দেশেই তৈরি হবে পাটকলের যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ

দেশেই তৈরি হবে পাটকলে ব্যবহার উপযোগী যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ। একই সঙ্গে পাট কারখানার পুরনো যন্ত্রপাতিও মেরামত করা হবে। এ লক্ষ্যে গালফ্রা হাবিব লিমিটেডকে পুনর্গঠন করা হচ্ছে। ২০১২ সালের জানুয়ারি মাসে চট্টগ্রামে প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে ভারতের লগন ইঞ্জিনিয়ারিং কম্পানি লিমিটেড যৌথ উদ্যোগে উৎপাদনে যাবে। এ ক্ষেত্রে মোট ব্যয় হবে ছয় কোটি টাকা। বিদেশি প্রতিষ্ঠানটি সম্পূর্ণ কারিগরি সহযোগিতায় থাকবে। মোট ব্যয়ের অর্ধেক বহন করবে তারা। আগামী সপ্তাহে প্রতিষ্ঠান দুটির মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হবে।


গতকাল বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে বস্ত্র ও পাট, বাণিজ্য, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। বাকি অর্থ বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় থেকে সরবরাহ করা হবে। বৈঠক শেষে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী এসব কথা জানান। তিনি বলেন, বহু পুরনো যন্ত্রাংশের কারণে সরকারি-বেসরকারি পাটকলগুলোয় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষভাবে বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) কারখানাগুলোয় অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। তাই পাটকলগুলো আধুনিকায়ন প্রয়োজন।
মন্ত্রী বলেন, মূলধন ঘাটতিসহ নানা জটিলতার কারণে খুব বেশি যন্ত্র বা যন্ত্রাংশ আমদানি করা সম্ভব নয়। এ পরিস্থিতিতে পাটকলে ব্যবহার উপযোগী যন্ত্র বা যন্ত্রাংশ দেশেই উৎপাদনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গালফ্রা হাবিব লিমিটেডের কারখানায় নতুন যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ তৈরি এবং পুরনো যন্ত্রপাতি মেরামত করা হবে। পাটকলের যন্ত্রপাতি তৈরিতে এটি হবে দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠান। দেশের মধ্যে চাহিদা মিটিয়ে এখানে তৈরি যন্ত্রপাতি রপ্তানিও করা হবে বলে জানান মন্ত্রী।
আবদুল লতিফ সিদ্দিকী বলেন, পর্যায়ক্রমে বন্ধ পাটকলগুলো চালু করা হচ্ছে। আগামী মাসে প্রধানমন্ত্রী আর আর জুট মিলস্ লিমিটেড এবং এম এম জুট মিলস্ লিমিটেড উদ্বোধন করবেন।
বিজেএমসি থেকে তিন মাসের ব্যবধানে দুই হাজার ২০০ টাকা মণের পাট এক হাজার ১০০ টাকা দরে কেনার কারণ প্রসঙ্গে মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, 'বিজেএমসি ব্যবসা করতে এসেছে। সরকারি এই সংস্থা তার সুবিধা মতো দামে পাট কিনবে।' চলতি বছর পাটের মৌসুমে বিজেএমসি উন্নত জাতের পাট কিনেছে বলে দাবি করেন আবদুল লতিফ সিদ্দিকী। এতে বিশ্ববাজারে পাটজাত পণ্যের চাহিদা তৈরি হবে বলে মনে করেন তিনি।
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী বলেন, তিন বছর আগে বিজেএমসির দৈনিক উৎপাদন ছিল ৩৪০ টন। বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে ৭০০ টন। সম্প্রতি পাট ও পাটজাত পণ্য বিক্রিতে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান তিনি । তবে নতুন বাজার খোঁজা হচ্ছে। এতে পাট ও পাটজাত পণ্য বিক্রিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন মন্ত্রী।
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব আশরাফুল মকবুল বলেন, এ দেশের গুণগত মানের পাট ব্যবহার করে আধুনিক যন্ত্রপাতির সাহায্যে বিশ্ব মানের পাটজাত পণ্য তৈরি করা সম্ভব হবে। গবেষণার মাধ্যমে পাটপণ্য উৎপাদনে বহুমুখীকরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে বিজেএমসির চেয়ারম্যান টিডি মিত্রসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

No comments

Powered by Blogger.