মুখোমুখি প্রতিদিন-আমাদের অপূর্ণ স্বপ্নটাই পূরণ করল ওরা

৯৮৩ সালে বাংলাদেশের প্রথম মহিলা ক্রিকেট দলের সদস্য হিসেবে ইডেন গার্ডেনসে ম্যাচ খেলা মনোয়ারা আনিস খান মীনু এখন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কর্মকর্তা। ওয়ানডে স্ট্যাটাস প্রাপ্তিতে তাঁর অনুভূতি ও বাংলাদেশের মহিলা ক্রিকেট নিয়ে বর্তমান ভাবনা জানতেই তাঁর মুখোমুখি হয়েছিল কালের কণ্ঠ স্পোর্টসকালের কণ্ঠ স্পোর্টস : বাংলাদেশ ওয়ানডে স্ট্যাটাস পেয়ে গেল। দেশের প্রথম মহিলা ক্রিকেট দলের সদস্য ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কমকর্তা


হিসেবে আপনার অনুভূতি কী?মনোয়ার আনিস খান মীনু : অসম্ভব ভালো লাগছে। আমাদের অপূর্ণ স্বপ্ন আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের মধ্য দিয়ে পূর্ণ হয়েছে, এটা অনেক গর্বের ব্যাপার। বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করতে পারলে আরো ভালো লাগত। তবুও আমাদের যে অবস্থান সেখান থেকে এ অর্জনও অনেক বড় ব্যাপার।
প্রশ্ন : ওয়ানডে স্ট্যাটাস প্রাপ্তিতে বাংলাদেশ মহিলা ক্রিকেট দলের জন্য ঠিক কী কী সম্ভাবনার জায়গা তৈরি হলো?
মীনু : আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এটা আমাদের জন্য একটা প্লাটফর্ম, তাই না! আমাদের মেয়েরা খুব বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ পায় না। ওয়ানডে স্ট্যাটাস পাওয়ায় এখন শক্তিশালী দলগুলোর বিপক্ষে আমরা সিরিজ খেলতে পারব, আইসিসির বিভিন্ন টুর্নামেন্টে খেলার সুযোগ পাব, তাদের থেকে সুযোগ-সুবিধাটাও এ ক্ষেত্রে বাড়বে। মোট কথা বাংলাদেশের ক্রিকেট এগিয়ে গেল আরো এক ধাপ।
প্রশ্ন : কিন্তু সেরা চার দলে থাকতে না পারার পেছনের কারণগুলো কি চিহ্নিত করেছেন আপনারা?
মীনু : ওয়ানডে স্ট্যাটাস পাওয়ার পথে আয়ারল্যান্ডকে হারানোটাই আমাদের চ্যালেঞ্জ ছিল। মেয়েরা সেটা দারুণভাবে করে দেখিয়েছে। আর বিশ্বকাপে জায়গা পাওয়ার ক্ষেত্রে আমরা একটা অঘটনের আশা করছিলাম। সে ক্ষেত্রে পাকিস্তানকে হারানোটাই প্রথম লক্ষ্য ধরেছিলাম। ২০০৯ সালের ত্রিদেশীয় সিরিজে পাকিস্তান দলটাকে অতটা শক্তিশালী মনে হয়নি আমার কাছে। কিন্তু এই দুই বছরে খেলা বা ফিটনেস সব দিক দিয়েই অনেক অনেক উন্নতি করেছে ওরা। আর আমাদের দলটা এ টুর্নামেন্টের জন্যই কেবল মাস তিনেকের ক্যাম্প করেছে, তাতেই ওরা অনেক ভালো করেছে। সব সময়ই খেলা আর প্র্যাকটিসের মধ্যে থাকার তাই বিকল্প নেই। তা ছাড়া শিক্ষাটাও একটা বড় ফ্যাক্টর।
প্রশ্ন : সেটা কেমন?
মীনু : শুধু পাকিস্তানই না, সব দলের মেয়েদেরই শিক্ষা-দীক্ষায় আমাদের চেয়ে অনেক অগ্রসর মনে হলো। যেকোনো কিছু দ্রুত আয়ত্ত করতে পারা, কঠিন পরিস্থিতিতে নিজেকে সামলানো_এসবে শিক্ষার প্রয়োজন হয়। বাংলাদেশ দলেও শিক্ষিত মেয়েদের সংখ্যাটা বাড়লে, আমার বিশ্বাস সেটা পারফরম্যান্সেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
প্রশ্ন : বিসিবির কি এ নিয়ে কোনো উদ্যোগ আছে?
মীনু : স্কুল টুর্নামেন্টা এ ক্ষেত্রে জরুরি। আমরা নিয়মিত এটা করার চেষ্টা করছি। তবে আপাতত বিশেষ কোনো কার্যক্রম নেই। বছরখানেক আগে আমরা 'সিটি স্কুল ক্যাম্প' করেছিলাম। শিক্ষিত ও প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের বের করে আনতে এটা ভালো উদ্যোগ।
প্রশ্ন : মহিলা ক্রিকেট দলের জন্য আলাদা কোনো মাঠও তো নেই...
মীনু : হ্যাঁ, এ মুহূর্তে আমরা খুব জোরেশোরেই আলোচনাটা শুনছি যে মেয়েদের জন্য আলাদা একটা একাডেমী হবে। বেশ আগে থেকেই আমরা এমন একটা কিছু চাইছি, দেখা যাক কী হয়।

No comments

Powered by Blogger.