কয়লা উত্তোলনে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে-সেমিনারে সরকারের প্রতি বিশেষজ্ঞদের তাগিদ
সিদ্ধান্তহীনতা কাটিয়ে কয়লা উত্তোলনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। বুধবার রাজধানীতে পাক্ষিক এনার্জি এন্ড পাওয়ার আয়োজিত কয়লা বিষয়ক এক সেমিনারে বক্তারা এ আহ্বান জানান। বিশেষজ্ঞরা দাবি করছেন, ভবিষ্যতের জ্বালানি সংকট মেটাতে এখনই কয়লার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
তাদের মতে, রাজনৈতিক কারণে কয়লা উত্তোলনের সিদ্ধান্ত আটকে আছে। পানি ব্যবস্থাপনা এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন নিয়ে বিতর্ক হওয়ার বদলে উত্তোলন পদ্ধতি নির্ধারণকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। সিদ্ধান্তহীনতা কাটিয়ে কোথায় কোন পদ্ধতি উপযুক্ত, উন্মুক্তখনি হলে কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হবে তার সমীক্ষা করা জরুরী।
বক্তারা বলছেন, প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি সরকার পরিচালনার সময় কয়লা ইস্যুকে রাজনৈতিক বিবেচনায় ছাড় দিচ্ছে। অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা যায় একটি রাজনৈতিক দল আরেকটি রাজনৈতিক দলের দিকে বিষয়টি সিদ্ধান্তের জন্য ছুড়ে দিয়েছে। প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের সিদ্ধান্তহীনতার কারণে দেশীয় কয়লা উত্তোলন করা যাচ্ছে না। বিদেশী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দেশের খনি গুলোর বিষয়ে তাদের নিজেদের সুবিধা মতো ব্যাখ্যা দিচ্ছে। আবার খনি বিষয়ে জরিপের ফলাফল মূল্যায়নে বিশেষজ্ঞরা নিজেদের মতো মতামত দেয়ায় পুরো বিষয়টি অনেকটা ধোয়াশায় ঘেরা। বক্তারা বলেন, একটি খনি করতে কম পক্ষে ১০ বছর সময় প্রয়োজন হয়। এখন উদ্যোগ নিলেও কয়লা পেতে ১০ বছর অপেক্ষা করতে হবে। কাজেই এখনই উদ্যোগ না নিলে ভবিষ্যতের সকল প্রকল্প বিলম্বিত হবে।
সেমিনারে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই ইলাহী চৌধুরী বলেন, শুধু রাজনৈতিক নয় অর্থনৈতিক, পরিবেশ ও প্রযুক্তিগত দিক বিশ্লেষণ করে সরকার সিদ্ধান্ত নেয়। খনি করার ক্ষেত্রে পানি ব্যবস্থাপনা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা সকল দিক বিশ্লেষণ করে দেশীয় কয়লা তোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি বলেন, এখন আমদানি করা কয়লা নিয়ে বিদ্যুত উৎপাদন করার উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। উদ্যোগ নিলেও দেশীয় কয়লা তুলতে পাঁচ বছরের বেশি সময় প্রয়োজন হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ততদিন আমরা বসে থাকতে পারি না। ভূ-গঠন অনুযায়ী নির্ধারিত হবে উত্তোলন পদ্ধতি। কয়লানীতি প্রণয়ন কমিটি সেভাবেই বিষয়টি দেখছে। আগের করা খসড়া কয়লানীতিতে এ বিষয়টি ছিলনা।
বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামরুজ্জামান বলেন, এখন বিতর্ক চলছে উন্মুক্ত হবে না আন্ডার গ্রাউন্ড হবে, যা আলোচনার বিষয় হতে পারে না। আলোচনার বিষয় হওয়া উচিত ছিল পানি ব্যবস্থাপনা ও পুনর্বাসন। বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিকে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখানেও অনেক সমস্যা রয়েছে কিন্তু আমরা সফলতার সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছি। বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির উত্তরাংশে উন্মুক্ত খনি ছাড়া কয়লা উত্তোলন সম্ভব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভূমির অবকাঠামো বিবেচনা করেই উত্তোলন পদ্ধতি নির্ধারণ করতে হবে। বড়পুকুরিয়ায় উন্মুক্ত খনির পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে আগামী সপ্তাহে প্রতিবেদন পাওয়া যাবে বলেও জানান তিনি।
