টাকা দেবে না গ্রামীণফোন
বিটিআরসির অডিট প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে উল্লেখ করে গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষ বলেছে, বকেয়া ট্যাক্স এবং সুদ হিসেবে দাবি করা ৩ হাজার ৩৪ কোটি টাকা পরিশোধ করবেন না তারা। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক মানের অডিটও দাবি করেছেন গ্রামীণফোনের বোর্ড চেয়ারম্যান এবং টেলিনর গ্রুপের নির্বাহী ভাইস চেয়ারম্যান সিগভে ব্রেককে। তবে এ মুহূর্তে বিনিয়োগ তুলে নেওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই বলেও জানান তিনি। ২৪ অক্টোবরের মধ্যে টাকা পরিশোধ করতে হবে বলে ৩ অক্টোবর গ্রামীণফোনকে চিঠি দিয়েছিল বিটিআরসি। রোববার দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে অডিট বিষয়ে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেন সিগভে।
এদিকে অডিট কার্যক্রম আইন অনুযায়ী হয়েছে কি-না জানতে চেয়েছে সংসদীয় কমিটি। তারা অডিট বিষয়ে বিটিআরসির এখতিয়ার নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। অন্য এক অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু বলেন, অডিট বিষয়ে আইনের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
গত ক'দিন ধরে গ্রামীণফোন ও টেলিনরের শীর্ষ কর্মকর্তারা ঢাকায় যাওয়া-আসার মধ্যে আছেন। তিন দিন ঢাকায় অবস্থানের পর ফিরে গিয়েও আবার ঢাকায় এসে অডিট সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করছেন সিগভে। গতকাল সকালে বিটিআরসির চেয়ারম্যান জিয়া আহমেদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন তিনি। বিকেলে দেশের শীর্ষ সংবাদপত্র এবং গণমাধ্যমের সম্পাদকদের সঙ্গে অভিন্ন বিষয়ে মতবিনিময় করেন তিনি। এর আগে শনিবার
সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন টেলিনরের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফ্রেডরিক বাকসাস।
সংবাদ সম্মেলনে সিগভে বলেন, গ্রামীণফোন লিমিটেডের কাছে বিটিআরসির পাওনা দাবিতে স্বচ্ছতা নেই। বরং আন্তর্জাতিক মানের নিরীক্ষা ফার্ম নিয়োগ করে আবার অডিট করা হলে তারা তা মানবে। তিনি বলেন, যে অডিটটি করা হয়েছে তা আন্তর্জাতিক মানের হয়নি।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, টেলিনর এখানে ব্যবসা করতে এসেছে; স্থানীয় সব ধরনের আইন, নিয়ম-কানুন মেনেই ব্যবসা হবে। তবে এসব ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার নিশ্চয়তা চায় টেলিনর। তিনি অভিযোগ করেন, যে অডিট প্রতিবেদন এখনও তাদের দেওয়া হয়নি, তা গ্রহণ করার কোনো কারণ থাকতে পারে না।
অডিট প্রক্রিয়ার পাশাপাশি দ্বিতীয় প্রজন্মের লাইসেন্স নবায়ন প্রক্রিয়া নিয়েও নানা প্রশ্ন তোলেন তিনি। বলেন, শেষ পর্যন্ত গ্রামীণফোন লাইসেন্স নবায়নের নীতিমালা মেনে নিয়েছে। কিন্তু এক বছরে এ বিষয়ে যা হয়েছে তা গ্রহণযোগ্য ছিল না। এখানকার শুনানির প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারী হিসেবে তারা এসব বিষয়ে আরও স্বচ্ছতা চান। একই সঙ্গে নিয়ন্ত্রক সংস্থার কার্যক্রমকেও আন্তর্জাতিক মানের হওয়া দরকার। বাংলাদেশ থেকে বিনিয়োগ তুলে নেওয়া বা ব্যবসা প্রত্যাহারের আশঙ্কা নাকচ করে দিয়ে সিগভে বলেন, টেলিনর এখানে এসেছে ব্যবসা করতে, এখান থেকে চলে যাওয়ার জন্য নয়।
বিশ্বের ১১টি দেশে টেলিযোগাযোগ সেবা দেওয়া টেলিনরের গ্রাহকসংখ্যা ১২ কোটি ৮০ লাখ। সাড়ে ৩ কোটিই বাংলাদেশে। তাই এ দেশের বাজার খুবই গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করেন বলে উল্লেখ করেন সিগভে। তিনি বলেন, টেলিনর চায় বাংলাদেশের খাতটিতে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকুক, যেখানে একটি সুস্থ প্রতিযোগিতা হবে।
একই সঙ্গে অর্থমন্ত্রী এবং টেলিযোগাযোগমন্ত্রীও এ সমস্যার সুরাহা করতে এগিয়ে আসবেন বলে দাবি জানান তিনি। তিনি বলেন, টেলিনর চায় এর একটি গ্রহণযোগ্য সমাধান। টেলিনর যেহেতু ব্যবসা করতে চায়, তাই এখানে একটি ব্যবসাবান্ধব ও বিনিয়োগ করার মতো সুষ্ঠু এবং স্বচ্ছ পরিবেশ যেন অব্যাহত থাকে, সে স্বার্থেই রেগুলেটরি কমিশন ও সরকারকে পাশে চায়।
