সেনা মোতায়েন হবে

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ভোট গ্রহণের দু'দিন আগে থেকে সেনা মোতায়েন থাকবে। নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন জানান, চার কোম্পানি সেনাসদস্য চেয়ে রোববার নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারকে (পিএসও) চিঠি দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, 'সেনাসদস্য মোতায়েনের বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের জনগণেরও চাপ রয়েছে। নির্বিঘ্নে ভোটদানে জনগণকে আশ্বস্ত করার প্রয়োজন রয়েছে।' সেনা মোতায়েনের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন তিন হেভিওয়েট মেয়র প্রার্থী ও জেলার সুশীল সমাজ।


নবগঠিত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হবে আগামী ৩০ অক্টোবর। প্রতিটি কোম্পানিতে ৯০ থেকে ১১০ জন করে সেনাসদস্য থাকে বলে জানা গেছে। ইসির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৮ অক্টোবর সকাল ৬টা থেকে ১ নভেম্বর রাত ১১টা পর্যন্ত স্ট্রাইকিং ও মোবাইল ফোর্স হিসেবে এসব সদস্য নিয়োজিত থাকবেন।
এর আগে গত সোমবার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছিলেন, ভোটের দু'দিন আগে থেকে পাঁচ দিনের জন্য চার হাজার অতিরিক্ত সদস্যসহ প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত থাকবে।
ইসি সচিবালয়ের উপ-সচিব মিহির সারওয়ার মোর্শেদ স্বাক্ষরিত পিএসওর কাছে
লেখা চিঠিতে বলা হয়, বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার লক্ষ্যে এনসিসি এলাকায় চার কোম্পানি সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেনা নিয়োগের বিস্তারিত পরিকল্পনা (ডেপ্লয়মেন্ট প্ল্যান) সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা, পুলিশ সুপার ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনাক্রমে চূড়ান্ত করতে হবে।
উপ-সচিব মিহির সারওয়ার মোর্শেদ জানান, ইসির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিকেলে চিঠির কপি বিশেষ পত্রবাহক ও ফ্যাক্স মারফত প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে পাঠানো হয়েছে। ইসি কর্মকর্তারা জানান, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নির্বাহী হাকিমের নেতৃত্বে স্ট্রাইকিং ও মোবাইল ফোর্সে নিয়োজিত থাকবে। ৩৬ জন নির্বাহী ও বিচারিক হাকিম নিয়োগ করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে ২৪ জন করে নিরাপত্তারক্ষী নিয়োজিত থাকবেন।
এদিকে নাসিক নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন তিন মেয়রসহ সুশীল সমাজ। নির্বাচন কমিশনের এ সিদ্ধান্তে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন নারায়ণগঞ্জের সুশীল সমাজ এবং সাধারণ ভোটাররাও। নির্বাচনে সেনা মেতায়েনের সিদ্ধান্তের পরপরই মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থী এবং তাদের কর্মী-সমর্থকরা উৎফুল্ল হয়ে ওঠেন। মেয়র প্রার্থী শামীম ওসমান বলেন, 'সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন যে যে ব্যবস্থা বা সিদ্ধান্ত নেবে তাকে স্বাগত জানাই।' ডা. সেলিনা হায়াত আইভী বলেন, 'নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তে আমি খুশি। সাধারণ ভোটাররা এ সিদ্ধান্তে শঙ্কা মুক্ত হলেন। মানুষ এখন মুক্তভাবে ভোট দিতে পারবেন।' উৎফুল্ল তৈমুর আলম খন্দকার প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে ধন্যবাদ জানান। একই সঙ্গে তিনি সেনাবাহিনীকে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, সেনাবাহিনী নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করলে তা নির্বাচন কমিশন ও সেনাবাহিনী উভয়ের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে।
নারায়ণগঞ্জের সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব এবং নাগরিক কমিটির সহ-সভাপতি রফিউর রাবি্ব বলেন, 'এটি যথোপযুক্ত ও বাস্তব সিদ্ধান্ত।' একই সঙ্গে তিনি নির্বাচনকে সুষ্ঠু করতে আনুষঙ্গিক কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য ইসির প্রতি আহ্বান জানান। জেলা প্রশাসক এবং সিটি করপোরেশন এলাকার ৩ থানার ওসির অপসারণ দাবি করেন তিনি। জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান দিপু বলেন, 'নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে আরও যা সিদ্ধান্ত ইসি নেবে সেগুলোকেই সাধুবাদ জানাব।

 

No comments

Powered by Blogger.