রেলের জমি-বেহাত সম্পদ ফিরিয়ে আনুন
রেলওয়ের ভূসম্পত্তির পরিমাণ ৬১ হাজার ৬০৫ একর। পূর্বাঞ্চলের জমির পরিমাণ ২৪ হাজার ৪০১ একর। পশ্চিমাঞ্চলে জমির পরিমাণ ৩৭ হাজার ২০৪ একর। এই জমির মধ্যে পশ্চিমাঞ্চলে বেহাত হয়ে গেছে ৩ হাজার ৩৮৭ দশমিক ২৭ একর, পূর্বাঞ্চলে এক হাজার ২৪৮ দশমিক ২৪ একর। জমি বেহাত হওয়ার প্রক্রিয়া অবশ্য থেমে নেই।
স্বার্থান্বেষী মহলগুলো ছলে-বলে-কৌশলে জমি করায়ত্ত করতে তৎপর। আর জমি রক্ষার দায়িত্ব যাদের তারা রক্ষার বদলে বিলিয়ে দেওয়ার নীতিই যেন অবলম্বন করেছেন প্রকারান্তরে। নগদপ্রাপ্তির লোভে রাষ্ট্রীয় সম্পদ বিচার-বিবেচনা ছাড়াই লিজ দেওয়া হচ্ছে। বেহাত হয়ে যাচ্ছে মূল্যবান ভূমি। ২০০৬ সালে প্রণীত গেজেট অনুসারে রেলের ৩ ধরনের জমি রয়েছে। ১. যে জমি রেলের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে এবং অচিরেই কাজে লাগবে; ২. যে জমি ভবিষ্যতে কাজে লাগবে; ৩. যে জমি কখনোই রেলের কাজে আসবে না। গেজেট থেকে স্পষ্ট, কোন ধরনের জমি লিজ দেওয়া যেতে পারে আর কোন ধরনের জমি লিজ দেওয়া উচিত নয়। কিন্তু এ নিয়মকানুন বিবেচনা করার অবকাশ নেই অসাধু কর্মকর্তাদের। দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তে লিজ দেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুতর অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। রেলের বর্তমান ও সাবেক ১২ কর্মকর্তাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলাও করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, ২৭ কোটি টাকা মূল্যের জমি মাত্র ৩০ লাখ টাকা সেলামি নিয়ে হস্তান্তর করা হয়েছে। এমন উদাহরণ থেকে আবশ্যিকভাবেই একটি প্রশ্ন উঠবে, রেল রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব তাহলে কাদের ওপর ন্যস্ত হয়েছে? প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তারা রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষা না করে এভাবে বিলিয়ে দিতে পারছেন কোন মানসিকতা থেকে? রাষ্ট্রীয় সম্পদের এমন অপব্যয় কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। জমি বেদখল হওয়ার প্রক্রিয়াগুলো অবিলম্বে বন্ধ হওয়া দরকার। সারাদেশে অবৈধভাবে যত জমি বেদখল হয়েছে তা পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া শুরু হওয়া দরকার। পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ার সঙ্গে সঙ্গে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া উচিত। এ বিষয়ে রেল মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। আমরা আশা করব, সেটি বাস্তবায়িত হোক। অবৈধ দখলে থাকা রাষ্ট্রীয় সম্পদ রাষ্ট্রের তত্ত্বাবধানে আসুক। বৈধ পন্থায়, নিয়ম মেনে এ সম্পদের ব্যবহার নিশ্চিত
করা হোক।
করা হোক।
No comments