গ্রুপসেরা হয়েই দ্বিতীয় পর্বে বার্সেলোনা-বার্সেলোনা ৩ : ২ এসি মিলান -আর্সেনাল ২ : ১ ডর্টমুন্ড-লেভারকুসেন ২ : ১ চেলসি -ভ্যালেন্সিয়া ৭ : ০ জেঙ্ক

চিত্রনাট্য ছিল অভিন্ন। ন্যু ক্যাম্পের ম্যাচটির মতোই। সেই পুরো ম্যাচজুড়ে বার্সেলোনার আধিপত্য, তার পরও এসি মিলানের দুই গোল। পরশু সান সিরোর ম্যাচটির পার্থক্য বলতে, এই দ্বৈরথে এবার আর সাম্যাবস্থা থাকেনি। ৩-২ গোলে জিতে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হিসেবেই নক আউট রাউন্ড নিশ্চিত করেছে বার্সেলোনা। এসি মিলানের উত্তরণ রানার্সআপ হিসেবে।


বার্সার মাঠে গিয়ে ২-২ গোলে ড্র করে ফিরেছিল মিলান। স্বভাবতই নিজেদের মাঠে প্রত্যাশার সলতে উসকে দিয়েছিল তা। কিন্তু মেসি-জাভিরা যে ছিলেন অপ্রতিরোধ্য। তাদের সঙ্গে তাই পেরে ওঠেনি ইতালিয়ান ক্লাবটি। ১৪ মিনিটে মার্ক ফন বোমেলের আত্মঘাতী গোলে পিছিয়ে পড়ে মিলান। মিনিট ছয়েক পর পুরনো ক্লাবের বিপক্ষে দলকে সমতায় ফেরান জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচ। ৩১ মিনিটে পেনাল্টি থেকে কোনো ইতালিয়ান ক্লাবের বিপক্ষে ক্যারিয়ারের প্রথম গোল করেন লিওনেল মেসি। ৫৪ মিনিটে আবারও খেলার ধারার বিপরীতে কেভিন প্রিন্স বোয়াটেংয়ের গোল আশা জোগায় স্বাগতিকদের। কিন্তু ৬৩ মিনিটে মেসির অবিশ্বাস্য এক পাস থেকে জাভির গোল নিশ্চিত করে বার্সেলোনার জয়।
এমন দলের কাছে হারের পরও অভিযোগের কিছু নেই মিলান কোচ মাসিমিলিয়ানো অ্যালেগ্রির, 'বার্সেলোনা এখনো বিশ্বের সেরা দল। সত্যি বলতে, রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সা অন্য সবার চেয়ে এগিয়ে। চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের জন্য এ দুটো ক্লাব ফেভারিট। বার্সার বিপক্ষে এ ম্যাচ দিয়ে দেখার ছিল, আমরা কোথায় আছি। হারলেও আমি মনে করি, আমরা সঠিক পথে আছি।' বার্সা কোচ পেপ গার্দিওলার কণ্ঠেও তৃপ্তি, 'সান সিরোতে এসে কোনো সমস্যার মুখোমুখি হব না, এমন প্রত্যাশা আমরা করিনি। মিলান ওদের সামর্থ্যের প্রতিফলনে বেশ কিছু সুযোগ তৈরি করেছে। আমরাও করেছি। ওরা বলছে যে ওরা খুশি। আমরাও তাই। এই ম্যাচ শেষে সব পক্ষই সন্তুষ্ট। মিলানের মাঠে এসে গুরুত্বপূর্ণ এক জয় পেলাম আমরা।'
'এইচ' গ্রুপ থেকে বার্সা-মিলানের নক আউট পর্বে উত্তরণ নিশ্চিত হয়েছিল আগেই। 'ই' গ্রুপের অবস্থাটা পুরো ভিন্ন। বেয়ার লেভারকুসেনের কাছে চেলসির ১-২ গোলের হার এবং জেঙ্কের বিপক্ষে ভ্যালেন্সিয়ার ৭-০ ব্যবধানের বিশাল জয়ে গ্রুপ পর্বের শেষ রাউন্ডের আগে এখন নানামুখী সমীকরণ। ৯ পয়েন্ট নিয়ে সবার ওপরে থাকা লেভারকুসেন নিশ্চিত করে ফেলেছে নক আউট পর্ব। সমান ৮ পয়েন্টের দুটি ক্লাব চেলসি-ভ্যালেন্সিয়া নিজেদের ভাগ্য নির্ধারণে মুখোমুখি হবে শেষ ম্যাচে। তাতে হারলে রোমান আব্রামোভিচ যুগে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়নস লিগের গ্রুপ পর্ব থেকে ঝরে পড়বে চেলসি। শুধু তা-ই নয়, যেকোনো 'স্কোর-ড্র'তেও অভিন্ন পরিণতি মেনে নিতে হবে তাদের।
এমন জটিল পরিস্থিতিতে তারা পড়ে গেল পরশুর হারে। দিদিয়ের দ্রগবার গোলে এগিয়েই গিয়েছিল তারা। কিন্তু ৭৩ মিনিটে এরেন দার্দিওক এবং ইনজুরি সময়ে ম্যানুয়েল ফ্রেদেরিকের গোলে হেরেই যায় চেলসি। সর্বশেষ পাঁচ ম্যাচে তৃতীয় হার কোচ হিসেবে আন্দ্রেস ভিলাস-বোয়াসের ওপর চাপ বাড়াল আরেকটু। হতাশা তাই ঝরে ঝরে পড়ছিল এ পর্তুগিজের কণ্ঠে, 'সব কিছুই যেন আমাদের বিপক্ষে যাচ্ছে। আগে গোল দিলাম, পুরো ম্যাচে ভালো খেললাম, অথচ শেষ পর্যন্ত হেরে যেতে হলো।' চেলসির একটাই সান্ত্বনা, নিজেদের ভাগ্য এখনো নিজেদের হাতে আছে। সে জন্য ঘরের মাঠ স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে শেষ ম্যাচে ভ্যালেন্সিয়ার সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করতে হবে কিংবা হারাতে হবে তাদের। কাজটি যে সহজ হবে না, রবার্তো সোলদাদোর হ্যাটট্রিকে জেঙ্ককে ৭-০ গোলে উড়িয়ে সেই বার্তা দিয়ে রেখেছে স্প্যানিশ ক্লাবটি।
'এফ' গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে নক আউট পর্ব নিশ্চিত করেছে আর্সেনাল। রবিন ফন পার্সির জোড়া গোলে পরশু ২-১ ব্যবধানে তারা হারিয়েছে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডকে। ১১ পয়েন্ট নিয়ে 'গানার'রা মার্শেই (৭) ও অলিম্পিয়াকোস (৬)-এর ধরাছোঁয়ার বাইরে। পরশু মার্শেইকে ১-০ গোলে হারিয়ে নিজেদের সম্ভাবনা জিইয়ে রাখল অলিম্পিয়াকোস।
'জি' গ্রুপে জেনিথ সেন্ট পিটার্সবুর্গের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে সাইপ্রাসের প্রথম ক্লাব হিসেবে চ্যাম্পিয়নস লিগের গ্রুপ পর্বের বাধা টপকেছে অ্যাপোয়েল। পরশু গ্রুপের অন্য ম্যাচে পোর্তো ২-০ ব্যবধানে হারিয়েছে শাখতার দনেৎস্ককে। ওয়েবসাইট

No comments

Powered by Blogger.