বাজেটে গুরুত্ব হারাচ্ছে স্বাস্থ্য খাত by ড. মুনীর উদ্দিন আহমদ

গত ৬ জুন জাতীয় সংসদে ২০১৩-১৪ অর্থবছরের জন্য দুই লাখ ২২ হাজার ৪৯১ কোটি টাকার এক বিশাল বাজেট পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। ৫৫ হাজার ৩২ কোটি টাকার ঘটতিসম্পন্ন এই বাজেট সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ ও রাজনীতিবিদরা নানা চিত্তাকর্ষক মন্তব্য তুলে ধরেছেন।
এই অর্থবছরের বাজেটের খাতওয়ারি বণ্টনে দেখা যায়- মোট ব্যয়ের ৪ দশমিক এক শতাংশ অর্থ স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে। টাকার অঙ্কে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ খাতে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে উন্নয়ন ও অনুন্নয়ন ব্যয় মিলে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৯ হাজার ৪৭০ কোটি টাকা। গত অর্থবছরে এই বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ৯ হাজার ৩৩৩ কোটি টাকা। তবে সংশোধিত বাজেটে এর পরিমাণ গিয়ে দাঁড়ায় ৯ হাজার ১৩০ কোটি টাকায়। টাকার অঙ্কে বরাদ্দ ১৩৭ কোটি টাকা বাড়লেও রাষ্ট্রীয় বাজেটে শতাংশ হারে বরাদ্দ কমানোর মানে হলো খাতটি ক্রমান্বয়ে গুরুত্ব হারাচ্ছে। ২০১১-১২ অর্থবছরে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছিল মোট বাজেটের ৫ দশমিক ৪২ শতাংশ। পরে সংশোধিত বাজেটে এর পরিমাণ ৫ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশে নেমে আসে। ২০০৯-১০ এবং ২০১০-১১ অর্থবছরে শতাংশের হিসাবে বরাদ্দ ছিল যথাক্রমে ৬ দশমিক ১৮ এবং ৫ দশমিক ৬৮ শতাংশ। স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ হ্রাসের হার ধারাবাহিকভাবে কমানোর কারণে বিশেষজ্ঞ মহল উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। অথচ স্বাস্থ্য খাতে বাজেট বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি দীর্ঘদিনের। স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বাড়ালে দেশের অসহায় দরিদ্র জনগোষ্ঠী উপকৃত হয়, উন্নতমানের স্বাস্থ্যসেবা লাভের সুযোগ সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশে দীর্ঘদিন দুই ধরনের অসামঞ্জস্যপূর্ণ চিকিৎসাসেবার বিধান চালু রয়েছে। পাবলিক সেক্টরের আওতাধীন বিভিন্ন হাসপাতাল, জেলা, উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও হাসপাতালগুলোয় স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে থাকে মূলত গ্রামগঞ্জ ও শহরের দরিদ্র ও স্বল্প আয়ের মানুষজন। প্রাইভেট বা বেসরকারি হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও বিভিন্ন পর্যায়ের ক্লিনিকগুলো প্রতিষ্ঠিত হয়েছে দেশের এলিট শ্রেণী, অবস্থাপন্ন ধনবান বড়লোকদের জন্য। দেশের বিদ্যমান সরকারি হাসপাতাল ও চিকিৎসাকেন্দ্রগুলোর অবস্থা বেশ দুর্বল, নাজুক ও ভঙ্গুর। এসব হাসপাতাল ও চিকিৎসাকেন্দ্রে অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, চিকিৎসা উপকরণ, ওষুধপত্র ও পর্যাপ্ত চিকিৎসকের অপ্রতুলতার কারণে যুগ যুগ ধরে এ দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠী যথাযথ চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে। কিছু দিন আগে একটি জাতীয় দৈনিকে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোর বেহাল দশার বর্ণনা দিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছিল। প্রতিবেদক একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মাত্র দুজন চিকিৎসকের উপস্থিতি দেখতে পান। শুধু চিকিৎসকই নন, ওইসব স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোয় প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম, যন্ত্রপাতি ও অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের ঘাটতি লেগেই রয়েছে। জানা যায়, অনেক চিকিৎসক এসব হাসপাতালে বসে 'প্রাইভেট প্র্যাকটিস' করে থাকেন। আমাদের অর্থমন্ত্রী তাঁর বাজেট বক্তৃতায় জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি প্রণয়নের কৃতিত্ব নিয়েছেন। কিন্তু জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি দেশের সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোর বেহাল অবস্থা ও চিকিৎসকদের অবহেলা, প্রাইভেট প্র্যাকটিস ও জবাবদিহিতার অভাব অনুমোদন করে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে ইচ্ছে করেই দুর্বল করে রাখা হয়েছে যাতে করে এসব অব্যবস্থাপনা ও দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে বেসরকারি উদ্যোগে নামিদামি হাসপাতাল ও ক্লিনিক গড়ে উঠতে পারে। সরকারি প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসাসেবা না পেলে মানুষ ঘরবাড়ি-জায়গাজমি বিক্রি করে হলেও উন্নত চিকিৎসা লাভের জন্য বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় ছুটে যায়। তার পরও এসব বেসরকারি সেবা প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসা পাওয়া সবার ভাগ্যে জোটে না। যাদের প্রচুর অর্থকড়ি ও প্রভাব-প্রতিপত্তি রয়েছে, তাঁরাই শুধু এসব হাসপাতালে চিকিৎসা পেয়ে থাকেন। কিন্তু এত অর্থকড়ি ব্যয় করেও এসব হাসপাতালে কি মানুষ প্রকৃত চিকিৎসা পাচ্ছেন? বিতর্ক রয়েছে। আমার এক ঘনিষ্ঠ সহকর্মী ও বন্ধু কবি, শিক্ষাবিদ খোন্দকার আশরাফ হোসেন ঢাকার একটি নামিদামি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর মৃত্যু নিয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে অবহেলার অভিযোগ উঠেছে।
এবারের বাজেটে মেডিক্যাল যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রে বিদ্যমান শুল্ক ২৫ থেকে ১৫ শতাংশ কমিয়ে মাত্র ১০ শতাংশে নির্ধারণ করা হয়েছে। এই শুল্ক হ্রাসের সুযোগ নেবে বেসরকারি হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিকগুলো। এই শুল্ক হ্রাসের কারণে চিকিৎসাসেবাপ্রাপ্তিতে জনগণ কতটুকু আর্থিক রেয়াত পাবে, তার দিকনির্দেশনা কি কোথাও আছে?
অন্যান্য মৌলিক অধিকারের মতো স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া প্রতিটি নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের সামগ্রিক চিত্র থেকে যা প্রতীয়মান হয়, সাংবিধানিকভাবে উল্লেখ করা হলেও সরকার দেশের অসহায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে যথাযথ স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করতে পারছে না। এটা শুধু বাজেটে অর্থ বরাদ্দ কম রাখা বা হ্রাস পাচ্ছে বলে নয়, এটা ঘটছে সরকারের রাজনৈতিক অঙ্গীকার পূরণ করার তাগিদ না থাকার কারণে। আপামর জনসাধারণকে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের দায়িত্ব সাংবিধানিকভাবে সরকারের ওপর বর্তালেও আমরা দেখতে পাচ্ছি, রাজনৈতিক অঙ্গীকার ও সদিচ্ছার অভাবের কারণে এই দায়িত্ব ক্রমান্বয়ে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর হাতে চলে যাচ্ছে। এই বিশ্বায়নের যুগে উন্মুক্ত বাজারব্যবস্থায় বহুজাতিক বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান যখন বাজারে ঢুকে পড়ে, তখন সেবা আর সেবা থাকে না, তা হয়ে যায় লাভজনক দুর্লভ পণ্যে। গরিব মানুষ এই উচ্চমূল্যের সেবা নামের দুর্লভ পণ্য কিনতে পারে না। সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত সেই স্বাস্থ্যসেবা থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। তাই তারা ভোগে, নতুবা মরে।