সবুজ ফুটবল! by রানা আব্বাস
সবাই এখন 'সবুজ হতে' চাই। 'গো গ্রিন' স্লোগান তো সে কবেই চালু হয়ে গেছে ধরণীতে। আসলে না হয়েই-বা কী উপায় আছে! প্রিয় বসুন্ধরাকে বাঁচাতে সবুজ হওয়াটাই এখন বাঞ্ছনীয়। এ সবুজ হওয়ার তালিকা থেকে ফুটবলই-বা বাদ যাবে কেন। একটু কি চমকে গেলেন? হ্যাঁ, ঠিকই পড়েছেন, এখানে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলাটির কথাই হচ্ছে।
হয়তো পরিবেশ দূষণের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কার্যকারণের ভিড়ে এ আলোচনাটি অনেকটা ঢাকা পড়ে যায়। তবে এ বিষয়টি যে একেবারেই উপেক্ষিত সেটিও ভাবার অবকাশ নেই। কারণ পরিবেশ দূষণ রোধে ফুটবলের কার্যকর ভূমিকা নিয়ে চলছে বিস্তর গবেষণা আর লেখালেখি।
বিশ্ব ফুটবল যে সবুজ হওয়ার পণ নিয়ে এগোচ্ছে তা সদ্য সমাপ্ত ইউরোর দিকে তাকালেই বোঝা যাবে। এবার ইউরোর লোগো, স্লোগান, থিম সং, মাসকট_ সবকিছুতেই কিন্তু গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল প্রকৃতি-পরিবেশকে। মূলত আয়োজক দু'দেশ পোল্যান্ড এবং ইউক্রেনের চিরায়ত গ্রাম্য প্রকৃতি ও পরিবেশই উঠে এসেছিল ইউরোর লোগো, স্লোগান, থিম সং এবং মাসকটে।
এ তো গেল ইউরো। ধরাতলের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ও জনপ্রিয় টুর্নামেন্ট ফিফা বিশ্বকাপের দিকে তাকালে সেখানেও সবুজের ছোঁয়া পাওয়া যাবে। ব্রাজিলে অনুষ্ঠেয় ২০১৪ ফিফা বিশ্বকাপের লোগো কিন্তু করা হয়েছে প্রকৃতি-পরিবেশকে মাথায় রেখেই। আগামী বিশ্বকাপের লোগোর পাঠোদ্ধার করলে বোঝা যাবে, তিনটি বিজয়ী হাত আরাধ্য বিশ্বকাপ ট্রফি বেষ্টন করে আছে। এর মধ্যে ওপরের দুটি হাত এবং ট্রফির নিচের অংশের রঙ সবুজ। এখানে সবুজ বলতে ব্রাজিলের চিরসবুজ প্রকৃতিকেই বোঝানো হয়েছে।
সর্বশেষ দক্ষিণ আফ্রিকার ফিফা বিশ্বকাপেও কিন্তু পরিবেশকে গুরুত্ব দিয়েছিল ফিফা। একটু স্মৃতির কোষে চিরুনি চালালে দেখতে পাবেন, গত বিশ্বকাপের মাসকট জাকুমির মাথার চুলের রঙ ছিল সবুজ। আদতে এ সবুজ ছিল পরিবেশের প্রতীক ।
পরিবেশ রক্ষার উদ্যোগ কেবল ফিফা কিংবা উয়েফার মতো নিয়ন্ত্রক সংস্থার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। পরিবেশ রক্ষায় এগিয়ে আসছে ইউরোপের জায়ান্ট ক্লাবগুলোও। ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের অন্যতম প্রভাবশালী ক্লাব চেলসি ইতিমধ্যে গ্রহণ করেছে পরিবেশ নীতি। পরিবেশ রক্ষায় চেলসি হাতে নিয়েছে নানা উদ্যোগ। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি উদ্যোগ হচ্ছে, চেলসির অনুশীলন মাঠের চারপাশে ৩৫০০ বৃক্ষরোপণ। এছাড়া ক্লাব কার্যালয়, স্টেডিয়াম এবং অনুশীলন ক্যাম্পে অপ্রয়োজনীয় বাতি না জ্বালানো, প্রয়োজনের বাইরে কম্পিউটার-টেলিভিশন না চালানো, অপ্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট প্রিন্ট না দেওয়া, এয়ার কন্ডিশন যথাসম্ভব কম ব্যবহার করা ইত্যাদি নিত্যব্যবহার্য বিষয়ের ক্ষেত্রে কঠোর নির্দেশনা জারি করেছে 'ব্লু' কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি ক্লাব সমর্থকদের পরিবেশ বিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধিতেও বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে স্টাম্পফোর্ড ব্রিজের এ ক্লাবটি।
শুধু চেলসি নয়,পরিবেশ রক্ষায় এগিয়ে এসেছে আরেক জায়ান্ট ক্লাব ম্যানচেস্টার সিটিও। সিটি সর্বপ্রথম তাদের স্টেডিয়ামে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য উইন্ড টারবাইন স্থাপন করেছে। এছাড়া ৯০ থেকে ১০০ ভাগ ব্যবহৃত জিনিসই পুনঃচক্র বা রি-সাইকেল করার উদ্যোগ নিয়েছে সিটি কর্তৃপক্ষ। ম্যানচেস্টার সিটির মতো একই উদ্যোগ নিয়েছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের আরও দুটি ক্লাব আর্সেনাল ও মিডলসব্রো।
বিশ্ব ফুটবলে এ ধরনের সবুজ হওয়ার উদ্যোগ দেখে অবধারিতভাবে স্বস্তির এক সুবাতাস বয়ে যায় মনে। কিন্তু সে স্বস্তি উবে যেতেও সময় লাগে না যখন জানা যায়_ ফুটবলের কারণে যেভাবে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে, সে তুলনায় এসব উদ্যোগ নিতান্তই কম!
