জীবনযুদ্ধে জয়ী আয়েশার গল্প

জীবনযুদ্ধে বিজয়ী এক নারীর নাম। স্বামীর মৃত্যুর পর দারিদ্র্যতা আর সংসারের নানা টানাপোড়নে থমকে যাওয়া জীবনকে তিনি একাই টেনে চলেছেন। জীবন সংগ্রামের বিভিন্ন চড়াই উৎরাই পেরিয়ে আজ তিনি অনেকটাই স্বাবলম্বী।
আয়েশা বেগম চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের ১৫নং ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের উত্তর ওয়াহেদপুর গ্রামের বাসিন্দা। স্বামী আবদুল জববার দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে ১০ বছর আগে মারা যান। একমাত্র কন্যা আলেয়াকে নিয়ে শুরু করেন তার সংগ্রামী পথ চলা।
নিজের ভিটেমাটি সহায় সম্বল বলতে কিছুই নেই আয়েশার। পাহাড়ের পাদদেশে ছোট একটি কুঁড়ে ঘর বাঁধেন। প্রতিদিন সকাল হতেই চলে যান পাহাড়ে। পাহাড় হতে জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ করে তা বাজারে বিক্রি করে দু’বেলার আহার জোগান। তাতেও সংসার চলে না।

এরপর পাহাড়ে যাওয়ার পাশাপাশি শুরু করলেন হস্ত শিল্পের কাজ। শীতল পাটি, মোড়া, বাঁশ দিয়ে বিভিন্ন সামগ্রী তৈরি করেন অবসর সময়ে। তা বিক্রি করেন পাশ্ববর্তী বাজারে। এই হস্তশিল্পের কাজ করে এখন তিনি স্বাবলম্বী।

তার একমাত্র মেয়ে আলেয়াকে বিয়ে দিয়েছেন দু’বছর আগে। তিনি তার মেয়ে ও মেয়ে জামাইকে নিয়ে এক সঙ্গে সুখে শান্তিতে বাস করছেন।

আয়েশা বেগম জানান, স্বামীর মৃত্যুর পর সংসার চালাতে গিয়ে তিনি অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। কঠোর পরিশ্রম, হস্তশিল্পের বিভিন্ন সমাগ্রী তৈরি করে তিনি সে দুঃখ ঘুচিয়েছেন। উন্নয়ন সংস্থা ইপসার সহযোগিতায় অরণ্য উন্নয়ন সমিতির সদস্য হয়ে তিনি প্রতি মাসে আয়ের একটি অংশ সঞ্চয় করছেন। সঞ্চিত টাকা দিয়ে ভবিষ্যতে হস্তশিল্পের কাজকে আরো সম্প্রসারিত করবেন বলে তিনি আশা করেন।

আয়েশা বেগম তার নিজ এলাকায় গঠিত অরণ্য উন্নয়ন সমিতির সদস্য হয়েছেন। ওই এলাকায় সমমনা ২৫ জন নারী এ সমিতি গঠন করেছেন। তিনি প্রতিমাসে তার উপার্জিত অর্থের একটি অংশ ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করছেন। আয়েশা বেগম তার পরিবার নিয়ে এখন সুখে শান্তিতে স্বচ্ছল জীবনযাপন করছেন।

No comments

Powered by Blogger.