২৫ বছর পর নিষ্প্রাণ বিভাগীয় বইমেলা by আহমেদ মুনির
বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তা আবুল বাশার
তাঁর অবসর সময়ের একটা বড় অংশ কাটান বইয়ের দোকানগুলোতে। দীর্ঘ ২৫ বছর পর
নগরে বিভাগীয় বই মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে জেনে বেশ উৎসাহ নিয়েই মেলা প্রাঙ্গণ
এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেশিয়ামে এসেছিলেন।
কিন্তু
মেলায় লেখক-পাঠকের আড্ডা আর বইপ্রেমীদের ভিড় নেই বলে হতাশ তিনি। এমন
পাঠকশূন্য, প্রাণহীন বইমেলাও এর আগে দেখেননি বলে জানালেন।
গত সোমবার মেলার তৃতীয় দিন সন্ধ্যা ছয়টায় বিভাগীয় বইমেলায় কথা হচ্ছিল আবুল বাশারের সঙ্গে। মেলায় তিনিসহ সব মিলিয়ে জনা বিশেক পাঠক ও উৎসাহী লোকজনের দেখা মিলল। মেলা প্রাঙ্গণ জিমনেশিয়ামের বাইরের চত্বরে চলছিল বান্দরবানের শিল্পীদের সাংস্কৃৃতিক পরিবেশনা। সেখানে মঞ্চের সামনে পেতে দেওয়া আসনে প্রায় শ খানেক দর্শকও ছিলেন। কিন্তু ভেতরটা প্রায় ফাঁকাই ছিল।
ঢাকার ৬০টি ও চট্টগ্রামের ২০টিসহ প্রায় ৮০টির মতো প্রকাশনা সংস্থা এই বই মেলায় অংশ নিয়েছে। গত শনিবার ১৫ জুন শুরু হওয়া ১০ দিনের এই মেলা শেষ হবে ২৪ জুন। প্রতিদিন বিকেল তিনটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত চলবে মেলা। ছুটির দিনগুলোতে চলবে সকাল নয়টা থেকে রাত নয়টা। দেশের নামকরা সব প্রকাশনা দেশসেরা লেখকদের বই নিয়ে হাজির হলেও পাঠক নেই কেন? জানাতে চাইলে মেলায় অংশ নেওয়া প্রকাশনা সংস্থাগুলোর বিক্রয় প্রতিনিধিরা জানান, মূলত প্রচার না হওয়ার কারণেই বইমেলা জমেনি। অপরদিকে মেলার আয়োজক জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র ও বিভাগীয় প্রশাসনের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা পাঠকখরার জন্য দায়ী করছেন বৃষ্টি ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলতে থাকা পরীক্ষাকে।
হুমায়ূন আহমেদের বইয়ের সারি দেখিয়ে অন্য প্রকাশ স্টলের চট্টগ্রাম প্রতিনিধি মো. হাবীব ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন. ‘দেখেন পাঠকপ্রিয় এত সব বই থাকা সত্ত্বেও বিক্রি নেই। আজ সারা দিন মাত্র এক হাজার টাকার বই বিক্রি হয়েছে।’ পাঠকের উপস্থিতি কম কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এত বড় আয়োজন, অথচ প্রচার নেই। পাঠক জানলেই তো আসবে।’
দেশের অন্যতম সৃজনশীল প্রকাশনা সংস্থা ইউপিএলের স্টলে দু-একজন পাঠক ঘোরাফেরা করছিলেন। প্রকাশনা সংস্থার প্রতিনিধি রুহুল আমিন জানান, বেচাবিক্রির অবস্থা খুব খারাপ। বিকেল তিনটায় শুরু হওয়া বইমেলায় সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত কোনো বই বিক্রি হয়নি। তিনি বলেন, ‘এভাবে চলতে থাকলে সামনে সরকারি আয়োজনে এ ধরনের মেলায় অংশ নেওয়া আমাদের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। তিন দিন পার হয়ে গেলেও মেলার যথাযথ প্রচার হয়নি।’ তবে এমন খরার মধ্যে কিছুটা বিক্রি হয়েছে বাংলা একাডেমি, প্রথমা ও অবসর প্রকাশনির স্টলে। তবে শিল্পকলা একাডেমী, মুক্তধারা, নওরোজ, হাতেখড়ি, কাকলি, বিজ্ঞান একাডেমি, ইসলামী ফাউন্ডেশন, বলাকাসহ অধিকাংশ প্রকাশনীর স্টলে বিক্রয় প্রতিনিধিদের অলস সময় কাটাতে দেখা গেছে। চট্টগ্রামের প্রকাশনা সংস্থা বলাকার প্রকাশক জামাল উদ্দীন বলেন, ‘ডিসি হিল, কিংবা মুসলিম হল চত্বরে বইমেলা হলে অনেক পাঠক হতো। তা ছাড়া মেলা নিয়ে তেমন প্রচারও হয়নি।’