পেট্রোবাংলার সাবেক চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন বলেন, মাটির স্তর বিবেচনা করে উত্তোলন পদ্ধতি নির্ধারণ করতে হবে। যেখানে বেশি গভীরতায় কয়লা রয়েছে সেখানে চাইলেও উন্মুক্ত খনি করা সম্ভব নয়। আবার বড়পুকুরিয়ার একটি অংশে উন্মুক্ত খনি করা সম্ভব। কয়লা তোলার ক্ষেত্রে ব্যয়কে প্রাধান্য দিয়ে তিনি বলেন, ১০০ টাকার কয়লা তুলতে ৫০০ টাকা খরচ হলে তা উপকারে আসবে না। কাজেই ব্যয় নির্ধারণকে গুরুত্ব দিয়ে কয়লা তুলতে হবে। তিনি বলেন, ফুলবাড়ি কয়লা খনির রিপোর্টটি মূল্যায়ন না করে মাঝপথে থামিয়ে দেয়া হয়েছে। ফুলবাড়ির জন্য অন্য তিনটি খনি বন্ধ করে রাখা হয়েছে। কয়লা উত্তোলন না হলে ভবিষ্যতে বড় ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ভূতত্ত্ব অধিদফতরের পরিচালক নেহাল উদ্দিন বলেন, এশিয়া এনার্জি যে প্রস্তাব দিয়েছে তাতে অনেক অসঙ্গতি রয়েছে। ৬০ মিটার কয়লা কেটে নেয়া হবে কিন্তু গ্যাপ পূরণ করার বিষয়ে কোন প্রস্তাবনা নেই। পানি রিইনজেক করার কথা বলা হয়েছে। উত্তোলিত পানির পুকুরে মাছ চাষের বিষয়টি একটি কাল্পনিক চিন্তা বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এসব বিষয়ে সমাধানের উপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, না হলে ওই এলাকার মানুষ এবং জীবনের ওপর ভয়ঙ্কর প্রভাব পড়বে।
পেট্রোবাংলার সাবেক পরিচালক মকবুল-ই-ইলাহী বলেন, কয়লা খনির বিষয়ে এশিয়া এনার্জি যে প্রতিবেদন দিয়েছে তা একটি আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন কমিটি দিয়ে মূল্যায়ন করা প্রয়োজন। মূল্যায়ন ছাড়া যে সমালোচনা চলছে তা অনুমান নির্ভর।
সেমিনারে ইন্ডিয়ান স্কুল অব মাইন্সের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক অজয় কে ঘাষ মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের টেকসই জ্বালানি ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য কয়লা উত্তোলন জরুরী। এ বিষয়ে এখনই সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
সেমিনারে অন্যান্যের মধ্যে বিদ্যুত জ্বালানি এবং খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সুবিদ আলী ভূইয়া, অধ্যাপক বদরুল ইমাম, এফবিসিসিআই সভাপতি একে আজাদ, সংগঠনের সাবেক প্রেসিডেন্ট আনিসুল হক, আফগান সরকারের জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা খন্দকার সালেক সুফি, কয়লা নীতি প্রণয়ন কমিটির সদস্য একেএম সামছুদ্দিন, মনোয়ার হোসেন, বেনু গোপাল দে বক্তব্য রাখেন। সেমিনার সঞ্চালনা করেন, এনর্জি এন্ড পাওয়ারের সম্পাদক মোল্লা আমজাদ হোসেন।
বক্তারা বলছেন, প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি সরকার পরিচালনার সময় কয়লা ইস্যুকে রাজনৈতিক বিবেচনায় ছাড় দিচ্ছে। অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা যায় একটি রাজনৈতিক দল আরেকটি রাজনৈতিক দলের দিকে বিষয়টি সিদ্ধান্তের জন্য ছুড়ে দিয়েছে। প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের সিদ্ধান্তহীনতার কারণে দেশীয় কয়লা উত্তোলন করা যাচ্ছে না। বিদেশী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দেশের খনি গুলোর বিষয়ে তাদের নিজেদের সুবিধা মতো ব্যাখ্যা দিচ্ছে। আবার খনি বিষয়ে জরিপের ফলাফল মূল্যায়নে বিশেষজ্ঞরা নিজেদের মতো মতামত দেয়ায় পুরো বিষয়টি অনেকটা ধোয়াশায় ঘেরা। বক্তারা বলেন, একটি খনি করতে কম পক্ষে ১০ বছর সময় প্রয়োজন হয়। এখন উদ্যোগ নিলেও কয়লা পেতে ১০ বছর অপেক্ষা করতে হবে। কাজেই এখনই উদ্যোগ না নিলে ভবিষ্যতের সকল প্রকল্প বিলম্বিত হবে।
সেমিনারে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই ইলাহী চৌধুরী বলেন, শুধু রাজনৈতিক নয় অর্থনৈতিক, পরিবেশ ও প্রযুক্তিগত দিক বিশ্লেষণ করে সরকার সিদ্ধান্ত নেয়। খনি করার ক্ষেত্রে পানি ব্যবস্থাপনা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা সকল দিক বিশ্লেষণ করে দেশীয় কয়লা তোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি বলেন, এখন আমদানি করা কয়লা নিয়ে বিদ্যুত উৎপাদন করার উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। উদ্যোগ নিলেও দেশীয় কয়লা তুলতে পাঁচ বছরের বেশি সময় প্রয়োজন হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ততদিন আমরা বসে থাকতে পারি না। ভূ-গঠন অনুযায়ী নির্ধারিত হবে উত্তোলন পদ্ধতি। কয়লানীতি প্রণয়ন কমিটি সেভাবেই বিষয়টি দেখছে। আগের করা খসড়া কয়লানীতিতে এ বিষয়টি ছিলনা।
বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামরুজ্জামান বলেন, এখন বিতর্ক চলছে উন্মুক্ত হবে না আন্ডার গ্রাউন্ড হবে, যা আলোচনার বিষয় হতে পারে না। আলোচনার বিষয় হওয়া উচিত ছিল পানি ব্যবস্থাপনা ও পুনর্বাসন। বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিকে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখানেও অনেক সমস্যা রয়েছে কিন্তু আমরা সফলতার সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছি। বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির উত্তরাংশে উন্মুক্ত খনি ছাড়া কয়লা উত্তোলন সম্ভব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভূমির অবকাঠামো বিবেচনা করেই উত্তোলন পদ্ধতি নির্ধারণ করতে হবে। বড়পুকুরিয়ায় উন্মুক্ত খনির পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে আগামী সপ্তাহে প্রতিবেদন পাওয়া যাবে বলেও জানান তিনি।
পেট্রোবাংলার সাবেক চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন বলেন, মাটির স্তর বিবেচনা করে উত্তোলন পদ্ধতি নির্ধারণ করতে হবে। যেখানে বেশি গভীরতায় কয়লা রয়েছে সেখানে চাইলেও উন্মুক্ত খনি করা সম্ভব নয়। আবার বড়পুকুরিয়ার একটি অংশে উন্মুক্ত খনি করা সম্ভব। কয়লা তোলার ক্ষেত্রে ব্যয়কে প্রাধান্য দিয়ে তিনি বলেন, ১০০ টাকার কয়লা তুলতে ৫০০ টাকা খরচ হলে তা উপকারে আসবে না। কাজেই ব্যয় নির্ধারণকে গুরুত্ব দিয়ে কয়লা তুলতে হবে। তিনি বলেন, ফুলবাড়ি কয়লা খনির রিপোর্টটি মূল্যায়ন না করে মাঝপথে থামিয়ে দেয়া হয়েছে। ফুলবাড়ির জন্য অন্য তিনটি খনি বন্ধ করে রাখা হয়েছে। কয়লা উত্তোলন না হলে ভবিষ্যতে বড় ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ভূতত্ত্ব অধিদফতরের পরিচালক নেহাল উদ্দিন বলেন, এশিয়া এনার্জি যে প্রস্তাব দিয়েছে তাতে অনেক অসঙ্গতি রয়েছে। ৬০ মিটার কয়লা কেটে নেয়া হবে কিন্তু গ্যাপ পূরণ করার বিষয়ে কোন প্রস্তাবনা নেই। পানি রিইনজেক করার কথা বলা হয়েছে। উত্তোলিত পানির পুকুরে মাছ চাষের বিষয়টি একটি কাল্পনিক চিন্তা বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এসব বিষয়ে সমাধানের উপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, না হলে ওই এলাকার মানুষ এবং জীবনের ওপর ভয়ঙ্কর প্রভাব পড়বে।
পেট্রোবাংলার সাবেক পরিচালক মকবুল-ই-ইলাহী বলেন, কয়লা খনির বিষয়ে এশিয়া এনার্জি যে প্রতিবেদন দিয়েছে তা একটি আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন কমিটি দিয়ে মূল্যায়ন করা প্রয়োজন। মূল্যায়ন ছাড়া যে সমালোচনা চলছে তা অনুমান নির্ভর।
সেমিনারে ইন্ডিয়ান স্কুল অব মাইন্সের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক অজয় কে ঘাষ মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের টেকসই জ্বালানি ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য কয়লা উত্তোলন জরুরী। এ বিষয়ে এখনই সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
সেমিনারে অন্যান্যের মধ্যে বিদ্যুত জ্বালানি এবং খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সুবিদ আলী ভূইয়া, অধ্যাপক বদরুল ইমাম, এফবিসিসিআই সভাপতি একে আজাদ, সংগঠনের সাবেক প্রেসিডেন্ট আনিসুল হক, আফগান সরকারের জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা খন্দকার সালেক সুফি, কয়লা নীতি প্রণয়ন কমিটির সদস্য একেএম সামছুদ্দিন, মনোয়ার হোসেন, বেনু গোপাল দে বক্তব্য রাখেন। সেমিনার সঞ্চালনা করেন, এনর্জি এন্ড পাওয়ারের সম্পাদক মোল্লা আমজাদ হোসেন।
No comments