অর্পিত সম্পত্তি নিয়ে একটি বড় সমস্যা by এম এ মতিন
বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন ২০০১ সালের ১৬ নম্বর আইনের বিধিমালা ২০১২ প্ শ করা হয়েছে।
উক্ত
বিধিমালায় বিভিন্ন কমিটি ও ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে অর্পিত সম্পত্তি
প্রত্যর্পণের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আমরা সাধারণত জানি, ‘অর্পিত সম্পত্তি’
বলতে সেসব সম্পত্তি বোঝায়, যাদের মালিক অর্থাৎ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের
লোকজন তদানীন্তন পূর্বপাকিস্তান বর্তমান বাংলাদেশ থেকে তাদের স্থায়ী
অস্থায়ী সম্পত্তি মালিকবিহীন অবস্থায় ফেলে রেখে ভারতে চলে গিয়েছেন। এ সব
সম্পত্তি প্রকৃত মালিকদের অনুপস্থিতিতে সরকার নিজ তত্ত্বাবধানে রেখেছে বা
দেখভাল করে। কিন্তু যেসব সম্পত্তি তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের হিন্দু
সম্প্রদায়ের লোকজন ভারতের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অর্থাৎ মুসলমানদের সাথে
আমমোক্তার নামা বা পাওয়ার অব অ্যার্টনির মাধ্যমে বিনিময় করে ভারতে চলে
গিয়েছেন সেসব সম্পত্তি সরকার কর্তৃক প্রকাশিত গেজেটে ‘অর্পিত সম্পত্তি’
হিসেবে দেখানো হয়েছে। অথচ হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যরা তাদের এখানকার
সম্পত্তি ভারত থেকে আগত মুসলমান বিনিময়কারীদের দখল বুঝিয়ে ভারতে গিয়ে ওই
মুসলমানদের সম্পত্তির দখল নিয়েছেন। কাজেই এসব সম্পত্তি কোনো মতেই
মালিকানাবিহীন হওয়ার কথা নয়। দ্বিতীয়ত, পরে পাওয়ার অব অ্যাটর্নির
মাধ্যমে হস্তান্তরিত এসব সম্পত্তি মাঠ তদন্তের মাধ্যমে নিজ নিজ জেলা
প্রশাসকের পক্ষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ভারত থেকে আগত
বিনিময়কারীদের অনুকূলে দলিল সম্পাদন করে দিয়েছেন এবং সংশ্লিষ্ট
সাবরেজিস্ট্রার কর্তৃক রেজিস্ট্রিও হয়েছে। বিনিময় দলিল সম্পাদনের সময়
জেলা প্রশাসক থেকে প্রদত্ত হলফনামায় বিনিময়কৃত সম্পত্তিগুলো অর্পিত
সম্পত্তি নয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব)
তাতে প্রতিস্বাক্ষর করেছেন। অনুরূপভাবে, অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ
অবমুক্তি বিধিমালা ২০১২ এর ৬ নম্বর ধারার ‘খ’ উপধারা অনুযায়ী
রেজিস্ট্রিকৃত বিনিময় দলিলের সম্পত্তিগুলো অর্পিত সম্পত্তি নয় বলে দেখা
যায়। কারণ উক্ত ‘খ’ উপধারায় যেসব সম্পত্তি তত্ত্বাবধায়ক অর্থাৎ জেলা
প্রশাসক কর্তৃক অর্পিত সম্পত্তি নয় বলে ঘোষণা দিয়েছেন, সেগুলো অর্পিত
সম্পত্তি তালিকাভুক্ত হবে না বলে উল্লেখ রয়েছে।
