রেন্টালের স্বার্থে ঘোড়াশালে নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র তিন বছর বিলম্বিত! by রেজা রায়হান
দরপত্র ও কয়েক দফা পুনঃ দরপত্র এবং মূল্যায়ন ও পুনর্মূল্যায়নের নামে সময় ক্ষেপণ করে ঘোড়াশালে একটি বৃহৎ বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণ তিন বছর বিলম্বিত হয়েছে। এ সময় প্রস্তাবিত কেন্দ্রটির জ্বালানি ও উৎপাদন ক্ষমতারও বার কয়েক পরিবর্তন হয়েছে।
বিষয়টি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে বারবার উত্থাপিত হলেও মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের কম্পানি সাকো ইন্টারন্যাশনাল এবং সরকারের অন্য প্রভাবশালী মহলের ব্যবসায়িক বিরোধের কারণে পিডিবির নিজস্ব এ প্রকল্পটির ঠিকাদার নিয়োগ চূড়ান্ত করা যায়নি।
এদিকে গুরুত্বপূর্ণ ঘোড়াশাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মিত না হওয়ায় ২০১০ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনে বিদ্যুৎ বিভাগ দরপত্র ছাড়াই ঘোড়াশালে ম্যাক্স পাওয়ারের সঙ্গে ৭৮.৫ মেগাওয়াট, আশুগঞ্জে ইউনাইটেড পাওয়ারের সঙ্গে ৫৩ মেগাওয়াট এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও আশুগঞ্জে এগ্রিকোর সঙ্গে ১৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার চারটি গ্যাসভিত্তিক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুক্তি করেছে। সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে বিলম্বের পেছনে এসব রেন্টাল চুক্তির সম্পর্ক থাকার সন্দেহ রয়েছে।
বিদ্যুৎ ঘাটতি মোকাবিলা এবং ভবিষ্যৎ ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণের জন্য সরকারি খাতে দেশের ১০টি স্থানে ৮২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার তরল জ্বালানিভিত্তিক পিকিং (সর্বোচ্চ চাহিদার সময় চালিত) বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। এরই অংশ হিসেবে ২০০৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর ঘোড়াশালে ২০০+১৫% মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের দরপত্র আহ্বান করা হয়। প্রথম দফায় প্রাপ্ত সব প্রস্তাবই অগ্রহণযোগ্য (নন-রেসপনসিভ) হওয়ায় দরপত্র বাতিল করা হয়। পরে ২০১০ সালের ১৫ মার্চ বিদ্যুৎ বিভাগের নির্দেশে কেন্দ্রটির ক্ষমতা ২০০-৩০০ মেগাওয়াট পুনর্নির্ধারণ করে দ্বৈত জ্বালানির (তেল ও গ্যাস) ভিত্তিতে পুনঃ দরপত্র আহ্বানের নির্দেশনা দেওয়া হয়। পুনঃ দরপত্র মূল্যায়নে অনিয়মের অভিযোগ করে একজন সদস্য লিখিতভাবে ভিন্নমত পোষণ এবং চীনের শানডং কম্পানির (স্থানীয় এজেন্ট সাকো) পক্ষ থেকেও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের রিভিউ প্যানেলে অভিযোগ করা হলেও পরে তা অস্বীকার করা হয়। বিদ্যুৎ বিভাগ পিডিবির প্রস্তাব অনুযায়ী চীনের সিনো হাইড্রোকে এক হাজার ২৮৮ কোটি টাকার কার্যাদেশ দিতে ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে প্রস্তাব পাঠালে কমিটির ২০১০-এর ২৭ অক্টোবর সভায় আবুল হোসেনের প্রভাবে আবার দরপত্র আহ্বানের সুপারিশ করা হয় এবং প্রধানমন্ত্রী তা অনুমোদন করেন।
