প্রাচুর্যের বিশ্বে সাতজনে একজন ক্ষুধার্ত
বিশ্ব খাদ্য দিবস ছিল গতকাল। তবে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুনের ভাষ্য অনুযায়ী, একে বিশ্ব পুষ্টিহীনতা দিবস নামে অভিহিত করাই শ্রেয়। বান কি মুন গত শনিবার এক বিবৃতিতে বলেন, 'আমরা এমন একটা বিশ্বে বাস করি, যেখানে প্রত্যেক মানুষকে খাওয়ানোর মতো পর্যাপ্ত খাদ্য উৎপাদন সম্ভব। অথচ বিস্ময়কর হলেও সত্যি যে আজকের পৃথিবীতে প্রায় ১০০ কোটি মানুষ ক্ষুধার যন্ত্রণায় কষ্ট পাচ্ছে। অর্থাৎ আমাদের প্রতি সাতজনের মধ্যে একজন ক্ষুধার্ত থাকতে বাধ্য হচ্ছে।
'গত সপ্তাহে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০১০ সালে বিশ্বের ৯২ কোটি ৫০ লাখ মানুষ অপুষ্টিতে ভুগেছে। এদের দুই-তৃতীয়াংশ বাস করে বাংলাদেশ, চীন, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, ইথিওপিয়া, ভারত, ইন্দোনেশিয়া ও পাকিস্তান_এই সাতটি দেশে।প্রতিবেদনে স্পষ্ট করে বলা হয়, মানুষের পর্যাপ্ত ফসল উৎপাদনের অক্ষমতা নয় বরং ক্রমবর্ধমান খাদ্যমূল্য, সংঘর্ষ, জলবায়ু পরিবর্তন, দুর্নীতি ও ক্ষমতাসীনদের দমন-পীড়নমূলক মানসিকতার জন্য মানুষ ক্ষুধার্ত থাকছে।
পূর্ব আফ্রিকার বেশির ভাগ দেশই তীব্র খরায় ধুঁকেছে। তবে শুধু সোমালিয়াতেই কার্যকর কেন্দ্রীয় সরকারের অনুপস্থিতির কারণে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয় এবং পরিস্থিতি পূর্ণাঙ্গ দুর্ভিক্ষের দিকে মোড় নেয়। বহু দেশ, সংস্থা ও ব্যক্তিবিশেষ তাদের সহায়তায় এগিয়ে আসে। এখন পর্যন্ত সোমালিয়ার জন্য ১৮০ কোটি পাউন্ড সাহায্য পাওয়া গেছে। দেশটির প্রায় এক কোটি ৩০ লাখ লোক ক্ষুধার যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে। তাদের জন্য মাথাপিছু ১৪০ পাউন্ড করে সাহায্য পাওয়া গেছে। তবে দেশটির একটা বড় অংশ নিয়ন্ত্রণ করে আল-শাবাব নামে আল-কায়েদা সংশ্লিষ্ট একটি জঙ্গি সংগঠন। ফলে ওই সব এলাকার দুর্ভিক্ষপীড়িতদের কাছে ত্রাণ পেঁৗছানো সম্ভব হয়নি। এই সংকটের কারণে সোমালিয়ার প্রায় ২৫ হাজার শিশু প্রাণ হারিয়েছে।
এদিকে কেনিয়ায় ত্রাণ বিতরণকে হুমকির মুখে ফেলেছে নিরাপত্তাহীনতা। গত সপ্তাহেও কেনিয়ার একটি ত্রাণশিবিরে কর্মরত দুই স্প্যানিশ নারী কর্মীকে অপহরণ করা হয়। ফলে কর্মরত সংস্থাগুলো তাদের বেশির ভাগ বিদেশি কর্মীকে প্রত্যাহার করতে শুরু করে। এমনকি জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএসএইচসিআর তাদের অতি গুরুত্বপূর্ণ নয় এমন সব তৎপরতা স্থগিত করেছে। তবে এত কিছুর পরও কেনিয়া ও ইথিওপিয়ার কিছু কিছু অংশে ধীরগতিতে হলেও পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। এসব এলাকায় ত্রাণ সরবরাহ গতিশীল হওয়ার পাশাপাশি কয়েক মৌসুম ধরে ফসলও ভালো হয়েছে।
জাতিসংঘের কৃষি উন্নয়ন অর্থনীতির পরিচালক কোসটাস স্টামৌলিস বলেন, 'আফ্রিকাকে এই সংকট থেকে বের করে আনতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার প্রয়োজন।' তিনি বিশ্বের ১০০ কোটি লোকের ক্ষুধার্ত থাকার বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন, 'আমরা এদের সবার জন্য খাদ্য সহায়তা দিতে পারি না।' জাতিসংঘ মনে করে, খাদ্য খাটতির একটা বড় কারণ হচ্ছে কৃষিতে বিনিয়োগে অনীহা। এফএও তাদের প্রতিবেদনে জানায়, উন্নয়ন তহবিল এবং মানবিক সহায়তার মাত্র তিন থেকে চার শতাংশ কৃষি খাতে ব্যয় করা হয়। স্টামৌলিস বলেন, 