এ অবস্থায় বিনিময়কৃত সম্পত্তিগুলো অর্পিত সম্পত্তির তালিকায় প্রকাশ করা পরস্পরবিরোধী। তৃতীয়ত, ১৯৯০ সালে ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত ভূমি ম্যানেজমেন্ট ম্যানুয়েলের ৩০২ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, ‘ভারত থেকে আগত বিনিময়কারীর বিনিময় দলিল রেজিস্ট্রি হওয়ার সাথে সাথে ওইগুলো অর্পিত সম্পত্তি তালিকা থেকে আপনাআপনি বাদ পড়বে। তার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে কোনো আবেদন করতে হবে না। চতুর্থত, বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ১৯৯০ সালে যে ভূমি জরিপ পরিচালিত হয় তার পরিপ্রেক্ষিতে রেজিস্ট্রিকৃত বিনিময় দলিলের সম্পত্তিগুলোর বিনিময়কারীদেরকে মালিক উল্লেখ করে চূড়ান্ত পরচা দেয়া হয়। তখন যেসব দলিল রেজিস্ট্রেশনের অপেক্ষায় ছিল ওইসব পাওয়ারের সম্পত্তিগুলোকে বিনিময় সূত্রে দখলদার বলে মাঠ পরচায় উল্লেখ করা হয়। পরে অপেক্ষমাণ দলিলগুলো রেজিস্ট্রি হয়েছে। পঞ্চমত, বিনিময়কৃত সম্পত্তিগুলোর খাজনা বিনিময়কারী কর্তৃক নিয়মিত তহশিল অফিসে পরিশোধ করা হয়েছে। অবশ্য বিগত কয়েক বছর ধরে খাজনা গ্রহণ স্থগিত হয়েছে। যষ্ঠত, বিনিময়কৃত সম্পত্তিগুলো বিনিময়কারীরা বিগত ৫০ বছর নির্বিঘেœ ভোগদখল করে আসছেন।
এখানে উল্লেখ করা যায়, অধিকাংশ বিনিময় কার্যক্রম ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের আগেই সম্পন্ন হয়। ভারত থেকে আগত মুসলমান বিনিময়কারীরা এ দেশে এসে প্রথমত নতুন পরিস্থিতিতে খাপ খাওয়াতে না পারায় অর্থনৈতিক দুরবস্থার কারণে তাদের সম্পত্তি বেশির ভাগ বিক্রি করে দিয়েছেন। কেউ কেউ সব সম্পত্তি বিক্রি করে অন্যত্র যেমন সিলেট পার্বত্য চট্টগ্রামে জীবিকা নির্বাহের জন্য চলে গিয়েছে। অনেক মূল বিনিময়কারী বর্তমানে জীবিত নেই; এমনকি অনেকের সন্তানাদিও জীবিত নেই। এ অবস্থায় তাদের বিনিময় দলিলের হদিস পাওয়া দুষ্কর। যেসব ব্যক্তি বিনিময়কারীদের কাছে সম্পত্তি ক্রয় করেছেন, অবমুক্তির ব্যাপারে তাদের বিপাকে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ দেশ থেকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের যেসব লোক বিনিময়ের মাধ্যমে ভারতে চলে গিয়েছেন তাদের সম্পত্তিগুলো সেখানে বিনিময়ের ৮-১০ মাসের মধ্যেই নিয়মিতকরণ করা হয়েছে। অথচ ভারত থেকে আগত মুসলমান বিনিময়কারীদের সম্পত্তি ৫০ বছর অনিষ্পন্ন অবস্থায় রয়েছে।
সরকার জনগণের কল্যাণের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ। বিনিময়কৃত সম্পত্তিগুলো অবমুক্তি/নিয়মিতকরণের জন্য সরকার যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন প্রশংসনীয় ও আশাব্যঞ্জক। তাই সহানুভূতিশীল মনোভাব নিয়ে বিনিময়কৃত সম্পত্তিগুলো অবমুক্তিকরণ/ নিয়মিতকরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে দীর্ঘ দিনের ঝুলে থাকা সমস্যাটির সুষ্ঠু সমাধান সুনিশ্চিত হবে। এর ফলে বিনিময়কারী/বিনিময়কৃত সম্পত্তি ক্রেতাসহ সংশ্লিষ্ট সবাই উপকৃত হবেন।
