গ্যাস সঙ্ককটে নারী
বাংলাদেশে মানুষের শত শত দুর্ভোগের মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে জ্বালানি সংকট। শোনা যায় বাংলাদেশ নাকি গ্যাসের উপর ভাসছে অথচ এই গ্যাসকে যখনই মানুষ জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার করতে চায় তখনই দেখা দেয় নানান সমস্যা। এই গ্যাস সমস্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় নারীরা ।
রান্নার কাজে গ্যাস না পাওয়ায় দুর্ভোগটা পুরোটাই বর্তায় নারীদের ওপর। এছাড়া আমাদের দেশে বস্ত্রশিল্প অনেকটা নির্ভর করে গ্যাসের ওপর । আর এই শিল্পের মূল চালিকাশক্তি হচ্ছে আমাদের দেশের নারী কর্মীরা। তাই গ্যাসের যে সংকট তা সরাসরি নারীদের ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের দেশের বেশিরভাগ শহরগুলোতেই গ্যাস ব্যবহারের সুযোগ নাই। যেসব শহরে গ্যাস আছে সে সব শহরে দেখা যায় পর্যাপ্ত পরিমাণে গ্যাসের সরবরাহ নাই। সরকার গত কয়েক বছর আগেও বাড়িতে রান্নার কাজে ব্যবহারের জন্য গ্যাসের সংযোগ দিতো কিন্তু বর্তমানে এই সংযোগ দেবার কাজ প্রায় বন্ধ আছে বলা চলে। সংযোগ দিলেও তা খুবই সীমিত আকারে। এখন যারা নতুন বাড়ি বানাচ্ছে তারা গ্যাসের জন্য নির্ভর করছে সিল্ডিডার গ্যাসের উপর। যাদের বাড়িতে গ্যাস সংযোগ রয়েছে সেই বাড়ির গৃহিণীরাও প্রায়ই গ্যাস সংকটে পড়েন। এই নিয়ে কয়েকজন নারীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেলো তাদের সমস্যার কথা। ধানমন্ডি আবাসিক এলাকার বাসিন্দা মাহবুবা জানালেন তিনি সকালে রান্না শেষ করে অফিসে বেরিয়ে পড়তেন। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে সকালের দিকে গ্যাস সরবরাহ কম থাকে। তাই রান্না করতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়। উত্তরার গৃহকর্ত্রী সাথী বলছিলেন গ্যাস নিয়ে দুর্ভোগের কথা। তিনি জানালেন প্রায়ই গ্যাস চলে যায়। এমনকি ২৪ ঘন্টাও গ্যাস আসেনি এমনও হয়েছে। যেহেতু বিকল্প কোন জ্বালানির ব্যবস্থা করা নাই তাই রান্না কাজে বিঘœ ঘটে। অনেক সময়ে রাতের দিকে গ্যাস ঠিক মতন আসলে রাত জেগে রান্নার কাজ শেষ করে রাখতে হয়। সরকারকে গ্যাসের জন্য প্রতি মাসে ৪৫০ টাকা নিয়মিতভাবে পরিশোধ করতে হয়। পরিশোধ করতে না পারলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হবার ভয় আছে। কিন্তু গ্যাস সরবরাহে বিঘœ হলে সমস্যা সমাধানে কাউকে অভিযোগ করার কোন সুযোগ নাই। যে সব শহরে গ্যাস নাই সেই সব শহরে দুর্ভোগ আরও চরমে। এই সব শহরে সরকারিভাবে অর্ধেক দামে কিছু সিলিন্ডারজাত গ্যাস বরাদ্দ দেয়া হলেও তা কখনও সাধারণ মানুষ ব্যবহারের সুযোগ পায় না। সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যেই তা বিতরণ করা হয়। অথচ এই অর্ধেক দামে গ্যাস পাবার সত্যিকারে দাবিদার হচ্ছে বিত্তহীন মানুষেরা। কিন্তু সব সময়ই তারা বঞ্চিত। ঢাকায় যে সব জায়গায় গ্যাস নাই সেই সব জায়গায় মধ্য আয়ের মানুষেরা ব্যবহার করছে সিলিন্ডার গ্যাস। ঢাকার একটি বহুতল ভবনের বাসিন্দা সালমা জানালেন প্রতিটি তলায়ই বাসিন্দারা সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহার করছে। একটি সিলিন্ডারের দাম ১৪০০ থেকে ১৪৫০ টাকা। মাসে অন্তত ৩ টি সিলিন্ডারের প্রয়োজন হয়। ঝিনাইদহের কালিগজ্ঞের বাসিন্দা রিনা সুলতানা জানালেন একটি গ্যাস সিলিন্ডার দিয়ে কোনভাবেই ৭-৮ জনের সারা মাসের রান্নার কাজ শেষ করা সম্ভব নয়। দুটি গ্যাস সিলিন্ডার লাগে প্রতি