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত স্বাস্থ্য খাতে সরকারের বিভিন্ন সাফল্যের বিবরণ উপস্থাপন করে বলেছেন, সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা আমাদের নির্বাচনী অঙ্গীকার। সে লক্ষ্যে এরই মধ্যে জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি ২০১১ প্রণীত হয়েছে। জাতীয় জনসংখ্যা নীতি ২০১২ এবং ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ (সংশোধন) আইন-২০১২ মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পেয়েছে। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফিক অ্যান্ড হেলথ সার্ভে-২০১১ অনুযায়ী পাঁচ বছরের নিচে শিশু মৃত্যুহার হ্রাস পেয়ে প্রতি হাজারে ৬৫ থেকে নেমে ৫৩ ভাগে দাঁড়িয়েছে। মাতৃ মৃত্যুহারও হ্রাস পেয়ে প্রতি হাজারে ৩৪৮ থেকে ১৯৪ ভাগে নেমে এসেছে। তবে পুষ্টির ক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত সহস্রাব্দ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এখনো পিছিয়ে থাকার কথা স্বীকার করেছেন তিনি। বর্তমানে পাঁচ বছরের নিচের ৩৬ শতাংশ শিশুই কম ওজনসম্পন্ন।
সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল) অর্জনের জন্য অন্তত দুই ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাফল্য অনস্বীকার্য। বাংলাদেশে শিশু ও মাতৃ মৃত্যুহার কমানোর এই ধারা বেশ প্রশংসনীয় ও আশাব্যঞ্জক। এসব মৃত্যুহার কমার পেছনে যেসব উপাদান কাজ করছে, তার মধ্যে বয়স্ক মহিলাদের শিক্ষাদান, বাল্যবিবাহ নিরুৎসাহিতকরণ, দেরিতে সন্তান নেওয়া এবং দেশজুড়ে প্রতিষেধকের মাধ্যমে বিভিন্ন রোগ নিয়ন্ত্রণ অন্যতম। পৃথিবীর প্রায় ১০০ কোটি মানুষ অপুষ্টিতে ভোগে। বিশ্বব্যাংকের এক পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, অপুষ্টিতে আক্রান্ত এসব মানুষের মধ্যে ৮০ শতাংশ শিশু ও মহিলা। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার মতে, উন্নয়নশীল দেশগুলোর প্রায় ৫০ কোটি শিশু অপুষ্টিতে ভোগে। প্রতি বছর পাঁচ বছরের কম বয়স্ক প্রায় ৮৫ লাখ শিশু অপুষ্টিতে মারা যায়। অপুষ্টি দূর করা না গেলে বাড়ন্ত শিশুদের যেকোনো সময় শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অপুষ্টির মূল কারণ দারিদ্র্য ও সচেতনতার অভাব। ক্ষুধা ও অপুষ্টিজনিত সমস্যা দূরীকরণে প্রয়োজন রাজনৈতিক অঙ্গীকার, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংস্কার। দেশে খাদ্যের অপ্রতুলতা নেই। সমস্যা রয়েছে সুষম বণ্টনে। বিশ্বখাদ্য উৎপাদনে ব্যর্থতা বা উৎপাদন প্রযুক্তির কোনো খুঁত বা সীমাবদ্ধতা নেই। সমস্যা হলো- প্রত্যেক মানুষকে পর্যাপ্ত খাদ্য সংগ্রহে সুযোগ প্রদানের অনীহা বা অব্যবস্থাপনা। আমাদের মতো অনুন্নত বিশ্বে এটা হলো এক মারাত্মক সমস্যা। এসব দেশে দরিদ্র জনগোষ্ঠী অপুষ্টির হাত ও অভিশাপ থেকে নিজেকে বাঁচাতে সক্ষম নয়। সমাজে অপুষ্টি দূরীকরণে