ডিএসইতে সূচক ৫৩৭৩.৩০ পয়েন্টে-প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণার পর লেনদেন নেমেছে অর্ধেকে

পুঁজিবাজার স্থিতিশীল করার লক্ষ্যে ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের পর গতকাল শেয়ারবাজারে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। এই প্রণোদনা প্যাকেজ নিয়ে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা এখনো রয়েছেন ধোঁয়াশায়। ফলে এক দিনেই ঢাকা স্টক এঙ্চেঞ্জের (ডিএসই) লেনদেন কমে গেছে ৫০০ কোটি টাকারও বেশি। কমেছে লেনদেন হওয়া বেশির ভাগ কম্পানির শেয়ারের দাম। আর দিনভর ওঠা-নামার মধ্যে থাকলেও দিনশেষে সূচক ঠিক আগের দিনের জায়গায় গিয়ে স্থির হয়েছে।


গতকাল সূচকের ঊর্ধ্বগতি দিয়েই ডিএসইর লেনদেন শুরু হয়। তবে তা বেশি সময় স্থায়ী হয়নি। প্রথম ২০ মিনিটে সূচক পড়ে যায় ৮৩ পয়েন্ট। এর পর নিয়মিত বিরতিতে সূচকের ওঠা-নামা চলতে থাকে।
আর দিন শেষে সাধারণ মূল্যসূচক আগের দিনের চেয়ে ০.৬৫ পয়েন্ট বেড়েছে। ফলে সূচক আগের দিনের জায়গায় অর্থাৎ ৫৩৭৩.৩০ পয়েন্টেই অবস্থান করছে। সূচক পরিবর্তন না হলেও গতকাল লেনদেন কমে গেছে ৫২০ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। আগের দিন যেখানে এক হাজার ৫১ কোটি ৩৯ লাখ টাকার শেয়ার হাত বদল হয়েছিল, গতকাল সেখানে ৫৩০ কোটি ৯২ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে।
ডিএসইর সিনিয়র সহসভাপতি আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, 'প্যাকেজ ঘোষণার পর বাজারে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। তবে এটা সত্যি, এই প্যাকেজের ফলে বাজারের সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে।' তিনি আরো বলেন, 'অনেক বিনিয়োগকারী আশায় ছিলেন ব্যাংকগুলোর সিএলআর, এসএলআর কমানোর সিদ্ধান্ত আসবে। তবে তা না হওয়ায় বাজারের কিছুটা প্রভাব পড়েছে।' এ ছাড়া বেশ কয়েক দিন বাজার ঊর্ধ্বমুখী থাকায় অনেকেই কিছু লাভে শেয়ার ছেড়ে দেওয়ার প্রভাবও পড়েছে বলে জানান তিনি। দীর্ঘ মেয়াদে এই প্রণোদনা প্যাকেজ বাজারের জন্য ভালো পদক্ষেপ উল্লেখ করে আহসানুল ইসলাম টিটু আরো বলেন, 'নিজেদের আওতার বাহিরেও সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এঙ্চেঞ্জ কমিশন (এসইসি) কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যার প্রভাব দীর্ঘ মেয়াদে বাজারের জন্য ইতিবাচক হবে।'
মতিঝিলের ডিএসই ভবনের এআরসি সিকিউরিটিজে বসে কথা হয় ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী জাহিদুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি জানান, স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি যে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, তা বিনিয়োগকারীদের জন্য কতটুকু উপকারে আসে_সেটাই এখন দেখার বিষয়। তাঁর মতে, সবাই যেহেতু প্রণোদনা প্যাকেজকে ভালো বলছে, তা হয়তো সত্যিই বিনিয়োগকারীদের জন্য ভালো হবে। তবে তিনি মনে করেন, রাতারাতি কোনো কিছু না হওয়াই ভালো। তাতে অনেকে কারসাজির সুযোগ পায়।
গতকাল লেনদেন হওয়া ২৫৩টি কম্পানির মধ্যে ১৫৫টিরই শেয়ারের দাম কমেছে। বেড়েছে ৯৩টির আর পাঁচটি কম্পানির শেয়ারের দাম আগের দিনের মতোই রয়েছে। লেনদেনের ভিত্তিতে (টাকায়) গতকাল শীর্ষে ছিল সিটি ব্যাংক, ফু-ওয়াং সিরামিকস্, বেঙ্মিকো, গ্রামীণফোন, বেঙ্মিকো ফার্মা, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, উত্তরা ব্যাংক, ইউসিবিএল এবং সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক।
অপরদিকে গতকাল দাম বাড়ার দিক দিয়ে এগিয়ে ছিল ইনটেক অনলাইন, বিডি কম, বিডি অটোকারস্, ফু-ওয়াং সিরামিকস্, অগি্ন সিস্টেমস্, কেঅ্যান্ডকিউ, মুন্নু সিরামিকস্, অ্যাপেঙ্ ট্যানারি, দেশ গার্মেন্টস্ ও ব্যাংক এশিয়া। আর সবচেয়ে বেশি দর হারিয়েছে নর্দান জুট, মিরাক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ, জেমিনী সি ফুড, ওরিয়ন ইনফিউশন, দুলামিয়া কটন, আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, অ্যাম্বি ফার্মা, লিগেসি ফুট, সমতা লেদার ও মেঘনা সিমেন্ট।

No comments

Powered by Blogger.