেন্দ্র চাওলা থেকে নানা বুদ্ধি-পরামর্শ নিই। যখন আমার মন খারাপ হয়ে যায় সান্ত্বনা লাভের জন্য সিরিয়ালে আমার দাদাজি আনন্দিলাল চতুর্বেদির শরণাপন্ন হই। তিনি সত্যি একজন ভালো মানুষ।
এখন কি কারো সঙ্গে প্রেম করছেন?
ঐশ্বরিয়া সাখুজা : অন্য অনেকের মতো আমার জীবনে প্রেম এসেছিল। এখনকার কথা বলতে গেলে বলব, যদিও কারো সঙ্গে আমার তেমন কিছু থেকে থাকে, তার কথা আমি আপনাদের বলতে যাব কেন? এটা আমার একান্ত নিজস্ব ব্যাপার।
অভিনেত্রী হিসেবে নিজেকে কতটা সম্পূর্ণ ভাবতে পারছেন, ক্যারিয়ার নিয়ে কোনো রকম অনিশ্চয়তাবোধ আপনাকে গ্রাস করে কি?
ঐশ্বরিয়া সাখুজা : নাহ্, তেমন কোনো অনিশ্চয়তাবোধ আমাকে গ্রাস করেনি। আমি আমার কাজ সম্পর্কে পুরোমাত্রায় সচেতন। নিজেকে আরো বিকশিত করে তুলতে আমি সচেষ্ট। খ্যাতি কিংবা জনপ্রিয়তা আমার মাথা গরম করে দেয়নি। চিন্তাশক্তিও লোপ পায়নি। যদি কেউ নিজেকে খুব বিখ্যাত ভাবতে শুরু করে তখন থেকেই একধরনের অনিশ্চয়তা তাকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ফেলে। মাথা খারাপ করে দেয় তা। আমি কিন্তু সব কিছুই পজিটিভলি গ্রহণ করছি। নিজেকে খুব বড় কিছু না ভেবে সাধারণ হিসেবে কাজ করে যাচ্ছি।
ঐশ্বরিয়া সাখুজার একটি গোপন বিষয় বলুন, যা কেউ জানে না?
ঐশ্বরিয়া সাখুজা : আপনারা হয়তো বিশ্বাস করতে চাইবেন না, আমার পায়ের মাপ অস্বাভাবিকভাবে বড়। আমার পায়ের জুতার সাইজ দশ। এই মাপের জুতা পাওয়া বেশ কঠিন হয়ে পড়ে আমার জন্য। আমার পায়ের জুতা, স্যান্ডেল, চপ্পল কিছুই পাওয়া যায় না এখানে। প্রায় সময়ই এগুলো আমি বিদেশ থেকে নিয়ে আসি।
'সাস বিনা সাসুরাল'-এর পর কী করবেন?
ঐশ্বরিয়া সাখুজা : এসব নিয়ে কিছুই ভাবছি না। যদিও অনেক অফার পাচ্ছি, তবে এ মুহূর্তে আমি 'সাস বিনা সাসুরাল' ছাড়া আর কিছু নিয়ে ভাবছি না। আমার প্রত্যাশা, আজকের মতো ভবিষ্যতেও দর্শক আমাকে ভালোবেসে যাবে।

No comments

Powered by Blogger.