মেলায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের প্রকাশনা কর্মকর্তা হাবীব উল্লাহ। মেলার এই দৈন্যদশা কেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আসলে মেলা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল ফেব্রুয়ারিতে। কিন্তু রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে দেরিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বর্ষাকাল বলেই এবার পাঠক কম।’ এর আগে গত দুই বছরে খুলনা ও রাজশাহীতে বিভাগীয় বইমেলা বেশ জমজমাট হয়েছে বলে তিনি জানান।
প্রচার যথাযথ হয়নি, এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে মেলার সমন্বয়কারী ও অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মো. আলেফ উদ্দীন বলেন, ‘দেখুন, মেলাটা হচ্ছে বর্ষাকালে। মেলার তারিখ আমরা নির্ধারণ করিনি। আমাদের দায়িত্ব ব্যবস্থাপনা করা। ১৭ লাখ টাকা বাজেটের এই মেলার জন্য প্রচারে ঘাটতি রাখিনি আমরা। ছয় হাজার পোস্টারও সাঁটানো হয়েছে। মাইকযোগে প্রচার হয়েছে। প্রচারপত্রও বিলি করা হয়েছে। এ ছাড়া ১০ দিনে ১০ জেলার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। কিন্তু এখন তো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পরীক্ষা চলছে। তাই হয়তো পাঠক কম।’
প্রথমা প্রকাশনের স্টলে কথা হয় বেসরকারি ইস্পাত কারখানার কর্মকর্তা মনজুর মোরশেদের সঙ্গে। মেলায় এতসব প্রকাশনার বই দেখে ভীষণ খুশি তিনি। প্রথমা থেকে কিনলেন হরিশংকর জলদাসের রামগোলাম ও মোহনা। বললেন, ‘লোকজন নেই, তার পরও ভালো লাগছে, দীর্ঘদিন পর এসব প্রকাশনীকে একসঙ্গে পেলাম। এমন মেলা প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হলে ভালো হতো।’
গত সোমবার মেলার তৃতীয় দিন সন্ধ্যা ছয়টায় বিভাগীয় বইমেলায় কথা হচ্ছিল আবুল বাশারের সঙ্গে। মেলায় তিনিসহ সব মিলিয়ে জনা বিশেক পাঠক ও উৎসাহী লোকজনের দেখা মিলল। মেলা প্রাঙ্গণ জিমনেশিয়ামের বাইরের চত্বরে চলছিল বান্দরবানের শিল্পীদের সাংস্কৃৃতিক পরিবেশনা। সেখানে মঞ্চের সামনে পেতে দেওয়া আসনে প্রায় শ খানেক দর্শকও ছিলেন। কিন্তু ভেতরটা প্রায় ফাঁকাই ছিল।
ঢাকার ৬০টি ও চট্টগ্রামের ২০টিসহ প্রায় ৮০টির মতো প্রকাশনা সংস্থা এই বই মেলায় অংশ নিয়েছে। গত শনিবার ১৫ জুন শুরু হওয়া ১০ দিনের এই মেলা শেষ হবে ২৪ জুন। প্রতিদিন বিকেল তিনটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত চলবে মেলা। ছুটির দিনগুলোতে চলবে সকাল নয়টা থেকে রাত নয়টা। দেশের নামকরা সব প্রকাশনা দেশসেরা লেখকদের বই নিয়ে হাজির হলেও পাঠক নেই কেন? জানাতে চাইলে মেলায় অংশ নেওয়া প্রকাশনা সংস্থাগুলোর বিক্রয় প্রতিনিধিরা জানান, মূলত প্রচার না হওয়ার কারণেই বইমেলা জমেনি। অপরদিকে মেলার আয়োজক জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র ও বিভাগীয় প্রশাসনের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা পাঠকখরার জন্য দায়ী করছেন বৃষ্টি ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলতে থাকা পরীক্ষাকে।
