নারীর বিশেষ পোশাক

নারীদের পোশাক নিয়ে বিড়ম্বনার যেন শেষ নেই। বাড়িতে কি পরবে কিংবা বাইরে যাবার সময় কি পরলে ভাল হয় এই নিয়ে ভাবতে ভাবতে নারীদের দিনের একটা বড় সময় পেরিয়ে যায়। বাড়িতে মেক্সি কিংবা আরামদায়ক কোন পোশাক আর বাইরে বা কাজে যাবার সময় মানানসই ও রুচিশীল কোন পোশাক পরলেই চলে।


কোন অনুষ্ঠানে যাবার সময় সাধারণত নারীরা বেছে নেয় শাড়িকে। কারণ শাড়িই নারীর সৌন্দর্যকে বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু নারী বিপদে পরে তখনই যখন কিনা সে নিজের দেহের মধ্যে আরেকটি প্রাণকে ধারণ করতে শুরু করে। অর্থাৎ একজন নারী যখন পরম যতেœ গর্ভে তার সন্তানকে ধারণ করে তখনই সমস্যায় পরে পোশাক নির্বাচন করতে গিয়ে। গর্ভবতী একজন নারীর জন্য উপযুক্ত পোশাক খুঁজে বের করা সত্যিই একটি ঝক্কির কাজ। কারণ এই বিশেষ সময়ে পোশাকটি হতে হবে আরামদায়ক এবং বিশেষ শারীরিক গঠনের সঙ্গে মানানসই। তাই এই সময় নারীরা খুব সতর্কতার সঙ্গে তার পোশাক নির্বাচন করে থাকে। বাংলাদেশের গ্রামের মেয়েরা এই সময় শাড়িই পরে থাকে। কারণ গ্রামে নারীদের নানা রকম সংস্কার মেনে চলতে হয়। তবে শহরে ভিন্ন চিত্র দেখা যায়। শহরের গর্ভবতী নারীরা বাড়িতে সব সময় মেক্সি পরতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে থাকে। বিপদে পরতে হয় চাকরিজীবী নারীদের এই বিশেষ সময়ের পোশাক নির্বাচন করতে গিয়ে। গর্ভাবস্থার প্রথম ৩/৪ মাস স্বাভাবিক পোশাক পরলে কোন সমস্যা নেই। তবে চারমাসের পর থেকে একটু বুঝে শুনে নারীরা পোশাক পরতে চায়। তারা চায় নিজেকে যতটা সম্ভব আবৃত্ত করে রাখতে। আর এজন্য নারীরা বেছে নেন ঢিলেঢালা পোশাক। সালোয়ার কামিজ বা টপস্ যাই নারীরা পরুক না কেন তা হতে হবে টিলেঢালা এবং চলাফেরার জন্য আরামদায়ক ও উপযুক্ত। এই সময় চলাফেরায় অসুবিধার কারণে শাড়িকে এড়িয়ে চলাই ভাল। হিল জুতা একেবারেই পরা উচিত নয়। বাংলাদেশে ইদানীং গর্ভবতী নারীদের পোশাক নিয়ে আলাপ আলোচনা হলেও বিদেশে বহু আগে থেকেই গর্ভবতী নারীদের জন্য বিশেষ ধরনের পোশাকের ব্যবস্থা রয়েছে। এমনকি গর্ভকালীন উপযুক্ত পোশাক নিয়ে প্রতিযোগিতা পর্যন্ত হয়ে থাকে। অনেক ব্র্যান্ড আছে যারা কিনা এই সময়কার পোশাকই কেবল তৈরি করে থাকে। আর বিদেশী সুপার মডেলরা এই বিশেষ সময়ের জন্য পরে থাকেন এই পোশাক। সুপার মডেলরা তাদের বাচ্চা প্রসবের জন্য যে হাসপাতালগুলো বেছে নেয় তার সবই অনেক ব্যয়বহুল। জেসিকা সিম্পসন সিত্তারস সিনাই হাসপাতালে এক রাতের জন্য ৩৭৪৮ ডলার ব্যয় করেন। মাতৃসদনের সকল সুবিধাই এই হাসপাতালে ছিল। জেসিকা মনে করেন নিরাপদ মাতৃত্বের জন্য ও বাচ্চার সুস্থতার জন্য টাকা পয়সার চেয়েও মূল্যবান হলো সঠিক পরিচর্যা। গত জানুয়ারিতে বেয়নস তাঁর মেয়ে ব্লু আইবি কার্টারের জন্মের সময় হাসপাতাল হিসেবে বেছে নেন নিউইয়র্কের লেনক্সহিল হাসপাতালের এক্সিকিউটিভ স্যুইট যার ভাড়া প্রতি রাতের জন্য ৩২০০ ডলার। এই হাসপাতালে বাচ্চা প্রসবের সকল আধুনিক সুবিধা বিদ্যমান।
ব্যয়বহুল হাসপাতালগুলো সেলিব্রেটিদের জন্য বিশেষ অনেক ব্যবস্থাও করে থাকে। যেমন- সেলিব্রেটিদের পছন্দানুযায়ী গর্ভকালীন গাউন ও নানা ধরনের আকর্ষণীয় পোষাকও তৈরি করে আবার এটির প্রচারও করে থাকেন নিজেদের হাসপাতালের বিজ্ঞাপন হিসেবে। জেনিফার লোপেজ, বেয়নস, জেসিকা সিম্পসন, নিকল কিডম্যানের মতো সুপার মডেলরা এই সকল হাসপাতালে গিয়ে দামী ও আরামদায়ক এবং ফ্যাশনেবল ড্রেস পরেছিলেন তাদের গর্ভকালীন সময়ে।
ফ্যাশন ডেস্ক