দ্বিতীয় দফায় আহূত পুনঃ দরপত্রে ২০১০ সালের ২৩ ডিসেম্বর ১১টি দরপত্র পাওয়া যায়। পিডিবির মূল্যায়ন কমিটি ও বোর্ড সভা চায়না ন্যাশনাল টেকনিক্যাল ইমপোর্ট অ্যান্ড এঙ্পোর্ট করপোরেশন (সিএনটিআইসি) ও চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এঙ্পোর্ট করপোরেশনের (সিএমসি) কনসোর্টিয়ামকে মোট এক হাজার ৩৫০ কোটি টাকায় কার্যাদেশ দেওয়ার সুপারিশ করে। কিন্তু বিদ্যুৎ বিভাগের মূল্যায়নে সিএনটিআইসি-সিএমসির প্রস্তাবটি কারিগরি ঘাটতির কারণে অগ্রহণযোগ্য বিবেচিত হয়। ঘোড়াশালে গ্যাস সরবরাহের সুবিধা থাকায় ও চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ভবিষ্যতে সরবরাহ বৃদ্ধি পাবে বলে দ্বৈত জ্বালানির পিকিং কেন্দ্রের পরিবর্তে ব্যয় কম হওয়ায় ৩০০-৪৫০ মেগাওয়াট গ্যাসভিত্তিক কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের সুপারিশ করা হয়। ২০১১ সালের ৩ মার্চ ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় বিদ্যুৎ বিভাগের প্রস্তাব অনুযায়ী পুনঃ দরপত্র আহ্বানের সুপারিশ করা হলেও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিদ্ধান্তে বিষয়টি আরো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রস্তাব ক্রয় কমিটিতে উপস্থাপনের নির্দেশনা দেওয়া হয়।
ওই বছরের ১৩ এপ্রিল বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর সভাপতিত্বে এক সভায় পূর্ববর্তী দরপত্রের কারিগরি দিক, জ্বালানি ব্যয়, প্রস্তাবিত যন্ত্রপাতিকে কম্বাইন্ড সাইকেলে (উৎপাদিত বাম্প থেকে) রূপান্তর ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনাা পর ৩০০-৪৫০ মেগাওয়াট গ্যাসভিত্তিক কম্বাইড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের প্রস্তাব আবার ক্রয় কমিটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। গত বছরের ২০ জুন ক্রয় কমিটিতে পাঠানো বিদ্যুৎ বিভাগের সারসংক্ষেপে ২০০৯ সালে ঘোড়াশালে ২০০+১০% মেগাওয়াট পিকিং প্লান্ট স্থাপনের প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে বলা হয়, তখন জরুরি ভিত্তিতে এটা করা হয়। ইতিমধ্যে বাস্তবায়নাধীন রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল এবং সরকারি খাতের প্রকল্প থেকে ২০১১ সালের মধ্যে প্রায় দুই হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। তাই ২০১৩ সালে নির্মাণ সম্পন্ন করার লক্ষ্যে পিকিং প্লান্ট স্থাপন না করে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় যথাযথ পর্যায়ে রাখতে ও জ্বালানির সুষ্ঠু ব্যবহারের স্বার্থে অধিকতর দক্ষ ৩০০-৪৫০ মেগাওয়াট বেজ লোড কম্বাইড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের প্রস্তাব অনুমোদনের সুপারিশ করা হয়। গত বছরের ১১ জুলাই মন্ত্রিসভা কমিটি এ প্রস্তাব গ্রহণ না করে দরপত্রটি পিপিআরের ১১ বিধির আলোকে বিস্তারিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং দরপত্র মূল্যায়ন কমিটিতে (টিইসি) আবার উপস্থাপনের নির্দেশনা দেয়। টিইসির পুনর্মূল্যায়ন প্রতিবেদনে দেখা