এ অবস্থায় বিনিময়কৃত সম্পত্তিগুলো অর্পিত সম্পত্তির তালিকায় প্রকাশ করা পরস্পরবিরোধী। তৃতীয়ত, ১৯৯০ সালে ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত ভূমি ম্যানেজমেন্ট ম্যানুয়েলের ৩০২ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, ‘ভারত থেকে আগত বিনিময়কারীর বিনিময় দলিল রেজিস্ট্রি হওয়ার সাথে সাথে ওইগুলো অর্পিত সম্পত্তি তালিকা থেকে আপনাআপনি বাদ পড়বে। তার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে কোনো আবেদন করতে হবে না। চতুর্থত, বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ১৯৯০ সালে যে ভূমি জরিপ পরিচালিত হয় তার পরিপ্রেক্ষিতে রেজিস্ট্রিকৃত বিনিময় দলিলের সম্পত্তিগুলোর বিনিময়কারীদেরকে মালিক উল্লেখ করে চূড়ান্ত পরচা দেয়া হয়। তখন যেসব দলিল রেজিস্ট্রেশনের অপেক্ষায় ছিল ওইসব পাওয়ারের সম্পত্তিগুলোকে বিনিময় সূত্রে দখলদার বলে মাঠ পরচায় উল্লেখ করা হয়। পরে অপেক্ষমাণ দলিলগুলো রেজিস্ট্রি হয়েছে। পঞ্চমত, বিনিময়কৃত সম্পত্তিগুলোর খাজনা বিনিময়কারী কর্তৃক নিয়মিত তহশিল অফিসে পরিশোধ করা হয়েছে। অবশ্য বিগত কয়েক বছর ধরে খাজনা গ্রহণ স্থগিত হয়েছে। যষ্ঠত, বিনিময়কৃত সম্পত্তিগুলো বিনিময়কারীরা বিগত ৫০ বছর নির্বিঘেœ ভোগদখল করে আসছেন।
এখানে উল্লেখ করা যায়, অধিকাংশ বিনিময় কার্যক্রম ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের আগেই সম্পন্ন হয়। ভারত থেকে আগত মুসলমান বিনিময়কারীরা এ দেশে এসে প্রথমত নতুন পরিস্থিতিতে খাপ খাওয়াতে না পারায় অর্থনৈতিক দুরবস্থার কারণে তাদের সম্পত্তি বেশির ভাগ বিক্রি করে দিয়েছেন। কেউ কেউ সব সম্পত্তি বিক্রি করে অন্যত্র যেমন সিলেট পার্বত্য চট্টগ্রামে জীবিকা নির্বাহের জন্য চলে গিয়েছে। অনেক মূল বিনিময়কারী বর্তমানে জীবিত নেই; এমনকি অনেকের সন্তানাদিও জীবিত নেই। এ অবস্থায় তাদের বিনিময় দলিলের হদিস পাওয়া দুষ্কর। যেসব ব্যক্তি বিনিময়কারীদের কাছে সম্পত্তি ক্রয় করেছেন, অবমুক্তির ব্যাপারে তাদের বিপাকে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ দেশ থেকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের যেসব লোক বিনিময়ের মাধ্যমে ভারতে চলে গিয়েছেন তাদের সম্পত্তিগুলো সেখানে বিনিময়ের ৮-১০ মাসের মধ্যেই নিয়মিতকরণ করা হয়েছে। অথচ ভারত থেকে আগত মুসলমান বিনিময়কারীদের সম্পত্তি ৫০ বছর অনিষ্পন্ন অবস্থায় রয়েছে।
সরকার জনগণের কল্যাণের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ। বিনিময়কৃত সম্পত্তিগুলো অবমুক্তি/নিয়মিতকরণের জন্য সরকার যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন প্রশংসনীয় ও আশাব্যঞ্জক। তাই সহানুভূতিশীল মনোভাব নিয়ে বিনিময়কৃত সম্পত্তিগুলো অবমুক্তিকরণ/ নিয়মিতকরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে দীর্ঘ দিনের ঝুলে থাকা সমস্যাটির সুষ্ঠু সমাধান সুনিশ্চিত হবে। এর ফলে বিনিময়কারী/বিনিময়কৃত সম্পত্তি ক্রেতাসহ সংশ্লিষ্ট সবাই উপকৃত হবেন।
No comments