গ্রীষ্মের ছুটিতে নাসা অভিযান by সুচিত্রা সরকার

গরমের ছুটিতে মামাবাড়ি বা বন্ধুর বাড়ি নয়; একেবারে সাত সমুদ্র তেরো নদীর ওপার। যুক্তরাষ্ট্রের নাসায়! অবাক হওয়ার কিচ্ছু নেই। সত্যিই ওরা গ্রীষ্মকালীন ছুটি কাটাতে গিয়েছিল নাসায়। নাসা মহাকাশ কেন্দ্র প্রতিবছর নাসা ক্যাম্প বা ক্যাম্প কেএসসির ব্যবস্থা করে।


সেখানে শিক্ষার্থীরা এক সপ্তাহ বিজ্ঞানর্চচা করতে পারে। এ বছর অন্য অনেক শিক্ষার্থীর সঙ্গে বাংলাদেশের দিল্লি পাবলিক স্কুলের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণীর ১৯ জন শিক্ষার্থীও অংশ নিয়েছিল। গত ১২ থেকে ১৬ জুন পর্যন্ত চলেছিল এই মহাকাশ বিজ্ঞান কর্মশালা। নাসার পাঁচ দিনের এই ক্যাম্পে তাদের বিজ্ঞানের প্রতি ভালোবাসা বেড়েছে অনেক।
রোদসি মধুরিমার কথায় তেমনই সুর পাওয়া গেল। সে উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে জানায়, ‘ক্যাম্পের তৃতীয় দিনে আমাদের দেখা হয়েছিল ডক্টর স্যাম ড্যারান্সের সঙ্গে। তিনি দুবার মহাকাশ পাড়ি দিয়েছেন। তিনি মহাকাশ নিয়ে অনেক কিছু জানালেন। তাঁর কথায় আমরা মুগ্ধ। আমি বড় হয়ে মহাকাশচারী হতে চাই। এখন আর বিজ্ঞানকে আগের মতো ভয় পাই না।’
নাহিয়ার গলার স্বর একটু গম্ভীর করে বলে, ‘নাসায় গিয়ে আমরা সত্যি অনেক কিছু শিখেছি। এই যেমন: মহাকাশযানের চালককে পাইলট বলে না। কমান্ডার বলে।’
অন্যদের থামতে বলে রাশিক জানায়, ‘আমার ভালো লেগেছে স্টিমুলেটরে চড়ার ঘটনা। ওটায় চড়লে মহাকাশ ভ্রমণের অনুভূতি হয়। আমার কাছেও সত্যি সত্যি তেমন মনে হয়েছে। ’
প্রকৃতিকে বরাবরই ভালোবাসে মুশফিকা মালিহা। সে বলে, ‘আমার ফ্লোরিডার আবহাওয়াটা খুব ভালো লেগেছে। সব সময় বৃষ্টি হচ্ছে। আমার তো মনে হচ্ছিল না জানি কোন বৃষ্টির রাজ্যে চলে এসেছি।’
এমনই বিচিত্র অভিজ্ঞতায় ভরা ছিল তাদের নাসা ক্যাম্পের পাঁচ দিন। সেখানে রোবট-বিদ্যা শেখানো হয়েছিল সবাইকে। আর বিভাগ অনুযায়ী বিভিন্ন দলকে শেখানো হয়েছিল অন্তরীক্ষবিজ্ঞান। চতুর্থ দিনটি ছিল আরও মজার। সেখানে বড়দের বিভাগের প্রত্যেকে রকেট বানানো প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিল। শেষ দিনে শিক্ষার্থীদের নাসার রকেট আর রকেট উৎক্ষেপণ মঞ্চ দেখানো হয়েছে। তারপর সনদ ও পুরস্কার প্রদানের মধ্য দিয়ে শেষ হয় বিজ্ঞান কর্মশালার এই আয়োজন।

No comments

Powered by Blogger.