'ক্ষুধার্তদের ৭৫ শতাংশই গ্রামীণ এলাকায় বাস করে। এদের অধিকাংশ জীবন ধারণের জন্য কৃষির ওপর নির্ভরশীল। যদিও আমরা বহু দিন থেকেই কৃষিকে অবহেলা করে আসছি। বহু বছর ধরেই মানুষের ধারণা, শিল্পোন্নয়নের মাধ্যমেই অর্থনৈতিক সংকট থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। ফলে গবেষণা এবং অবকাঠামোগত দিক থেকে কৃষি অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে। এ ব্যাপারে এখনই কিছু করা না হলে ভবিষ্যতে আমাদের আরো ভয়াবহ খাদ্য সংকটের মুখে পড়তে হবে।' সূত্র : দি ইনডিপেনডেন্ট।
পূর্ব আফ্রিকার বেশির ভাগ দেশই তীব্র খরায় ধুঁকেছে। তবে শুধু সোমালিয়াতেই কার্যকর কেন্দ্রীয় সরকারের অনুপস্থিতির কারণে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয় এবং পরিস্থিতি পূর্ণাঙ্গ দুর্ভিক্ষের দিকে মোড় নেয়। বহু দেশ, সংস্থা ও ব্যক্তিবিশেষ তাদের সহায়তায় এগিয়ে আসে। এখন পর্যন্ত সোমালিয়ার জন্য ১৮০ কোটি পাউন্ড সাহায্য পাওয়া গেছে। দেশটির প্রায় এক কোটি ৩০ লাখ লোক ক্ষুধার যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে। তাদের জন্য মাথাপিছু ১৪০ পাউন্ড করে সাহায্য পাওয়া গেছে। তবে দেশটির একটা বড় অংশ নিয়ন্ত্রণ করে আল-শাবাব নামে আল-কায়েদা সংশ্লিষ্ট একটি জঙ্গি সংগঠন। ফলে ওই সব এলাকার দুর্ভিক্ষপীড়িতদের কাছে ত্রাণ পেঁৗছানো সম্ভব হয়নি। এই সংকটের কারণে সোমালিয়ার প্রায় ২৫ হাজার শিশু প্রাণ হারিয়েছে।
এদিকে কেনিয়ায় ত্রাণ বিতরণকে হুমকির মুখে ফেলেছে নিরাপত্তাহীনতা। গত সপ্তাহেও কেনিয়ার একটি ত্রাণশিবিরে কর্মরত দুই স্প্যানিশ নারী কর্মীকে অপহরণ করা হয়। ফলে কর্মরত সংস্থাগুলো তাদের বেশির ভাগ বিদেশি কর্মীকে প্রত্যাহার করতে শুরু করে। এমনকি জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএসএইচসিআর তাদের অতি গুরুত্বপূর্ণ নয় এমন সব তৎপরতা স্থগিত করেছে। তবে এত কিছুর পরও কেনিয়া ও ইথিওপিয়ার কিছু কিছু অংশে ধীরগতিতে হলেও পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। এসব এলাকায় ত্রাণ সরবরাহ গতিশীল হওয়ার পাশাপাশি কয়েক মৌসুম ধরে ফসলও ভালো হয়েছে।
জাতিসংঘের কৃষি উন্নয়ন অর্থনীতির পরিচালক কোসটাস স্টামৌলিস বলেন, 'আফ্রিকাকে এই সংকট থেকে বের করে আনতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার প্রয়োজন।' তিনি বিশ্বের ১০০ কোটি লোকের ক্ষুধার্ত থাকার বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন, 'আমরা এদের সবার জন্য খাদ্য সহায়তা দিতে পারি না।' জাতিসংঘ মনে করে, খাদ্য খাটতির একটা বড় কারণ হচ্ছে কৃষিতে বিনিয়োগে অনীহা। এফএও তাদের প্রতিবেদনে জানায়, উন্নয়ন তহবিল এবং মানবিক সহায়তার মাত্র তিন থেকে চার শতাংশ কৃষি খাতে ব্যয় করা হয়। স্টামৌলিস বলেন, 'ক্ষুধার্তদের ৭৫ শতাংশই গ্রামীণ এলাকায় বাস করে। এদের অধিকাংশ জীবন ধারণের জন্য কৃষির ওপর নির্ভরশীল। যদিও আমরা বহু দিন থেকেই কৃষিকে অবহেলা করে আসছি। বহু বছর ধরেই মানুষের ধারণা, শিল্পোন্নয়নের মাধ্যমেই অর্থনৈতিক সংকট থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। ফলে গবেষণা এবং অবকাঠামোগত দিক থেকে কৃষি অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে। এ ব্যাপারে এখনই কিছু করা না হলে ভবিষ্যতে আমাদের আরো ভয়াবহ খাদ্য সংকটের মুখে পড়তে হবে।' সূত্র : দি ইনডিপেনডেন্ট।
No comments