চার কম্পানি সেনা চেয়েছে ইসি

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে চার কম্পানি (চার শতাধিক) সেনা চেয়ে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগকে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। গতকাল রবিবার নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে সশস্ত্র বাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) বরাবর এ চিঠি পাঠানো হয়।চিঠিতে বলা হয়েছে, কমিশন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ভোট গ্রহণের আগের দুই দিন, ভোট গ্রহণের দিন এবং ভোট গ্রহণের পরের দুই দিন_মোট পাঁচ দিন সেনা নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেনা নিয়োগের বিস্তারিত পরিকল্পনা (ডেপ্লয়মেন্ট প্লান) স্থানীয় এসপি, রিটার্নিং অফিসার ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করতে হবে।


চিঠিতে আরো জানানো হয়েছে, এ নির্বাচনে স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন অনুসারেই নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সেনাবাহিনী নিয়োগ করা হবে। অর্থাৎ এ নির্বাচনে সেনাবাহিনী আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে।
সূত্র মতে, এ নির্বাচনে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) নিয়োগ না করতে পারার কারণেই মূলত নির্বাচন কমিশন সেনাবাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেয়।
এর আগে গত ২৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত ১২টি পৌরসভা এবং জাতীয় সংসদের হবিগঞ্জ-১ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের উপনির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েও সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে পারেনি নির্বাচন কমিশন। ওই সময় সশস্ত্র বাহিনী বিভাগকে এ বিষয়ে কয়েক দফা চিঠি দিয়েও জবাব পায়নি ইসি। এতে নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুণ্ন হয়েছে বলেও ওই সময় অনেকে অভিযোগ করে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে সরকারের কাছে কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করেনি।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সেনাবাহিনী চেয়ে ব্যর্থ হবেন কি না জানতে চাইলে গতকাল নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমরা এখন যাওয়ার পথে। কয়েক মাস পরেই আমাদের মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। এই বিদায় বেলায় সরকারের সঙ্গে আমাদের বিরোধপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি হবে না বলেই আমরা আশা করছি।'
সেনা মোতায়েন ছাড়াও নির্বাচন কমিশন এ নির্বাচনে র‌্যাব, পুলিশ, আনসার ও কোস্টগার্ড সমন্বয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর পাঁচ হাজার সদস্য মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত ১০ অক্টাবর আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে উচ্চপর্যায়ের এক বৈঠকে নির্বাচন কমিশন এ সিদ্ধান্ত নেয়। ওই দিন নির্বাচন কমিশনের পক্ষে জানানো হয়, ৬০০ র‌্যাব সদস্যসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অতিরিক্ত চার হাজার সদস্য নির্বাচনের আগে ও পরে মোট পাঁচ দিন মোতায়েন থাকবে। তাঁদের সঙ্গে জেলা পুলিশের এক হাজারের বেশি সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন।

প্রার্থীদের প্রতিক্রিয়া
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্তে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মেয়র পদে তিন প্রার্থী এ কে এম শামীম ওসমান, অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার ও ডা. সেলিনা হায়াত আইভী।
শামীম ওসমান বলেন, 'আমি আগেই নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ করেছিলাম তৈমূর ও আইভীর প্রতি সহানুভূতিশীল হতে। সেনা মোতায়েন করে নির্বাচন কমিশন আইভী ও তৈমূরের দাবিকে মেনে নেওয়ায় নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, 'নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার জন্য নির্বাচন কমিশনের যেকোনো সিদ্ধান্তের প্রতি আমার আস্থা আছে।'
অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার বলেন, 'নির্বাচন কমিশন নারায়ণগঞ্জের পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরে অবশেষে আমাদের দাবি মেনে নিয়েছেন।'
ডা. সেলিনা হায়াত আইভী আগে থেকেই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। তিনিও সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, জনগণ এখন নির্ভয়ে নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারবেন।

No comments

Powered by Blogger.