১০ বছর পর কাউন্সিল আজ- কুড়িগ্রাম আ’লীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস

কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক কাউন্সিলকে ঘিরে গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো পেতে নেতাদের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
প্রার্থীদের ঘন ঘন আনাগোনায় ২৫৬ জন কাউন্সিলরের কাটছে নির্ঘুম রাত। আজ এই কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। ২০০৩ সালে জেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ কাউন্সিল হয়েছিল। এরপর ১০ বছর পর এই কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সে কারণে এই কাউন্সিল দলীয় রাজনীতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন নেতাকর্মীরা।

কুড়িগ্রাম কলেজ মোড়ের স্বাধীনতার বিজয় স্তম্ভে কাউন্সিল উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ। প্রধান অতিথি থাকবেন পাট ও বস্ত্র মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী এবং প্রধান বক্তা কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি। কাউন্সিল সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। দলের ভেতর সৃষ্টি হয়েছে বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনা। নৌকার ওপর তৈরি হচ্ছে   সুদৃশ্য মঞ্চ। শহরের প্রবেশপথগুলোতে তৈরি হচ্ছে শতাধিক তোড়ন।

সাধারণ সম্পাদক জাফর আলীর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকলেও সভাপতি, যুগ্ম সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস পাওয়া যাচ্ছে মাঠপর্যায় থেকে। ইতোমধ্যে সব উপজেলা সম্মেলন শেষ হয়েছে। কোনো কোনো এলাকায় সমঝোতার মাধ্যমে কমিটি গঠন হলেও এবার অনেক স্থানে ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও পৌরসভা ও উপজেলা কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে নির্বাচন হয়েছে। ব্যালটের মাধ্যমে কাউন্সিলরেরা তাদের নেতা নির্বাচনের সুযোগ পেয়েছেন। সেই ধারাবাহিকতায় জেলা কাউন্সিলেও ব্যালটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচনের সুযোগ পাচ্ছেন কাউন্সিলরেরা। ফুলবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানী সরকার ও নাগেশ্বরী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসলাম হোসেন সওদাগর জানান, বেশির ভাগ ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও উপজেলায় ব্যালটের মাধ্যমে কমিটি গঠিত হওয়ায় অনেকের ক্ষোভ-দুঃখ প্রশমিত হয়েছে। পাশাপাশি শিক্ষিত ও উদ্যোমী নেতৃত্ব বেছে নেয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আগামী সংসদ নির্বাচনে এর সুফল পাওয়া যাবে বলে তারা মনে করেন।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হওয়ার দৌড়ে মাঠে নেমেছেন জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সহসভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম মণ্ডল ও চাষি এম এ করিম। এ ছাড়াও কুড়িগ্রাম-৪ আসনের সংসদ সদস্য জাকির হোসেন ও জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ছানালাল বকশী সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য চষে বেড়াচ্ছেন জেলার সর্বত্র। গত কাউন্সিলে সাধারণ সম্পাদক পদে জাফর আলীর সাথে বেশ ভালোভাবেই লড়াই করে হেরে যাওয়া চাষি করিম এবার সভাপতি পদে নির্বাচনের ঘোষণা দেয়ায় লড়াই জমে ওঠার আভাস দিচ্ছে দলীয় সূত্র। তবে আমিনুল ইসলাম মণ্ডলও কিন ইমেজ নিয়ে শক্ত প্রার্থী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন।

যুগ্ম সম্পাদকের তিনটি পদে অলক সরকার, শেখ বাবুল ও মো: নুরুজ্জামানকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন পাবলিক প্রসিকিউটর ও আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্রাহাম লিংকন, নি ম নজমুল ক্রাউন, জেলা যুবলীগের সভাপতি ও কাঁঠালবাড়ী ইউপি চেয়ারমান আমান উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অধ্যক্ষ রাশেদুজ্জামান বাবু ও অধ্যক্ষ আহসান হাবীব রানা। সাংগঠনিক সম্পাদকের তিনটি পদে নতুন মুখ কৃষিবিষয়ক সম্পাদক আলহাজ আবুল কালাম আজাদ ও ক্রীড়া সম্পাদক সাঈদ হাসান লোবান, সদস্য আ ন ম ওবায়দুর রহমান ও সালাউদ্দিন রুবেল, আমিনুল ইসলাম গালিভার, কৃষকনেতা ওমর ফারুক ও খাদিজা পারভীন কেয়া বেগম।

No comments

Powered by Blogger.