শারদ পাওয়ারের গালে চড়

ভারতের কৃষিমন্ত্রী শারদ পাওয়ারকে লাঞ্ছিত করেছে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে ক্ষুব্ধ এক যুবক। গতকাল বৃহস্পতিবার নয়াদিলি্লতে এক মিলনায়তনে সাহিত্যবিষয়ক অনুষ্ঠান শেষে শারদ পাওয়ার বের হওয়ার সময় ওই যুবক তার গালে চড় মারে। নিরাপত্তাকর্মীরা সঙ্গে সঙ্গে হরবিন্দর সিং নামের ওই যুবককে আটক করেছে। সে সময় হরবিন্দর একটি ছোট ছুরি বের করে এবং চিৎকার করে বলতে থাকে_ 'ওরা সব দুর্নীতিবাজ'। আকস্মিক


হামলায় কিছুটা শারীরিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন শারদ পাওয়ার। তবে তিনি উত্তেজিত হননি। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও দুর্নীতি নিয়ে কংগ্রেস দলের নেতৃত্বাধীন সংযুক্ত প্রগতিশীল মোর্চা (ইউপিএ) সরকার যখন চাপের মুখে আছে, সে মুহূর্তে এ ঘটনা ঘটল।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংসহ সরকারি ও বিরোধী দলের নেতারা এবং দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনে সোচ্চার আন্না হাজারেসহ অনেকেই এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন। শারদ পাওয়ারের রাজ্য মহারাষ্ট্রে এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ হয়েছে। এর আগে গত শনিবার হরবিন্দর নয়াদিলি্লতে একটি আদালতের বাইরে সাবেক টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী সুখরামকে লাঞ্ছিত করে। ১৯৯৬ সালের একটি দুর্নীতির মামলায় ওই আদালত সুখরামকে কারাদণ্ড দেওয়ার পর তার ওপর হামলা চালায় এ যুবক। খবর : এএফপি, জিনিউজ, ইন্ডিয়া টুডে ও টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইনের।
গতকালের ঘটনার পর টেম্পোচালক হরবিন্দর (২৪) সাংবাদিকদের বলেন, মন্ত্রীর ওপর হামলা চালানোর জন্যই তিনি ওই অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস দলের সভাপতি শারদ পাওয়ার (৭১) এ ঘটনার পর একটি নিউজ চ্যানেলকে বলেন, এ যুবককে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে দেখেছেন। তাকে সংবাদকর্মী বলে মনে হয়েছিল। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিয়ে নিজ গাড়ির দিকে অগ্রসর হওয়ার সময় তার ওপর হামলা হয়েছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতার কারণে এমনটি ঘটেছে বলে তিনি মনে করেন না। শারদ পাওয়ার আরও বলেন, তিনি নিজে নিরাপত্তা প্রহরা নিয়ে চলতে পছন্দ করেন না। তবে এখন নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে ভাবতে হবে। হরবিন্দর নামে মামলা করা হবে কি-না_ এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পুলিশ বিষয়টি দেখবে। দ্রব্যমূল্য নিয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।
প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের দফতর থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ হামলার তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে। মনমোহন সিং বিষয়টি নিয়ে শারদ পাওয়ারের সঙ্গে কথা বলেছেন। অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখার্জি নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে অবশ্যই তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। বিজেপিসহ বিরোধী দলগুলো এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে। তবে তারা দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধে সরকারের ব্যর্থতার সমালোচনা করেছেন। বিজেপির মুখপাত্র রবিশংকর প্রসাদ এ হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, হামলাকারীর বিচার হওয়া উচিত। তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে না। জ্বালানি তেল, গ্যাস, খাদ্যদ্রব্যের দাম বেড়েই চলছে।

No comments

Powered by Blogger.