পুঁজিবাজার স্থিতিশীল করার দাবি খুলনার বিনিয়োগকারীদের by গৌরাঙ্গ নন্দী,

শেয়ারবাজারে টাকা খাটিয়ে পথে বসা খুলনার বিনিয়োগকারীরা গতকাল রবিবার নগরীর চেম্বার ভবনের বিপরীতে অনশন কর্মসূচি পালন করেন। তাঁরা শেয়ারবাজারে স্থিতিশীল পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবির পাশাপাশি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি ও ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ জলাঞ্জলি দেওয়ার দায়ে অর্থমন্ত্রী ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের পদত্যাগ দাবি করেন। সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এই কর্মসূচি পালন করা হয়। বিনিয়োগকারীদের সংগঠন খুলনা ইনভেস্টর ফোরাম এই অনশন কর্মসূচি পালন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন ফোরামের সভাপতি মো. ইসরাইল হোসেন।


বক্তব্য দেন সিনিয়র সহসভাপতি ফারুক আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াদুদ ডাকুয়া, কাজি আবদুল হাসিব, এস এম লিয়াকত হোসেন, এম এ জব্বার বাদল, সৈয়দ ঈসা, সাইফুল হক বাপ্পী, মিজানুর রহমান প্রমুখ।
সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াদুদ ডাকুয়া দেশের পুঁজিবাজারে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির জন্য অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমানকে দায়ী করে বলেন, 'পুঁজিবাজারে ব্যাংকগুলোর টাকা খাটানোর কথা না থাকলেও তারা টাকা খাটিয়েছে এবং বিপুল মুনাফা করে সরে পড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক অতি মুনাফা করা ব্যাংকগুলোকে রক্ষা করলেও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ উপেক্ষা করেছে। বিনিয়োগকারীরা এখন পুঁজি হারিয়ে পথে বসেছেন।' তিনি বর্তমান দুর্দশা থেকে একমাত্র প্রধানমন্ত্রী এই ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের বাঁচাতে পারেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। অনশনে অংশ নেওয়া মোস্তফা জামাল নামের এক বিনিয়োগকারী জানান, তিনি এক-দুই লাখ করে মোট ১৫ লাখ টাকা বাজারে বিনিয়োগ করেন। প্রথম প্রথম বেশ মুনাফা পেলেও সময়ের ব্যবধানে বর্তমানে তাঁর পুঁজি এসে ঠেকেছে পাঁচ লাখে।
তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমি একেবারে পথে বসে গেছি। অবস্থা ভালো হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখতে পাচ্ছি না। আশায় ছিলাম, কম্পানিগুলো রাইট শেয়ার ও ডিভিডেন্ড দেবে; কিন্তু তাও দিল না। কম্পানি লাভ করলেও ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা কিছুই পেলেন না। সরকার হয়তো বলবে, এভাবে বিনিয়োগ করা ঠিক হয়নি; কিন্তু এও ঠিক, বাজার নিয়ন্ত্রণে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে সরকারের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত ছিল। সরকার তা নেয়নি।'
শুধু মোস্তফা জামাল নন, খুলনার শত শত বিনিয়োগকারী এখন হাঁ-হুতাশ করে অনশনে নেমেছেন। ব্রোকার হাউসগুলো এখন ফাঁকা। বাজারে দরপতনের সার্বিক চিত্র এ-রকম থাকলে অনেক ব্রোকার হাউস বন্ধ হয়ে যাবে বলে বিনিয়োগকারীরা আশঙ্কা করছেন।
 

No comments

Powered by Blogger.