আর কত আশরাফুলপ্রীতি দেখাবেন নির্বাচকরা?
বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে যে ক’জন ব্যাটসম্যান অমিত সম্ভাবনা নিয়ে আবির্ভূত হয়েছিলেন, মোহাম্মদ আশরাফুল তাদের অন্যতম। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, পরবর্তীতে এই ব্যাটিং জিনিয়াস ঘরোয়া কিংবা আন্তর্জাতিক কোনো আসরেই নিজের প্রকৃতি প্রদত্ত ব্যাটিং প্রতিভার প্রতি সামান্যতম সুবিচারও করতে পারেননি। পুরো ক্যারিয়ারেই আশরাফুলের ব্যাটে ছিল ধারাবাহিক রানখরা। হ্যালির ধূমকেতুর মতো মাঝে মাঝে তার ব্যাট জ্বলে উঠলেও বেশিরভাগ ম্যাচেই—কী টেস্ট কী ওয়ানডেতে যাচ্ছেতাই ব্যাটিং করে নিজের মহামূল্যবান উইকেট জুয়াড়ির মতো বিলিয়ে দেয়ার বিলাসিতা দেখান আশরাফুল। তাতে দলের চূড়ান্ত বিপর্যয়টা আরও ঘনীভূত হয়।
কিন্তু বাংলাদেশের নির্বাচকদের আশরাফুলপ্রীতি আর কয়েকটি শীর্ষ দৈনিকের অনৈতিক সমর্থনের কারণে বারবার সুযোগ পাচ্ছেন আশরাফুল। এসব তথাকথিত মিডিয়া আশরাফুল ক্রমাগত ব্যর্থ হলেও কখনও তার দীনহীন ব্যাটিংয়ের কঠোর সমালোচনা করে না। ফলে মাঝে মাঝে বাদ পড়লেও আবার ঘুরেফিরে জাতীয় দলে সুযোগ পান এ ব্যাটসম্যান। অতীতের নির্বাচকদের মতো বর্তমানে আকরাম খানের নেতৃত্বাধীন নির্বাচকমণ্ডলীও আশরাফুলপ্রীতির নজির দেখিয়ে ব্যর্থ হওয়া এ ব্যাটসম্যানকে বারবার জাতীয় দলে খেলার সুযোগ দিচ্ছেন। টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সবার নিচে। বাংলাদেশ একযুগের টেস্ট ইতিহাসে মাত্র হাতেগোনা কয়েকটি টেস্ট জিতেছে। ওয়ানডে ক্রিকেটেও বাংলাদেশের সাফল্য হঠাত্ হঠাত্ আসে। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে দলের ব্যর্থতার ময়নাতদন্ত করলে দেখা যাবে বেশিরভাগ সময়ই দলের পরাজয় ত্বরান্বিত হয়েছে ব্যাটসম্যানদের শোচনীয় ব্যর্থতার কারণেই। বোলাররা মোটামুটি তাদের সাধ্যানুযায়ী বোলিং করে গেছেন। আহামরি না হলেও তাদের পারফরম্যান্স মোটামুটি সন্তোষজনক। কিন্তু ব্যাটসম্যানদের, বিশেষত বাংলাদেশ দলের টপঅর্ডার ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতা নজিরবিহীন। গত ফেব্রুয়ারিতে দেশের মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে যথাক্রমে ৫৮ রান ও ৭৮ রানে অলআউটের লজ্জা দিয়েছে টপঅর্ডার ব্যাটসম্যানরাই। যাদের মূল দায়িত্ব দলের রানের চাকা সচল রাখা, তাদের চরম দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যাটিংয়ের কারণে বাংলাদেশের রানের চাকা বারবার গতিহীন হয়েছে। আর টপঅর্ডার ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সবচেয়ে বড় খলনায়ক হিসেবে চিহ্নিত করা যায় মোহাম্মদ আশরাফুলকে। এ অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান চরম দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যাটিং করে বারবার উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এসেছেন তার পুরো ক্যারিয়ারে। ১৬-১৭ বছরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা দিয়েছেন আশরাফুল। তখন থেকেই ব্যর্থতা শুরু। এখন ২৭ বছরে পা রেখেছেন। প্রায় ১০/১২ বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছেন। এখনও তার ব্যাটিংয়ে শিশুতোষ ভুল প্রকটভাবে চোখে পড়ে। প্রশ্ন হচ্ছে, কবে তিনি তার ব্যাটিং ত্রুটি শুধরাবেন। নির্বাচকরাইবা আর কতকাল আশরাফুলকে সুযোগ দেবেন। বাংলাদেশের কয়েকটি জয়ে অবশ্য আশরাফুলের ব্যাটের অবদান ছিল। তবে তার ব্যাটে রয়েছে বিস্ময়কর অধারাবাহিকতা। পৃথিবীর সব সেরা ব্যাটসম্যানেরই ক্যারিয়ারে ‘ব্যাড-প্যাচ’ আসে। কিন্তু আশরাফুলের ব্যাটে এ ‘ব্যাড-প্যাচ’ যেন চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের প্রতিশব্দ হয়ে আছে। বাংলাদেশের পক্ষে ওয়ানডেতে সবচেয়ে বেশি (১৭১টি আন্তর্জাতিক) ম্যাচ খেলেছেন আশরাফুল। অথচ তার ব্যাটিং গড় মাত্র ২২.৪৯। টেস্ট খেলুড়ে একটা দেশের স্পেশালিস্ট ব্যাটসম্যান হিসেবে এ ব্যাটিং গড় একেবারেই বেমানান।