যায়, ছয় দরদাতার মধ্যে তিনটি দরপত্রের শর্ত পূরণ না করায় সরাসরি বাতিলের আওতায় পড়ে অযোগ্য হয়। বাকি তিন যোগ্য দরদাতা সম্পর্কে পুনর্মূল্যায়ন প্রতিবেদনে বলা হয়, গ্যারান্টি শিডিউলে সম্পূর্ণ তথ্য না দেওয়ার কারণে এরা অযোগ্য বিবেচিত হওয়ায় পুনঃ দরপত্র আহ্বান করা যেতে পারে। তবে টিইসি প্রতিবেদনে এটাও বলা হয় যে, তৃতীয় দফায় আহ্বানকৃত পুনঃ দরপত্র হওয়ায় তিন দরদাতার সীমাবদ্ধতাগুলোকে গৌণ বিবেচনা করা হলে সিএনটিআইসি-সিএমসি জয়েন্ট ভেঞ্চার সর্বনিম্ন দরদাতা। এ প্রতিবেদনে গত ২৯ আগস্টের পিডিবির বোর্ড সভায় অনুমোদিত হয়। তবে বিদ্যুৎ বিভাগ মন্তব্য করে যে সুপারিশকৃত সর্বনিম্ন দরদাতা ক্রয় আইন ও বিধির সংশ্লিষ্ট ধারা অনুযায়ী গ্রহণযোগ্য নয়। এ ছাড়া টিইসির শর্তযুক্ত সুপারিশও আইন ও বিধি অনুযায়ী গ্রহণযোগ্য নয়। বিদ্যুৎ বিভাগ দরপত্র বাতিল করে আবার কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের প্রস্তাব ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি গ্রহণের সুপারিশ করলে তা প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন করেন। গত ডিসেম্বরে নতুন করে দরপত্র আহ্বান করা হলেও নানা কারণে সময় বৃদ্ধির পর জুন মাসে দরপত্র খোলা হয়েছে।
পিডিবির চেয়ারম্যান ও সদস্য (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) বিদেশে রয়েছেন। যোগাযোগ করা হলে সচিব আজিজুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে জানান, ঘোড়াশাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের দরপত্রের মূল্যায়ন চলছে।
দীর্ঘ তিন বছর সরকারের বিভিন্ন প্রভাবশালী মহলের স্বার্থের দ্বন্দ্বে এ গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়নি। এবারও শেষ পর্যন্ত ঠিকাদার নিয়োগ নিয়ে বিরোধের কারণে প্রকল্পটি আদৌ বাস্তবায়িত হয় কি না সে আশঙ্কা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের।
এদিকে গুরুত্বপূর্ণ ঘোড়াশাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মিত না হওয়ায় ২০১০ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনে বিদ্যুৎ বিভাগ দরপত্র ছাড়াই ঘোড়াশালে ম্যাক্স পাওয়ারের সঙ্গে ৭৮.৫ মেগাওয়াট, আশুগঞ্জে ইউনাইটেড পাওয়ারের সঙ্গে ৫৩ মেগাওয়াট এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও আশুগঞ্জে এগ্রিকোর সঙ্গে ১৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার চারটি গ্যাসভিত্তিক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুক্তি করেছে। সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে বিলম্বের পেছনে এসব রেন্টাল চুক্তির সম্পর্ক থাকার সন্দেহ রয়েছে।