rana_geographer@yahoo.com
বিশ্ব ফুটবল যে সবুজ হওয়ার পণ নিয়ে এগোচ্ছে তা সদ্য সমাপ্ত ইউরোর দিকে তাকালেই বোঝা যাবে। এবার ইউরোর লোগো, স্লোগান, থিম সং, মাসকট_ সবকিছুতেই কিন্তু গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল প্রকৃতি-পরিবেশকে। মূলত আয়োজক দু'দেশ পোল্যান্ড এবং ইউক্রেনের চিরায়ত গ্রাম্য প্রকৃতি ও পরিবেশই উঠে এসেছিল ইউরোর লোগো, স্লোগান, থিম সং এবং মাসকটে।
এ তো গেল ইউরো। ধরাতলের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ও জনপ্রিয় টুর্নামেন্ট ফিফা বিশ্বকাপের দিকে তাকালে সেখানেও সবুজের ছোঁয়া পাওয়া যাবে। ব্রাজিলে অনুষ্ঠেয় ২০১৪ ফিফা বিশ্বকাপের লোগো কিন্তু করা হয়েছে প্রকৃতি-পরিবেশকে মাথায় রেখেই। আগামী বিশ্বকাপের লোগোর পাঠোদ্ধার করলে বোঝা যাবে, তিনটি বিজয়ী হাত আরাধ্য বিশ্বকাপ ট্রফি বেষ্টন করে আছে। এর মধ্যে ওপরের দুটি হাত এবং ট্রফির নিচের অংশের রঙ সবুজ। এখানে সবুজ বলতে ব্রাজিলের চিরসবুজ প্রকৃতিকেই বোঝানো হয়েছে।
সর্বশেষ দক্ষিণ আফ্রিকার ফিফা বিশ্বকাপেও কিন্তু পরিবেশকে গুরুত্ব দিয়েছিল ফিফা। একটু স্মৃতির কোষে চিরুনি চালালে দেখতে পাবেন, গত বিশ্বকাপের মাসকট জাকুমির মাথার চুলের রঙ ছিল সবুজ। আদতে এ সবুজ ছিল পরিবেশের প্রতীক ।
পরিবেশ রক্ষার উদ্যোগ কেবল ফিফা কিংবা উয়েফার মতো নিয়ন্ত্রক সংস্থার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। পরিবেশ রক্ষায় এগিয়ে আসছে ইউরোপের জায়ান্ট ক্লাবগুলোও। ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের অন্যতম প্রভাবশালী ক্লাব চেলসি ইতিমধ্যে গ্রহণ করেছে পরিবেশ নীতি। পরিবেশ রক্ষায় চেলসি হাতে নিয়েছে নানা উদ্যোগ। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি উদ্যোগ হচ্ছে, চেলসির অনুশীলন মাঠের চারপাশে ৩৫০০ বৃক্ষরোপণ। এছাড়া ক্লাব কার্যালয়, স্টেডিয়াম এবং অনুশীলন ক্যাম্পে অপ্রয়োজনীয় বাতি না জ্বালানো, প্রয়োজনের বাইরে কম্পিউটার-টেলিভিশন না চালানো, অপ্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট প্রিন্ট না দেওয়া, এয়ার কন্ডিশন যথাসম্ভব কম ব্যবহার করা ইত্যাদি নিত্যব্যবহার্য বিষয়ের ক্ষেত্রে কঠোর নির্দেশনা জারি করেছে 'ব্লু' কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি ক্লাব সমর্থকদের পরিবেশ বিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধিতেও বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে স্টাম্পফোর্ড ব্রিজের এ ক্লাবটি।
শুধু চেলসি নয়,পরিবেশ রক্ষায় এগিয়ে এসেছে আরেক জায়ান্ট ক্লাব ম্যানচেস্টার সিটিও। সিটি সর্বপ্রথম তাদের স্টেডিয়ামে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য উইন্ড টারবাইন স্থাপন করেছে। এছাড়া ৯০ থেকে ১০০ ভাগ ব্যবহৃত জিনিসই পুনঃচক্র বা রি-সাইকেল করার উদ্যোগ নিয়েছে সিটি কর্তৃপক্ষ। ম্যানচেস্টার সিটির মতো একই উদ্যোগ নিয়েছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের আরও দুটি ক্লাব আর্সেনাল ও মিডলসব্রো।
বিশ্ব ফুটবলে এ ধরনের সবুজ হওয়ার উদ্যোগ দেখে অবধারিতভাবে স্বস্তির এক সুবাতাস বয়ে যায় মনে। কিন্তু সে স্বস্তি উবে যেতেও সময় লাগে না যখন জানা যায়_ ফুটবলের কারণে যেভাবে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে, সে তুলনায় এসব উদ্যোগ নিতান্তই কম!
rana_geographer@yahoo.com
No comments