দেশের মাটিতে গত বিশ্বকাপে মিডিয়া আর নির্বাচকদের অনুকূল্যে বাংলাদেশ দলে সুযোগ পেয়েছিলেন এ অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। কিন্তু প্রথম ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ১ রান আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১১ রান করেন তিনি। পরে আবার তাকে সুযোগ দেয়া হয় জিম্বাবুয়ে সিরিজে। সফরের একমাত্র টেস্টে ৭৩ এবং ৩৯ রানের ইনিংস খেলে ফর্মে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ওয়ানডে সিরিজের তিন ম্যাচে যথাক্রমে ২, ৬, ১৫ রান করে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দেন। দেশের মাটিতে চলতি ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে দুই ম্যাচে তার রান যথাক্রমে ২ এবং ০। সবচেয়ে যা দৃষ্টিকটু তা হলো দেশের মাটিতে দলের চরম ব্যাটিং বিপর্যয় তার আউট হওয়ার ধরন। সর্বশেষ ১৮ ম্যাচে তার মোট রান ১৮২। গড় ১০.১১। সেঞ্চুরি দূরের কথা, কোনো হাফসেঞ্চুরিও নেই। গত ১৮টি ওয়ানডে ম্যাচে তার রান যথাক্রমে ০, ২, ১৫, ৬, ২, ১১, ১, ৬, ১৩, ১৪, ৯, ২০, ৩১, ১, ৫, ৪, ১৩ এবং ২৯। ২০০৯ সালের ৯ আগস্ট বুলাওয়ে টেস্টে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সর্বশেষ ৭৩ রানের একটি ইনিংস খেলেছিলেন আশরাফুল। তাছাড়া গত ১৫ ম্যাচে টেস্টে তার কোনো হাফসেঞ্চুরিই নেই। ক্রিকেটবোদ্ধাদের প্রশ্ন—আশরাফুলকে নির্বাচকরা আন্তর্জাতিক ম্যাচে আর কত সুযোগ দেবেন? বাংলাদেশের দীন-হীন ব্যাটিং শক্তি আশরাফুলের মতো ব্যাটসম্যানের বোঝা আর কতকাল বইবে?
দেশের মাটিতে গত বিশ্বকাপে মিডিয়া আর নির্বাচকদের অনুকূল্যে বাংলাদেশ দলে সুযোগ পেয়েছিলেন এ অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। কিন্তু প্রথম ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ১ রান আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১১ রান করেন তিনি। পরে আবার তাকে সুযোগ দেয়া হয় জিম্বাবুয়ে সিরিজে। সফরের একমাত্র টেস্টে ৭৩ এবং ৩৯ রানের ইনিংস খেলে ফর্মে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ওয়ানডে সিরিজের তিন ম্যাচে যথাক্রমে ২, ৬, ১৫ রান করে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দেন। দেশের মাটিতে চলতি ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে দুই ম্যাচে তার রান যথাক্রমে ২ এবং ০। সবচেয়ে যা দৃষ্টিকটু তা হলো দেশের মাটিতে দলের চরম ব্যাটিং বিপর্যয় তার আউট হওয়ার ধরন। সর্বশেষ ১৮ ম্যাচে তার মোট রান ১৮২। গড় ১০.১১। সেঞ্চুরি দূরের কথা, কোনো হাফসেঞ্চুরিও নেই। গত ১৮টি ওয়ানডে ম্যাচে তার রান যথাক্রমে ০, ২, ১৫, ৬, ২, ১১, ১, ৬, ১৩, ১৪, ৯, ২০, ৩১, ১, ৫, ৪, ১৩ এবং ২৯। ২০০৯ সালের ৯ আগস্ট বুলাওয়ে টেস্টে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সর্বশেষ ৭৩ রানের একটি ইনিংস খেলেছিলেন আশরাফুল। তাছাড়া গত ১৫ ম্যাচে টেস্টে তার কোনো হাফসেঞ্চুরিই নেই। ক্রিকেটবোদ্ধাদের প্রশ্ন—আশরাফুলকে নির্বাচকরা আন্তর্জাতিক ম্যাচে আর কত সুযোগ দেবেন? বাংলাদেশের দীন-হীন ব্যাটিং শক্তি আশরাফুলের মতো ব্যাটসম্যানের বোঝা আর কতকাল বইবে?
No comments