তৃতীয় প্রজন্মের (থ্রি জি) মোবাইল প্রযুক্তি বিষয়ে তিনি বলেন, টেলিনর যেসব জায়গায় ব্যবসা করছে তার সবখানেই থ্রি জি নিয়েছে; কিন্তু বাংলাদেশে এটিকে কীভাবে নেওয়া হবে সে নীতিমালা দেখার পরই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে এ দেশে দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগের জন্য টেলিযোগাযোগ খাতের সুদীর্ঘ রোডম্যাপের কথা বলেন সিগভে।
এর আগে সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে গ্রামীণফোনের প্রধান যোগাযোগ কর্মকর্তা কাজী মনিরুল কবির বলেন, ব্যবসায়িক পরিবেশের স্বচ্ছতা চান তারা। তিনি বলেন, সামনে অনেক বাধা আসবে, আসছে, তবু তারা থামবেন না।
অডিট নিয়ে সংসদীয় কমিটির প্রশ্ন : এদিকে বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে অডিট প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। বিটিআরসি থেকে সনদ নিয়েছে এমন প্রতিষ্ঠানের আয়-ব্যয়ের হিসাব যাচাই করার এখতিয়ার টেলিযোগাযোগ আইন অনুযায়ী আছে কি-না তাও জানতে চেয়েছে কমিটি। কমিটি মনে করে, বিটিআরসির আওতাধীন সব প্রতিষ্ঠানের হিসাব যাচাই করতে একটি সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি থাকা দরকার। তারা বলেন, বিটিআরসির সঙ্গে গ্রামীণফোনের দ্বন্দ্ব ব্যবসাবান্ধব পরিবেশের জন্য বিব্রতকর। তবে এ সময় বিটিআরসির চেয়ারম্যান জানান, আইন অনুযায়ী তারা অগ্রসর হয়েছেন।
বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি বলেন, কমিটি মনে করে, বিটিআরসির আওতাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর হিসাব যাচাইয়ের ব্যাপারে একটি সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি থাকা দরকার। গ্রামীণফোনের সঙ্গে বিটিআরসির যে বিষয়ে দ্বন্দ্ব চলছে তা সুখকর নয়।
আইনের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই : টেলিযোগাযোগমন্ত্রী
এদিকে সকালে অন্য এক অনুষ্ঠানে টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু এ প্রসঙ্গে বলেন, আইনের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সব মোবাইল অপারেটর ঠিকমতো কাজ করুক, বিনিয়োগ বাড়ূক, এটাই সরকারের চাওয়া। মন্ত্রী জানান, বিটিআরসির সঙ্গে গ্রামীণফোনের বিরোধের বিষয়টি মন্ত্রণালয় দেখবে। বিদেশি কোম্পানি যাতে শান্তিপূর্ণভাবে কাজ করতে পারে, সেটাই চায় সরকার। গ্রামীণফোন ও বিটিআরসির মধ্যে বৈঠক ও চিঠি চালাচালি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তাদের মধ্যে যে আলোচনা চলছে তা চলুক।
গত ক'দিন ধরে গ্রামীণফোন ও টেলিনরের শীর্ষ কর্মকর্তারা ঢাকায় যাওয়া-আসার মধ্যে আছেন। তিন দিন ঢাকায় অবস্থানের পর ফিরে গিয়েও আবার ঢাকায় এসে অডিট সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করছেন সিগভে। গতকাল সকালে বিটিআরসির চেয়ারম্যান জিয়া আহমেদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন তিনি। বিকেলে দেশের শীর্ষ সংবাদপত্র এবং গণমাধ্যমের সম্পাদকদের সঙ্গে অভিন্ন বিষয়ে মতবিনিময় করেন তিনি। এর আগে শনিবার
সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন টেলিনরের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফ্রেডরিক বাকসাস।
সংবাদ সম্মেলনে সিগভে বলেন, গ্রামীণফোন লিমিটেডের কাছে বিটিআরসির পাওনা দাবিতে স্বচ্ছতা নেই। বরং আন্তর্জাতিক মানের নিরীক্ষা ফার্ম নিয়োগ করে আবার অডিট করা হলে তারা তা মানবে। তিনি বলেন, যে অডিটটি করা হয়েছে তা আন্তর্জাতিক মানের হয়নি।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, টেলিনর এখানে ব্যবসা করতে এসেছে; স্থানীয় সব ধরনের আইন, নিয়ম-কানুন মেনেই ব্যবসা হবে। তবে এসব ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার নিশ্চয়তা চায় টেলিনর। তিনি অভিযোগ করেন, যে অডিট প্রতিবেদন এখনও তাদের দেওয়া হয়নি, তা গ্রহণ করার কোনো কারণ থাকতে পারে না।