বিদ্যুৎ ঘাটতি মোকাবিলা এবং ভবিষ্যৎ ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণের জন্য সরকারি খাতে দেশের ১০টি স্থানে ৮২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার তরল জ্বালানিভিত্তিক পিকিং (সর্বোচ্চ চাহিদার সময় চালিত) বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। এরই অংশ হিসেবে ২০০৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর ঘোড়াশালে ২০০+১৫% মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের দরপত্র আহ্বান করা হয়। প্রথম দফায় প্রাপ্ত সব প্রস্তাবই অগ্রহণযোগ্য (নন-রেসপনসিভ) হওয়ায় দরপত্র বাতিল করা হয়। পরে ২০১০ সালের ১৫ মার্চ বিদ্যুৎ বিভাগের নির্দেশে কেন্দ্রটির ক্ষমতা ২০০-৩০০ মেগাওয়াট পুনর্নির্ধারণ করে দ্বৈত জ্বালানির (তেল ও গ্যাস) ভিত্তিতে পুনঃ দরপত্র আহ্বানের নির্দেশনা দেওয়া হয়। পুনঃ দরপত্র মূল্যায়নে অনিয়মের অভিযোগ করে একজন সদস্য লিখিতভাবে ভিন্নমত পোষণ এবং চীনের শানডং কম্পানির (স্থানীয় এজেন্ট সাকো) পক্ষ থেকেও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের রিভিউ প্যানেলে অভিযোগ করা হলেও পরে তা অস্বীকার করা হয়। বিদ্যুৎ বিভাগ পিডিবির প্রস্তাব অনুযায়ী চীনের সিনো হাইড্রোকে এক হাজার ২৮৮ কোটি টাকার কার্যাদেশ দিতে ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে প্রস্তাব পাঠালে কমিটির ২০১০-এর ২৭ অক্টোবর সভায় আবুল হোসেনের প্রভাবে আবার দরপত্র আহ্বানের সুপারিশ করা হয় এবং প্রধানমন্ত্রী তা অনুমোদন করেন।
দ্বিতীয় দফায় আহূত পুনঃ দরপত্রে ২০১০ সালের ২৩ ডিসেম্বর ১১টি দরপত্র পাওয়া যায়। পিডিবির মূল্যায়ন কমিটি ও বোর্ড সভা চায়না ন্যাশনাল টেকনিক্যাল ইমপোর্ট অ্যান্ড এঙ্পোর্ট করপোরেশন (সিএনটিআইসি) ও চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এঙ্পোর্ট করপোরেশনের (সিএমসি) কনসোর্টিয়ামকে মোট এক হাজার ৩৫০ কোটি টাকায় কার্যাদেশ দেওয়ার সুপারিশ করে। কিন্তু বিদ্যুৎ বিভাগের মূল্যায়নে সিএনটিআইসি-সিএমসির প্রস্তাবটি কারিগরি ঘাটতির কারণে অগ্রহণযোগ্য বিবেচিত হয়। ঘোড়াশালে গ্যাস সরবরাহের সুবিধা থাকায় ও চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ভবিষ্যতে সরবরাহ বৃদ্ধি পাবে বলে দ্বৈত জ্বালানির পিকিং কেন্দ্রের পরিবর্তে ব্যয় কম হওয়ায় ৩০০-৪৫০ মেগাওয়াট গ্যাসভিত্তিক কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের সুপারিশ করা হয়। ২০১১ সালের ৩ মার্চ ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় বিদ্যুৎ বিভাগের প্রস্তাব অনুযায়ী পুনঃ দরপত্র আহ্বানের সুপারিশ করা হলেও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিদ্ধান্তে বিষয়টি আরো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রস্তাব ক্রয় কমিটিতে উপস্থাপনের নির্দেশনা দেওয়া হয়।
ওই বছরের ১৩ এপ্রিল বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর সভাপতিত্বে এক সভায় পূর্ববর্তী দরপত্রের কারিগরি দিক, জ্বালানি ব্যয়, প্রস্তাবিত যন্ত্রপাতিকে কম্বাইন্ড সাইকেলে (উৎপাদিত বাম্প থেকে) রূপান্তর ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনাা পর ৩০০-৪৫০ মেগাওয়াট গ্যাসভিত্তিক কম্বাইড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের প্রস্তাব আবার ক্রয় কমিটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। গত বছরের ২০ জুন ক্রয় কমিটিতে পাঠানো বিদ্যুৎ বিভাগের সারসংক্ষেপে ২০০৯ সালে ঘোড়াশালে ২০০+১০% মেগাওয়াট পিকিং প্লান্ট স্থাপনের প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে বলা হয়, তখন জরুরি ভিত্তিতে এটা করা হয়। ইতিমধ্যে বাস্তবায়নাধীন রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল এবং সরকারি খাতের প্রকল্প থেকে ২০১১ সালের মধ্যে প্রায় দুই হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। তাই ২০১৩ সালে নির্মাণ সম্পন্ন করার লক্ষ্যে পিকিং প্লান্ট স্থাপন না করে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় যথাযথ পর্যায়ে রাখতে ও জ্বালানির সুষ্ঠু ব্যবহারের স্বার্থে অধিকতর দক্ষ ৩০০-৪৫০ মেগাওয়াট বেজ লোড কম্বাইড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের প্রস্তাব অনুমোদনের সুপারিশ করা হয়। গত বছরের ১১ জুলাই মন্ত্রিসভা কমিটি এ প্রস্তাব গ্রহণ না করে দরপত্রটি পিপিআরের ১১ বিধির আলোকে বিস্তারিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং দরপত্র মূল্যায়ন কমিটিতে (টিইসি) আবার উপস্থাপনের নির্দেশনা দেয়। টিইসির পুনর্মূল্যায়ন প্রতিবেদনে দেখা যায়, ছয় দরদাতার মধ্যে তিনটি দরপত্রের শর্ত পূরণ না করায় সরাসরি বাতিলের আওতায় পড়ে অযোগ্য হয়। বাকি তিন যোগ্য দরদাতা সম্পর্কে পুনর্মূল্যায়ন প্রতিবেদনে বলা হয়, গ্যারান্টি শিডিউলে সম্পূর্ণ তথ্য না দেওয়ার কারণে এরা অযোগ্য বিবেচিত হওয়ায় পুনঃ দরপত্র আহ্বান করা যেতে পারে। তবে টিইসি প্রতিবেদনে এটাও বলা হয় যে, তৃতীয় দফায় আহ্বানকৃত পুনঃ দরপত্র হওয়ায় তিন দরদাতার সীমাবদ্ধতাগুলোকে গৌণ বিবেচনা করা হলে সিএনটিআইসি-সিএমসি জয়েন্ট ভেঞ্চার সর্বনিম্ন দরদাতা। এ প্রতিবেদনে গত ২৯ আগস্টের পিডিবির বোর্ড সভায় অনুমোদিত হয়। তবে বিদ্যুৎ বিভাগ মন্তব্য করে যে সুপারিশকৃত সর্বনিম্ন দরদাতা ক্রয় আইন ও বিধির সংশ্লিষ্ট ধারা অনুযায়ী গ্রহণযোগ্য নয়। এ ছাড়া টিইসির শর্তযুক্ত সুপারিশও আইন ও বিধি অনুযায়ী গ্রহণযোগ্য নয়। বিদ্যুৎ বিভাগ দরপত্র বাতিল করে আবার কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের প্রস্তাব ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি গ্রহণের সুপারিশ করলে তা প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন করেন। গত ডিসেম্বরে নতুন করে দরপত্র আহ্বান করা হলেও নানা কারণে সময় বৃদ্ধির পর জুন মাসে দরপত্র খোলা হয়েছে।
পিডিবির চেয়ারম্যান ও সদস্য (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) বিদেশে রয়েছেন। যোগাযোগ করা হলে সচিব আজিজুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে জানান, ঘোড়াশাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের দরপত্রের মূল্যায়ন চলছে।
দীর্ঘ তিন বছর সরকারের বিভিন্ন প্রভাবশালী মহলের স্বার্থের দ্বন্দ্বে এ গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়নি। এবারও শেষ পর্যন্ত ঠিকাদার নিয়োগ নিয়ে বিরোধের কারণে প্রকল্পটি আদৌ বাস্তবায়িত হয় কি না সে আশঙ্কা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের।
No comments