হুমায়ূন আহমেদের বইয়ের সারি দেখিয়ে অন্য প্রকাশ স্টলের চট্টগ্রাম প্রতিনিধি মো. হাবীব ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন. ‘দেখেন পাঠকপ্রিয় এত সব বই থাকা সত্ত্বেও বিক্রি নেই। আজ সারা দিন মাত্র এক হাজার টাকার বই বিক্রি হয়েছে।’ পাঠকের উপস্থিতি কম কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এত বড় আয়োজন, অথচ প্রচার নেই। পাঠক জানলেই তো আসবে।’
দেশের অন্যতম সৃজনশীল প্রকাশনা সংস্থা ইউপিএলের স্টলে দু-একজন পাঠক ঘোরাফেরা করছিলেন। প্রকাশনা সংস্থার প্রতিনিধি রুহুল আমিন জানান, বেচাবিক্রির অবস্থা খুব খারাপ। বিকেল তিনটায় শুরু হওয়া বইমেলায় সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত কোনো বই বিক্রি হয়নি। তিনি বলেন, ‘এভাবে চলতে থাকলে সামনে সরকারি আয়োজনে এ ধরনের মেলায় অংশ নেওয়া আমাদের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। তিন দিন পার হয়ে গেলেও মেলার যথাযথ প্রচার হয়নি।’ তবে এমন খরার মধ্যে কিছুটা বিক্রি হয়েছে বাংলা একাডেমি, প্রথমা ও অবসর প্রকাশনির স্টলে। তবে শিল্পকলা একাডেমী, মুক্তধারা, নওরোজ, হাতেখড়ি, কাকলি, বিজ্ঞান একাডেমি, ইসলামী ফাউন্ডেশন, বলাকাসহ অধিকাংশ প্রকাশনীর স্টলে বিক্রয় প্রতিনিধিদের অলস সময় কাটাতে দেখা গেছে। চট্টগ্রামের প্রকাশনা সংস্থা বলাকার প্রকাশক জামাল উদ্দীন বলেন, ‘ডিসি হিল, কিংবা মুসলিম হল চত্বরে বইমেলা হলে অনেক পাঠক হতো। তা ছাড়া মেলা নিয়ে তেমন প্রচারও হয়নি।’
মেলায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের প্রকাশনা কর্মকর্তা হাবীব উল্লাহ। মেলার এই দৈন্যদশা কেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আসলে মেলা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল ফেব্রুয়ারিতে। কিন্তু রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে দেরিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বর্ষাকাল বলেই এবার পাঠক কম।’ এর আগে গত দুই বছরে খুলনা ও রাজশাহীতে বিভাগীয় বইমেলা বেশ জমজমাট হয়েছে বলে তিনি জানান।
প্রচার যথাযথ হয়নি, এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে মেলার সমন্বয়কারী ও অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মো. আলেফ উদ্দীন বলেন, ‘দেখুন, মেলাটা হচ্ছে বর্ষাকালে। মেলার তারিখ আমরা নির্ধারণ করিনি। আমাদের দায়িত্ব ব্যবস্থাপনা করা। ১৭ লাখ টাকা বাজেটের এই মেলার জন্য প্রচারে ঘাটতি রাখিনি আমরা। ছয় হাজার পোস্টারও সাঁটানো হয়েছে। মাইকযোগে প্রচার হয়েছে। প্রচারপত্রও বিলি করা হয়েছে। এ ছাড়া ১০ দিনে ১০ জেলার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। কিন্তু এখন তো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পরীক্ষা চলছে। তাই হয়তো পাঠক কম।’
প্রথমা প্রকাশনের স্টলে কথা হয় বেসরকারি ইস্পাত কারখানার কর্মকর্তা মনজুর মোরশেদের সঙ্গে। মেলায় এতসব প্রকাশনার বই দেখে ভীষণ খুশি তিনি। প্রথমা থেকে কিনলেন হরিশংকর জলদাসের রামগোলাম ও মোহনা। বললেন, ‘লোকজন নেই, তার পরও ভালো লাগছে, দীর্ঘদিন পর এসব প্রকাশনীকে একসঙ্গে পেলাম। এমন মেলা প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হলে ভালো হতো।’
No comments