মাসে। গত রোজার সময় সাড়ে বার কেজির একটি সিলিন্ডারের দাম ছিল ১২০০ টাকা। ঈদের পরে এর দাম বেড়ে হলো ১২৫০ টাকা আর আর বর্তমানে দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩৫০ টাকা। তাই এই গ্যাসের ব্যয় কমাতে বিকল্প খড়ির চুলার ব্যবস্থা রাখতে হয়। লক্ষণীয় যে ঢাকায় অন্য যে কোন অঞ্চলের চেয়ে প্রতিটি সিলিন্ডারের দাম অন্তত ১০০ টাকা বেশি। দেশের এই প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহারের অধিকার সকল মানুষের সমান হলেও দরিদ্র মানুষ কোনভাবেই এই গ্যাস ব্যবহারের কোন সুযোগই পায় না।
এবার দেখা যাক এই গ্যাসের কারণে শিল্প কলকারখানাগুলোর কি অবস্থা। ঢাকার আশে পাশে বিশেষ করে আশুলিয়া থেকে গাজীপুর পর্যন্ত ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অসংখ্য শিল্প কারখানা। গার্মেন্টস কারখানা থেকে শুরু করে স্পিনিং মিলসহ অন্যান্য বহু রকমের কারখানা রয়েছে এই সব এলাকায়। গ্যাসের সংকটের কারণে এই সব কারখানাগুলোতে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। অনেক কারখানাতেই গ্যাসচালিত জেনারেটর রয়েছে। কিন্তু গ্যাসের চাপ কম থাকায় এই সব জেনারেটর ব্যবহার করা যাচ্ছে না। এই সব মিলের উৎপাদন অনেকটাই নির্ভর করে গ্যাসের উপর। গ্যাসের চাপ প্রায়ই কম থাকে বা সম্পূর্ণরূপে থাকে না। তখনই মিলের মালিকদের পড়তে হয় সমস্যায়। এই রকম একটি কারখানার মালিক শহিদুল ইসলাম জানালেন গত কয়েকদিন ধরে গ্যাস একেবারেই থাকছে না। দিনে যখন কারখানা চলে তখন গ্যাস থাকে না। রাতে যখন কারখানার কাজ শেষ হয়ে যায় তখন গ্যাস আসে। ফলে এই গ্যাসের উপর নির্ভর করে উৎপাদন খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে। এতে করে এই শিল্প কারখানাগুলো আর্থিক ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে। এই গ্যাস স্বল্পতার কারণে শিল্প কারখানাগুলো যদি বন্ধ হয়ে যায় তবে হাজার হাজার নারী শ্রমিক বেকার হয়ে পড়লে এদের পরিবারগুলো চরম বিপদে পড়বে।
অপরাজিতা ডেস্ক
এবার দেখা যাক এই গ্যাসের কারণে শিল্প কলকারখানাগুলোর কি অবস্থা। ঢাকার আশে পাশে বিশেষ করে আশুলিয়া থেকে গাজীপুর পর্যন্ত ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অসংখ্য শিল্প কারখানা। গার্মেন্টস কারখানা থেকে শুরু করে স্পিনিং মিলসহ অন্যান্য বহু রকমের কারখানা রয়েছে এই সব এলাকায়। গ্যাসের সংকটের কারণে এই সব কারখানাগুলোতে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। অনেক কারখানাতেই গ্যাসচালিত জেনারেটর রয়েছে। কিন্তু গ্যাসের চাপ কম থাকায় এই সব জেনারেটর ব্যবহার করা যাচ্ছে না। এই সব মিলের উৎপাদন অনেকটাই নির্ভর করে গ্যাসের উপর। গ্যাসের চাপ প্রায়ই কম থাকে বা সম্পূর্ণরূপে থাকে না। তখনই মিলের মালিকদের পড়তে হয় সমস্যায়। এই রকম একটি কারখানার মালিক শহিদুল ইসলাম জানালেন গত কয়েকদিন ধরে গ্যাস একেবারেই থাকছে না। দিনে যখন কারখানা চলে তখন গ্যাস থাকে না। রাতে যখন কারখানার কাজ শেষ হয়ে যায় তখন গ্যাস আসে। ফলে এই গ্যাসের উপর নির্ভর করে উৎপাদন খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে। এতে করে এই শিল্প কারখানাগুলো আর্থিক ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে। এই গ্যাস স্বল্পতার কারণে শিল্প কারখানাগুলো যদি বন্ধ হয়ে যায় তবে হাজার হাজার নারী শ্রমিক বেকার হয়ে পড়লে এদের পরিবারগুলো চরম বিপদে পড়বে।
অপরাজিতা ডেস্ক
No comments