পদ্মা সেতুর দুর্নীতি : বিশ্বব্যাংকের সিদ্ধান্তে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়নি : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

দ্মা সেতু নির্মাণে দুর্নীতির অভিযোগের ব্যাপারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, দুর্নীতির অভিযোগ উঠলেই দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় না। পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশ্বব্যাংক তাদের ঋণ সহায়তা স্থগিত করায় দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ার কোনো কারণ আছে বলে আমি মনে করি না।গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।উল্লেখ্য, পদ্মা সেতু নির্মাণে দুর্নীতির অভিযোগে সব ধরনের ঋণ সহায়তা স্থগিত করেছে বিশ্বব্যাংক। দুর্নীতির অভিযোগের সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত পদ্মা সেতুর জন্য কোনো অর্থ ছাড় করা হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।


পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশ্বব্যাংকের ১২০ কোটি ডলার ঋণ দেয়ার কথা।পদ্মা সেতুর ব্যাপারে বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে কি না বা এর ফলে বিদেশি বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হবে কি না—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এমন কোনো কারণ আমি দেখি না। দুর্নীতির অভিযোগ উঠলেই দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় না। বর্তমান সরকারের কাজের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো অবকাশ নেই। গত দুই বছর ৮ মাস আমরা যেভাবে সরকার পরিচালনা করেছি তা সারাবিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, এখন পর্যন্ত পদ্মা সেতু নির্মাণের টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হয়নি। পাঁচটি প্যাকেজের মধ্যে মাত্র একটির প্রাক-যোগ্যতা দরপত্র সম্পন্ন হয়েছে। সেটা নিয়েই এখন প্রশ্ন উঠেছে। কাজেই এটা নিয়ে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ার কোনো কারণ দেখছি না। এ প্রকল্পে অনেকেই কাজ পেতে চায়। যদি কেউ এই প্রকল্পে কাজের তালিকা থেকে বাদ পড়ে তাহলে প্রশ্ন উঠতে পারে। এ ব্যাপারে বিশ্বব্যাংক প্রশ্ন তুলতে পারে। সরকার এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় তথ্য বিশ্বব্যাংককে জানাবে।
আপনি বলছেন বাংলাদেশের মিডিয়া সম্পূর্ণ স্বাধীন। অথচ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন বাংলাদেশ সরকারকে মিডিয়ার স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন। হিলারির ওই বক্তব্য কি তাহলে অযৌক্তিক—এ প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দেখুন, আমাদের দেশের মতো তৃতীয় বিশ্বে অনেক সময় দেখা যায় কেউ যদি কোনো কারণে সংক্ষুব্ধ হন তাহলে তারা দেশের মাটি বাদ দিয়ে বিদেশে গিয়ে যারা সুপার পাওয়ারে আছে তাদের কাছে গিয়ে অভিযোগ করেন। অনেক সময় তারা দেনদরবার করেন। এ রকম অভিযোগ তার কাছে করাও হতে পারে। বন্ধুরাষ্ট্র হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র এ ধরনের অভিযোগ পেলে তারা আমাদের কাছে অনুরোধ জানাতেই পারে বিষয়টিকে আরও ভালোভাবে দেখার জন্য। পররাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করে বলেন, বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যম এবং সিভিল সোসাইটি যে স্বাধীনতা ভোগ করে, তা বিশ্বে অতুলনীয়। অতীতে যারা দুর্নীতি করেছে তাদের পক্ষ থেকে দেনদরবার করা হয়ে থাকতে পারে।
ড. মুহম্মদ ইউনূস এবং গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ে হিলারির উদ্বেগ সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারির উদ্বেগের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কোনো ব্যক্তি বা গ্রামীণব্যাংক সম্পর্কে কোনো উদ্বেগ প্রকাশ করেননি। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন গ্রামীণ ব্যাংক তার সুনাম অক্ষুণ্ন রেখে কাজ করতে পারবে।
উল্লেখ্য, দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে ডা. দীপু মনির উপস্থিতিতে হিলারি যে বিবৃতি দেন সেখানে গ্রামীণব্যাংকের ব্যাপারে সরাসরি উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের ওয়েবসাইটে দেয়া এবং ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতেই হিলারি এবং দীপু মনির বিবৃতি হুবহু তুলে ধরা হয়। হিলারি বলেন : `And of course, we have expressed directly to the government our concern and hope that the Grameen Bank, which was well recognized by the world, particularly with a Nobel peace Prize for what it's done to help alleviate poverty, is able to continue to function productively on behalf of the Bangladeshi people.'

No comments

Powered by Blogger.