অডিট প্রক্রিয়ার পাশাপাশি দ্বিতীয় প্রজন্মের লাইসেন্স নবায়ন প্রক্রিয়া নিয়েও নানা প্রশ্ন তোলেন তিনি। বলেন, শেষ পর্যন্ত গ্রামীণফোন লাইসেন্স নবায়নের নীতিমালা মেনে নিয়েছে। কিন্তু এক বছরে এ বিষয়ে যা হয়েছে তা গ্রহণযোগ্য ছিল না। এখানকার শুনানির প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারী হিসেবে তারা এসব বিষয়ে আরও স্বচ্ছতা চান। একই সঙ্গে নিয়ন্ত্রক সংস্থার কার্যক্রমকেও আন্তর্জাতিক মানের হওয়া দরকার। বাংলাদেশ থেকে বিনিয়োগ তুলে নেওয়া বা ব্যবসা প্রত্যাহারের আশঙ্কা নাকচ করে দিয়ে সিগভে বলেন, টেলিনর এখানে এসেছে ব্যবসা করতে, এখান থেকে চলে যাওয়ার জন্য নয়।
বিশ্বের ১১টি দেশে টেলিযোগাযোগ সেবা দেওয়া টেলিনরের গ্রাহকসংখ্যা ১২ কোটি ৮০ লাখ। সাড়ে ৩ কোটিই বাংলাদেশে। তাই এ দেশের বাজার খুবই গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করেন বলে উল্লেখ করেন সিগভে। তিনি বলেন, টেলিনর চায় বাংলাদেশের খাতটিতে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকুক, যেখানে একটি সুস্থ প্রতিযোগিতা হবে।
একই সঙ্গে অর্থমন্ত্রী এবং টেলিযোগাযোগমন্ত্রীও এ সমস্যার সুরাহা করতে এগিয়ে আসবেন বলে দাবি জানান তিনি। তিনি বলেন, টেলিনর চায় এর একটি গ্রহণযোগ্য সমাধান। টেলিনর যেহেতু ব্যবসা করতে চায়, তাই এখানে একটি ব্যবসাবান্ধব ও বিনিয়োগ করার মতো সুষ্ঠু এবং স্বচ্ছ পরিবেশ যেন অব্যাহত থাকে, সে স্বার্থেই রেগুলেটরি কমিশন ও সরকারকে পাশে চায়।
তৃতীয় প্রজন্মের (থ্রি জি) মোবাইল প্রযুক্তি বিষয়ে তিনি বলেন, টেলিনর যেসব জায়গায় ব্যবসা করছে তার সবখানেই থ্রি জি নিয়েছে; কিন্তু বাংলাদেশে এটিকে কীভাবে নেওয়া হবে সে নীতিমালা দেখার পরই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে এ দেশে দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগের জন্য টেলিযোগাযোগ খাতের সুদীর্ঘ রোডম্যাপের কথা বলেন সিগভে।
এর আগে সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে গ্রামীণফোনের প্রধান যোগাযোগ কর্মকর্তা কাজী মনিরুল কবির বলেন, ব্যবসায়িক পরিবেশের স্বচ্ছতা চান তারা। তিনি বলেন, সামনে অনেক বাধা আসবে, আসছে, তবু তারা থামবেন না।
অডিট নিয়ে সংসদীয় কমিটির প্রশ্ন : এদিকে বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে অডিট প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। বিটিআরসি থেকে সনদ নিয়েছে এমন প্রতিষ্ঠানের আয়-ব্যয়ের হিসাব যাচাই করার এখতিয়ার টেলিযোগাযোগ আইন অনুযায়ী আছে কি-না তাও জানতে চেয়েছে কমিটি। কমিটি মনে করে, বিটিআরসির আওতাধীন সব প্রতিষ্ঠানের হিসাব যাচাই করতে একটি সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি থাকা দরকার। তারা বলেন, বিটিআরসির সঙ্গে গ্রামীণফোনের দ্বন্দ্ব ব্যবসাবান্ধব পরিবেশের জন্য বিব্রতকর। তবে এ সময় বিটিআরসির চেয়ারম্যান জানান, আইন অনুযায়ী তারা অগ্রসর হয়েছেন।
বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি বলেন, কমিটি মনে করে, বিটিআরসির আওতাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর হিসাব যাচাইয়ের ব্যাপারে একটি সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি থাকা দরকার। গ্রামীণফোনের সঙ্গে বিটিআরসির যে বিষয়ে দ্বন্দ্ব চলছে তা সুখকর নয়।
আইনের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই : টেলিযোগাযোগমন্ত্রী
এদিকে সকালে অন্য এক অনুষ্ঠানে টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু এ প্রসঙ্গে বলেন, আইনের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সব মোবাইল অপারেটর ঠিকমতো কাজ করুক, বিনিয়োগ বাড়ূক, এটাই সরকারের চাওয়া। মন্ত্রী জানান, বিটিআরসির সঙ্গে গ্রামীণফোনের বিরোধের বিষয়টি মন্ত্রণালয় দেখবে। বিদেশি কোম্পানি যাতে শান্তিপূর্ণভাবে কাজ করতে পারে, সেটাই চায় সরকার। গ্রামীণফোন ও বিটিআরসির মধ্যে বৈঠক ও চিঠি চালাচালি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তাদের মধ্যে যে আলোচনা চলছে তা চলুক।
No comments