বিক্ষোভ অব্যাহত-ক্ষমা চাইল মিসরের সামরিক পরিষদ

মিসরে বিক্ষোভের সাত দিনের মাথায় ক্ষমা চাইল ক্ষমতাসীন সামরিক পরিষদ। গতকাল বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বিভিন্ন শহরে সহিংসতায় নিহতের ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করে পরিষদ। এদিকে সহিংসতা বন্ধে শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা ও ধর্মীয় নেতাদের মধ্যস্থতায় হওয়া সমঝোতা উপেক্ষা করে আবারও জনতার ওপর কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। খবর এএফপি ও আল জাজিরা অনলাইনের।


সেনা শাসনের অবসানের দাবিতে কায়রোর ঐতিহাসিক তাহরির স্কয়ারে গত শনিবার থেকে বিক্ষোভ চলছে। এতে পুলিশের গুলিতে কমপক্ষে ৩৫ জন নিহত ও অন্তত ২ হাজার আহত হয়েছে। অব্যাহত আন্দোলন ও সহিংসতার পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষমতাসীন সামরিক কাউন্সিল বৃহস্পতিবার পরিষদের ফেসবুক পাতায় দুঃখ প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, তাহরির স্কয়ারে সাম্প্রতিক নিহতের ঘটনায় সশস্ত্র বাহিনীর সর্বোচ্চ পরিষদ গভীরভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করছে। নিহতদের পরিবারের প্রতিও সমবেদনা প্রকাশ করে পরিষদ। হত্যাকাণ্ডের তদন্ত ও দোষীদের শাস্তির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় এতে। তাহরির স্কয়ারে একটি অস্থায়ী সামরিক হাসপাতাল খোলার কথাও জানায় পরিষদ।
এদিকে দাঙ্গা পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের মধ্যকার সহিংসতা বন্ধে শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা ও ধর্মীয় নেতারা বুধবার যে সমঝোতা করেছিলেন এক ঘণ্টার মধ্যেই তা উপেক্ষা করেছে পুলিশ। ফলে এদিন আবারও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে তাহরির স্কয়ারসহ অন্যান্য শহরে। তাহরির স্কয়ারে বিকেলে বের হওয়া বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশ বিনা উস্কানিতে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, সেখানে সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছে। মেরসা মাক্রহ শহরে গুলিতে নিহত হয়েছে একজন। তাহরির স্কয়ারের বুধবারের মিছিলে থাকা এক অধ্যাপক বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বাহিনী নিয়ন্ত্রণের বাইরে। তারা পেশাদার নয়, সামরিক পরিষদের নিয়ন্ত্রণেও নেই তারা। তাহরির স্কয়ারের বিভিন্ন অংশে বিষাক্ত কাঁদানে গ্যাসে আক্রান্তদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কাজে রাতভর ব্যস্ত ছিল বেশ ক'টি অ্যাম্বুলেন্স। মিসরের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর আলেকজান্দ্রিয়ার মূল আন্দোলন কেন্দ্র থেকে সেনাবাহিনী চলে যাওয়ার পরই বিক্ষোভকারীদের ওপর কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করা শুরু করে পুলিশ। ইসমাইলিয়া শহরে কমপক্ষে একজন নিহত হয়েছে।
বুধবার আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ ধর্মবেত্তারা সহিংসতা বন্ধে জনতা ও দাঙ্গা পুলিশের মধ্যে একটি সমঝোতা করে দিয়েছিলেন। দাঙ্গা পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের অবস্থানস্থলের মধ্যে সেনা মোতায়েন করা হয়েছিল। কিন্তু এক ঘণ্টা পরই পুলিশ আগের মতো আক্রমণাত্মক রূপ ধারণ করে।

No comments

Powered by Blogger.