বন্যারোধে থাই ত্রাণকর্মীদের প্রাণপণ লড়াই

রাজধানী ব্যাংকককে ডুবে যাওয়া থেকে রক্ষার চেষ্টায় নতুন করে বাঁধ মেরামত করে যাচ্ছেন থাইল্যান্ডের ত্রাণকর্মীরা। অর্ধ শতাব্দীর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যায় থাইল্যান্ডের এক-তৃতীয়াংশ এখন পানির নিচে। গতকালও ব্যাংককের কয়েকটি এলাকায় প্রবল বৃষ্টিপাত হয়। বৃষ্টিপাত সত্ত্বেও বন্যা প্রতিরোধ ব্যবস্থার কারণে শহরটি রোববার পর্যন্তও তলিয়ে যায়নি। দেশটির উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চল বন্যার পানিতে ডুবে আছে। বন্যায় এ পর্যন্ত ৩০০ কোটি ডলারের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ও ২৯৭ জন মারা গেছে।


সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে মাত্র সাড়ে ৬ ফুট উচ্চতার ব্যাংকক শহর বন্যার পানিতে যে কোনো সময় তলিয়ে যেতে পারে। শহরের পার্শ্ববর্তী চাও ফ্রইয়া নদী উত্তর থেকে আসা পানিতে এরই মধ্যে বিপদসীমার অনেক ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গতকাল পানি বিপদসীমার দুই দশমিক এক পাঁচ মিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। তবে ব্যাংককের শহর রক্ষাবাঁধ (২ দশমিক ৫ মিটার) আরও উঁচু হওয়ায় শহরে এখনও বন্যার পানি প্রবেশ করেনি। শহরবাসীকে নিরাপদ রাখার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রা। কিন্তু উদ্বিগ্ন শহরবাসী বোতলজাত পানি, ইনস্ট্যান্ট নুডলস, চাল ও অন্যান্য বোতলজাত পণ্য মজুত করছে।
ফলে ব্যাংককের কয়েকটি প্রধান বাজার পণ্যশূন্য হয়ে পড়েছে। শহরের অনেক বাসিন্দা তাদের গাড়ি ভবনের ওপরতলার গ্যারেজে রেখে দিচ্ছে। অনেকে তাদের বাসা বা দোকানের সামনে বালির বস্তা দিয়ে বাঁধ তৈরি করে আসন্ন বন্যার জন্য অপেক্ষা করছে। ব্যাংককের উত্তরে অবস্থিত থানি প্রদেশের নাভা নাকর্ন শিল্প এলাকা রক্ষার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করছে দেশটির স্বেচ্ছাসেবী ও সেনাসদস্যরা। প্রায় ৬০০ সেনাসদস্য ও স্বেচ্ছাসেবী দিনরাত শিল্পাঞ্চল রক্ষাবাঁধ মেরামত ও পানি সরিয়ে দেয়ার কাজ করছে।
এর আগে দেশটির অন্য তিনটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। এর একটিতে জাপানি মোটরগাড়ি নির্মাতা হোন্ডা মোটর কোম্পানির কারখানা আছে। কোম্পানিটির ৪ দশমিক ৭ ভাগ গাড়িই এখানে তৈরি হয়। আগামী ২১ অক্টোবর পর্যন্ত কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.