নেপথ্যের কারিগর


প্রচলিত ফ্যাশন ধারাকে দেশীয় ফেব্রিক এবং লোকজ মোটিফকে উপজীব্য করে ফ্যাশন ডিজাইনের ক্ষেত্রে যে কজন উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন তাদেরই একজন হলেন নকশার কর্ণধার ফ্যাশন ডিজাইনার এটিএম জামাল। এছাড়া মডেল ফটোগ্রাফী এবং লেখালেখীতেও জামাল সম্পৃক্ত রয়েছেন। ১৯৯৩ সালে নাঃগঞ্জের ডন চেম্বারে প্রতিষ্ঠা করেন দেশীয় কাপড়ে ফ্যাশনেবল আধুনিক ডিজাইনে দেশজ সংস্কৃতি প্রস্ফুটিত পোশাক।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আশির দশকের শুরুতে মধ্যপ্রাচ্যে কর্মসূত্রে চলে যাই। ফিরে আসি প্রায় এক দশক পরে। দেশে ফিরে প্রতিষ্ঠা করি নকশা। তখন আমাদের ফ্যাশন ধারার শৈশবকাল। সেই শুরু। একটা জেলা শহরে ফ্যাশন বোধকে ভোক্তাদের কাছে পৌঁছে দিতে নানা রকম উদ্যোগ গ্রহণ করতে হয়। এবং ধীরে ধীরে মানুষের কাছে নকশা একটা আলাদা কদর, আস্থা তৈরিতে সমর্থ হয়। জামাল বলেন, পরে ঢাকাতেও নকশার শোরুম ওপেন করা হয়। এখন অবশ্য ঢাকার শোরুমটি নেই। কেননা প্রতিদিন নাঃগঞ্জ থেকে ঢাকাতে গিয়ে শোরুমের কার্যক্রম অব্যাহত রাখা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ায় ওই শোরুম গুটিয়ে নাঃগঞ্জের বেইলি টাওয়ারে ২য় শোরুমটি স্থানান্তর করা হয়েছে।

ঈদের আয়োজন সম্পর্কে জামাল বলেন, এবার ঈদের জন্য সব বয়সীদের জন্যেই থাকছে আমাদের নতুন ডিজাইনের সিল্ক, এন্ডি সিল্ক, সুতি, খাদি, তাঁতের কাপড়ের অনন্য পাঞ্জাবি, ফতুয়া, শার্ট, মেয়েদের জন্যে থ্রি-পিস, ফতুয়া, শাড়ি এবং বাচ্চাদর পোশাক। বরাবরের মতো মাটির গহনা থেকে শুরু করে ব্রোঞ্জ ও অন্যান্য আইটেমের নান্দনিক গহনা থাকছে ঈদের কালেকশনের জন্যে। বিয়ে বা ব্রাইডাল ট্রপিকস এ থাকছে শেরওয়ানি, পাঞ্জাবি, পাজামা, পাপড়ি, স্পেশাল ড্রেস, উত্তরীয়সহ শৈল্পিক পোশাকও। এছাড়া ঋতুভিত্তিক ড্রেস তো সবসময়ের জন্যেই থাকছে। সবশেষে এটিএম জামাল বলেন, সবচেয়ে আনন্দের বিষয়টি হলো এই যে-মানুষ এখন অনেক ফ্যাশনসচেতন। তাদের এই ফ্যাশন সচেতনতাকে অবশ্যই সাধুবাদ জানাতে হবে। কেননা, আজকে আমাদের ফ্যাশন ধারার যে প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি রচিত হয়েছে তার জন্যে ফ্যাশনসচেতন ক্রেতাদের অবদানই অসীম-অপরিসীম।
ফ্যাশন ডেস্ক

No comments

Powered by Blogger.