এগিয়ে আসতে হবে সরকার ও বিভিন্ন সংগঠনকে। আমাদের মনে রাখা বাঞ্ছনীয়, দারিদ্র্য ও অপুষ্টি বিমোচনের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের শিশুদের হাম, যক্ষ্মা, কাশি, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, পোলিও থেকে রক্ষা করা ও মাতৃদুগ্ধ পানে উৎসাহিত করাসহ মায়ের সুস্বাস্থ্যের প্রতি নজর দেওয়া আবশ্যক। শুধু খাদ্যের অভাবেই মানুষ বা শিশুরা অপুষ্টিতে ভোগে না, বসবাসের জন্য ক্ষতিকর পরিবেশ, মায়ের দুধপান না করা বং সংক্রামক রোগকেও অপুষ্টির জন্য বহুলাংশে দায়ী করা হয়।
অর্থমন্ত্রী তাঁর বাজেট বক্তৃতায় জাতীয় জনসংখ্যা নীতি ও জাতীয় স্বাস্থ্যনীতির প্রসঙ্গ উপস্থাপন করেছেন। প্রসঙ্গক্রমে জাতীয় ওষুধনীতির কথাও চলে আসে। এই সরকারের কাছে আমরা একটি যুগোপযোগী ওষুধনীতি প্রত্যাশা করেছিলাম। কিন্তু তা হলো না। আর তাই হয়তো ওষুধের বাজার নকল, ভেজাল, ক্ষতিকর ও অপ্রয়োজনীয় ওষুধে সয়লাব হয়ে গেছে। অধিকাংশ কম্পানিই দেশে গুণগতমানসম্পন্ন ওষুধ উৎপাদন করছে না। ওষুধের ক্রমাগত মূল্যবৃদ্ধিতে মানুষ দিশেহারা। ১৯৮২ সালের জাতীয় ওষুধনীতি ছিল এক যুগান্তকারী অধ্যায়। এই ওষুধনীতির কারণে ওষুধ শিল্পে শৃঙ্খলা ফিরে এসেছিল, নৈরাজ্য ও লুটপাটের ব্যবসা প্রতিহত করা সম্ভব হয়েছিল। মূলত সুলভ মূল্যে অত্যাবশ্যকীয় ওষুধপ্রাপ্তি নিশ্চিত হয়েছিল, অপ্রয়োজনীয় ওষুধ বাতিল করে অসহায় দরিদ্র মানুষকে অপ্রয়োজনীয় অর্থব্যয় ও অপচয় থেকে রক্ষা করা গিয়েছিল। বাংলাদেশে ওষুধ শিল্পে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে ১৯৮২ সালের ওষুধনীতি মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিল। তারপর এলো ২০০৫ সালে আরেকটি ওষুধনীতি। বলা হলো, ১৯৮২ সালের ওষুধনীতির হালনাগাদ সংস্করণ হলো ২০০৫ সালের ওষুধনীতি। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে কোনো নীতি প্রণয়ন করলে তাকে নীতি না বলে রাজনৈতিক দুরভিসন্ধি বলাই অধিক শ্রেয়। নীতি প্রণয়ন সহজ। কিন্তু তার বাস্তবায়ন তত সহজ নয়। প্রণীত নীতি দ্বারা জনগণের দ্বারে পৌঁছা আর আজ্ঞা অর্জন স্পষ্টতই আরো কঠিন। আগে যেমন বলেছি গত কয়েক বছর ওষুধের মূল্যবৃদ্ধি ক্রমান্বয়ে যে হারে বাড়ছে, তাতে ওষুধ নামের এই জীবন রক্ষাকারী বস্তুটি অতিসত্বর আপামর বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে।
পরিশেষে একটি কথা বলে এই লেখা শেষ করব। প্রায় ক্ষেত্রে দেখা যায় সীমিত সম্পদ দিয়ে সর্বোচ্চ সেবাপ্রাপ্তি সম্ভব। এ জন্য প্রয়োজন নীতিনির্ধারক ও সরকারের অঙ্গীকার ব্যয়ের খাতগুলো যথাযথ মূল্যায়ন ও নির্ধারণ, সময়মতো বরাদ্দ করা সম্পদের সদ্ব্যবহার ও অপচয় বন্ধ করা। খাতওয়ারি সম্পদের সুষ্ঠু বণ্টন ও ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা গেলে জাতি হিসেবে আমাদের অত সমস্যা থাকত না। একটি উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে। অনুন্নত দেশ হওয়া সত্ত্বেও কিউবা স্বাস্থ্য খাতে বিশ্বের অনেক উন্নত দেশের চেয়ে অনেক উন্নতমানের স্বাস্থ্যসেবা উপহার দিচ্ছে তাদের জনগণকে। খোদ যুক্তরাষ্ট্র থেকে অনেক মানুষ সুলভ মূল্যে স্বাস্থ্যসেবা নেওয়ার জন্য কিউবা পাড়ি দিচ্ছে। আমাদের সরকার ও নীতিনির্ধারক কী এসব উদাহরণ সম্পর্কে অবহিত নন?
লেখক : অধ্যাপক, ক্লিনিক্ল্যাল ফার্মেসি ও
ফার্মাকোলজি বিভাগ, ঢাবি।
Profmuniruddin@gmail.com

No comments

Powered by Blogger.